বিষন্ন দুপুর। শীত যাই যাই করছে। ইমার মনে হলো কেমন যেন একটা মন খারাপ করা দুপুর। খাওয়া সেরে রান্নাঘরের সব কাজ গুছিয়ে ইমা যখন নিজের ঘরে ঢোকে ততক্ষনে পলাশ বিছানায় কম্বল মুড়ি দিয়েছে, পাশে একমাত্র মেয়ে ইশিতা। কিছুক্ষন খুনসুটি করলো তিনজনে মিলে। তারপর মেয়েকে ঘুম পাড়াতে লাগলো।
পলাশ, তুমি কি বাইরে যাবে বিকেলে? ইমা জিগ্গেস করলো।
হুম.. যেতে পারি, তার উত্তর।
আর কোন কথা বলার সুযোগ পেল না ইমা, কারন পলাশের নিশ্বাস ভারী হয়ে এসেছে। এই হলো পলাশ, কথা বলতে বলতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়বে টের পাওয়া যায়না। পাশ ফিরে ইমাও ঘুমাতে চেষ্টা করলো। নাঃ, পলাশের মত অত সৌভগ্য তার নেই যে চট করে ঘুমিয়ে পড়বে। টিভি চালিয়ে দেখার চেষ্টা করলো। বেশিক্ষন সেটাও ভাল লাগলোনা। আবার ঘুমানোর চেষ্টা। চোখটা বোধহয় লেগে আসছে ঠিক সে সময়ই মোবাইল বেজে উঠলো পলাশের। এস এম এস। পলাশ আবার নীরব। আবার ইমার ঘুমুবার ব্যর্থ চেষ্টা। এবার পলাশের এ্যালার্ম বাজলো মোবাইলে। ধ্যৎ, আর চেষ্টাই করবোনা, ভাবলো ইমা।
তাহলে তুমি যাচ্ছ? ইমার প্রশ্ন পলাশের প্রতি।
হ্যাঁ, কেন?
তাহলে আমিও যাই?
কোথায়?
আম্মার ওখানে। আমাদের না সকালে কথা হলো বেরুলে দু'জনেই, নইলে নয়!
পলাশ ইমাকে গত ক'দিন ধরেই তার মায়ের বাড়িতে থাকতে দিতে চাইছে না। ওরা বাসায় না থাকলে নাকি পলাশের ভাল লাগেনা। ইমা মেনে নিয়েছে। কিন্তু পলাশ তার নিজের কাজে বাইরে যায় যখন তখন। এমনকি ছুটির দিনেও তার আলাদা প্রোগ্রাম থাকে। ইমার সবসময় তা ভাল লাগেনা। এই নিয়ে আজ সকাল বেলাতেই একচোট হয়ে গেছে দু'জনের। তারপর রাগ দেখিয়ে পলাশ সকালে বাইরে আর যায়নি। এমনকি ইমাকেও যেতে দেয়নি। তখনই ইমা শর্ত দিয়েছিল, গেলে দু'জনেই নিজ নিজ পছন্দের জায়গাতে যাব, নইলে কেউই নয়। পলাশের সেকি ভযন্কর রাগ! সবার সাথেই সে রাগ দেখালো। ভাল করে কথা বল্লো না ইমার সাথে। ইমা দেখলো বিষয়টা জটিল হতে লেগেছে। তাই সে নিজেই আবার পলাশকে অনুরোধ করলো তার কাজে যেতে।
চলবে.......