somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অশোধিত ভালবাসা

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কল্পক এখন সম্পূর্ণ শান্ত। শান্ত না থেকেই বা আর উপায় কি। ২ দিন আগেই যে তার মস্তিষ্কের “ভালবাসা” অংশের কাটা ছেড়া করা হয়েছে। আর তা করার পর তার স্ত্রী ছবি, জানিয়ে দিয়েছে এখন থেকে অনুভূতিহীন এক রক্ত মাংসের মানুষ ছারা কল্পক আর কিছুই নয়। চরম সত্যটাকে মেনে নিতে হবেই কল্পকের। সে আর তার ভালবাসার মানুষটাকে ভালবাসতে পারবেনা। ছবিকে নিয়ে হাসবেনা, ছবির জন্যে কাদবেনা। এমনকি ছবিকে ঘেন্না ও করতে পারবেনা। ছবি খুব গুছিয়ে কল্পককে এই জীবনটা উপহার দিয়ে গেল। কারন ছবি কল্পককে ভালবাসেনা।
ছবি আর কল্পকের ছাত্র জীবন এখন ও শেষ হইনি। দুজন দুজন কে ভালবেসে পরিবারের কাছে বিয়ের কথা বলে। আর পরিবার ও বিয়ে দিয়ে দেয়। ২ বছর হল তাদের বিয়ের। সুখে আছে তারা। তবে ঝগড়া কম হয়না দুজনার। ঝগড়া তো হয় ই জীবনে, তাই বলে কি কল্পক ডিভোর্স চাইবে?
কল্পক ছবিকে কনদিন ও সন্দেহ করে নি। তবে কল্পকের এই ধারনা ও শেষ পর্যন্ত মিথ্যা হয়। ১ বছর আগে কল্পক ছবির সেল ফোনে দেখতে পায়, ছবি একটি নাম্বার এ বার বার ফোন দিয়েছে। কল্পক জানতে চায় এই নাম্বার টা কার? ছবি বলে জাহিদের। জাহিদ ছবির অতীত। কল্পক ছবির অতীত জেনেই ছবিকে ভালবেসেছে আর বিএ ও করেছে। কল্পক কষ্ট পায়। ছবি কাঁদে আর বলে জাহিদ ই ওকে ফোন দেয়। ছবি আর জাহিদের কেন ব্রেকআপ ঘটে তাই নিয়েই তাদের তাদের এই কথা বলা। কল্পক বলে তোমাদের ব্রেক আপের কারন ছিল ছবির প্রতি জাহিদের কু প্রস্তাব। তবে আবার কি সেশ কথা? ছবি বুঝায় তবু ও তাদের কিছু কথা বাকি ছিল। ছবি কল্পক এ এটাও জানায় যে তারা দুজন এরি মাঝে দেখা করে। রিক্সাতে পাশা পাশি বসে তারা। ঈদের ছুটিতে যখন ছবি নিজ গ্রামে যায় তখন জাহিদের ফোন পেয়ে ছবি তার বাড়ির উঠনে এসে দারায়, যাতে জাহিদ ছবিকে দেখতে পায়। কল্পক নিজেকে বুঝায়। মাফ করে দেয় ছবিকে। কল্পক জাহিদের সাথে ও কথা বলে। জাহিদ কথা দেয় আর এমন হবেনা। তাদের সব কথা শেষ হয়েছে। কল্পক এইকথা তার জীবনের সবচেয়ে ভাল দুই বন্ধু তার মা আর কল্পকের আর এক বন্ধু গাফফার কে ও জানায়না। নিজের কষ্ট নিজের কাছে লুকয়ে রাখে। জানায়না এই ভেবে ও যে তাদের কাছে ছবি ছোট হয়ে যাবে। সবঠিক হয়ে যায়। তারা আবার জীবন শুরু করে। তবে কল্পক ছবিকে বলে তুমি কি জাহিদ কে ভালবাস? তুমি জাহিদের কাছে কি জেতে চাও? জেতে চাইলে আমি তোমাদের বিয়ের ব্যাবস্থা করে দিব। কিচ্ছু মনে করবোনা। তবে ছবি স্পষ্ট জানিয়ে দেয় না। ছবি কল্পক কেই ভালবাসে। জাহিদের প্রতি তার কোন ভালবাসা নেই। কল্পক নিশ্চিন্ত হয়। ৬-৭ মাস পর কল্পক আর ছবির ঝগড়া হয়। সাধারন ঝগড়া যা কিনা পৃথিবীর সব বিবাহিতদের ই হয়। কল্পক অভিমান করে ছবির সাথে ১ মাস কথা না বলে থাকে। কল্পক যখন নরম হয়ে ছবির সাথে আবার এক হতে যাচ্ছিল তখন কল্পক আবার আবিষ্কার করে ছবি জাহিদের সাথে আবার মোবাইলে কথা আর ম্যাসেজ পাঠিয়েছে। কল্পক আরও কষ্ট পায়। কল্পক জানতে চায় কেন আবার ছবি এই একি কাজ করল। ছবি জানায় কল্পক ১ মাস কথা বলেনি বলে রাগে এই কাজ করেছে ছবি। কল্পক আবার ছবিকে মাফ করে দেয়। মাফ না করেই বা কি করবে ছবি যে এবার কোরআন ছুয়ে শপথ করে এমন কাজ আর সে কখনো করবেনা। তা ছারাও ডিভোর্স হয়ে গেলে কল্পকের পরিবার আর কল্পক নিজ গ্রামে মুখ দেখাতে পারবেনা। কল্পকের ৮ চাচা কল্পকের মাকে দুষবে যে ছাত্র অবস্থাতে বিয়েতে রাজি হতে কে বলেছিল আপনাকে? তার মা বাবা কে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। কল্পক সব কিছু চিন্তা করে। কল্পক ছবিকে প্রচণ্ড ভালবাসে। ছবির চখের পানি কল্পক সহ্য করতে না পেরে আবার ছবিকে মাফ করে দেয়। এবার ও কল্পক তার কষ্টের কথা নিজের মধ্যে লুকায় রাখে।
কল্পক ও ছবি দুজনি একই মফস্বল শহরে বেরে ওঠা তরুন দুটি প্রান। কল্পক অগোছালো একটি ছেলে। পড়াশোনা বোধহয় তার জন্যে নয় এমনটি তার ভাবনা। তাই ছাত্র হিসেবে ও সে পেছনের সারির। বাবা মার অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল থাকার কারনে সে ঢাকার নামকরা এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। খুব সাধারন আর সততা এই দুই হল কল্পকের একমাত্র গুন। স্বপ্নের মধ্যে থাকতে পছন্দ করে কল্পক। প্রচণ্ড আবেগ তাকে আরও স্বপ্নের দুনিয়ায় নিয়ে যায়। বাস্তবতার ধার ধারেনা কল্পক। জীবন নিয়ে তার তেমন কোন ভাবনা নেই।
প্রচণ্ড রকম মেধাবী এক ছাত্রী ছবি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়াশোনা করছে সে। সরকারি এবং বেসরকারি অনেক বৃত্তি পেয়ে ছবি তার ছাত্র জীবন স্মরণীয় করছে নিওমিত। বাস্তবতা শব্দটি যেন ছবির জন্যেই তৈরি হয়েছে। তিন ভাইএর মাঝে ছবি হল সবচেয়ে ছোট, আর তাই আদরটাও অনেক বেশি। ছবি সবকিছুই যুক্তি দিয়ে বুঝতে ও বোঝাতে চায়। কল্পকের চোখে ছবির কোন আবেগ নেই। ছবির ভাল লাগে ঘুরতে আর নিজেকে সফলতার শীর্ষে দেখার জন্যে পড়াশোনায় নিজেকে নিয়জিত রাখতে। সম্পূর্ণ উদাহারন দেয়ার মত একটি মেয়ে ছবি। রান্না থেকে সংসারের সব কাজেই ছবির তুলনা হয়না। দেখতে পুতুলের মত সুন্দর ছবি।
খুব ছোটো একটি জেলায় দুজনের বাড়ি হওয়ায় দুজন দুজন কে চিনত। তা ছারাও ছবি আর কল্পকের বাবারা হল বন্ধু। ছেলে মেয়েদের সরকারী স্কুল দুটি পাশাপাশি হওয়া ও একই কোচিং সেন্টারে পরার পরে ও কল্পক ও ছবির কখনই কথা হইনি। কল্পকের মা ছবির স্কুলের শিক্ষক হওয়ায় যখনই তিনি কল্পককে পড়াশোনার জন্যে বকতেন তখনি ভাল ছাত্রিদের উদাহারনের লেশ ধরে কল্পক ছবি নামটি শুনত। কল্পক স্কুল জীবনে ভালবাসা কি তাই বুঝতনা, আর তাই ছবির ব্যাপারে কল্পকের কোন আগ্রহ ও ছিলনা। আর কল্পকের প্রতি ছবির আগ্রহের তো কোন প্রশ্নই আসেনা। কলেজে পরার জন্যে যখন কল্পক ঢাকায় এসে কারি কারি টাকা ঢেলে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করে তখন কাকতালীয় ভাবেই ছবি সেই কলেজের মেয়েদের শাখায় সম্পূর্ণ বিনা বেতনে পরার সুযোগ পায়। একজায়গায় ছেলেদের ক্লাস হত আর মেয়েদের হত অন্য জায়গায়। তাই এখনেও কল্পক আর ছবির ভালবাসার কোন সম্ভাবনাই ছিলনা। আরেকটি কারন ও ছিল ভালবাসা সৃষ্টি না হওার পেছনে, আর তা হল কলেজ জীবনের কিছুটা আগ থেকেই ছবির সম্পর্ক হয় তারি বাসার সামনের বাড়ির ছেলে জাহিদের সাথে। ছোট জেলা হওয়ায় কোন কথাই গোপন থাকেনা। কল্পকের বন্ধু মহলের গরম খবর হিসেবে মেধাবী ছাত্রী ছবির সাথে জাহিদের সম্পরকের কথা কল্পক শোনে। এই জাহিদ কে কল্পক তা জানত না আর তার কোন আগ্রহ ছিলনা। কারন কল্পকের অন্য বন্ধুরা যখন স্কুল ছুটির পর মেয়েদের দেখার জন্যে মেয়েদের স্কুল গেট এ অপেক্ষা করত, তখন কল্পক স্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলার আয়োজন করাতেই আনন্দ পেত। ছবির সম্পরকের কথা সুন্তে পেয়ে কল্পকের কিছুই হলনা বরং কল্পক তার নিজের মনে ভেবে নিল যে নিশ্চই জাহিদ ছবির থেকে ও ভাল ছাত্র। কারন কল্পকের ধারনা ছিল যে ভাল ছাত্রী ভাল ছাত্র ছাড়া কেন কোন সম্পর্কে জড়াবে। এই ছিল কল্পকের আদর্শগত বকা ভাবনা।
কলেজের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি আসার সময় কল্পক ট্রেন থেকে নামতে দেখে ছবিকে। আর সেইদিনি কল্পক প্রথমবারের মত ছবিকে অনেক্ষন ধরে দেখে। তার ভাল লাগে দেখতে। তার ছবির হাত ধরতে ইচ্ছে করে। প্রথমবারের মতন কল্পক কোন মেয়েকে নিয়ে ভাবে। তার ভাবতে ভাল লাগে। তবে পরক্ষনেই সে চেতনা ফিরে পায় আর সে মনে করে ছবির তো জাহিদ আছে। সে কিছুটা কষ্ট পায়। তবে রাত পেরতেই সেই কষ্ট সে ভুলে যায়। তবে ছবির জন্যে তার ভালোলাগাটা থেকেই যায়।
এরপর কেটে যায় ২ বছর। তবে ছবি নামটি ছাড়া কল্পকের আর কিছুই মনে থাকেনা। এই ২ বছরে ছবির সাথে কল্পকের ১-২ বার দেখা হয় বাস স্ট্যান্ডে। কল্পক তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম সেমিস্টারের ছাত্র। ছেলেমেয়েদের একসাথে ক্লাস করা, ছেলে মেয়েদের বন্ধুত্ব তাকে অবাক করে দেয়। নতুন পরিবেশ তার ভাল লাগেনা। তবে এ সব দেখে তার ভালবাসতে ইচ্ছে করে। প্রচণ্ড রকম ভালবাসার প্রতি আসক্ত কল্পক প্রকিত ভালবাসা খোঁজে। প্রথম দর্শনে কোন মেয়েকে ভাল লাগলেও এক্তু এগুতেই কল্পক বুঝতে পারে এই ভালবাসা কৃত্রিম। তবে কল্পক নিজেকে আবিষ্কার করে নতুন রুপে। সে বুঝতে পারে যে প্রকিত ভালবাসার খোঁজ যদি সে একবার পায় তবে সেই ভালবাসা সে ধরে রাখবে নিজের সবকিছু দিয়ে।
এভাবেই প্রকিত ভালবাসা খুঁজতে খুঁজতে কল্পক ফেইসবুকে অনেক আবেগের স্ট্যাটাস দায়। তবে কোন সারা পায়না। প্রতিদিনের মত কল্পক তার ফেইসবুক খোলে। সে দেখতে পায় একটি ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট। সে দেখে ছবি তাকে এই রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছে। কোন কারন ছারাই তার সরিরে তড়িৎ প্রবাহিত হয় এবং সে সেই রিকুয়েস্ট গ্রহন করে। সে অপেক্ষায় থাকে কখন ছবির সাথে তার চ্যাট হবে। অবশেষে একদিন পর ছবি আর কল্পকের প্রথম কথা হয় চ্যাটের মাধ্যমে। প্রতিদিন চ্যাট করতে করতে সে জানতে পারে ছবির সাথে জাহিদের ব্রেক আপের কথা। সে সেলফিসের মত খুশি হয়। সে ছবির মোবাইল নাম্বার চায়। ছবি জানায় তার কোন সেল ফোন নেই। ছবি তখন তার ভাইএর বাসায় থেকে পড়াশোনা করত। মাঝে মাঝে ভাইএর নাম্বার থেকে ছবি কল্পক কে ফোন করত। এভাবে কথা বলতে বলতে একদিন কল্পক ছবিকে তার ভালবাসার কথা বলে। ছবি কিছুই বলেনা। ছবি বলে আমার আগে রিলেশন থাকার পরে ও কল্পক কেন ছবিকে ভালবাসে। কল্পকের সহজ উত্তর, “ আমি জানিনা”। সে সত্তিকার অর্থেই ছবিকে প্রচণ্ড ভালবেসে ফেলে আর কথার মাঝে ছবিকে তা বোঝাতে চায়। ছবি অবশেষে কল্পকের প্রস্তাবে রাজি হয় এবং প্রথম দেখা করার দিনে ছবি বলে কল্পককে দেখে নয় বরং কল্পকের পরিবার দেখে ছবি এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। কল্পক বুঝতে পারে ছবি তাকে এখন ও ভালবাসতে পারেনাই। তাই কল্পক মনে মনে ভাবে যে ছবিকে একদিন তাকে ভালবাসতেই হবে। নিজের জীবনটাকে পরিবর্তন করে কল্পক। ছবির পরিবার ছবির পূর্ব সম্পর্কের কথা জানতে পেরে ছবির মোবাইল ফোন কেরে নেয়। তাকে হলের পরিবর্তে ভাইএর বাসায় রেখে পড়াশোনা করাতে বাধ্য করে।ছবি মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরে। তবে কল্পক খুব ধিরে ধিরে ছবির পরিবার কে জানতে না দিয়ে ছবির সাথে সম্পর্ক চালাতে থাকে। ছবি যানায় জাহিদ ছেলে হিসেবে ভাল না। সে ছবিকে নয় বরং ছবির দেহকেই ভালবাসত। জাহিদের অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিল। ছবি জাহিদের এসব বুঝতে পারে আর জাহিদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাদের সম্পর্ক সেশ হয়ে যায়। তবে ছবি এও জানায় জাহিদ তার প্রথম ভালবাসা। এটা ভুলতে পারা কঠিন। কল্পক কথা দেয় যে সে একদিন ছবির প্রথম ভালবাসাকে ভুলতে বাধ্য করবে আর ছবি তা পরবর্তীতে কল্পককে বলে যে কল্পক তা পেরেছে। কল্পক তার মাকে সব জানায়। কল্পকের মা কল্পকের পক্ষেই থাকে আর কল্পক আর ছবির নতুন জীবনের ত্রিতিও পক্ষ হয়। ছবি ও কল্পকের মা এর এক বন্ধু হয়ে যায়। এভাবে কেটে যায় ২ বছর। ছবি ও কল্পকের ঝগড়া মেটাত কল্পকের মা। ছবি আর কল্পকের আনন্দের ভাগি হত কল্পকের মা। কল্পক চাইত ছবিকে বিয়ে করতে। কল্পকের যুক্তি ছিল এতে করে ছবির জীবন টাও নিশ্চিত হবে আর কল্পকের ও জীবন টা অনেক সুন্দর হবে। তবে দুজন ছাত্র অবস্থাতেই কি করে বিএ করবে। ছেলে ছাত্র এই অবস্থাতে কোন মেয়ের পরিবার বিএ দিতে চাইবেনা। কল্পকের মা ছবির পরিবারের কাছে প্রস্তাব দিলেন বিএর। ছবির পরিবার ও কল্পকের পরিবারের কথা ভেবে বিয়েতে রাজি হয়ে গেল। তবে ছবির কিছুটা আপত্তি থাকল যে আত তারাতারি বিএ না করে দুজন প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিএ করাতে তার ইচ্ছে। তবে কল্পক ছবিকে হারাতে পারে এ ভয় থেকে আর দুজনের জীবনটা সহজ করার জন্যে বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে ছবিকে রাজি করিয়ে বিএ করে ফেলল। কল্পক একটি ছোট বাসা নিল। ছবি হলে থেকেই পড়াশোনা করতে লাগল আর ছুটি পেলেই সে তার সংসার করতে কল্পকের বাসায় আসত। এভাবেই তাদের জীবন কাটতে লাগল। ছবি তার গুন দিয়ে শ্বশুর, শাশুরি ও ননদের মন জয় করল। তবে ছবির বিভিন্ন মতাদর্শ কল্পকের পরিবারের সাথে মিলতনা। কারন ছবিত সবকিছুই বাস্তবতা আর যুক্তি দিয়ে মেলাতে চায় আর কল্পকের পরিবার ও কল্পকের মত আবেগি। কল্পকের মা এতে কিছুই মনে করতনা বরং কল্পক কে বলত ছবির মত হতে। কল্পক সব কিছু মিলে সুখি ছিল। তবে কল্পক ছবির কাছ থেকে যে রকম মনোযোগ আর ভালবাসা চাইত ছবি টা বাস্তবতার দোহাই দিয়ে এরিয়ে যেত। এ নিয়ে কল্পক আর ছবির প্রায়ই ঝগড়া হত। বিএর পূর্বে ও ছবির কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হত কল্পক।
ছবি কে ২ বার মাফ করে দেয় কল্পক। ২য় বার মাফ করে দেয়ার ৫ মাসের মধ্যে কল্পক ছবির কথা বার্তায় পরিবর্তন খুজে পায়। কল্পক এবার সন্দেহ করে ছবিকে। ছবিকে না জানিয়ে ছবির মোবাইল ফোনের কল লিস্ট সে দেখে। দেখে বিগত ২৫ দিন ধরে ছবি একটি নাম্বার এ অসংখ্য বার কথা বলেছে। কল্পক আশ্চর্য হয় ছবি একদিনে সেই নাম্বার এ ৩১ টি ম্যাসেজ দিয়েছে। কল্পক প্রশ্ন করে ছবিকে। ছবির উত্তর জাহিদ!!!!
কল্পকের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে। ৪ বছরের ভালবাসা মিথ্যা। কল্পক এবার তার মা, বাবা আর গাফফার কে জানায়। তারা কল্পকের থেকে ও বেশি আশ্চর্য হয়। তবে ছবি এবার কল্পককে বলে " কল্পক আমি তোমাকে ভালবাসি" আমি জাহিদকে ভালবাসিনা"। কল্পক জানতে চায় "একদিনে ৩১ টি ম্যাসেজ তুমি আমাকে ও কোন দিন দাওনি। জাহিদকে দিয়েছ। জাহিদের জন্যে তুমি আমাকে ঠকিয়ে অর সাথে দেখা করেছ, তোমার পড়াশোনাকে একদিন ও আমার জন্যে ঠকিয়ে আমার কথা শুনে তোমার বিরক্তি প্রকাশ থেকে তুমি পেছাও নি। আমাকে ঘুম পারিয়ে তুমি হলে পড়াশোনা করবে বলে জাহিদের সাথে কথা বলেছ। আমার বেলা তুমি বলেছ হলের মধ্যে রিডিং রুম এর বাইরে দারিয়ে কথা বলতে তোমার কষ্ট হয়। আমিতাও মেনে নিয়েছিলাম। আজ কান বলছ আমাকে তুমি ভালবাস?" ছবির কোন উত্তর নেই। সুধু একটাই কথা "আমি জাহিদকে চাইনা, কল্পককে চাই"। কল্পক এবার বুঝতে পারে ছবির কেন এত বাস্তবতার দোহাই। আজ পর্যন্ত কেন ছবি তার মনের ইচ্ছে মত কল্পকের আনন্দের বহিপ্রকাশ খুব সাধারন ভাবে প্রকাশ করেছে। কল্পকের বাবা মা আজ কল্পককে ডিভোর্স দিতে মানা করছে কারন এতে করে তাদের মান সন্মান থাকবেনা। কল্পক ছবির প্রতি ঘেন্না নিয়ে তার মা বাবা আর সমাজের কথা ভেবে আবার ছবিকে নিয়ে সংসার করবে। ছবি এখন বলে " কল্পক আমি তোমাকেই ভালবাসি, জাহিদ কে না"। কল্পক এখন খুঁজতে চায় তার অপরাধ। কল্পক কে দেয়া ছবির এই নতুন জীবন উপহার কল্পক গ্রহন করে। বেচে আছে কল্পক। বেচে থাকবে কল্পক.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×