somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একখান বুলগীয় আড্ডা আর কিছু আও ফাও কথার রোজনামচা!-১

২৭ শে জুন, ২০০৯ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভূমিকা:

: আরে দুস্ত বইলো না, কুটিকালে তো আমি সাতার শিখবার গিয়া পানিতে ডুইবাই গেছিলাম মিনিট পাচেকের লিগা!
: হায় হায়, কও কি? মইরা যাও নাই!
: মনে নাই, আমার এমনিতেই স্মৃতি শক্তি দুর্বল তাও আবার কুটিকালের কথা!

শুভ্রর কপালে চিন্তার বলিরেখা দেইখা আমার মনেও একখান ভাবের উদয় হইলো। মনে হইতাছিলো সাত সকাল ১২ টায় সূর্য্য দেরী কইরা পুবাকাশে উঠতাছে। এ্যাকচুয়ালি কাম কাজ নাই তাই বইসা বইসা অন্তরে গীটার বাজাই। সাইবার ক্যাফেতে বইসা দুইজনে আলাপ করতাছিলাম আর ইউটিউবে এ্যাডাল্ট কিছু পাওন যায় কি না সেইডা খুজতাছিলাম। আইছিলাম এক লগে যে শুভ্র সুইডেনে রুম/করিডোর বুকিং দিয়া মেইল করছে। তা যাগো কাছে মেইল করছে তারা শুভ্র জন্য পুরা একখান প্যালেস বুকিং দিয়া দিছে।

শুভ্র এই মেইল খান দেইখা দুইবার ঢোক গিলল আর আমি কইলাম," আর দেশ পাইলা না, মরবা গিয়া সুইডেন গিয়া। তাও ভালা প্যালেসে একমাস থাইকা সব বেইচা ফকির হইয়া রাস্তায় রাস্তায় দিনে ভিক্ষা করবা আর রাইতের বেলা পড়ালেখা, খারাপ কি?"

ও ঢোক গিলনের সংখ্যা আমার কথা শুইনা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়লো। আমি সান্ত্বনা দিয়া কইলাম," আহো এ্যাডাল্ট দেহি!"
: দুস্ত, দেখো এই খানে কি লেখা Subscription এর উপরে "Click here Fool"। এই কথাডার মানে কি?
: এই কথাডার মানে হইলো তুমি ক্লিক যতক্ষণ না করতাছো ততক্ষণ একবার ফুল আর যখন করবা তখন তুমি দুইবার ফুল, মানে ডাবল!
: আরে বাপ, এতো দেখি দুই বিয়ার মতো কাহিনী!
: আরো কাহিনী শুনবা?
: হ কও তো দেখি!
: ধরো একখান লোক তুমারে কইলো, "আমি মিথ্যা কথা কই"! এই কথাডার মানে হইলো সে এতদিন যা বইলা আইছে তার সবই মিথ্যা কথা। সে এতদিন তুমারে মিথ্যা কথা কইয়া ঠকাইছে।
: হ তা ঠিক।
: আবার এইডাও ঠিক সে এখন যেইডা কইতাছে এইডাও মিথ্যা কথা। তার মানে সে যে মিথ্যা কথা বলে আসলেই সে মিথ্যা কথা না বইলা এতদিনের সত্য কথা প্রমান করতাছে।
: আরিব্বাপ। এইডা তো দেখি ডেন্জ্ঞারাস অবস্হা!

এতক্ষণে ডেস্কের সামনে আমাগো কথা শুইনা ছোটখাটো জটলা শুরু হইয়া গেছে। চোখ বড় বড় কইরা আমাগো কথা শুনতাছে। দোকানের কর্মচারী একটু দোকানের বাইরে গেছে। দোকানে ঢুইকা কয়," ভাইজান, মেলা কেট কেট করছেন। আপনেগো কেট কেটের জ্বালায় কাস্টামারের সমস্যা হয়। আমি মালিক সমিতিরে ডাকতে গেছি। ভালা চান তো সিট ছাইড়া অন্য দুকানে যাইয়া ওয়াজ দেন! আমার ব্যাবসার বাশ দিয়েন না!"

