নামাযে সুরা ফাতিহার শেষে আমিন বলা সুন্নাহ। এটা ইমাম, মুক্তাদি, মুনফারিদ (একাকী নামাযি)- সকল মুসল্লির জন্যই সুন্নাহ। কিন্তু “আমিন” উচ্চস্বরে হবে নাকি নিম্নস্বরে সেটা নিয়ে মতানক্য রয়েছে। ইমাম শাফিঈ, আহমদ এবং মালিক (রহঃ)’র একটি মত হচ্ছে, মাগরিব ইশা এবং ফজরে “আমিন” উচ্চস্বরে বলা সুন্নাহ। কিন্তু ইমাম হানিফা এবং মালিক (রহঃ)’র একটি মত হচ্ছে, সকল নামাযেই সকল মুসল্লির জন্য আমিন নিম্নস্বরে বলা সুন্নাহ। সকলের পক্ষেই সঠিক দলিল রয়েছে বিধায় কারো মাযহাবকে বেঠিক বলা হয়নি।
কিন্তু একটা বিষয়ে সকল উলামা-এ-কেরাম একমত যে, যেথায় আমিন নিচুস্বরে পড়ার প্রচলন আছে, সেথায় আমিন উচ্চস্বরে বলা অনুচিত। আমিন জোরে বলতে গিয়ে ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি হলে জোরে বলা অবৈধ।
এই ফাতওয়া শুধু হানাফি আলেমগণ দেননি, “উচ্চস্বরে আমিন সুন্নাহ” মত পোষণকারী শায়খ বিন বাযকে এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যেহেতু আমিন জোরে বলাটা মুস্তাহাব, সেহেতু মুসলমানদের মাঝে শৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং ঐক্য ধরে রাখার স্বার্থে যেখানে আমিন নিচুস্বরে বলা হয়, সেখানে নিচুস্বরে বলতে হবে। দেখুনঃ http://goo.gl/EyooGa
শায়খুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়্যাহ তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ মাজমুউল ফাতওয়ায় এই বিষয়টি সবিস্তারে উল্লেখ করেন। যেখানে তিনি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, সেখানে কেন নিচুস্বরে আমিন বলতে হবে। http://goo.gl/Hq6UdN
অতএব, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলা যায়, প্রায় শতভাগ হানাফি মাযহাবের অনুসারী যেখানে বসবাস করছেন, সেখানে মসজিদে গিয়ে উচ্চস্বরে আমিন বলা’তে অবশ্যই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। সুতরাং আমিন আস্তে বলা উচিত। যেমন, হানাফি মাযহাবের অনুসারী কেউ শাফিঈ মাযহাব অধ্যুষিত অঞ্চলে মসজিদে নামায পড়লে শাফিঈ মাযহাবের ইমামকে অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহু আ'লাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৫০