অতীতের পাক-ভারত যুদ্ধগুলোতে নাকি সবসময় ভারত জিতেছে! কিন্তু প্রকৃত ইতিহাস কী? উদাহরণস্বরূপ অতীতে সংঘটিত পাক-ভারত যুদ্ধের কয়েকটির মূল ইতিহাস তুলে ধরছি-
১) ১৯৪৮ সালের কাশ্মীর যুদ্ধঃ কাশ্মীরের একটি বড় অংশ ভারতের হাতে রয়েছে, একারণে অনেকে ধারণা করে যে, তখন বোধহয় ভারত জিতেছিল। কিন্তু মূল ঘটনা হলো, তখন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান ছিল ‘ডগলাস গ্রেসি’ নামক এক ব্রিটিশ। ব্রিটিশরা চেয়েছিল ভারত কাশ্মীর দখল করে নিক, আর ভারত থেকে ইতিমধ্যেই কাশ্মীরে সেনা পাঠানো শুরু হয়ে গিয়েছিল। জিন্নাহ তখন ডগলাস গ্রেসিকে নির্দেশ দেয় কাশ্মীরে পাকিস্তানী সেনা পাঠিয়ে প্রতিরোধ গড়তে, কিন্তু ব্রিটিশদের আজ্ঞাবাহী ডগলাস গ্রেসি তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়।
তখন জিন্নাহ পাঠান উপজাতিদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে যুদ্ধ করতে প্রেরণ করেন। ওদিকে সময়মতো পাকিস্তানী সেনাবাহিনী না পাঠানোয় ততোক্ষণে ভারতীয় সেনাবাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরের দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে, কিন্তু তারপরও পাঠান মুজাহিদরা প্রতিরোধ রচনা করে কাশ্মীরের একটি অংশ পাকিস্তানের দখলে আনতে সমর্থ হয়। ঐ অংশটিকেই হলো আজকের পাকিস্তান শাসিত ‘আজাদ কাশ্মীর’। (https://goo.gl/aKyRyD)
২) ৬৫’র যুদ্ধঃ ৬৫’র যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ সত্ত্বেও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী দখল করে নিয়েছিল কাশ্মীরের আখনুর ও জারিয়ান। তখন সিআইএ আইয়ুব খানকে পরামর্শ দেয় নিয়মিত সেনাবাহিনী কাশ্মীরের শ্রীনগরে পাঠিয়ে দিতে। পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি অনুযায়ী ওই সময় পাকিস্তানের সমরনীতি পরিচালনার দায়িত্ব অর্পিত ছিল মার্কিন সমর বিভাগের হাতে।
কিন্তু সিআইএ’র ইচ্ছা ছিল আইয়ুব খানকে সরিয়ে আমেরিকার দালাল পশ্চিম পাকিস্তানের গভর্নর কালাবাগের আমীর মুহাম্মদ খানকে ক্ষমতায় বসানো। তাই সিআইএ পাল্টা চালটি চাললো ভারতকে খেমকারান সেক্টর অতিক্রম করে লাহোর আক্রমণের পরামর্শ দিয়ে, যেন পাকিস্তান হেরে গেলে আইয়ুব খানের পতন ঘটে। মার্কিনিদের বিশ্বাসঘাতকতায় আইয়ুব খান পড়লো মহাসঙ্কটে। কারণ নিয়মিত সেনাবাহিনী কাশ্মীরে পাঠিয়ে দেয়ায় খেমকারান সেক্টর ছিল অরক্ষিত, যেখান থেকে ভারত ট্যাঙ্ক নিয়ে লাহোরের দিকে এগিয়ে আসছে। তখন ইপিআরের বাঙালি সৈনিকেরা ভারতীয় ট্যাঙ্ক ঠেকিয়ে দেয় বুকে মাইন বেঁধে ট্যাঙ্কের নিচে ঝাপিয়ে পড়ে। বাঙালি মুসলমানদের বীরত্বে ভারতের ৬০০ ট্যাঙ্ক লাহোরে পৌঁছানোর আগেই বিধ্বস্ত হয়।
ওদিকে কাশ্মীরের শ্রীনগর-জম্মু দখল করতে প্রস্তুত পাকিস্তান সেনাবাহিনী, ভারতের হার সুনিশ্চিত। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী তার ওস্তাদ রাশিয়ার কাছে গিয়ে হাতে-পায়ে ধরলো যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিতে। রাশিয়ার চাপে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত হয় আইয়ুব খান, কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো হলো অসন্তুষ্ট। কারণ জেতা যুদ্ধ থেকে ফিরে আসছে পাকিস্তান। (https://goo.gl/9mqQlQ)
রাশিয়ার তাসখন্দে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে পাঠানো হয় লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর সাথে চুক্তি করতে। হ্যান্ডশেক করার সময় সে রাগান্বিতভাবে শাস্ত্রীর হাত ধরে জোরে ঝাঁকি দিয়েছিল। তাসখন্দ চুক্তির পরদিনই (জানুয়ারি ১১, ১৯৬৬) শাস্ত্রী সেখানেই হার্টফেল করে মারা যায়। উইকিপিডিয়া অনুযায়ী, ভারত থেকে তাসখন্দে যাওয়ার সময় শাস্ত্রী ছিল সম্পূর্ণ সুস্থ। এতেই বোঝা যায় যে, তাসখন্দে শাস্ত্রীর মাথা কতোটা হেট হয়েছিল পাকিস্তানের কাছে নিজদেশের হার ঠেকাতে। (https://goo.gl/LwytWP)
৩) কারগিল যুদ্ধঃ পারভেজ মোশাররফের ইন দ্য লাইন অফ ফায়ার বইতে রয়েছে ““ভারতের স্বীকৃতি অনুসারে এ যুদ্ধে প্রায় ৬০০ জন নিহত এবং ১৫০০ লোক আহত হয়। তবে আমাদের কাছে আসা তথ্য অনুসারে প্রকৃত হতাহত সংখ্যা ভারতের স্বীকৃত হতাহতের অন্তত দ্বিগুন হবে। অপ্রত্যাশিতভাবে নিহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ভারতের কফিনের সংকট দেখা দেয়।”
এই যুদ্ধে যখন ভারতের হার সুনিশ্চিত, তখনই ক্লিনটনের নির্দেশে যুদ্ধ বন্ধ করে দেয় আমেরিকার দালাল নওয়াজ শরীফ। নওয়াজের এ আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে বিক্ষোভে ফেটে পরে সেনাবাহিনী ও মুজাহিদিনরা। যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে পারভেজ মোশাররফ এই নওয়াজ শরীফকে সরিয়ে পাকিস্তানের ক্ষমতা হাতে নিয়েছিলেন।
কারগিল যুদ্ধে কুকুরের মতো মরার পরও ভারতীয় সৈন্যরা সেই দিনটি ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করে। কি হাস্যকর তাই না! (https://goo.gl/7bvxUA)
অর্থাৎ প্রত্যেকটি যুদ্ধেই পাকিস্তানের সৈনিকেরা বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিল, কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর দুর্বলতা ও পিছু হটার কারণে চূড়ান্ত বিজয় বারবার তাদের হাতছাড়া হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতীয় নেড়ি কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করে কৃতিত্ব নেয়ার সুযোগ পেয়েছে। আজাদ কাশ্মীরের ইতিহাস প্রমাণ করে যে, ভারতের সেনাবাহিনীকে ঠেকিয়ে দেয়ার ক্ষমতা পাকিস্তানের সিভিলিয়ানরাও রাখে।
Credit to amardesh.
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