আমি কিছু কইতে গেছিলাম, মাগার শুভ্র ফাল দিয়া জীহাদি জোহে বইলা বসলো," ঐ মিয়া মাগনা বইছি নাকি তুমার ঐখানে?"
: ঐ মিয়া ঝাড়ি লন কেন? মাগনাই তো বইছেন। কোনো কাম তো করেন না বইসা উল্টাপাল্টা সাইট দেখেন বুইড়া কালে। মাথার চুল পাইকা গেছে আপনেগো কিন্তু শখ যায় নাই। যান মিয়া ফুটেন!

আমি তাড়াতাড়ি শুভ্র চাইপা ধইরা বাইর হইলাম।মাগার শুভ্রর বকবকানি থামে না!

আইজকা মহান শুক্রবার। রাইত ভইরা কয়খান স্বপ্ন গুনা ধরলাম সকালের ঘুমাংশে। এমুন সময় মোবাইলের ট্যাও ট্যাও শব্দে ঘুম ভাংলো। হাতে নিয়া দেখি মোবাইলে ১৬ টা মিসড কল। চিপা মারতেই শুভ্র নাম।
: দুস্ত, একটা নিউজ শুনছো?
: এই সাত সকালে আবার কি হইলো, টয়লেটের পানি উপচায় গেছে নাকি?
: আরে নাহ, জ্যাকসন মইরা গেছে?
: কোন জ্যাকসন? ওরও কি সুইডেনে যাওনের কথা নাকি? ওর কোন ইউনিতে হইছে?
: আরে ধুর, মাইকেল জ্যাকসন, গান গায়!
: ঐ হিজড়া মরছে আর তুমি আমার ভোরবেলার ঘুম ভাঙ্গাইলা! চল ফুট!

দিলাম মোবাইল কাইটা। যত সব আউল ফাউল খবর দেয় সাত সকালে ১৬ ডা কল দিয়া। তয় মোবাইলে যখনই টাইম দেখলাম তখনই দেখি ১১:৩০ টা। অখন তো দেখি ভোরও হয় দুপুর বেলায় আর দুপুর হয় সন্ধ্যার সময়। বিটলা কিছিমের টাইম আইডা পড়লো।
খাটের থিকা উইঠা বোইনের রূমে গিয়া দেখি মহাজনে চ্যাটিং করতাছে আর রেডিওতে ফুয়াদের নতুন নিটোল পায়ে রিমিক্স ছাইড়া দিছে। ভদ্রভাবে তারে বললাম," দুনিয়াতে এত শয়তান থাকতে কেন তুই আমার বোইন হইলি? কি দুষ করছিলাম আমি?"
আমার দিকে একবার তাকাইলো, হাটের পাশে থাকা স্টিলের স্কেলটা টাস করে আমার পিঠে মারলো, তারপর কইলো," ফুট ইহাছে!"
ওর বাড়ি আর ঝাড়ি শুইনা চোখের ঘুম চইলা গেলো। মুখ ধুইলাম, পানি খাইয়া যখন ব্রেকফাস্ট খামু তখন দেখি ১২:১৫। ভাবলাম কি হইতাছে আজকা? নামাজে যামু কখন? তাড়াতাড়ি খাইয়া ওযু করলাম। ১:১৫ তে জামাত। আজকা নামাজ পড়তেই হইবো। গত সপ্তাহে নামাজ পড়ি নাই, আজকা পড়তেই হইবো।
মসজিদে মাথাডা নীচা কইরা দুরূদ পড়তে পড়তে আগাইলাম। মাগার মসজিদে গিয়াই দেখি সাড়ে সর্বনাশ। মসজিদের গেট বন্ধ, হায় হায় করছে কি? হাসিনা দেখি মসজিদ মাদ্রাসা সব বন্ধ কইরা দিতাছে। মনের মধ্যে জিহাদী জোশ জাগতেই আবার মনে হইলো মসজিদের হুজুর বাইরা দাড়াইয়া উদাম গায়ে খিলাল করতাছে। হুশ হইলো ১ ঘন্টা আগাইছে বইলা আজকা আমি রেকর্ড করছি। প্রতিবার আমি সবার আগে আইসা সবার আগে বাইর হইতাম আর আজকা আমি হুজুরের আগেই আইসা পড়ছি! অখন সমস্যা হইলো ১ ঘন্টা ওজু ধইরা রাখাই সমস্যা। মনের মধ্যে হাবি জাবি চিন্তা আর নজর খালি ঘুরতে ঘুরতে জায়গা মতোই পড়ে।

বাসায় আবার ফিরা আসতেই দেখি কাজের মেয়েটা মুখ চিপা হাসতাছে। বোইনে রান্না থুইয়া নিজের ঘরে মোবাইল নিয়া ঢুইকা হাসতাছে আর কাহিনী সবিস্তারে বর্ণনা করতাছে। ইজ্জতের ফালুদা বানাই দিলো!

