somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জমজ ভালোবাসা

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রুমনা ও ঝুমনা দুই জমজ বোন। দুইজন একসাথে কলেজে যায়। একই রকম ড্রেস পড়ে। একই রকম ফ্রেমের চশমা পড়ে। কেউ বলে না দিলে বোঝা মুশকিল, কে রুমু আর কে ঝুমু।

শিপু জগন্নাথ ভার্সিটির ইংলিশে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। ওদের দু'জন কেই শিপু দেখেছে অনেকবার। দেখতে দু'জনই অপরূপা সুন্দরী। কিন্তু প্রেম তো দু'জনের সাথে করা সম্ভব না। কথা বলতে ইচ্ছে করলেও সঙ্কোচে এড়িয়ে গিয়েছে প্রতিবার।

এমন সময় একটা মোক্ষম সুযোগ পেয়ে গেলো শিপু। বাসায় ঢুকেই দেখে জমজ কন্যাদ্বয়ের মা তার আম্মুর সাথে কথা বলছে।
শিপুকে বলল, তুমি রুমা আর ঝুমাকে ইংরেজিটা ইকটু দেখিয়ে দিও। রুমাটা তবু কিছুটা ট্যালেন্ট আছে, ঝুমাটা একদম গর্দভ। আগের স্যারকে ৪০০০ টাকা দিতাম। তুমি ওদের পরীক্ষার আগের তিনটা মাস পড়াও।
শিপু ভেবে দেখল, ৪০০০ টাকা নেহাত কম না। টাকাপয়সার খুব টানাটানি যাচ্ছে ইদানিং। ইনিয়েবিনিয়ে সময়ের অযুহাত দেখিয়ে তবু সে অফারটা লুফে নিল।

প্রথমদিন পড়াতে গিয়ে দেখল একজন আগেই টেবিলে বসে আছে। শিপু বসে অন্যজনের কথা জিজ্ঞেস করতেই বলল, ঝুমু তো ঘুমাচ্ছে।
শিপু বুঝল, ওর নাম তাহলে রুমু।
রুমু বই খুলতেই আরেকজন এসে হাজির। শিপু রুমুর দিকে তাকাতেই ও ফিক করে হেসে দিলো। এই হাসির মানে শিপু কিছুই বুঝলোনা।
ঝুমু টেবিলের বাঁ পাশে বসে বলল,  ঝুমু আমার বই দে।
- না। এটা আমার বই।
- দে বলছি।
- না দেবনা।
- ভালো হবেনা কিন্তু।
- কী করবি তুই?
শিপু না থামালে এমন চলতেই থাকবে মনে হল অনন্তকাল। শিপু বলল, বইটা রাখো। তুমি না বললে, ঝুমু ঘুমাচ্ছে।
- ইয়ে মানে, ওর নাম তো রুমু।  আমার নাম ঝুমু।
- তোমার বই নেই?
- এখনো কেনা হয়নি।
- কালকে কিনে আনবে। এক বই দিয়ে এভাবে পড়া সম্ভব না।
- আচ্ছা তাহলে আজকে পড়া বাদ।
রুমু বলল, বাদ কেনো। আমি পড়বো। তোর বই নেই। তোর পড়া লাগবেনা।
- আচ্ছা ঠিক আছে। আমি বসে বসে মোবাইলে কক খেলবো।
শিপু বলল, কক কী জিনিস?
ঝুমু বলল, আপনি কক চিনেন না? আপনি কোন যুগে থাকেন?
- চুপ থাকো। যা জিজ্ঞেস করেছি, তার এন্সার দাও।
- কক হলো ক্লাস অফ ক্লান স্যার। খেলবেন?
- না আমি যাই। কালকে বিকেল ৪ টায় আসবো।

পরেরদিন শিপু ভার্সিটিতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল এমন সময় দেখে রুমনা অথবা ঝুমনা এদিক ওদিক তাকিয়ে কাকে যেনো খুঁজছে। শিপু সামনে গিয়ে বলল, তুমি এদিকে?
- আরে আপনাকেই তো খুঁজছি। আমি বই ভালো চিনিনা। আপনি সাথে আসুন। প্লিজ স্যার।
শিপুরও ক্লাস শেষ। বাসায় ফিরতে হবে। বইটা কিনে ওরা একসাথে বাসায় ফিরছে।
শিপু জিজ্ঞেস করল, কালকে মিথ্যা বললে কেনো?
- কোনটা স্যার?
- রুমু অন্যরুমে ছিলো, অথচ তুমি বলেছ, ঝুমু ঘুমাচ্ছে।
- এমনি বলেছিলাম। আপনি মাইন্ড করেছেন? সরি স্যার।
- ইটস ওকে।
দু'জনেই চুপচাপ। তাই ঝুমু মোবাইল বের করে কক খেলা শুরু করল।
শিপু বলল, পড়ে যাবে তো।
- আরে না।  আমি কত্ত খেলি। আমার অভ্যাস আছে।
এমন সময় একটা রোড ডিভাইডারে ঝাঁকি লাগতেই শিপু ঝুমুকে ধরে ফেলল। না ধরলে পড়েই যেতো।
ঝুমু মুখ প্রসারিত করে হেসে বলল, যাক বাবা বাঁচা গেলো। আমি পড়লে কোনো সমস্যা ছিলো না। মোবাইলটা যে পড়েনি, রক্ষে।
শিপু ধমক দিয়ে বলল, মোবাইল ব্যাগে রাখো।
- রাখছি তো। ধমক দেন কেনো? ভয় লাগে।
শিপু তাকিয়ে দেখল মেয়েটার মুখে বিন্দুমাত্র ভয়ের চিহ্ন নেই।

মানুষ বিদেশ থেকে আসলে একগাদা চকলেট নিয়ে আসে। শিপুর বড় বোন ইন্ডিয়া ঘুরে এক ব্যাগ চকলেট নিয়ে এসেছে। শিপু ২ টা ডেইরি মিল্ক নিয়ে পড়াতে চলে গেলো বিকেলে। রুমনা ঝুমনা আগেই পড়ার টেবিলে বসে ছিলো। একই ড্রেস, চশমা। চুলের ঝুটিও একইরকম। ওরা বোধয় যুক্তি করে একইরকম সেজে থাকে। মানুষকে কনফিউজড করার জন্য। চকলেট দুটো দেওয়ার পর তখনই খুলে খাওয়া শুরু করল। একজন চোখ বুজে ঠোঁট গোল করে গাইতে শুরু করল, কিস মি, ক্লোজ ইওর আইজ, এন্ড মিস মি।
শিপুর বুঝতে দেরি হল না, এটাই ঝুমু।
অপর পাশ থেকে রুমু বলল, এই কী হচ্ছে কী! ঝুমু!
বলেই টেবিলের নিচ দিয়ে একটা লাথি দিলো ঝুমুকে।
ঝুমু চোখ কটমট করে তাকালো রুমু দিকে।
শিপু তরিঘরি করে বলল, নাও হয়েছে, পড়া বের করো।
ঝুমু বলল, স্যার, চকলেটটা অন্তত শেষ করতে দেন।
রুমু বলল, ওর চকলেট শেষ করতে করতে পড়ার সময় পার হয়ে যাবে।
ঝুমু বলল, আচ্ছা তাহলে তারাতারি শেষ করি। স্যার ইকটু খাবেন?
শিপুর দিকে আধখাওয়া চকলেট এগিয়ে দিলো। এই মেয়ের মাথায় কী ইকটুও সেন্স নেই। চকলেটটা তার মুখের এঁটো হয়ে আছে!
শিপু বলল, না থাক। তুমি খাও।
ঝুমু বলল, আরে হ্যা! আপনার বোন তো আপনার জন্যও চকলেট এনেছে। ওখান থেকে পরে খেতে পারবেন।
শিপু বলল, অনেক হয়েছে। বই খোলো।
- স্যার আপনার কী শরীর খারাপ?
- হ্যা। তোমাদের ঝগড়া দেখে জ্বর চলে এসেছে।
- বলেন কী স্যার! এটা দেখেই জ্বর। আসল ঝগড়া তো দেখেনই নাই। তাহলে আজকে পড়া বাদ দেন। রেস্ট নেন।
শিপু কিছু বলতে যাওয়ার আগেই ঝুমু বলল, দাঁড়ান, হাতমুখ ধুয়ে আসি। না না, দাঁড়াবেন না। বসুন।

রাতে ঝুমু বলল, তোর সিমটা আমাকে দে তো।
রুমু বলল, কী করবি?
- তোর সিমে ১৯ টাকায় ১ জিবি নেটের অফারটা নেবো। আমার নেট প্যাক শেষ।
- খুলে নে। আর কাওকে ফালতু ডিস্টার্ব করবি না কিন্তু।
- এটা বলেই তো আমাকে ডিস্টার্ব করার কথা মনে করিয়ে দিলি।
- বুঝেছি। আমার সিম ফেরত দে।
- আরে না রে। কাওকে ডিস্টার্ব করবো না।
বলেই ঝুমু জড়িয়ে ধরল রুমুকে।

শিপু রাতে বসে ভাবছিলো ওদের দু'জনের কথা। ঝুমু চঞ্চল। রুমু শান্ত মেয়ে। ওদের সাথে মেশার সাধ তো মিটেছে। কিন্তু তার মন উদগ্রীব হয়ে আছে কারও সাথে প্রেম করার জন্য। কিন্তু কে সে? এতোদিন যার ভ্রুপল্লবের ইশারার জন্য অপেক্ষা করে আছে সে কী নির্দিষ্ট কোনো একজন? নাকি যে কেউ হলেই চলবে?
ঝুমু তাকে যথেষ্ট পাত্তা দেয় বোঝা যায়। চাইলেই তাকে পাওয়া যাবে। কিন্তু মন এক অদ্ভুত জিনিস। শিপুর মন থেকে রুমুর সেই স্নিগ্ধ চোখের নরম চাহনি কিছুতেই আড়াল হচ্ছে না।
এমন সময় মোবাইলে মেসেজ আসলো। আজকাল এত্ত হাবিজাবি মেসেজ আসে, দেখার কিছু নেই। এক মিনিট পর আবার মেসেজের রিংটোন বেজে উঠলো।
শিপু দেখলো রুমুর মেসেজ। প্রথম মেসেজ, আপনার জ্বর কমে গেছে?
পরের মেসেজ, কই বললেন না? ও, ঘুমিয়ে গেছেন?
শিপু রিপ্লাই দিলো, না ঘুমাইনি। জ্বরও আসেনি। এমনি বলেছিলাম। তুমি ঘুমাওনি কেনো? কালকে কলেজ নেই?
রিপ্লাই এলো, হ্যা আছে তো। একটা কথা বলব, মাইন্ড করবেন না তো?
শিপু চিন্তা করছে এটা রুমু তো? নাকি রুমুর মোবাইল দিয়ে ঝুমু দুষ্টুমি করছে? সে লিখলো, না, বলো।
মেসেজ এলো, আমরা কলেজ থেকে ফেরার পথে কলোনীর কয়েকটা ছেলে আমাদের খুব ডিস্টার্ব করে। আপনার বন্ধুরা তো ওখানে থাকে। ইকটু বলে দিবেন প্লিজ?
শিপু বলল, টেনশন করো না। কালকে আমি ছুটির সময় আসবো। দেখবো ব্যাপারটা কী!
ফিরতি মেসেজ এলো, থ্যাংকস। আমি যে আপনাকে মেসেজ করছি, এটা কাওকে বলবেন না প্লিজ।
শিপু লিখলো, আচ্ছা বলবো না। গুড নাইট।
আর রিপ্লাই এলো না। মনে হয় ব্যালেন্স শেষ। রুমু কী সত্যি বলল, নাকি ঝুমু দুষ্টুমি করার জন্য মেসেজ পাঠালো, তা শিপু বুঝে উঠতে পারছেনা। কালকে সে কলোনীর বন্ধুদের নিয়ে যাবে। ব্যাপারটা তখনই পরিষ্কার হয়ে যাবে। আরেকটা ব্যাপারও শিপুর মাথায় এলো, ওদের টিজ করা ছেলেগুলো শিপুর নিজেরই বন্ধু হলে মাথায় বাশ। অনেকদিন পর এডভেঞ্চারের গন্ধ পেয়ে নিজেকে খুব তরতাজা লাগছে শিপুর।

