কেউ লাশ হয়ে ঘরে ফিরলে এখন আর কারো মনে সমবেদনা জাগে না।ফেলানিরা লাশ হয়ে কাঁটাতারে ঝোলে এই দেশের কিছু মানুষ মুখে স্কচটেপ মেরে রাখেন অন্ধ রাজনৈতিক আনুগত্যের বশবর্তী হয়ে। রাস্তায় লাশের উপর দাঁড়িয়ে উল্লাস করা হলে আমাদের বিবেক নাড়া দেয় না বরং যারা উল্লাস করে তাদের দুই তৃতীয়াংশ ভোটে নির্বাচিত করে রাস্ট্র ক্ষমতায় আনার জন্য আমাদের দেশের মানুষ ভোট উৎসব করে। এ আর তেমন কি? স্বাধীনতার প্রকাশ্য বিরোধী রাজাকারদের গাড়ীতে আমরাই তুলে দিয়েছি স্বাধীন দেশের পতাকা ! প্রকাশ্য দিবালোকে জনপ্রতিনিধিকে কুপিয়ে মারা হলে কারো কারো বিবেচনা এটাতো রাজনৈতিক হত্যাকান্ড! দেশের ৩৬% মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে আর প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাড়ীর আভিজাত্য আর চাকচিক্য দেখে জনসাধারন ঢোক গেলে! বি এন পি ও আওয়ামী লীগ এর নেতারা প্রত্যেকদিন জনগনের টাকা মেরে নিজেদের পকেট ভারি করছে, আমাদের বিতর্কের বিষয় তারেক জিয়া বড় চোর নাকি আওয়ামী লীগের নেতারা। সন্ত্রাস যখন রাজনৈতিক ছত্রছায়ার সংগঠিত হয় তখনও আমাদের দেশের মানুষজন দুইদলের মাঝে তুলনায় বাস্ত। কার আমলে কত কম সন্ত্রাস হয়েছে। আইনের শাসন যখন অসুস্থ রাজনৈতিক প্রভাবে ধ্বংসপ্রায় ইভটিজিং এর নামে সহিংস নারী নির্যাতন প্রনোদনা পায় আমরা চোখ বড় বড় করে পত্রিকার পাতায় খবর পড়ি আর চা খাই দেশটা গেলো! এদেশের কিচ্ছু হবে না! বলে তৃপ্তি পাই। চালের দাম যখন ৫০ এর কাছাকাছি বাজার করতে গিয়ে মধ্যবিত্তের ভ্রু কুঁচকে যায় আর নিম্নবিত্ত!!!?
এত নানাবিধ চিন্তায় দেশের দ্বিতীয় বৃহৎতম বিল উজার করে কারো পিতার নাম প্রচার আর ব্যাক্তি হিংসা চরিতার্থ করতে গেলে সঙ্কীর্ণ ব্যাক্তি স্বার্থে সমর্থন দেই। পরিবেশ হুম রক্ষা করা দরকার। বিপর্যয়?? সেটা আবার কি! সরকারী আমলার পরিচয়ে বনরক্ষকরা! প্রতিদিন সুন্দরবন, রাঙ্গামাটি, পার্বত্য অঞ্চলের গাছ কেটে উজাড় করে দিচ্ছে, আমাদের নজর দেয়ার সময় কই? ৯টা থেকে ৬টা পর্যন্ত চাকুরীর পর কিছু ভাববার সময় নাই! ভারত বরাক নদীর উপর বাঁধ দিয়ে আরেক ফারাক্কা তৈরি করতে চাইলে আমাদের নির্বাচিত সরকার প্রতিবাদ না করে নিচু স্বরে কথা বলে বন্ধুরাস্ট্র বলে কথা!
পুরো দেশটা ভারতের কাছে ১৬ কোটি মানুষের বাজারে পরিনত হচ্ছে আমরা নিত্য নতুন পন্য ভোগে এক একজন গর্বিত ভোক্তা! উন্মুক্ত তথ্যের এই যুগে শাহরুখ সালমান রাই আমাদের নায়ক, ক্যাটরিনার যৌবনই আমাদের মাদক! সেখানে ভারতের সাথে বিশাল বানিজ্য ঘাটতি? আরে কি যে বলেন না। কই ভারত ১০০ কোটি মানুষের বিশাল দেশ আর কই ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ, এই ব্যাবধান তো খুবই স্বাভাবিক!!!!
দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ লোক বেকার! চিন্তার কি? আছে ঘরে ঘরে চাকুরীর আশ্বাস! ছিনতাই, রাহাজানি, ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। সমাজ কোথায় যাচ্ছে ভাবার সময় কই? ভাবলে নিজের আখের কে গোছাবে? কই? আমার তো কিছু হয় নি।
সমুদ্রসীমা ভারত দখল করে রেখেছে, আন্তনদী সংযোগ প্রকল্প করে নদীর পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার পায়তারা করছে, আমাদের মেরুদন্ডহীন পররাস্ট্রনীতির সুযোগে ভারত ট্রানজিট এর সাথে গিলাচ্ছে ঋণের বোঝা ও জাতীয় সম্পদ তুলে দেয়া হচ্ছে বিদেশী কোম্পানীর হাতে, রেন্টাল পাওয়ার এর নামে বিদ্যুৎ এর মত গুরুত্বপূর্ণ সেবাখাত তুলে দেয়া হচ্ছে বেসরকারী খাতে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে বড় দুইটি দল- বি এন পি ও আওয়ামী লীগ- আমরা নির্বিকার ভাবছি! দেশ একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে, ভাবতে ভালই লাগে!
গুটিকয়েক অভিজাতরা লুটেপুটে খাচ্ছে, মধ্যবিত্ত তার উচ্ছিষ্ট ভোগে তৃপ্ত!, নিম্নবিত্ত দিশেহারা। জীবিকা অর্জনে নাভিশ্বাস উঠছে, কিন্তু মধ্যবিত্ত সেন্টিমেন্ট রক্ষায় ব্যাতিব্যাস্ত। শংকিত এই ভেবে যে এতো সমস্যা তাকে স্পর্শ করবে না তো, তার প্রিয়জন যদি লাশ হয়ে ফেরে, কিংবা ছিনতাই কারীর ছুরিকাঘাতে নিজেই লাশের খবর হয়ে যায়?
পরিবর্তনের স্বপ্ন সবাই দেখে?? কিন্তু পরিবর্তন, সেটা তো রাজনৈতিক ??রাজনীতি নোংরা বিষয়! এ দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন সম্ভব না। রাজনীতি করে লাভ নাই, কারন রাজনীতি করে পেট ভরে না! অতএব লোকাল বাসের ঘিঞ্জিতে, গাদাগাদি করে , নীতির সাথে সমঝোতা করে অস্পৃশ্য, মেরুদন্ডহীন জীবন যাপন করে বাকি দিন গুলো প্রিয়তম বা বউ ছেলেপেলে নিয়ে কাটিয়ে দেয়া্র বিকল্প কি আছে??
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:৩৫