মনের মধ্যে একখান কবিতা মনে পড়লো:
হাসিনারে হাসিনা
তর কথায় নাচিনা
তর কথায় নাইচ্চা
দেশ দিলাম বেইচ্চা!

যদিও দেশ বিক্রি হয় নাই, তয় আমাগো টাইমিং নস্ট হইয়া গেছে!

উপসংহার:

গতকাইল আপনেরা সবাই জানেন আমাগো বুলগীয় আড্ডা আছিলো। আমি আবার সাইধ্যা সাইধ্যা দাওয়াত লেনে ওয়ালা পার্টি, লগে আবার আরেকজন মাগনা পার্টি শুভ্ররেও লইয়া আইছিলাম। ৫:৩০ টা বাজতেই ফুন," কি করো?"
: হ্যালো রনি, বাইরামু কখন?
: হুনো ঠিক ৬ টায় সময় আইবা এইখানে। ৬ টার আগে আইলে ঐখানে সবার আগে যাইয়া মামু হইয়া যামু। সবাই তখন কইবো কাম কাইজ নাই, অফিস বইসা মাছি চাপড়াই। আবার দেরী কইরাও আইবা না। খাওন দাওন শেষ হইয়া যাইবো। আবার তুমারে নিয়া আরেক গায়ে হলুদ যামু, ঐডাও পরে মিস।
: তুমি এইডা কি কইলা? মহাখালি থিকা গুলশানে এমুন টাইম ধইরা আইতে হইলে আমার হেলিকপ্টার নিয়া আইতে হইবো।
: অতো বাহানা বানাও কেন? স্যুয়েরেজ লাইন কি দুষ করলো? ঐখান দিয়া পারলে হাটা দাও!
: ঐ মিয়া আমি অখনোই রওনা দিতাছি!

একখান বুলগীয় আড্ডা আর কিছু আও ফাও কথার রোজনামচা!-২
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০০৯ রাত ১:১৬
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মন তার আকাশের বলাকা || নিজের গলায় পুরোনো গান || সেই সাথে শায়মা আপুর আবদারে এ-আই আপুর কণ্ঠেও গানটি শুনতে পাবেন :)

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৬ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:০০

ব্লগার নিবর্হণ নির্ঘোষ একটা অসাধারণ গল্প লিখেছিলেন - সোনাবীজের গান এবং একটি অকেজো ম্যান্ডোলিন - এই শিরোনামে। গল্পে তিনি আমার 'মন তার আকাশের বলাকা' গানটির কথা উল্লেখ করেছেন। এবং এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

লাইকা লেন্সে তোলা ক’টি ছবি

লিখেছেন অর্ক, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৩০




ঢাকার বিমানবন্দর রেল স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সময়, ক্রসিংয়ে তোলা। ফ্ল্যাস ছাড়া তোলায় ছবিটি ঠিক স্থির আসেনি। ব্লার আছে। অবশ্য এরও একরকম আবেদন আছে।




এটাও রেল ক্রসিংয়ে তোলা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কার গল্প জানেন ও শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩১



গতকাল সন্ধ্যায়, আমরা কিছু বাংগালী ঈদের বিকালে একসাথে বসে গল্পগুজব করছিলাম, সাথে খাওয়াদাওয়া চলছিলো; শুরুতে আলোচনা চলছিলো বাইডেন ও ট্রাম্পের পোল পজিশন নিয়ে ও ডিবেইট নিয়ে; আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাবাকে আমার পড়ে মনে!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২

বাবাকে আমার পড়ে মনে
ঈদের রাতে ঈদের দিনে
কেনা কাটায় চলার পথে
ঈদগাহে প্রার্থনায় ..
বাবা হীন পৃথিবী আমার
নিষ্ঠুর যে লাগে প্রাণে।
কেন চলে গেলো বাবা
কোথায় যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×