রূপা প্রতিদিন বা”চাকে নিযে স্কুলে যায়। তার স্বামী একজন ব্যাংকার। সে সকালে উঠে ব্”চার জন্য টিফিন বানিয়ে স্বামী সোহেলের জন্য নাস্তা টেবিলে দিয়ে তারপর স্কুলে যায় ৪ ঘন্টার জন্য। কারণ যতক্ষণ ব্”চার ক্লাস চলে ততক্ষণই রূপা বসে থাকে। রূপা কোন পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে তা জানা যায়নি। তবে ধরে নেয়া যায় অন্তত: স্নাতক পাশ একজন স্ব”ছল গৃহিনী। স্কুলে বসে যখন অলস সময় কাটান তখন অন্য ভাবীদের সাথে তাদের কথোপকথনে অনেক ধরনের মানসিকতাই বেরিয়ে আসে। কথা”ছলে রূপা বললেন, আমার সাহেব একজন ব্যাংকার। ’ তারপর শুরু হলো সাহেবের গল্প। গাল ভরে বলছেন, আমার সাহেব এসব পছন্দ করেননা। ’ আরেকভাবী তাসমিমাও স্কুলে আড্ডা দেয়ার সময় প্রায়ই খূব গর্বের সাথে বলেন, আমার সাহেব এই শাড়ীটি কিনে দিয়েছে। ওতো ঘুম থেকে উঠে আগে চা খায়। তারপর নাস্তা করে।
রূপা, তাসমিমার মত নারীরা নিজের স্বামীকে অন্যের কাছে বেশ বড় করে উপ¯’াপন করতে খুব পছন্দ করেন। গল্প করতে পছšদ করেন স্বামীর কড়াকড়ি নিয়ে। কড়া স্বামীর অভিভাবকত্বে থাকতে পছন্দ করেন। তারই আভাস হ”েছ স্বামীকে নাম ধরে না বলে ’ সাহেব’ বলা। এতে স্বামীর প্রতি ভীষণ সম্মান দেখনো হয়। অথচ বাংলাদেশে ৪৭ শতাংশ নারী পরিবারে নির্যাতনের শিকার হন । ।
শিক্ষিত ধনী গৃহিণীরা যে স”ছলতার মধ্যে থাকে শিক্ষিত কর্মজীবি নারী সাধারণত ততটা স”ছলতায় থাকে না। এসব ধনী নারীরা কর্মজীবি নারীদের নিয়ে নানাভাবে উপহাস করে। সে উপহাস মুখে করে না তবে আচরনে বোঝা যায়। তারা তাদের স”ছলতা নিয়ে কৃতিত্ব দেখায়। ধনী স্বামী বিয়ে করে চাকরী করতে হয় না। আর্থিকভাবে টানাপোড়েন নেই। অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা নেই। তাই তারা নিজেকে খুব সুখী ভাবে। আর গাল ভরে গহনা, শাড়ীর গল্প করে। আর একজন শিক্ষিত নারী যখন দেখে সে কাজ করে কিš‘ ওই বিলাস জীবন যাপন নেই তার । তখন তার মনে হয় শিক্ষিত না হয়ে বা কোন পেশা গ্রহন না করে একটি ধনী স্বামী ধরলেই অনেক ভালো হতো। এই চিন্তাটা প্রবল হতে পারে উঠতি বয়সের কোন মেয়ের মধ্যে । সে যখন দেখবে তার মা পেশা গ্রহণ করেও অনেক কষ্টে চলে । আর পাশের বাড়ীর মহিলা ধনী স্বামী বিয়ে করে অনেক আকর্ষণীয় জীবন যাপন করছে। তখন সে মেয়েটি স্বাধীন হওয়ার ই”েছ ছেড়ে দিয়ে পরজীবি মানুষ হয়ে থাকতে পারে। ওই ধনী গৃহিনীরা বেশি অসহায় একজন পেশাজীবি নারীর চেয়ে। পেশাজীবি নারী যে স্বাধীনতা ভোগ করে তারা তাও ভোগ করে না।
এরা কড়া বাবার অভিভাবকত্বে এবং মাকে নানাভাবে অবদমিত অব¯’ায় দেখতে দেখতে বেড়ে ওঠার ফলে পুরুষ-শাসিত হয়ে থাকতেই পছন্দ করেন এবং নিশ্চিন্তবোধ করেন। এতে তারা স্বস্তিবোধ করেন। এরা জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন একজন অভিভাবক। যার নিয়ন্ত্রণে থেকে গোটা জীবন পারি দিতে পারবেন।
স্বামীর কথামত চলতে গিয়ে নিজের আমিত্বকে হারিয়ে ফেলে। এবং স্বামী তাদের ছেড়ে দিলে পথনারী হওয়া ছাড়া তাদের আর কোন পথ থাকে না। তাই সমাজে এও দেখা যায় অনেক ধনী পুরুষ দ্বিতীয় বিয়ে করলেও প্রথম স্ত্রী চলে যায় না। বা স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে করেতে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেয়ারও প্রয়োজন পড়ে না । তখন সে ধনী গুহিনীর কোথায় গিয়ে দাড়ানোর জায়গাও থাকে না ।
এসব নারীরা সতীত্ব ও মাতৃত্ব -এর মধ্যেই খুজে পান নারী জীবনের সার্থকতা। অর্থনৈতিক স্বাথীনতাও এসব নারীদের পুরুষের গোলামী থেকে মুক্ত করতে পারে না। এর কারণ অবশ্যই সমাজ- সাংস্কৃতিক পরিবেশ। নারীর প্রতি সম্মানের বিষয়টি পরিবার থেকেই শুর“ হয়। নারীর সমান অধিকার, সমান মর্যাদা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বীকৃতি পরিবার থেকেই উঠে আসে।
সমাজ ও পরিবার গঠনে নারীর ভূমিকা অপরিহার্য।
তাই নারীর সামগ্রিক মুক্তির জন্য শুধু অর্থনৈতিক স্বাধীনতাই যথেষ্ট নয়। এর জন্য নারীমুক্তির আন্দোলনকারীদের ’স্বাধীনতা’ শব্দের অর্থ বোঝার মত চিন্তার স্ব”ছতার একান্তই প্রয়োজন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