শিপু তার চারজন বন্ধু নিয়ে আইডিয়াল কলেজের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে আছে। ঝুমু ওদের দেখতে পেয়েছে। সে রুমুকে ইশারায় দেখালো। গেটের সামনে প্রচন্ড ভীড়, তাই বাজারের সামনে গিয়ে রিকসা ঠিক করল বাসার। ওদের রিকসার কিছুটা পেছনেই শিপুর বন্ধুরা হোন্ডা নিয়ে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনীর সামনে আসতেই একটা হোন্ডা ওদের রিকসার পাশে পাশে চলতে লাগলো। তিনজন বিভিন্ন সুরে একটা গান গাইতে লাগলো। তখনই শিপুদের দুইটা হুন্ডা এসে ঘিরে ধরল ওদের। শিপুর এক বন্ধু নেমে ওদের একটা ছেলের কলার ধরল। তারপর রিকসাওয়ালাকে বলল, তুমি ওদের নিয়ে যাও।
রুমনা ঝুমনা দু'জনেই দারুন ভয় পেয়েছে। পেছন ফিরে দেখলো, লোকটা ছেলেটার গালে, মাথায় চড় মারছে।
ঝুমু বলল, ওদেরকে যে মারছে, এখন যদি ওরা আমাদের বড় কোনো ক্ষতি করে!
- তার আমি কী জানি? স্যারকে এখানে কে আসতে বলেছে?
- আমি কী জানি?
- ঝুমু, আমার সিম ফেরত দে।
- আরে আমি বলিনি তো।
- তোর বলা লাগবে না। আমার সিম আমাকে দে।
- তাহলে আমি কক খেলবো কীভাবে?
- তোর অত কক খাওয়া লাগবে না।
- ছি ছি! এসব কী বলিস? তোর লজ্জা করে না!

যথারীতি শিপু বিকেলে পড়াতে গেলো ওদের। সকালের ঘটনার ব্যাপারে কেউ কোনো কথা বলছেনা। শিপু একটা ব্যাপার অন্তত নিশ্চিত হয়েছে, রাতে রুমুই মেসেজ দিয়েছিলো।
এমন সময় ঝুমু বলল, স্যার একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
শিপু বলল, কী?
- আপনি কী আমাদের কলেজের ওখানে প্রায়ই যান?
- না তো! কেনো?
- না মানে, আপনি যেভাবে বন্ধুদের নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, মনে হচ্ছিলো, আপনার গার্লফ্রেন্ডের জন্য ওয়েট করছিলেন।
- আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই। লেখাটা শেষ করো।
- সত্যিই স্যার নেই?
- না নেই।
কিছুক্ষণ পর আবার বলল, আরেকটা প্রশ্ন করি স্যার?
- অনুমতি নেওয়ার দরকার কী? করে ফেলো।
- আপনি তাহলে ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন কেনো স্যার?
শিপু রুমুর দিকে তাকিয়ে সাহায্য কামনা করল। রুমু বলল, চুপ করবি?
ঝুমু বলল, আচ্ছা, চুপ করলাম। কিন্তু স্যার, ওরা তো এমনিতে খুব বেশি প্রবলেম করতো না। এখন ওরা আবার আমাদের বড় কোনো ক্ষতি করে যদি!
- করবেনা। তবু সাবধান থেকো দু'জনেই।
শিপু টোস্ট দিয়ে চা খাচ্ছিলো আর লেখা চেক করছিলো। হটাৎ তার বাঁ পায়ের আঙুলে একটা পায়ের আঙুলের স্পর্শ লাগলো। বাঁ পাশে রুমনা বসে আছে। শিপু দ্রুত পা সরিয়ে নিজের চেয়ারের নিচে নিয়ে এলো। হয়তো অজান্তেই লেগে গেছে। এবার ডান পায়ের আঙুলে স্পর্শ টের পেলে শিপু ঝুমনার দিকে তাকালো। ঝুমু ভাবলেশহীন মুখে প্রশ্ন করলো, স্যার, আপনি জানলেন কীভাবে ওই ছেলেগুলো আমাদের ডিস্টার্ব করে?
শিপু আবার রুমনার দিকে তাকালো। রুমনা তাকে বলতে মানা করেছে। সে পা সরিয়ে নিয়ে বলল, আজকে তাহলে উঠি। পড়ায় মনোযোগী হও। আজেবাজে চিন্তা বাদ দাও। পরীক্ষার আর বেশিদিন বাকি নেই।
শিপু উঠে যাওয়ার সময় দেখলো, তার আধখাওয়া টোস্টটা ঝুমু মুখে পুরে দিলো। শিপু চলে গেলো।

