ইন্টারনেটে ঘুরাঘুরি করতে করতে এই সুন্দর ছবিটা চোখে পড়ে মন খারাপ হয়ে গেলো । কেন মন খারাপ হলো, বলছি । তখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি, বয়স আর কতোইবা হবে, চার কিংবা পাঁচ । সারাদিন ছোটাছুটি দৌড়াদৌড়ির শেষ নেই। আমাদের বাসায় তখন হোসেনা নামের একজন আপু কাজ করতো। তো একদিন দেখলাম হোসেনা আপু ঘুরেফিরে বাসার পেছনে কি জানি দেখতে যায়, ওনার বন্ধুদের সাথে কানাকানি করে কিন্তু আমি জানতে চাইলে আর কিছুই বলে না। আমিও কম কিসে ? ঠিকই গোয়েন্দাগিরি করে বের করে ফেললাম বাসার পেছনে ছোট একটা ডুমুর গাছে পাখি বাচ্চা ফুটিয়েছে ।
কী পাখি মনে নেই তবে দেখতে এই রকমই ছিল। তখনো চোখ ফোটে নি । কাছে গেলেই হা করে থাকতো খাবারের জন্য। পাখির কিউট কিউট বাচ্চা,তাও আবার আমার উচ্চতার নাগালের মধ্যে, আমি যেন আকাশের চাঁদ পেয়ে গেলাম। আমার খুশি আর দেখে কে ? নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে সারাদিন পাখির বাচ্চা দেখতে যাই। আর সবাইকে বলে বলে বেড়াই।
দু,তিন দিনের জন্য সবই ঠিক ছিল, কিন্তু কাছে গেলেই ওরা হা করে খাবারের জন্য কিচিরমিচির করতো বলে আমার খুব মায়া হয়। ইচ্ছে হলো কিছু খেতে দেই। কি খেতে দেয়া যায় চিন্তা করতে করতে কেন যেন বাসা থেকে ঘামাচির ট্যালকম পাউডারের কৌটা এনে অল্প করে ওদের মুখে ছিটিয়ে দেই। পরদিন সকালে এসে দেখি একটা বাচ্চাও বেঁচে নেই, যা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি । কেন বেঁচে নেই তার কারণটাও বুঝতে পারলাম না। মন খারাপ হলো , তারপর আস্তে আস্তে একদিন ভুলে গেলাম।
কিন্তু আজ প্রায় দুই দশক পর ছবিটা দেখে আবার সব মনে পড়লো। আর এখন যখন বুঝতে পারলাম, ইচ্ছা করছে টেনে নিজের মাথার সব চুল ছিঁড়ে ফেলতে। না বুঝে যে ভুল আমি করেছি তার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারছি না
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪১