ঝুনঝুনিটা ঝুনঝুনাত, হাসতো খোকা খুব
খিলখিলাতো হাতটি নেড়ে, হাসতো তার চিবুক
ঘর পোড়ালে, চাল পোড়ালে নাইতো মনে দুখ,
ঝুনঝুনিটাও পুড়িয়ে দিলে! আমার খোকার সুখ!
হাসছো বুঝি! শোনো তবে, ছিলাম তো বেশ সুখে,
বাড়ি আমার ছোট ছিলো, শান্তি ছিলো বুকে।
দোলনা ছিলো খোকামনির প্রিয় সাদাসিধে,
কাঁদতো নাকো দোলনাতে সে, পেলেও পেটে খিদে।
খোকার বাবা দিয়েছিলো রঙিন হাদি পিনোন,
ঘরের কোণে রেখেছিলাম যত্নে গড়া বুনোন।
খোকার ছিল লাল জামাটা হাতায় সুতোর কাজ,
কষ্টে জমা টাকায় কেনা, কোথায় পাবো আজ?
বাঁশকুড়ুলের ঝোলটা ছিল, ঝালটাও ছিলো ঠিক,
সকালবেলা রান্না করা পুবের ঘরের দিক।
শখের হাড়ি, বাঁশের ঝূড়ি, নকশী কাঁথা দুখান
পায়নি রেহাই লালি গরুর, ঘরের ধারের বাথান।
পাহাড় আমার, বাড়ি আমার, সবুজ কুঁড়েঘর,
এসেছিলে তোমরা যখন ভাবিনিতো পর।
কিনলে পাহাড়, ভাঙলে পাহাড়, দখল নিলে জমি
ঝর্ণা-নদীর ভাগও নিলে, নাওনি কিছু কম-ই।
দিচ্ছি কিছু কমতো নয়, ছিলো কুটিরখানা,
আগুন দিলে ঘর পোড়ালে, শুনলে নাতো মানা।
অসির জোরে, মসির জোরে করছো সবই গ্রাস,
অত্যাচারী, ভাবছো বুঝি, ছাড়বো কবে শ্বাস?
শষ্য নিলে, পাহাড় নিলে, এই বেলাতে ঘর,
আমার খোকার ঝুনঝুনিটার তাই তোমাদের ডর।
ঝুনঝুনিটা বাজবে যেদিন অনেক কঠিন তালে,
ভেবোনাকো রেহাই পাবে, আমার খোকার কালে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩১