somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলুন পূজা করি!

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনি বাসে বসে আছেন, মোটামোটি ভিড়। মধ্যবয়সী একজন মহিলা উঠলেন। পরিচ্ছদ দেখেই বোঝা যায় মোটামোটি স্বচ্ছল পরিবারের তিনি। বাসে চড়ে যে খুব একটা অভ্যস্তত নন ভিড়ের অনিচ্ছাকৃত ইশৎ ধাক্কাধাক্কিতে তার মুখের বিরক্তি ভাব দেখে তা খুব সহজেই ধরা যায়।
আপনি চিন্তা করছেন আপনার মাও তো এই বয়েসী। ওনার যায়গায় আপনার মাও তো থাকতে পারতেন। সুন্দর করে "আন্টি" বলে ডেকে নিজের সীট টা ছেড়ে দিলেন, আন্টি বসলেন, স্বস্তি পেলেন আর আপনি মনে মনে অপার্থিব এক শান্তি পেলেন!
একটু শান্ত হোন! এ এতো সহজেই মহাপুরুষ হওয়া যায় না!
এ্যাত্তো সহজ কিন্তু না। ভিড়ের মাঝেই এতোক্ষণ আপনার সীট ধরে একজন ষাটোর্ধ মহিলা দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রায় শুরু থেকেই। আপনি খেয়ালই করেন নি, কিম্বা কিঞ্চিৎ খেয়াল করলেও তার কষ্ট আপনাকে ছুঁয়ে যায় নি! মনে হয়নি, নিজের সীট টা ছেড়ে দিই তাকে বসার জন্যি।
কেন জানেন?
কারন হল- তার পরনে থাকা বহুবছর পুরোনো প্রিন্টের সস্তা ময়লা শারী, তার এক হাতে জড়ানো অসুন্দর ব্যাগ, গা থেকে কেনা পারফিউমের গন্ধ না আসা অথবা তার শুষ্কপ্রায় কর্মক্লান্ত মুখ।
সারাদিন জোগাল খেটে এখন হয়তো বাড়ি যাচ্ছেন।
শক্তপোক্ত মহিলা, সারাদিন ইট ভাঙেন__আমাদের চেয়ে বেশি শারিরিক সামর্থ্য রাখেন তিনি -অবচেতন মনে এই ভাবনাও কারন হতে পারে।
আমরা প্রায় বিশ্বাস করে ফেলেছি -রিক্সা টানতে রিক্সাওয়ার কোন কষ্টই হয় না অথবা ঘর্মাক্ত জামা যার তার শরীরে কষ্ট লাগে না!
এর মূল কারন কিন্তু আরেকটা,
সাম্রাজ্যবাদী উপনিবেশকরা আমাদের শুধু শোষনই করে নিয়েই যায় নি। রেললাইনের মত কিছুকিছু জিনিস দিয়েও গেছে।
আমাদের কলোনিয়াল মেন্টালিটি (ঔপনিবেশিক মানসিকতা) তার মধ্যে অন্যতম। ব্রিটিশরা নিজেদের স্বার্থে আমাদের চাষা-বাঙাল দাদা-পরদাদা'দের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে আমরা 'সুটেড বুটেড লর্ড' -এবার আমাদের পূজা করো তোমরা ব্লাডি পিপলেরা!
ঔপনিবেশিক রা চলে গেছে, দাদা-পরদাদা'রা ও মরে গেছেন। কিন্তু আমাদের ডিএনএ তে দিয়ে গেছেন - সেই "সাহেব পূজো'ইজম"!
আমরা খুব সহজেই ট্যাগিং করে দিতে পছন্দ করি।
প্রকাশ্য সাহেব ইনফ্লুয়েন্স যার আছে বা যেটা দেখানো হচ্ছে, আগেই তাকে আমরা চুজ করে নিই!!!
সাহেবকে কিন্তু আমি ছোট করছি না। কিন্তু তার জন্যি জীর্ণ পোষাকের বৃদ্ধা কে দেখবো না বা তাকে প্রাপ্য সম্মান দেব না এটা কিন্তু ঠিক নয়.......বড্ড অবিচারী মনোভাব আর চেতনা আমাদের।
আমার লাষ্ট জব ছিল একটা বহুজাতিক ইউরোপিয়ান কোম্পানিতে বাংলাদেশে'র মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে। বস শালা মাঝেমইধ্যেই টি-শার্ট পরে অফিসে চলে আসতো আবার কখনো কুঁচকানো
শার্ট পরে মিটিং এ বসে যেত!
ওরা কিন্তু ঠিকি প্রাধান্য দিয়েছে মানুষ আর তার কর্মকে। ওরা শত বছর এগিয়ে গেছে আমাদের থেকে। পৃথিবী' ধ্বংস হয়ে গেলে চাঁদে কিভাবে গিয়ে থাকবে তার ফন্দি আঁটছে! আর আমরা এখনো গরমের দিনে স্যুট পরে এসি ছেড়ে অফিসের ডেস্কে বসে বসে ভাবি.........আহ স্যুট জিনিসটা বড়ই চমৎকার, অতীব সৌন্দর্য, জীবনের স্বার্থকতা!
ভায়েরা আমার, বইনেরা তোমার -
এইসব হাঙ্কিপাঙ্কি বাদ্দিয়া চলেন মানুষে বিশ্বাসী হই, কর্মে বিশ্বাসী হই।
দেশটা সুন্দর হয়ে যাবে, সাথে আমরাও!
মনের সৌন্দর্যই তো আসল সৌন্দর্য! তাই না?
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×