ইসলামে ওযুর গুরুত্ব ও আধুনিক বিজ্ঞান
ইসলামে পরিচ্ছন্নতা হল ইমানের অঙ্গ।পরিচ্ছন্নতা ইসলামের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল, যা অন্য কোন ধর্মে দেখা যায় না।ইসলামে পরিচ্ছন্ন হওয়ার একটি উৎকৃষ্ঠ পন্থা হল ওযু।ওযু ছাড়া নামাজ হয় না।ওযু দ্বারা ওই সব স্থানই পরিষ্কার হয়,যে সব স্থান দিয়ে শরীরে রোগ জীবানু প্রবেশ করে।অর্থাৎ,ওযু হল রোগব্যাধির প্রবেশ দ্বারের অতন্ত্র প্রহরী।
ওযু ও আধুনিক বিজ্ঞান
ওযুতে অনেক গুলো নিয়ম রয়েছে যার দ্বারা মানুষ পবিত্র হয়।সেগুলো নিচে পয়েন্ট আকারে লেখা হলঃ
১)হাত ধৈত করাঃ
হাত আমাদের শরীরের অতিব জরুরি একটি অঙ্গ।আমরা হাত দিয়ে সারাদিন অনেক কাজ করে থাকি।আবার হাত দিয়ে খাবার ও খাই।তাই আধুনিক বিজ্ঞান মতে হাত ধৌত করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।কারন হাতের মাধ্যমে জীবানু আমাদের মুখে প্রবেশ করে শরীরে ছড়িয়ে যায় যা অনেক রোগের সৃষ্টি করে ।
হাতের মাধ্যতে যে সব রোগ ছড়ায়ঃ
ক)চর্মরোগ
খ)পেটের অসুখ
গ)ফাঙ্গাস(ইত্যাদি)
এখানে মজার ব্যপার হল আরো চৌদ্দশত বছর আগেই ইসলাম ওযুর মাধ্যমে হাত ধৗত করা বাধ্যতা মূলক করে। একজন মুসলমান অন্তত দিনে পাঁচ বার ওযু করে। তার মধ্যে প্রত্যেক ওযু তে (৩,৫,৭)বার ও হাত ধোয়ার নিয়ম রয়েছে। যদি ওযুতে তিন বার হাত ধোয়ার নিয়ম ধরা হয় তাহলে একজন মানুষ প্রতিদিন ১৫ বার হাত ধৈত করবে।যা আমাদের শরিরের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
কুলি করাঃ
কুলি করা হলো ওযুর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম। আমরা যখন খাবার গ্রহন করি তখন সেগুলো অনেক সময় দাঁতে আটকে থাকে। যার ফলে মুখ থেকে দূরগন্ধ সৃষ্টি হয় এবং এর থেকে দাঁতে পোকা,মুখে ক্যান্সার ও হতে পারে যা একজন মানুষের মুখের সুন্দরর্য নষ্ট করে,মুখের ক্যান্সারের ফলে খাবার খেতে না পেরে মানুষ সক্রিয়তা হরায় এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকতে পারে।একজন মানুষ যদি দিনে পাঁচ বার নিয়ম মাফিক ওযু করে তবে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
নাকে পানি দেওয়াঃ
শ্বাস গ্রহণের একমাত্র পথ হল নাক।আর যে বাতাস থেকে শ্বাস গ্রহণ করা হয় তার মধ্যে লালিত-পালিত হয় অসংখ্য রোগজীবানু যা নাকের ভিতর দিয়ে অতি সহজেই মানব দেহে প্রবেশ করে। সুতরাং রোগ জিবাণু ধুলোবালি শ্বাসের সাহায্যে সব সময় নাকে প্রবেশ করছে। এভাবে যদি সকাল সন্ধ্যা এসকল রোগজিবানু নাকের মাধ্যমে শরীরে ঢুকতে থাকে তাহলে বিপদজনক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।তাই দৈনন্দিন ৫ বার ওযুর মাধ্যমে নাক পরিষ্কার করলে নাকের মাধ্যমে শরীরে রোগজীবাণু লালিত-পালিত হওয়া সম্ভব নয় যা আমাদের কঠিন রোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
মুখ ধৈত করাঃ
নিয়মিত মুখ ধৗত করলে মুখের সুন্দর্য ঠিক থাকে। মুখে বাতাসের ধুলো বালির জিবানু থেকে ব্রণ ও বিভিন্ন সমস্যা হয়।৫ বার ওযুর মাধ্যমে মুখ পরিষ্কার থাকে এতে কোন ফেসওয়াসের দরকার হয় না। যা আমাদের মুখমন্ডলের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
