somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জঙ্গী বিস্ফোরণ: সবারই জানা দরকার এর ভয়াবহতা আর কিভাবে বাচতে পারি তার কিছু ব্যার্থ প্রয়াস!

২৩ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেন পড়বে সবাই এই পোস্ট?

একটা ঘটনা বলি। ঘটনাটা দু'তিন দিন আগের। বাসায় ফিরছি তখন রাত ১০ টা বাজে বারিধারা থেকে। একটু পার্টি টাইপ ছিলো। তিন জন ক্যাব নিয়ে একসাথে মিরপুরের দিকে আসছি।ক্যাব নিয়ে গুলশানে ঢুকতেই এক দঙ্গল পুলিশ আর সাদা পোশাক ধারী ডিবির লোক পথ আটকালো। তাদের মধ্যে কিছু লোকের হাতে ওয়ারলেস এবং কিছু ক্ষণ পর পর গাড়ির নম্বর জানা্ছে যেসব গাড়ি তৎক্ষনাৎ চেক করছে। আমাদেরকে নামতে বললো। আমার সামনের জনের শার্ট পর্যন্ত খোলালো। আমাকে দেখে কি মনে করলো, পারলে পুরো প্যান্ট খুলে ফেলে। হাতের ল্যাপটপের ব্যাগটা কখন যে হাত থেকে নিয়ে গেলো বুঝতে পারলাম আমার সাথের দুজনের মুখ কালো হয়ে গেছে।আমি একটু জোরে স্বরে আমার আইডি আর অনেক আগের একটা পাশ যেটা কার্ফ্যুর সময় নেয়া ছিলো সেটার একটা কপি বের করলাম।
: এটা আমাদের জন্য নয়, আপনাদের জন্য। একটু সহোযোগিতা করুন।
ক্যাবের পিছনের দিকে, বনেট পারলে এরা সব কিছু ফেলে। আমরা সবাই হতবুদ্ধ কেনো হঠাৎ এতো তৎপরতা, আর্মি নেমে গেলো নাকি?
সব কিছু ফিরিয়ে দিয়ে বললো একজন লোক এগিয়ে এলো সাদা পোশাক ধারী, মনে হলো কোনো এক সংস্হার হাই অফিসিয়াল," সরি, ডিস্টার্ব করার জন্য, আসলে আপনারা যদি রমনা বটমূলের কথা মনে রাখেন তাহলে এরকম অবাক হতেন না!"
আমরা সবাই না গা না করে বেচারার মতো গাড়ীতে ঢুকে চলে আসলাম।

আমার কিছু বিশেষ জায়গায় বিশেষ কিছু বন্ধু আছে যারা এসব নিয়ে নাড়াচাড়া করে। তার পরের দিন ফোন দিতেই বললো ভয়াবহ কিছু কথা বললো যেটা অনেকটা নিম্নরূপ:
আগে জঙ্গীদের মূর্খ মনে করে আর কোমড় ভেঙ্গে দিয়েছে বলে তেমন কেউ গা করেনি। কিন্তু রিসেন্টলি বেশ কিছু ব্যাপার যেমন কোনো এক জঙ্গীর রাসায়নিক ডেটনেটর ব্যাব হার, দলের মধ্যে বুয়েট, অন্যান্য ভার্সিটির ছেলে মেয়েদর সম্পৃক্ততা প্রমান করে তারা এখন যেকোনো জায়াগায় বিচ্ছিন্ন নাশকতা করবেই। সেটা কখন কিভাবে করবে কেউ জানে না!

হয়তো এ কারনেই লেখাটা পড়বেন সবাই আশা করি!

কি আছে?

এখানে আমি যেটা বলবো কি ধরনের আঘাত আসতে পারে আর আমরা কি কি সতর্কতা মূলক ব্যাবস্হা নিতে পারি আর যদি দুয়েকটা আঘাতের শিকার হই তাহলে কি করবো!

কি ধরনের আঘাত:

জঙ্গীরা কখনোই রাস্তায় রাইফেল নিয়ে উল্টা পাল্টা গুলি করবে না, কারন এতে খুব বেশী লোক জখম করা যাবে না। একটা গুলি দিয়ে শুধু একজন লোক, তাও তার খুব বেশী ক্ষতি হবে না যদি তা না মাথায় বা বুকে বা নিম্নাঙ্গে না লাগে।
জঙ্গীরা এমন কিছু করবে যার এক আঘাতে বেশীর ভাগ লোক এমন কি ঐ সংঘটিত অংশের সাথে সরাসরি দেখার পয়েন্টে যতদূর যায় ততদূর বিস্তৃতি হবে। মানে ধরুন আঘাতটা করা হলো রাস্তার মাঝে। রাস্তায় যারা দেখছে বা আশে পাশে আছে তাদের বেশীর ভাগ লোক আঘাত প্রাপ্ত হবে এবং আশে পাশের ফ্লাটের জানালা বা বারান্দা দিয়ে যারা দেখছে বা দেখা যায় সেখানকার লোকজনও আহত হবে।
এর জন্য সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে বোমা।

কেমন বোমা?

নিউক্লিয়ার বোমা এরা ব্যাবহার করবে না এটা আপাতত নিশ্চিত থাকেন, কারন তালেবানরা পাকিস্তান খেতে পারলেও এখনও নিউক্লিয়ার অস্ত্র ছুতে পারেনি। আর ইরান আর উত্তর কোরিয়া যেহেতু এখনও আক্রমনের শিকার হয় নি সেহেতু এসব তারা ব্লাক মার্কেটে ছাড়বার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ যদি তাদের কাছে এরকম কিছু থেকে থাকে।আরো কিছু খবর হলো তারা যা ব্যাব হার করছে তার মধ্যে টিএনটি বা সি৪ এর এক্সপ্লোসিভস ব্যাব হার করছে না। অবশ্য তার দরকারও নাই।

তারা যেই বিস্ফোরকই ব্যাবহার করুক না কেন এসব জঙ্গীদের বোমায় কিছু জিনিস ব্যাব হার করা হয় সেটা হলো স্প্লিন্টার। স্প্লিন্টার হিসেবে কাচা লোহার পেরেক, পিন, ভাঙ্গাচূড়া কাচা লোহা টাইপ সূচালো অংশ।
এগুলো ব্যাবহার করার কারন এগুলো ৪০০-৫০০ ডিগ্রীতে বেশ গরম এবং নরম হয়ে যায়। যখন গরম এবং নরম হয়ে যায় এগুলো ভঙ্গূর হয়ে যায় এবং অনেকটা ভেঙ্গে চূড়ে সাধারনত পেয়াজের খোলসের মতো সূচালো ধারের হয়ে পড়ে। এগুলো যেকোনো কিছুর সাথে বিক্রিয়া করতে পারে এবং অক্সিজেনের সাথে খুব দ্রূত জং পড়ে যায়। তখন চুম্বকেও খুব একটা কাজ করে না।

আমাদের রক্তে কিন্তু হিমোগ্লোবিনে ফ্রি রেডিক্যাল মানে অক্সিজেন রেডিক্যালের পরিমাণ বেশ ভালো পরিমাণেই আছে আরো আছে আয়রন সহ আরো কিছু যৌগমূলক।

তাহলে আসেন একটা বোমা ফাটাই:

বোমা একটা ফাটিয়ে দিলো জঙ্গী। তখন কি হতে পারে? বোমাটা যখন ফাটানো হয় তখন কেমিক্যাল রিএ্যাকশনে কিছু ব্যাপার ঘটে- বেশ ভালো পরিমানে শক্তির বিচ্ছুরণ ঘটে যেগুলো নানা রূপে পাই।
শক ওয়েভ ব্লাস্ট: সোজা বাংলায় এই শক্তিটা একটা বাতাসে প্রচন্ড ধাক্কার সৃস্টি করে। পিসিআই এর একক। বাতাসে ৫ পিসিআই চাপের একটা ধাক্কা খেলে আমাদের শ্রবনেন্দ্রীয় নস্ট হবে। ১৫ পিসিআই হলে হ্রৎপিন্ড সরাসরি আঘাত পেয়ে কর্ম ক্ষমতা নস্ট হবে। ৩০ হলে ৫০% শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটবে আঘাত জনিত কারনে।


তাপ বিকিরণ: এখানে আবদ্ধ জায়গায় ফাটলে জিনিসটা খুব ভালো ভাবে সবাইকে আঘাত করে। এবং সবার মধ্যে খুবই দক্ষ ভাবে এটা প্রভাব ফেলে। এজন্য জঙ্গীরা সাধারনত মার্কেট প্লেস অথবা প্রচন্ড ভীড়ের জায়গায় এটা ফাটাতে পছন্দ করে। জিরো পয়েন্ট মানে হলো যে পয়েন্টে এটা ফাটলো সেখানে সাধারন ডেটোরনেটর দিয়ে ২ থেকে ৩০০০ সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপ উঠানো সম্ভব। এর বেশী উঠানোর জন্য আর্জেস বা বেশ ভালো পরিমাণের টিএনটি দিয়ে ফাটালে কয়লা খনির মতো কাজে দেবে। তবে জঙ্গীরা এতো তাপ চায় না। এতো তাপে স্প্লিন্টার পুড়ে যায়। তাদের দরকার খুব ভালো পরিমানে ব্লাস্ট আর ৮০০-৯০০ ডিগ্রী।

শব্দ এবং স্প্লিন্টার: শব্দটা খুব বেশী না হলেও বুড়ো দের জন্য এটা ক্ষতিকর। তবে বাইরে সাধারন যারা ঘোরে ঢাকা শহরে তাদের ডেসিবেল স হ্য ক্ষমতা বেশ তাই কিছু ক্ষণ তব্ধা লেগে থাকলেও সমস্যা হয় না। পরে তা ঠিক হয়ে যায়। স্প্লিন্টার খুব গুরুত্বপূর্ন। দেখা গেলো বোমা ফুটছে ২০০ হাত দূরে। আপনে বেশ সেফ পজিশনে থাকলে সামান্য একটা ছোট স্প্লিন্টার ধরেন ১০ মিলিমিটার বা ১ মাইক্রোমিটারের একটা স্প্লিন্টারের টুকরা আপনাকে সারা জীবনের জন্য ভুগাতে পারে।

ধাপ সমূহ একটু ডিটেলসে!:

বিস্ফোরণের ঢেউ বাতাসে উচ্চ চাপের দমকা হাওয়ার উদ্ভোব ঘটাবে।এই ক্ষেত্রে একজন লোক প্রন্ড ধাক্কার অনুভব করবে যার ফলে তার আভ্যান্তরীন ক্ষত দেখা দেবে। এই শক ওয়েভ মাধ্যম দিয়ে সামনে এগিতে থাকবে।এই শকওয়েভ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ দিয়ে ছড়িয়ে দিয়ে ক্ষতের বিস্তৃতি ঘটায় এবং এর ফলে প্রচন্ড শব্দের উৎপত্তি ঘটে যার ফলে সামটুক বয়রা ভাব অথবা স্হায়ী বয়রা হয়ে যেতে পারে মানুষ জন। বোমার খন্ডাংশ শার্পনেল বা স্প্লিন্টার ছুড়ে মারবে প্রচন্ড গতিতে।এগুলোর গতি এতই বেশী যে কংক্রীটের দেয়াল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্হ করে ফেলে। বিস্ফোরণ থেকে এই সময় তাপ এবং আগুণ উৎপন্ন হবে। অতিরিক্ত তাপ চারিদিকে আরো আগুন ধরিয়ে দেবে যেটা আসলে অগ্নিকান্ডের সৃস্টি করে। ব্লাস্ট ওয়েভ চারিদিকে ভ্যাকুয়ামের সৃস্টি করে যেটা পরে চারিদিকের বাতাসকে শুষে নেয় শূন্য স্হান পূরন করবার জন্য!এর ফলে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র স্প্লিন্টার ছড়ানোতে আরো সহায়ক হিসেবে কাজ করে।



কেন এই স্প্লিন্টার খারাপ:

বাংলাদেশের সব ডাক্তারই টিভিতে আসলে বলে ফেলে গর্ব করে তারা অনেক কিছু পারে যা আমেরিকনরা পারে। কিন্তু বাস্তবে তারা কিছুই পারে না। আপনি সরকারীতে যান এইসব স্প্লিন্টারের তেমন ভালো চিকিৎসা দিতে পারে না। গুলির সমান অথবা ১০ মিলিমিটার হলে পারবে তবে এর চেয়ে ছোট হলে তারা হার মানবে। আর যদি স্কয়ার বা এ্যাপোলোতে যান তারা আপনাকে ৫ স্টারের সুখ দেবে কিন্তু সাথে এটাও বলবে এখানে যখন আসছেন ব্যাটার থাইল্যান্ড যান। থাইল্যান্ডে মাইক্রোমিটার স্কেলে চিকিৎসা দিতে পারে যদি স্প্লিন্টারের চুম্বকত্ব না হারায়। কিন্তু যদি স্প্লিন্টার লোহা ব্যাব হার না করে জিংকের খাদ দেয়া ভেজাল লোহা অথবা প্লাস্টিকের চামচ অথবা কাসার বা পিতলের টুকরা ব্যাব হার করে তখন আপনার রক্ত কিছু দিন পর পর ওয়াশ করেও খুব একটা লাভ হবে না। দেখা যাবে যেটা পায়ে ঢুকেছে সেটা হ্রৎপিন্ডে আটকেছে অথবা যকৃতে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে!


কি করবেন তখন শুধু যন্ত্রনা উপভোগ করা ছাড়া অথবা মৃত্যুর আশায় জায়নামাজে বসে থাকা ছাড়া? একটা কাজ করতে পারেন, সমান্য পায়ের আঘাতের জন্য পাটা কেটে ফেলেন, বরন করে নিন পঙ্গূত্ব। কি হবে এত সুন্দর পা দিয়ে, বডি বিল্ডিং করেন না যেহেতু সেহেতু এক পায়ই যথেস্ট.....হা হা হা হা হা...

বাচার কিছু ব্যার্থ উপায়:

আসলে আমি এগুলো ব্যার্থ উপায়ই বলবো! কেউ যদি ফাইনাল ডেস্টিনেশন সিরিজের মুভী দেখে থাকেন তাহলে বুঝবেন মৃত্যু যদি সত্যি আপনার সামনে এসে দাড়ায় তাহলে কেউ বাচাতে পারবে না। কেউ না!


আপনি সুপার কন্ডিশনের ফুস ফুস আর হ্রৎপিন্ড নিয়ে অথবা ঝাক্কাস মিস্টার অলিম্পিয়া হলেও আপনার মৃত্যু যদি লেখা থাকে যদি আল্লাহ চান তাহলে মরতে হবেই!

তবু আমার মতো যারা উজবুক যারা টাইম মেশিন বানানোর জন্য এখনও ব্যার্থ স্বপ্ন আর গোডলের মতো কিছু ব্যার্থ ক্যালকুলেশন করে যাই তাদেরকে বুঝাবে কে?

তাই ফিজিক্সের বা ডাক্তারীর আশ্রয় নিলাম (যদিও আমি তেমন কিছু জানি না, তাই যদি কমেন্টে আপনাদের মতামত জানা শোনার মধ্যে লিখে দেন তাহলে সবাই উপকৃত হবে)

১) খুবই কড়া ভীড় যেখানে কেন্দ্রের মানুষ দেখা যায় না এসব জায়গায় কোনো জঙ্গী বোমা ফাটাবে না। বোমা ফাটাবে যে ভীড়ের মধ্যেও হাটার রাস্তা থাকে। যেমন ধরেন ফার্মগেটের কোচিং সেন্টার গুলোর সামনে খুব কড়া ভীড় হলেও একটু এগুলেই এটা হালকা। অথবা গাউছিয়া মার্কেটের ভিতরে যেখানে ভীড় গুলো ভাগ হয়ে আছে। তাই পারলে করা ভীড়ে থাকুন অথবা হালকা ভীড় এভয়েড করুন।

তবে একটা ক্যালকুলেশন করতে পারি। ধরা যাক একটা ভীড়ে ১৫০ জন লোক আছে যার ঠিক মধ্যখানে একজন জঙ্গী। ভীড়ের ধরন সার্কুলার শেপ। তাহলে ১৫০ জন লোক যদি রাউন্ড শেপে ওয়েল ডিস্ট্রিবিউট থাকে এবং সবার মাঝে ফাকা থাকে আর আপনি যদি সবার বাইরের দিকে থাকেন তাহলে জঙ্গী থেকে আপনার দূরত্ব হবে ৬ জন লোকের সমান। এখানে ডিস্ট্রিউবিশনটা সমান ভাবে ২ এর ২ ঘাত কে ১ দ্বারা যোগ করেছি যাতে করে গ্রাউন্ড জিরোর সাথে আপনার পয়েন্ট অব কন্টাক্ট থাকে।
যখন বোমা ফাটে তখন স্প্লিন্টার গুলো সার্কুলার আকারে সরল রেখা বরাবর ছড়িয়ে পরে আবং তা মোটা মুটি ৫০ থেকে ৬০ মিটার ব্যাসার্ধের এলাকা যেতে সক্ষম একটা মাঝারি আকারের বোমা যদি চিন্তা করি।

যদি বোমাটা বিস্ফোরনের সাথে সাথে চারিদিকে সার্কুলার ভাবে (যদি স্প্লিন্টারের ক্ষেত্রফল ৭৮ বর্গসেন্টিমিটার) সর্বোচ্চ ৭০০০ - ৮০০০ কণা (ধরা যাক ১ বর্গমিলিমিটার )ছুটে যাবে চারিদিকে আর আপনার দিকে এর ১% ও ছুটে আসে তাহলে এর পরিমাণ হতে পারে ৭০- ৮০ টা। সংখ্যাটা কি ভয়াবহ না?

সবচেয়ে ভালো হয় যখনই কোনো আওয়াজ পান এরকম তখন জায়গায় মাথাটা ঢেকে বসে পড়া। কারন বোমা বিস্ফোরনের পাশে শব্দের গতির চেয়ে স্প্লিন্টারের গতি কিছুটা বেশী থাকলেও অপেক্ষা কৃত ভরী গুলো যেমন যেগুলো ২-৩ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের সেগুলোর গতি কম থাকে। তাই বসে পড়ুন।

আরো একটা কাজ করতে পারেন রাস্তা পারাপারের সময় ওভার ব্রীজ ব্যাবহার করুন, কারন এখানে জঙ্গীরা কেনো যেনো ফুটাইতে চায় না।
অথবা একটু দ্রূত হাটুন এতে আপনি অনেক গুলো মার থেকে বেচে গেলেন। এতো গেলো হঠাৎ ফেটে গেলো সেটার কথা।

আপনি যদি বিল্ডিং এর ভিতরে থাকেন তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে মারাত্নক হলো দুটো জিনিস: অনেক দূর হতে ছুটে আসা স্প্লিন্টার আরেকটা শক ওয়েভের কারনে আপনার জানালার কাচ ভেঙ্গে ছুটে আসার খন্ডাংশ।
তাই যখনই এমন কিছু হয় তখনই হয় টেবিলের তলে না হলে মাটিতে শুয়ে পড়ুন।

২) ধরা যাক আপনার হাতে বাস্ট হবার কিছু সময় আছে। কারন বেশীর ভাগ জঙ্গী বোমা ফাটানের আগে সবাইকে কলেমা তলেবা তইয়েবা শোনায় তার পর আল্লাহু আকবর বলে ফাটায় দেয় তার আগে চুপ চাপ দরুদ পড়ে মোনাজাত পড়ে নেয়।
(সেই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ন আপনার জন্য) যতটুকু পারেন মাটিতে শুয়ে হাত দিয়ে এমন ভাবে মাথা আর কান ঢাকুন যাতে ওখানে আঘাত লাগার আগে হাতদ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়।
খ) যদিও খারাপ শোনায় আশেপাশে মানুষকে শিল্ড হিসেবে ব্যাব হার করুন যাতে করে আপনার দিকে আসা স্প্লিন্টার গুলো আপনার সামনে দাড়ানো লোকের উপর দিয়ে যায়। যদি দেয়াল বা স্হাপনা কিছু পান তাহলে ওখানে লুকোতে পারেন।
গ) যদি সময়ই না পান, দেখা গেলো হাতে ১ সেকেন্ডও নাই কিন্তু জঙ্গী খুব সামনে তাহলে দূরত্ব তৈরী করুন।যদিও বাচার আশা কম।

৩) বাসে উঠবার আগে কিছু জিনিস খেয়াল রাখুন। যারা দাড়িয়ে আছেন তারা বেশী ঝুকিতে থাকবেন। যে ফাটাবে তার পাশে যারা থাকবে তারা সবচেয়ে বেশী ঝুকিতে। সবচেয়ে কম ঝুকিতে যদি জঙ্গী মহাশয় বাসের মাঝখানে আর আপনি বসলেন একেবারে পিছনের সীটে সবচেয়ে কোনার সীটে।

৪) আ.লীগ বা বিএনপি বা অন্য যেকোনো দলের সভা সমাবেশ বা মিছিলে না যাওয়া। তবে জামাত শিবিরের মিছিলে কোনো দিন বোমা ফাটবে না। কি কারনে ফাটবে না আমি জানি না, মনে জঙ্গী কুকুরেরা আরেক কুকুরের গোস্ত খাবে না!

তবে যাই ঘটুক না কেন, যদি আপনি আঘাত প্রাপ্ত হন তাহলে দেখুন আপনার আঘাত কিরকম? যদি খুবই খারাপ হয় তাহলে চুপচাপ বসে থাকুন। কারন বের হতে গেলেই হার্টের বিপি বাড়বে জন গন আর দৌড়াদৌড়ি আর মোচড়া মোচড়ির চাপে আপনার অবস্হা খারাপ হবে। এখনকার বোমায় অগ্নীগোলক বা বাসে আগুন তেমন ধরে না। যদি সেটা হয় তাহলে আস্তে আসতে বের হতে হবে অপেক্ষা করতে হবে সাহায্যের জন্য। সাহায্য আপনি পাবেন অবশ্যই। যদি অতিরিক্ত ধূলো বা ধোয়া হয় তাহলে চেস্টা করুন ভীড়ের মধ্যে না ছুটে যে জায়গায় ভীড় কম সেদিক দিয়ে বের হতে করে এতে করে আপনার নড়া চড়ার অংশে আরো কম চাপ লাগবে। বেশী দুশ্চিন্তা করে কিছুই হবে না, যা হবার হয়ে গেছে।

৫) বাসে উঠার সময় আপনার পাশের লোকদের দিকে খেয়াল রাখুন। চাপ দাড়ী অথচ প্যান্ট শার্ট, কিন্তু খুবই দুশ্চিন্তা গ্রস্হ আর কিছু ক্ষণ পর পর শরীরের কিছু জায়গায় বেশ ভালো ভাবে হাতাচ্ছে

অথবা কথা নেই বার্তা নেই নফল নামাজ বা দোয়া দরূদের হার বেড়ে গেলো এবং শরীরটা অস্বাভাবকি ভাবে কাপড়ে সাথে খাপ খাচ্ছে না।

অথবা দেখুন হাতে কি নিয়ে আছে? কারন রাসায়নিক ডেটোনেটরে টাইমার ৫ থেকে ৩০ মিনিট রাখা যায় তবে অতিরিক্ত গরমে হিসাবে গোলমালও হয়। তাই হাতে কি আছে সেটা বুঝবার কিছুটা সময় পাবেন।

৬) আপনার অফিস বা মার্কেটে অতিরিক্ত সিকিউরিটি যেনো অবশ্যই থাকে। আর কাচের বিল্ডিং এ কাচটাকে একটু এ্যাভয়েড করবেন। আপনার পয়েন্ট অব আই কন্টাক্ট নাই কিন্তু শক ওয়েভে কাচ ভেঙ্গে ঢুকে গেলো চোখে!


একটা ইরাকী গল্প: গল্পটা শুনেছিলাম আমার এক আত্নীয়ের কাছে সে রিসেন্টলি সৌদি থেকে এসেছেন। তখন যুদ্ধ শেষ হয়েছে মাত্র, বুশ ঘোষনাও দিয়ে দিছে। যেই পরিবারের গল্প এটা: ওরা ছিলো শিয়া, তবে যুদ্ধে ওদের বাড়ীর সাথে কেড়ে নিয়েছে ওর ছোট ভাইকেও। পরিবারে তখন বেচে বাবা মা আর ঐ মেয়েটি। বয়স আনুমানিক ২২ এর মতো। খুব কস্ট করে ইজ্জত বাচিয়ে সিরিয়ার ক্যাম্পে জায়গা করে নিয়েছে। বাবা নিয়মিত ইরাকের বর্ডারের পাশের একটা এলাকায় যেতেন যেখানে মার্কিন সেনা দ্বারা খুব কড়া গার্ড দেয়া। একটা কাজ পেয়েছে যেটা হলো একটা বাসা তৈরী করে দিতে হবে। মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে ঐ শরনার্থীরই এক শিয়া ছেলের সাথে। বাবা সেদিন কাজ করে বাসায় ফিরার কথা, কিন্তু তার দুদিন পরও ফেরেননি। পরে জানা গেলো আমেরিকান কনভয়ের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন উনি। এক আমেরিকান সোলজার হঠাৎ তার পথ রোধ করে সার্চ করছিলো। সবার বন্দুক তার দিকেই তখন তাক কড়া, সেদিন খুব কড়া নিরাপত্তা ছিলো চারিদিকে। সার্চের মাঝখানেই একটা গাড়ী ছুটে আসলো তাদের ট্যাংকের দিকে। এসেই প্রচন্ড বিস্ফোরন। লাশের কার কোন অংশ বোঝা না যাওয়ায় আমেরিকানরা সবকিছু নিয়ে গেছে। ডিএনএ টেস্ট করে তারপর সৈন্যদের কবর দেয়া হবে। এটা জানতে পারে ৩ দিন পর এবং খবরটি এনে দেয় সেই ছেলেটি। মেয়েটা অথর্বের মতো হয়ে যায় আর মা হয়ে যায় পাগল। গায়েবী জানাযা দেয়া হয় কিন্তু কবরের ব্যাপারটা হয় কিছু রক্তাক্ত কাপড় কুড়িয়ে এনে। কারন ওখানে এসব ছাড়া তেমন কিছুই ছিলো না!

পরিনাম:

যারা স্প্লিন্টারের ক্ষুদ্রাংশে আঘাত প্রাপ্ত হয় তাদের নাকি এটা ঘোরা ফেরা করে। যেখানে ইচ্ছা সেখানে গিয়ে মাসেল পেইন অথবা ইফেকশন ঘটায়। বড় বড় স্প্লিন্টার বের করা গেলেও এগুলো বের করা যায় না এগুলো কিডনি, লিভাবর, হ্রৎপিন্ড সব জায়গাতেই বাগড়া বাজায়। একসময় নানা জায়গায় এই সব ডাইলুটেড স্প্লিন্টার অভ্যন্তরীন ক্ষতের সৃস্টি করে। তাই সাবধান হোন একটু


আর ইসলামী জঙ্গীদের প্রতি জিরো টলারেন্স শো করুন!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০০৯ দুপুর ১:৪৮
৩৫টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×