শিপু কিছু বুঝতে পারছেনা, সে কী করবে? ঝুমনাকে বেশি প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হচ্ছে না। রুমনার নির্মোহ স্বভাবের প্রতি তার আকর্ষণ জন্মে গেছে। রুমনা ধীরে ধীরে কথা বলে। তার মুখে, অবয়বে রয়েছে কামিনীসুলভ লাবণ্য। আর ঝুমনা শিশুর সারল্যে ভরা আধপাগলী অগোছালো মেয়ে। তবু এর একটা সীমারেখা টানা দরকার। বাড়াবাড়ি হয়ে গেলে একূল ওকূল, দুকূলই হারাতে হবে। মাঝদরিয়ায় হাবুডুবু খাওয়ার সাধ নেই শিপুর। সে রুমনার নাম্বারে মেসেজ পাঠালো, কেমন আছো?
রুমনা মেসেজ পেয়ে ইকটু দ্বিধাগ্রস্ত। ঝুমু কক খেলছে খাটে হেলান দিয়ে। সে রিপ্লাই দিলো, জ্বী ভালো। আপনার জ্বর কমে গেছে?
- হুম্মম। তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
রুমনার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। সে ঢকঢক করে একগ্লাস পানি খেলো। ঝুমু একবার তাকিয়ে দেখলো। সিম নিয়ে যাওয়ায় সে রেগে আছে। ১৫০ টাকা দিয়ে ১ জিবি নেট কিনে এখন সে কক খেলছে।
রুমু অন্যপাশে ঘুরে কাঁথার তলে চলে গেলো। রিপ্লাই দিলো, জ্বী। বলুন।
- মেসেজে না। তুমি কালকে আমার সাথে ইকটু দেখা করতে পারবে?
রুমুর বুক কাঁপছে। মনে হচ্ছে হৃৎপিন্ডের ধকধক শব্দ ঝুমুও শুনতে পেয়ে যাবে।
সে মেসেজ পাঠালো, কালকে কখন? আমার তো কলেজ আছে।
- ছুটি হলে তুমি ঝুমুকে রিকসায় বাড়ি পাঠিয়ে দিবে। কোনো একটা বাহানায় কলেজে থেকে যাবে। আমি ফোন দিবো।
- আমি ঠিক বলতে পারছিনা। চেষ্টা করবো।
- আচ্ছা। আমি ফোন দিবো।
টেনশনে রুমুর ঘুম আসছেনা। ঝুমু কক খেলতে খেলতে ঘুমিয়ে গেছে। রুমু মোবাইলটার লকস্ক্রিন অফ করে ঝুমুর মাথাটা বালিশের ওপর নামিয়ে দিলো। ঘুমের মধ্যে ঝুমু হাত বাড়িয়ে রুমুকে জড়িয়ে ধরল।

ভাগ্যিস আজ রুমুর কম্পিউটার প্রাকটিক্যাল ক্লাস আছে। ঝুমু যাওয়ার সময় বলল, আমাকে যদি ছেলেগুলো একা পেয়ে ধরে? আমি বাসে চলে যাই।
রুমু বলল, আচ্ছা বাসেই যা। ভালো হবে। আমিও বাসে আসবো।
- সাবধানে আসিস। গেলাম।
শিপু বোধয় আশেপাশেই ছিলো। ঝুমু বাসে উঠে গেলে রুমুর মোবাইলে ফোন এলো। শিপু হোন্ডা নিয়ে অপেক্ষা করছে কমলাপুর রেল স্টেশনের মোড়ে। রুমু শিপুকে দেখতে পেয়ে সামনে গিয়ে বলল, জলদি বলুন, আমার ক্লাস আছে।
- ঝুমু চলে গেছে?
- হুম্মম।
- আচ্ছা, উঠে বসো। এখানে না।
রুমু স্পষ্ট চোখে শিপুর দিকে তাকালো। এই ছেলেটাকে কী এক অজানা কারণে বিশ্বাস করাই যায়। সে নিজেওতো চলে এসেছে। ফেরার উপায় নেই।
রুমু পেছনে উঠে বসলো। দমকা হাওয়ায় তার চুলগুলো উড়তে লাগলো মেঘের মতো। এমন অদ্ভুত ভালোলাগার শিহরণ তার মনে আগে কখনো জাগেনি।

ওরা দু'জন কেএফসিতে শুধুই বসেছিলো কিছুক্ষণ। ব্যাগ থেকে একটা মোড়ানো সাদা কাগজ বের করে দেখালো শিপু। রুমু খুব বেশি বিস্মিত হলে চোখ চিকমিক করে। সে অভিভূত হয়ে তার নিজের স্কেচ দেখলো। বলল, এটা কার ছবি?
- তোমার।
- ঝুমুরও তো হতে পারে!
- না। ভালো করে তাকিয়ে দেখো।
রুমু দেখলো চোখগুলো বেশি টানাটানা। ভুরু দুটো চিকন। এটাই তার সাথে ঝুমুর পার্থক্য। এই সূক্ষ্ম ব্যাপারটা যে শিপু ধরে ফেলেছে, তা বুঝতে পেরে রুমুর খুব আনন্দ হলো। সে আর কোনো কথা বলতে পারলো না।
চুপচাপ কফি শেষ করে বেরিয়ে ভিকারুন্নেসার সামনে হটাৎ বাইক থামালো শিপু। রুমুর হাতদুটো ধরতেই তার সারা শরীর চমকে উঠলো।
শিপু বলল, আমি তোমাকে অনেকদিন থেকেই দেখছি। প্রতিদিন তোমাকে ইকটু ইকটু করে চিনেছি। আমার মনে কখন তোমার ছবি চিরস্থায়ী হয়ে গেছে, তা বুঝতেই পারিনি। যখন বুঝতে পারলাম, তখন তোমাকে না বলা পর্যন্ত নিজেকে স্থির রাখতে পারছিলাম না। আমার মনে হয়, এটাই প্রেম। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
এমন অকস্মাৎ প্রেম নিবেদন করে বসবে শিপু একথা কস্মিনকালেও ভাবেনি রিমু। সে কী বলবে কিছু ভেবে পাচ্ছে না।
শিপু বলল, কিছু বলো রিমু।
- কী বলবো? আমি কখনো কাউকে ভালোবাসিনি।
- হাহাহা। তা তো জানিই। আচ্ছা এখন বলতে হবে না। তুমি সময় নিয়ে ভেবে দেখো। তারপর বলো।
এলাকার কিছুটা দূরে বাইক থেকে নামিয়ে দিয়ে একটা রিকসায় উঠিয়ে দেওয়ার পর রিমু বলল, আমি যদি না বলি, তাহলে কী আপনি আমাদের পড়াবেন না?
- তুমি তো দেখি ঝুমুর থেকেও বেশি ইন্টেরেস্টিং করে কথা বলো।
- বলেন না, আমি না বললে কী আর আমাদের বাসায় আসবেন না?
- তোমার কী মনে হয়?
- আমি জানিনা।
- আচ্ছা যাই। তুমি ভেবে জানাও, তারপরই জানতে পারবে।
শিপু একটানে চলে গেলো।

