অবশেষে টিকিট নামক সোনার হরিনের সন্ধান করে শত যানযট কোলাহলের ঢাকা সিটি থেকে ফিরছি আমার প্রানের নগরীতে ।
[বিঃদ্রঃ যদিও একটু দুর্নীতি করে টিকিট সংগ্রহ করছি তাই মনের দিক দিয়ে একটু খারাপ লাগছে এইটা ভেবে যে শত শত লোক নাড়ীর টানে ঘরে ফিরবার টিকিকের জন্য লাইন দিয়ে দাড়িয়ে আছে কিন্তু আমি বিনা লাইনে C4 এর মত ভি.আই.পি সিট পেয়েছি কিন্তু এই দূর্নীতির সাঁজা আমি পেয়েছি , মাওয়া ঘাট দিয়ে লঞ্চ দিয়ে উপার থেকে এপার পার হয়ে দেখি কোন গাড়ি নেই, ঈদের জন্য পুলিশ মেইন রোডের পাঁশে গাঁড়ি পার্কিং করতে দিচ্ছে না, কোথায় পুরানো রাস্তার মোড়ে গাড়ি দাড়িয়ে তো আমরা যাত্রীরা সবাই অজানা উদ্দেশ্য পথচারীদের নির্দেশনা মোতাবেক আমাদের কাঙ্খিত বাসের উদ্দেশে যাত্রা করলাম এদিকে ঘাঁড়ে আমার ১ মোন ওজনের বোঝা যদিও প্রকৃতপক্ষে এটা এক মন হবে না রুপক অর্থে বললাম আর কি , ল্যাপটপ,বই খাতা,জামা কাপড় ইত্যাদি দিয়ে ওজনটা একেবারে কম হবে না, ঈদের যানজটের কথা ভিড়ের কথা চিন্তা করে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক দুইটি ব্যাগ এর পরিবর্তে শুধুমাত্র আমার কলেজ ব্যাগে সবকিছু একেবারে ঠেসে ঠুসে কানায় কানায় ভর্তি করে নিয়ে এসেছি ।
তো এই বোঝা পিঠে নিয়ে আমি হাঁঠছি তো হাঁঠছি কিন্তু পথ আর শেষ হয় না এর মধ্যে আবার শুরু হল আবার বৃষ্টি । অনেকের কাছে ছাতা নেই তারা বৃষ্টিতে ভিঁজে যাবে আর আমি ছাতার নিচে রিলাক্সে যাবো তাই মনে মনে একটু মুচকি হেঁসেছিলাম কারন আমার পিঠে এই বোছা দেখে তারাও হেঁসেছিল কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস আল্লাহ এই শেষ হাঁসিটুকু আমাকে আর হাঁসতে দিল না কারন আমার ব্যাগে এত লোড হয়ে গেছে আর এত বড় হয়ে গেছে বৃষ্টি থেকে আমি রক্ষা পেলেও আমার ব্যাগ রক্ষা পাবে না অপরদিকে আমার ব্যাগে রয়েছে আমার জানের চেয়ে প্রিয় আমার ল্যপটপ, তাই এখন আমি যে কোন একটিকে রক্ষা করতে পাবর তত্ক্ষনাত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম আমি ভিজলে খুব বেশি হলে আমার জ্বর হবে কিন্তু ল্যপটপটা ভিজলেতো একবারে ডাইরেক্ট কবরে চলে যাবে এর মধ্যে আবার ট্যাবটাকেও হারিয়ে ফেলছি তাই আগে ল্যাপটপ পরে আমি । এভাবে ভিজে পুড়ে প্রায় ৩০ মিনিনের মত এই বোঝা ঘাড়ে নিয়ে অবশেষে সেই পুরানো রাস্তার মোড়ে এসে পোছালাম কিন্তু আফসোস অন্য সব কোম্পানির বাস ঠিকই আছে কিন্তু আমাদেরটা নেই ঐ খানে প্রায় ১৫ মিনিটের মত দাড়িয়ে থাকার পর আমাদের বাসের ঐ কোম্পানির একটি বাস আসল বাসটি আসা মাত্রই যাত্রীরা বাস কোম্পানিকে ড্রাইভারকে, সুপারভাইজারকে গালাগালি করতে সবাই ঐটাতে হুমড়ি দিয়ে ওঠা শুরু করল কিন্তু যাত্রীরা সবাই আছে কিন্তু আমাদের বাসের সুপারভাইজার সাহেব এখনও পৌছায় নি ঐ বাসের ড্রাইভার বলল ১২.৩০ এ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসের যাত্রীদের এপারের বাস এটি নয় এদিকে সবার চাঁন্দি গরম হয়ে গেল ড্রাইভারের উপর কেউ কেউ তেড়ে গেলেন তার উপর বাইরে প্রচুর বৃষ্ট হচ্ছে সবাই বাস থেকে নামতে নারাজ তারকিছু সময় পর দেখা মিলল আমাদের বাসের সুপারভাইজার সাহেবের তিনি অন্য একটি বাস নিয়ে এসে বললেন ১২.৩০ এর গাড়ির যাত্রীরা এই গাড়িতে উঠুন যাত্রীগনের রক্তচক্ষু করিয়া অঝরে তাকে গালালাল দিতে থাকলেন, অতপর বৃষ্টতে আবার ভিজে আমরা সকলে অন্য বাসে এসে যাত্রা শুরু করলাম । এত কষ্টর পরও ঘরে ফেরার আনন্দটাও কম না ।
এক কথায় আনন্দের কাছে কষ্টটা কিছুই না ।