somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিকিৎসার অভাবে বাক শক্তি হারিয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন রণাঙ্গণের বীর আলী আকবর

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চিকিৎসার অভাবে বাক শক্তি হারিয়েছেন। যুদ্ধের পরই হারিয়েছেন একটি চোখও। আর এখন বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মরছেন রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর। ৮ মেয়ে ও ১ ছেলের জনক তিনি। নিজের সকল সম্পওি বিক্রি করে কোনমতে ৭ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।

উপযুক্ত একটি মেয়ে এখনও ঘরে আর ছেলেটি সবার ছোট। খেয়ে না খেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের ফেনুয়া গ্রামের ৭১ এর রণাঙ্গণের বীর ৬৭ বছর বয়সী আলী আকবর।

অনেক দিন থেকেই বিভিন্ন রোগে ভূগছিলেন তিনি অর্থের অভাবে নিজের চিকিৎসাও কারাতে পারছেন না। গত ৪ মাস থেকে বাক শক্তি হারিয়ে এখন কারও সাথে কথাও বলতে পারেন না, তবে কাগজের মধ্যে তার মনের কথা লিখে দিতে পারেন।

সরকার থেকে প্রাপ্ত মাসিক সম্মানী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার জোটতেও অনেক কষ্ট হয়। যুদ্ধকালিন সময়ে ২ নং সেক্টরে বিএলএফের অধীনে য্দ্ধু করেন এই হতভাগ্য যোদ্ধা। তাদের সেক্টর অধিনায়ক ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে ফেনুয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবরের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, একচালা একটি টিনের ঘরের মধ্যে কোনমতে জীবনযাপন করছেন এ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। একসময় অনেক জমি ছিল আলী আকবরের পরিবারের অসচ্ছলতা ও মেয়েদের বিয়ে দিতে ভিটে মাটি ছাড়া সব জমি বিক্রি করে দেন তিনি।

একসময়ে শরীরে অনেক জোরও ছিল তার মাঠে দিন মুজুরের কাজ করতেন এখন তাও সম্ভব হয় না। শীত ও বর্ষাকালে একচালা টিনের ঘরটিতে দিন কাটাতে খুবই কষ্ট হয় পরিবারটির। বর্তমানে টাকার অভাবে অবিবাহিত মেয়েটির বিয়ে দিতে পারছেন না এ বীর মুক্তিযোদ্ধা।

তার স্ত্রী সামছুন্নাহার বেগম জানান,যুদ্ধের সময় আমার স্বামী ৫ সন্তানের পিতা, তিনি শেখের ভাষন (বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষন) শুনেই যুদ্ধে চলে যান। সে সময়ের কথা মনে করইে কেদেঁ ফেলেন আলী আকবরের স্ত্রী। কান্নার সূরে বলেন স্বাধীনতার সময় আমি আমার ৫ অবুঝ শিশুকে নিয়ে খুবই কষ্টে ছিলাম আর এখন দেশ স্বাধীনের ৪১ বছর পার হলেও আমাদের কষ্টের অন্ত নেই।

যুদ্ধের সময় কোন পাক বাহিনিকে মেরেছেন কিনা এমন প্রশ্নের উওরে আলী আকবর হাতের ইশারায় বোঝায় আমি অগনিত পাক সেনাদের মেরেছি।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল আজিজ বলেন, যুদ্ধের সময় আলী আকবর আমাদের সাথে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ওমপি থেকে ট্রেনিং নিয়ে যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে। যুদ্ধের সময় তার ভূমিকা ছিল প্রসংশনিয় ।

বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মনোহরগঞ্জ উপজেলার সেইও সবচেয়ে কষ্টে আছে। আমরা সব সময় তাকে সহায়তা করার চেষ্টা করছি। যুদ্ধের সময় আলী আকবরের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবদুল আজিজ আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ১৫ এপ্রিল পাক সেনারা প্রথমে লাকসামে সিগারেট ফ্যাক্টরিতে স্থায়ী ক্যা¤প স্থাপন করে। আর এখান থেকেই চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনীসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা নিয়ন্ত্রণ করতো।

৮ ডিসেম্বর আমরা ও মিত্র বাহিনীর বিভিন্ন কমান্ড লাকসামে অবস্থানরত পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ শুরু করি। দুই দিন ধরে প্রচন্ড যুদ্ধের পর পাক বাহিনী লাকসাম থেকে পশ্চিম দিকে মুদাফরগঞ্জ হয়ে চাঁদপুরের দিকে পালাতে থাকে। পালানোর সময় মিত্র বাহিনী চুনাতী নামক গ্রামে এবং আমরা শ্রীয়াং ও বাংলাইশে পাক বাহিনীকে মুখোমুখি আক্রমণ করি।

এ সকল আক্রমণে পাকবাহিনীর অসংখ্য প্রাণহানিসহ অনেক পাকসেনা বন্দি হয়। স্বাধীনতার ৪১ বছর পার হলেও আমরা সে সময়ের কথা গুলো এখনও ভুলতে পারিনি।
৩৪টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×