চীনের বেইজিং থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে বাদালিং গিয়েও এই প্রাচীরের দেখা মেলে। এখানে মহাপ্রাচীরের এই অংশটি তৈরি করেছিলেন মিং বংশের সম্রাটরা। অনতিউচ্চ পাহাড়ের মাথায় ময়াল সাপের মতো সর্পিল আকারে দূরে ঝাপসা হয়ে মিলিয়ে গেছে মহাপ্রাচীর।
এই প্রাচীরে একের পর এক নজর-মিনার রয়েছে। অতীতে এখান থেকেই নজর রাখতেন সীমান্তরক্ষীরা। উত্তরদিক থেকে কোনও শত্র“পক্ষীয় সৈন্যদল এগিয়ে আসতে দেখলে তারা মশাল জ্বেলে সংকেত পাঠাতেন প্রতিবেশী নজর-মিনারের রক্ষীদের, তারা সংকেত পাঠাত পরের মিনারকে। মুহূর্তের মধ্যে সারা অঞ্চলজুড়ে শত্র“ আক্রমণের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ত। একটা মশাল জ্বলার অর্থ একশ’ জন শত্র“। দুটি মশাল জ্বলার অর্থ পাঁচশ’ জন শত্র“। তিন মশাল জ্বললে বুঝতে হতো এক হাজার শত্র“। চারটি মানে পাঁচ হাজার শত্র“। আর পাঁচটি মশাল জ্বলে উঠলে ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’।
মহাপ্রাচীর ছাড়াও বেইজিং শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে চীনের সুবিখ্যাত রাজপ্রাসাদ, উইনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ‘ফরবিডেন সিটি’। ১৪০৩ খ্রিস্টাব্দে মিং সম্রাট ইয়ুথালে পুরনো রাজধানী নানজিংয়ের বদলে নতুন রাজধানী গড়ে তোলেন বেইজিংয়ে। নতুন রাজধানীতে যথোপযুক্ত করে আনুমানিক দশ লাখ শ্রমিক গড়ে তোলে এক দৈত্যাকৃতি রাজপ্রাসাদ ‘নিষিদ্ধ নগরী’। এমন নামকরণের কারণ, সম্রাটের অনুমতি ছাড়া এখানে প্রবেশ করার অর্থ ছিল মৃত্যুদণ্ডকে আহ্বান করা। ১৪০৬ থেকে ১৪২০ এই ১৪ বছর ধরে গড়ে ওঠে এই নগরী। বারবার ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে প্রায় পাঁচশ’ বছর ধরে, প্রথমে মিং এবং পরবর্তীকালে চিং বংশের সম্রাটরা এই প্রাসাদ থেকে তাদের বিশাল সাম্রাজ্য চালাতেন। এখানে দশ লাখ বর্গমিটার জুড়ে ছড়িয়ে থাকা আটশ’ বাড়ির নয় হাজার ঘর দেখতে একদিন যথেষ্ট নয়। এক সময় এই বিশাল প্রাসাদে শ’য়ে শ’য়ে রানী, উপপতœী, দাসী আর খোঁজা প্রহরীর মধ্যে একমাত্র পুরুষ সম্রাটই রাত্রিবাস করতেন। ১৯২৪ সালে শেষ সম্রাট পুয়ি নিষিদ্ধ নগরী ত্যাগ করেন এবং তারপর প্রজাতান্ত্রিক সরকার এই প্রাসাদকে প্রেস মিউজিয়াম হিসেবে জনগণের জন্য উš§ুক্ত করে দেয়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




