- হুজুর, আপনার ঘরেও ফাযাইলে আমল! ইন্না লিল্লাহ!
-কী ব্যাপার? এমনভাবে বলছো, যেন নিষিদ্ধ কোনো লেখকের নিষিদ্ধ বই রেখে দিয়েছি।
-এটা তো মুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধই। যে বইয়ের ভূমিকা-ই শিরক দিয়ে হয়েছে, সেটা কীভাবে ইসলামি বই হয়? তিনি নাকি তার মুরুব্বিকে রাজি এবং খুশি করার জন্য এই বই লিখেছেন।
-সত্য করে বলো তো, তুমি কি কখনো বইটি পড়েছো, নাকি ঐ অনলাইন শায়খ?
-জী না, পড়িনি। তিনি কি এরকম কিছু লিখেননি তাহলে?
- হ্যাঁ লিখেছেন। তিনি বলেছেন, “এতবড় বুযুর্গের সন্তুষ্টি আমার পরকালের নাজাতের উসিলা হবে মনে করে আমি উক্ত কাজে সচেষ্ট হই”।
-এই তো। আপনিই বলুন, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি কামনা করা কি শিরক নয়?
-তোমাকে অনেকবার বলেছি, “অনলাইন শায়খদের থেকে শুনেই সিদ্ধান্তে না পৌঁছতে”। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি অর্জন শিরক হলে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কেমনে বললেন- “জন্মদাতার সন্তুষ্টিতে পরওয়ারদিগারের সন্তুষ্টি আর জন্মদাতার অসন্তুষ্টিতে পরওয়ারদিগারের অসন্তষ্টি” (তিরমিযি)।
-মানলাম, পিতা-মাতার সন্তুষ্টি চাওয়া যায়। কিন্তু মাওলানা ইলিয়াস তো তার জন্মদাতা নন।
- আচ্ছা তাহলে শিরক কনসেপ্টে একটু নেমেছ। এবার শুনো তিনি তার চাচা মাওলানা ইলিয়াস (রহঃ)’র সন্তুষ্টি পেতে চেয়েছেন। কারণ, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পিতার অবর্তমানে চাচাকে অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
-উফ, কী করব? তাদের কথা শুনলে মনে হয়, তারাই সঠিক আর আপনাদের কথা শুনলে মনে হয়, এরা সব মিথ্যা বলছেন।
-কিছু করতে হবে না, একটু মাথা খাটাও। একবার চিন্তা করো, ফাযাইলে আমলের যে রচয়িতার উপরে শিরক কথা বলা হচ্ছে, লোকটি কে।
☆ শুনো বৎস! শাইখুল হাদিস যাকারিয়া (রহঃ) উনবিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত একজন হাদিস বিশারদ। আরবি এবং উর্দু ভাষায় প্রায় শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন এই মনীষী। বুখারি থেকে আরম্ভ করে হাদিসের বিশুদ্ধ ছয়টি কিতাব তথা “সিহাহ সিত্তা”র প্রায় সবক’টির ব্যাখ্যাগ্রন্থ তিনি রচনা করেছেন। বুখারিরও পূর্বের মুয়াত্তা ইমাম মালিকের আঠারো খন্ডে ব্যাখ্যাগ্রন্থ রচনা করেছেন তাও আরবি ভাষায়। সৌদির তৎকালীন বাদশাহ ফাইসাল তাঁকে বিশেষ সম্মাননা দিয়ে সৌদির জাতীয়তা দিয়েছিলেন।
শাইখুল হাদিস যাকারিয়া রহঃ মদিনাতে ইন্তিকাল করেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’র পাশেই জান্নাতুল বাকিতে তাঁকে দাফন করা হয়। একবার চিন্তা করো, একজন মুশরিক কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’র পাশে কবর পেতে পারবে।
#হু_জু_রে_র_হু_জ_রা
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩০