“প্রেম করা বিয়ের সংসার নাকি টিকেনা।”
আলম আর সুলতানা এই বিষয়টি মানতে নারাজ।
তারা একে অপরকে প্রচন্ড রকম ভালোবাসে।
পাঠকের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি,
গল্পটি নিচু শ্রেণির মনমানসিকতা থেকে লেখা হয়েছে।
“সত্যিই কি তাই? পুরো গল্প পড়ার পর, এই প্রশ্ন রইল”
পরসমাচার, কোন পক্ষই তাদের বিয়ে মেনে নিবেনা।
কারণ আভিজাত্যে বেড়ে উঠা সুলতানা হতদরিদ্র আলমের ঘরে কেনো যাবে?
অবশেষে বাধ্য হয়ে পালিয়ে বিয়ে করতে হ’ল।
কয়েক মাস নানা জায়গায় ঘুরে ফিরে, আলম তার ফ্যামেলির কাছে
সুলতানাকে নিয়ে হাজির হ’ল। বাসায় ব্যাপারটা ম্যানেজ করে ফেললো।
কিন্তু, ঔ যে কুসংস্কার “প্রেম করা বিয়ের, সংসার টিকেনা।”
বিয়ের ৩ বছরের মাথায় রোড এক্সিডেন্ট এ আলমের মৃত্যু হয়।
(সো স্যাড , নায়কের এভাবে অপমৃত্যু ঘটানো ঠিক হয়নি।
শুধুমাত্র প্রফেসনাল লেখকরাই জানে, প্লটের খাতিরে লেখকদের
কতই না নিচে নামতে হয়, ।
“একেকটা প্রফেসনাল লেখক মানেই একেকটা প্রফেসনাল কিলার।”)
সুলতানার দেড় বছরের শিশু সন্তান অভ্রকে নিয়ে বিপাকে পড়লো।
বাপের বাড়ী থেকে সাফ মানা করে দিয়েছে, তাকে আর তার
সন্তানকে গ্রহণ করা হবে না।
শত কষ্টে তার সন্তানকে নিয়ে শুশুরবাড়ীর নির্যাতন সহ্য করে
থাকতে হচ্ছে। সুলতানা জানেনা তার শেষ পরিণতি কি হবে।
ভাগ্য তাকে নিয়ে নির্মম কাহিণী রচনা করতে লাগলো।
যার প্রথম ধাপ শুরু হলো, নিজের ভাসুরের হাতে ধর্ষণের মাধ্যমে
রাগে-লজ্জায়, ঘৃণায়, সে তার শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে বাচে।
কিন্তু, দুষ্টু ভাগ্য চক্র তার পিছু ছাড়ে না। স্কুল লাইফের তার
ক্লোজ বান্ধবী সাদিয়ার সাথে যোগাযোগ করে।
সাদিয়া ফিরিয়ে দেয় না। তবে শর্ত একটাই তাকে বাসার কাজের
মেয়ে হয়ে থাকতে হবে। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সে সেখানেই
থাকার মনস্থির করে। সাদিয়া আর তার স্বামী দুজনেই চাকরী করে।
সকালে বের হয়, রাতে ফিরে। সারাদিন সে তার বাচ্চাকে নিয়ে
পড়ে থাকে শুয়ে বসে কাটিয়ে দিতে পারে। দেখতে দেখতে কয়েক
বছর কেটে যায় যায়। অভ্র ও বড় হতে থাকে।
পুরুষ মানুষ কখনো স্ত্রী লোকের খালু হতে পারে না।
সাদিয়ার স্বামীর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ঘটেনি। একদিন
শরীর খারাপ বলে সে অফিসে না গিয়ে বাসায় থেকে যায়।
পরের কাহিনী না বুঝার কিছুই ঘটেনি। বুদ্ধিমান লোকের জন্য
ইশারাই যথেষ্ট।
এবার সুলতানা তার সিদ্ধান্ত পাল্টালো। তাকে সন্তানের ভবিষ্যত ভাবতে হবে।
প্রয়োজনে তাকে নীচ পেশায় নামতে হবে। পুরুষ মানুষের প্রতি তার ঘৃণা জন্মে গেছে।
সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, সে রাতের পেশায় নামতে বাধ্য হলো।
তার সাময়িক অভাব ঘুচলো, অভ্র জানতে পারলো না কোথা থেকে খাবার
আসে, কোথা থেকেই বা তাদের ভরণ পোষণ অন্যান্য উপকরণ সাপ্লাই হয়।
সুলতানা কি পারতো না অন্য কাউকে বিয়ে করে সুখী হতে?
আলমের ভালবাসার ফসল অভ্র কে নিয়ে বাচতে চেয়েছিল।
অভ্রকেই বাচার অবলম্বন হিসেবে ধরে নিয়েছে। তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
এইতো আর কটা দিন, তারপর সুলতানার দু:খ ঘুচে যাবে। এই
আশায় সুলতানা পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
অভ্র আজ বড় হয়েছে, একটা চাকরী পেয়েছে
ধনীর আদুরী দুলালী বিয়ে করেছে।
সুখের সংসার জীবন যাপন করছে।
কিন্তু আমাদের গল্পের নায়িকা কোথায়?
সে হারিয়ে গেছে। সে জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিক ।
অভ্র যখন জানতে পারে ,তার মার জীবিকার কাহিনী।
তখন সে মাকে ছেড়ে চলে গেছে। যদিও ততক্ষনে সুলতানা
অভ্রকে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, আজ অভ্রের কাছে সে পশু।
আর এই পশুই নাকি তার জীবন যৌবন সব কিছু
ত্যাগ করেছে, তাকে মানুষ করার জন্যে।
এই পশুটির বাচার কোন অধিকার নেই।
আমি লেখক আমি তাকে খুন করব।
তার আগে অভ্রের ভুল টা ভেংগে দেই।
প্রতিবেশী খালার মুখ থেকে তাদের পূর্বের
কাহিনী শোনার পর অভ্র তার ভুল বুঝতে পারলো।
সে তার মাকে খুজতে লাগলো। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলো।
হ্যা পাওয়া গেছে, সুলতানা কে পত্রিকায় পাওয়া গেছে।
দৈনিক দিন কাগজ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
“ট্রেনে কাটা পড়ে এক অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার”
অভ্রের চোখে পানি , কারণ ছবিতে কাটা পড়া লাশের মুখটি তার চেনা|
আর সেই মুখের ভাষাটি তাকে বলছে, আমি পরিস্থিতির স্বীকার।