খুব বেশি দিন হয়নি দেশ ছেড়ে জার্মানি এসেছি। প্রথমই যে ব্যাপারটা আমাকে সব থেকে অবাক করেছে তা হচ্ছে এখানকার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। শুরুতে রাস্তাঘাট, ফুটপাথ, রেলস্টেশন, পার্ক যে দিকেই তাকাতাম মনে হতো কেউ যেন সবকিছু এইমাত্র পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে রেখে গেছে। কোথাও একটা খালি বোতল পড়ে নেই, একটা চিপসের প্যাকেট পর্যন্ত নেই। কী করে সম্ভব!?
সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক কিংবা কাচের খালি বোতল ব্যবহারের পর যেখানে সেখানে ফেলে দেয়াকে নিরুৎসাহিত করতে Pfand system নামে একটা সুন্দর ব্যবস্থা আছে এখানে। ব্যাবহার শেষে খালি বোতল ফেলে না দিয়ে আশেপাশের যে কোন সুপার-সপের মেশিনে জমা দিলেই পাওয়া যায় টাকা , থুক্কু ইউরো । রিসাইকেল করা যায় এমন বোতলের পানীয় কেনার সময়ই এর দামের একটা নির্দিষ্ট অংশ রাখা হয় বোতলের দাম হিসেবে আর ব্যবহারের পর খালি বোতল জমা দিলেই সেই টাকা ফেরত পাওয়া যায়। তাই এখানকার সুপার সপগুলোতে প্রায়ই দেখা যায় লোকজন ব্যাগ ভর্তি করে খালি বোতল নিয়ে এসেছে।
তবু যদি কেউ মনের ভুলে, অলসতায়, কিংবা সময়ের অভাবে খালি বোতল যেখানে সেখানে ফেলে দেয় তারপরও সেটা সেখানে বেশিক্ষণ থাকে না কারণ এখানে এমন মানুষ আছে যারা এই বোতল কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করেন।
বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩৭৪৪ টন সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়। আশার কথা হচ্ছে কেউ না কেউ এটা নিয়ে ভাবছেন। পলিথিন ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে এক বছর সময়ও নাকি বেঁধে দিয়েছেন উচ্চ আদালত। পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে এমন একটা উদ্যোগ বাংলাদেশেও নেয়া যেতেই পারে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৬:০০