কনফিউশন বা মানসিক দ্বিধা-দন্দ আমার জীবনে কখনোই তেমন একটা স্থান পায়নি। খুব ছোটো থেকেই যখন খেলার মাঠে গেলে অপশন থাকলে সবসময়ই আমি খেলার জন্য ক্রিকেটকেই বেছে নিতাম। এখনও তাই। কারন খেলা হিসেবে এটিই বেশি প্রিয় এবং এই খেলাটাই একটু ভালো পারি। যদিও আমি কোনো খেলাই ভালো খেলতে পারিনা (দুধ ভাত আরকি :-D )। পড়াশোনার বেপারে! সেখানেও কোনো কনফিউশন ছিল না। ক্লাস এইট পর্যন্ত তো পড়াশোনা
গত্বাধা ছিল। এখানে কোনো অপশনের বালাই ছিল না। যদিও ছোটো মামার ইচ্ছায় আমি এই সময় আমার পুরোনো স্কুল 'মধুসুদন হাই স্কুল' ছেড়ে 'আল-আমিন একাডেমি'তে ভর্তি হই। ওইটা আমার জীবনের একটা টার্নি পয়েন্ট ছিল। যখন ক্লাস নাইনে উঠলাম তখন প্রথম পড়াশোনায় অপশন আসল। ৩টি বিভাগ থেকে যেকোনো একটি বিভাগকে বাছাই করে নেয়ার। অনেকেই সাইন্সকেই বেছে ছিল বিভাগ নির্বাচনি পরীক্ষায়। অনেকেই পেলেও কেউ
কেউ পায়নি। আমি বিনা দ্বিধায় ওখানে 'ব্যবসায় শিক্ষা' লিখেছিলাম। কারন একটাই আমার কাছে এই বিভাগটাই সবচাইতে সহজ লেগেছিল। পরবর্তীতে মনে হয়েছিল সিদ্ধান্ত ভূল নেইনি। স্কুল শেষ করে কলেজে ভর্তি হব। কিছু না বুঝেই অনেকের দেখাদেখি ভর্তি ফর্মে ৫ম ও ৬ষ্ঠ বিষয় হিসেবে যথাক্রমে 'কম্পিউটার শিক্ষা' ও 'কৃষি শিক্ষা' লিখেছিলাম পরবর্তীতে শাহাদাত্ মামা (২০০১ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর
থেকে তিনি ছিলেন মূলত আমার লিগ্যাল গার্ডিয়ান) আমাকে প্রিন্সিপালের কাছে নিয়ে গেলে তিনি 'কৃষি শিক্ষা' কেটে সেখানে 'পরিসংখ্যান' বসিয়ে দেন। পরবর্তীতে সাজ্জাদ ভাই 'পরিসংখ্যান' ঠিক রেখে 'কম্পিউটার শিক্ষা' কেটে আবার 'কৃষি শিক্ষা' বসিয়ে দেন। কোনো দ্বিধা ছাড়াই তা মেনে নিয়ে ছিলাম। ওই সিদ্ধান্তটাও সঠিকই ছিল বলে এখনও মনে করি। কলেজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পা রাখলাম। ভর্তি
পরীক্ষায় রেজাল্ট মোটামুটি হলো তাতেই ২৬তম হলাম। 'হিসাববিজ্ঞান' আমার প্রিয় বিষয় তাই কোনো দ্বিধা ছাড়াই ফর্মে বিভাগ হিসেবে 'হিসাববিজ্ঞান' লিখলাম। যদিও মামার ইচ্ছা ছিল আমি 'ইংরেজী' বিভাগে ভর্তি হই। আমার সিদ্ধান্তে আমি অটল ছিলাম। এইতো কিছুদিন আগে অনার্সের শেষ পরীক্ষাটা দিলাম। পৃথিবীটা যেন হঠাত্ করেই যেন অনেক বড় হয়ে গেল। ১৯৯৫ থেকে ২০১৫ এই দীর্ঘ সময়ে পড়াশোনা জীবনে কোনো
কনফিউশনের চিহ্নই ছিল না। কিন্তু আজ ভবিষ্যতের জীবনে করনীয় সম্পর্কে সিন্ধান্ত নিয়ে চরম কনফিউশন বা দ্বিধা-দন্দে আছি....