স্থান- স্কয়ার হসপিটালের আশেপাশে
সময়- সন্ধ্যা ৭ টা
মনের অবস্থা - ইমোশনাল
ডিভাইস- নোকিয়া ১১০০
রিং বাজছে ওপাশে ............ পুররুং পুররুং
-হ্যালো
-হ্যালো , অ্যান্টি আসসালামু আলাইকুম
- অওালাইকুম আসসালাম , কিরে কি অবস্থা ।
ইচ্ছা করে এড়িয়ে যেতে হবে ।
-জি অ্যান্টি Maruf নাই ?
- এই যে
-হ্যালো , বন্দুক কি কর ?
-ম্যাগজিন লোড নিতাছি ।
-মানে কি ?
-নুডুলস খাই
-অ্যান্টি হাতে খাওয়ায়ে দিছে ?
-আবার জিগায় , পুরা এক সপ্তাহ পর ।
কথা শেষ হয় , মন খারাপ করে রাস্তায় হাটতে হয় । এই শহর টাতে লাখ লাখ মানুষ থাকে । কেউ পড়াশুনা করে , কেউ চাকরি , ব্যাবসা , কেউ কিছু করবে বলে ভাবে , কেউ কিছুই করে না । কারো কারো বাড়ি যেতেই লাগে প্রায় ১০ ঘণ্টা ।প্রতিদিন বাবা মায়ের সাথে কথা হয় , কিন্তু ইট পাথরের শহরে নিজেকে এতিম লাগে । এই শহর টা এমন আদর করার জন্য তো দূরে থাক , শাসন করার জন্যও কেউ থাকে না । স্মৃতিতে ভেসে আসে আম্মা আমাকে মেরে নিজেই কেঁদেছিল । তখন প্রতি মুহুর্তে আপনজনের কথা মনে পড়ে । তখন বন্ধুর মায়ের কণ্ঠ শুনলেও নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে । কোলে ছোট শিশু দেখলে নিজের মায়ের কথাই মনে পড়ে । হয়ত প্রতি ঈদেই বাড়িতে যাওয়া হয় । কেউ আবার এক ঈদে যায় । চাকরি বলে কথা , চাকরের কাজ , বস হচ্ছে মনিব । জি হুজুর জি হুজুর করা লাগে । ঈদে গেলে বাবা মায়ের জন্য শারি-পাঞ্জাবি নিয়ে যায় , কিন্তু নানান ব্যাস্ততায় সেভাবে কথা হয় না । রান্না , মেহমান সামলান , গরু কাটা এর মাঝে হয়ত একটু বলে যায় মা "খুব শুকিয়ে গেছিস , খাওয়া দাওয়া করিস না ?' বাবা হচ্ছে পাথরের মত , নিজেকে কেটে টুকরো করবে তবু মুখে কিছুই বলবে না ।
পশ্চিমে দিনে দিনে এক কোটি বার বলে , honey , i love you । তারপর যে সেই হানি কি করে জীবনের গ্লানি হয়ে যায় কে জানে ?
সবচেয়ে বড় ভালবাসা হচ্ছে সেই ভালবাসা যেটা কোনদিন বলা হয় না , তাই হয়ত বাবা মাকেই কোন দিন বলা হয় না "ভালবাসি"
ঈদ শেষ ঢাকায় দৌড়াও ।সার্টিফিকেট লাগবে সার্টিফিকেট , ক্যারিয়ার লাগবে ক্যারিয়ার , টাকা লাগবে টাকা , ক্ষমতা লাগবে ক্ষমতা । নাম লাগবে নাম । তারপর ?
তারপর সব হয় কিন্তু সেই মানুষগুলোই থাকে না ।
আমি জানি ঢাকা শহরে অনেক লোক আছে , যাদের টাকা পয়সা সব আছে । যাদের নাইট ডিউটি করতে হয় না । তবু রাতে উনারা জাগেন , জায়নামাজে নামাজ শেষে দোয়া করেন
"রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা"
হে প্রভু। তুমি (আমার পিতামাতা) উভয়কে রহম করো, যেভাবে তারা ছোটবেলায় দয়ামায়া দিয়ে আমাকে প্রতিপালন করেছেন।