সেই খরগোশ ও কচ্ছপের কথা। তাদের এখন নাতি-পুতি হয়ে বংশবিস্তার হয়েছে। কিন্তু যুগের পর যুগ কচ্ছপের দল খরগোশদের খোঁটা দিয়ে বেড়ায়, দৌড় প্রতিযোগিতায় হারানোর গল্প শোনায়।
খরগোশেরা অতিষ্ঠ, পশুসমাজে তারা ঐতিহাসিক বোকামির জন্য মুখ দেখাতে পারে না।
এক খরগোশ তখন কচ্ছপকে চ্যালেঞ্জ করল, ‘হয়ে যাক আরেকটা প্রতিযোগিতা, এবার দেখি কে জেতে!’ কচ্ছপ রাজি।
খরগোশ তখন বললো, ‘দেখো ভাই কচ্ছপ, দৌড়ানোর ব্যাপারটা তো ব্যাকডেটেড হয়ে গেছে। এবার আগের প্রতিযোগিতার নিয়ম পাল্টেছি এখন এই নিয়ম অনুযায়ী তোমাকে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে, এবার দৌড়ের বদলে চলো আমরা একটা কুইজ প্রতিযোগিতা করি। আর প্রতিযোগিতার প্রধান শর্ত হলো, এটি হবে দক্ষিন এশিয়ার প্রান্তে।’
যেই কথা সেই কাজ। তারা দুই পশু-ফ্লাইটে করে বাংলাদেশ কিংবা এমন কোনো একটা দেশে চলে এল। দিনক্ষণ ঠিক ছিল।
প্রতিযোগিতার ঠিক আগের রাতে কচ্ছপ উঁকি দিল খরগোশের রুমের জানালা দিয়ে। দেখল, খরগোশ আরাম করে ঘুমাচ্ছে। কচ্ছপ তো মহা খুশি। তাকে আর পায় কে! এবারও বুঝি ঘুমের কারণে খরগোশ হেরে যাবে!
কচ্ছপ তাড়াতাড়ি রুমে ফিরে বই নিয়ে বসে। রাতভর পরিশ্রম করে প্রস্তুতি নেয়।
নির্দিষ্ট দিনে প্রতিযোগিতা শুরু হলো। কচ্ছপ ধীরেসুস্থে উত্তর দিয়ে ফেলল। মাঝেমধ্যে খরগোশের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখল, কী যেন একটা ভাবছে সে।
একসময় ফলও প্রকাশিত হলো। কচ্ছপ পেয়েছে ৮১, আর খরগোশ ১০০-তে ১০০। ইতিহাস ভেঙে খরগোশ বিজয়ী।
কচ্ছপের তখন মাথা খারাপ। তড়িঘড়ি খরগোশের কাছে গিয়ে হুংকার ছাড়ল, ‘ক্যামনে ম্যান, ক্যামনে!’
খরগোশ তৃপ্তির হাসি হেসে বলল, ‘প্রশ্ন তো হাতেই ছিল রে, বাছা!
এ দেশে পরিশ্রম করে কখনো কেউ জেতে না; বংশের নামে কলাগাছ হলেও জেতা যায়, কিন্তু পরিশ্রম কিংবা যোগ্যতায়? ককখোনো না।
টিভিতে তখন কেউ একজন বলে যাচ্ছে, "খরগোশ-কচ্ছপের প্রতিযোগিতা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে। কোনো ধরনের গুজবে কান দেবেন না..."