আমাদের বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে স্নাতক/ স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য প্রতিবছরই অনেকেই বিদেশ গমন করে থাকে। এক্ষেত্রে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেকেরই পছন্দের তালিকায় প্রথমে থাকে। এইসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয় ধাপ এবং শর্তগুলো একেকরকম।
আমি খুব সম্প্রতি আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সকল শর্ত পূরন করেছি। সেই অভিজ্ঞতা জানালে যদি কেও উপকৃত হয় তাই এই লেখাটা লিখছি। যেহেতু ভর্তি প্রক্রিয়াতে অনেক গুলো ধাপ আছে তাই আমি বিভিন্ন পর্বে ভর্তির প্রতিটি শর্ত এবং ধাপ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
একজন ছাত্র/ছাত্রী তার স্নাতক/স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হওয়ার পর ভর্তির আবেদন শুরু করবে ধরে নিয়েই ধাপ গুলো বর্ণনা করছি।
১। Graduate Records Examination (GRE) এবং TOEFL/IELTS পরীক্ষা দিয়ে নেয়া।
২। নিজের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্রান্সক্রিপ্ট এর কয়েকটি কপি সংগ্রহ করে রাখা। ক্লাস ভিত্তিক ফলাফল হলে, WES থেকে ফলাফল মূল্যায়ন করিয়ে নেয়া যেতে পারে।
৩। আবেদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় খোঁজা।
৪। আবেদন করা।
৫। আবেদন এর পর ভর্তি সাপেক্ষে আভিবাসন সংক্রান্ত কাগজ পত্র তৈরী করা।
পরবর্তী বিভিন্ন পর্বে সবগুলো ধাপ নিয়ে একে একে আলোচনা করবো। তার আগে আমাদের আরো কিছু জরুরী বিষয় আগে থেকে জেনে নেয়া প্রয়োজন। তাহলে আমাদের কোন ধাপে কি কি করতে হবে তার সম্পর্কে কিছু আগাম ধারনা পাওয়া সম্ভব।
এইসব জরুরী বিষয়গুলোর মাঝে প্রথমেই জেনে নেয়া যাক মাঝারী থেকে ভালো মানের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তির প্রয়োজনীয় শর্তগুলো।
১। স্নাতক এ কমপক্ষে সিজিপিএ ৩.০ (৪.0 এর মধ্যে)।
২। Graduate Records Examination (GRE) : এই পরীক্ষার কোনো সর্বনিম্ন নম্বর উল্লেখ থাকে না। তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের website এ নির্দিষ্ট একটি নম্বর সুপারিশ করে।
৩। TOEFL অথবা IELTS। এই পরীক্ষাটি আমাদের মতো যেসব দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের মাতৃভাষা ইংরেজী নয়, তাদের অবশ্যই দিতে হবে। TOEFL সকল বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহন করে কিন্তু IELTS এখনো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গৃহীত হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে TOEFL এবং IELTS এর সর্বনিম্ন নম্বর বিভিন্ন রকম। তবে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় TOEFL এর ক্ষেত্রে ৯০ বা তার বেশি (১২০ এর মধ্যে) এবং IELTS এর ক্ষেত্র ৬.৫ বা তার বেশী (৯ এর মধ্যে) গ্রহন করে।
৪। (বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে) ২ থেকে ৩ টি সুপারিশপত্র (recommendation letter)।
৫। Statement of Purpose (SOP) / Letter of Motivation। ১-২ পৃষ্ঠার একটি SOP ।
৬। জীবন বৃত্তান্ত।
এগুলো প্রধান শর্ত। এছাড়াও যেসব শর্ত উল্লেখ থাকে না, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পর্ষদ (Graduate Admission Committee) যেসব একজন ছাত্র/ছাত্রীর ভর্তির আবেদনে খুঁজে থাকে সেগুলো হলোঃ.
১। ছাত্র/ছাত্রীর গবেষনার পূর্ব অভিজ্ঞতা। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা যেহেতু গবেষনাভিত্তিক, তাই গবেষনার পূর্ব অভিজ্ঞতা অন্যতম প্রধান শর্ত, যদিও বেশীরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাপারে উল্লেখ থাকে নাহ।
২। প্রকাশিত/প্রকাশিতব্য গবেষনাপত্র।
(চলবে......।)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৮:৪৬