আমরা ওযুর মাধ্যমে মুখ ধৗত করার সময় তিন বার মুখ ম্যাসাজ করি। যার জন্য ক্যামিকেলের দরকার হয় না।
আমরা যখন মুখে পানিদেই তখন আমাদের ভ্রুতে পানি জমে থাকে। মেডিকেল বা স্বাস্থ্য সংস্থার মূলনীতি অনুযায়ী ভ্রুতে আদ্রতা থাকলে চোখের পানি শূণ্যতা রোগ থেকে রক্ষা পায়।
কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত করাঃ
কনুই শরীরের একটি আবৃত অঙ্গ।যা বেশীর ভাগ সময় আবৃত থাকে।এতে যদি বাতাস না লাগে তবে মতিস্ক ও স্নায়ুর সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া কনুই হৃদপিন্ড,মস্তিষ্ক ও যকৃতের সাথে তিন প্রকার বৃহৎ শিরা থাকে। কনুই পযন্ত হাত ধৗত করলে উপরিউক্ত তিনটি অঙ্গে শক্তি সঞ্চার করে।
মাথা মাসাহ্ করাঃ
একজন ব্যক্তি ফ্রান্সে থাকা অবস্থায় একদিন নামাজের জন্য ওজু করছিলেন।আরেক জন ব্যক্তি তা অবাক হয়ে দেখছিলেন।যিনি ওযু করছিলেন তার ওযু শেষ হলে অপর ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করলেন তুমি কে? তখন ওই ব্যক্তি বলেন আমি মুসলমান।অপর ব্যক্তি বল্লেন তুমি কোথা থেকে এসেছো?তখন উক্ত ব্যক্তি একটি মুসলিম দেশের কথা বললেন।অপর ব্যক্তি সেই মুসলিমকে প্রশ্ন করলেন তোমার দেশের মানসিক হাসপাতাল কয়টি? মুসলিম ব্যক্তি বললেন ২/৪ টি এব্যাপারে আমার কোন ধারনা নাই।তখন অপর ব্যাক্তি একথা শুনে বল্লেন, আমাদের দেশে অনেক মানসিক হাসপাতাল রয়েছে। আমি একজন হাসপাতালের সার্জন। আমি অনেক দিন যাবৎ অনুসন্ধান করছি মানুষের পাগল হওযার কারন। আমার গবেষনা অনুযায়ী এর কারন হল,মানুষের মস্তিষ্ক সব সময় সক্রিয় থাকে এবং মস্তিষ্কের সিগন্যাল অনুযায়ী শরীরে প্রত্যেক অঙ্গ কাজ করে,তাই অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মানুষের মস্কিষ্ক অনেক সময় কার্য ক্ষমতায় বাধা প্রাপ্ত হয়,এথেকেই মানুষের পাগল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তিনি আরো বলেন,মানুষের চুল বড় রাখলে বা মাথার পৃষ্ট শুষ্ক থাকলে সেই স্থানের শিরার মধ্যে শুষ্কতার সৃষ্টি হয় যা শরীরে প্রভাব ফেলে। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে মথা মাসাহ্ করার স্থান প্রত্যহ ২/৪ বার মাসাহ করে উক্ত স্থান ভিজালে এতে শিরা গুলোর কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।এতে মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে।তাছাড়া মাসাহ্ করার ফলে ঘাড়ে বাতাস লাগে যা সান সানস্ট্রোক থেকে রক্ষা করে।
পা ধৗত করাঃ
অনেক মানুষ আছেন যারা কাজের চাপে তাদের জুতা খুলতেই ভুলে জান।এর ফলে ফঙ্গাস ইনফেকশন,ডাইবেটিস,জন্ডিস,মানসিক অবসাধ সহ আরো অনেক সমস্যা হতে পারে। কিন্তু একজন ব্যাক্তি যদি প্রত্যহ ৫ বার ওযু করতে পাঁয়ে পানি দিয়ে পাঁ ভিজায় তাবে ওই সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
তাহলে বুঝতেই পারছেন একজন খাঁটি মুসলিম যিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য ওযু করেন,তার রব তার জন্য কতটাই নিয়ামত এতে দিয়ে রেখেছেন।আর নামাজের ফজিলত এবং গুরুত্ব কতটুকু তা তো নামাজের চাবির উপকারিতা দারাই বুঝতে পেরেছেন।