সেদিন শিপু পড়াতে এলো না। রুমু তার আকাশপাতাল ভাবনার কোনো কূলকিনারা পাচ্ছে না।
স্কেচটা দেখে ঝুমু বলল, কে এঁকেছে রে?
- তা তো জানিনা।
- আমি জানি।
- তুই জানিস মানে?
- জানি মানে জানি। কোথায় গিয়েছিলি আজ?
- কোথায় আবার! কোত্থাও না।
- মিথ্যা তো বলতেই পারিস না। বাইক দিয়ে শহর ঘুরে এসে বলে, কোত্থাও না!
রুমু ভাবল, এই বুঝি ধরা খেয়ে গেছে।
ঝুমু বলল, বল না, ছেলেটা কে? আমার বোন প্রেম করবে, আর আমাকে বলবে না? একদম প্রেমের কাচ্চি বিরিয়ানি করে দিবো কিন্তু।
- আরে না। প্রেম ট্রেম কিচ্ছু না।
ঝুমু স্কেচটা দরজার পেছনে টেপ দিয়ে লাগাতে লাগাতে বলল, শান্তার ভাইটা চারুকলায় পড়ে। ভালোই ছবি আঁকে তাইনা রে? আমারই কেউ ছবি এঁকে দেয়না!
রুমু ডায়রি তে কী যেনো লিখছিলো। ঝুমু ধুপ করে খাটে বসতেই বন্ধ করে দিলো।
ঝুমু বলল, হয়েছে। তোর কোনো কথা আমার অজানা আছে রে! প্রেমে পড়ে এই টুইন বোনকে পর করে দিলি নাকি? আমিও দেখ দুদিনের মধ্যেই একটা প্রেম করবো। তাও সব্বাইকে জানিয়ে। তোর মতো লুকিয়ে চুকিয়ে না।
- কার সাথে প্রেম করবি?
- যাস্ট ওয়েট এন্ড সি।

শিপু এলো তিনদিন পর। আজ ঝুমু একা পড়তে বসেছে।
ঝুমু বলল, আজ রুমু সত্যিই ঘুমাচ্ছে। ওর শরীরে প্রচন্ড জ্বর।
শিপু এই কয়েকদিন মোবাইলও বন্ধ করে রেখেছিলো। রুমু তাকে মিস করুক, এটা সে চাচ্ছিলো। তাই পড়াতেও আসেনি। এখন এসে দেখে অন্য কাহিনী।
ঝুমু আবার বলল, জ্বর টর কিচ্ছুনা স্যার। ওই যে একটা গান আছে না, প্রেমের জ্বরে মরছি কেঁপে, দাও গো মুখে থার্মোমিটার...
শিপু ধমক দিয়ে বলল, চুপ করো।
- আজ পড়বোনা স্যার। আসেন গল্প করি।
- আচ্ছা বলো তোমার গল্প।
- আপনি বলেন, আপনার সত্যি কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই?
- আগে তুমি বলো তোমার কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই?
- এক কাজ করি স্যার, কলমটা টেবিলে রেখে ঘুরাই। যার দিকে কলমের মুখ যাবে, সে আগে বলবে।
ঝুমু কলমটা নিয়ে শিপুর হাতে দিলো। হাতে এর আগেও অনেকবার স্পর্শ লাগলেও এবারের স্পর্শটা দীর্ঘক্ষণ মনে হলো শিপুর। এই মেয়েটা তাকে একা পেয়ে আরও বেশি সাহসী হয়ে উঠেছে।
শিপু কলম ঘোরালো। তার দিকেই কলমের মুখ স্থির হলো।
শিপু বলল, রুমুকে ডাকো। ওর সামনে বলবো।
- ওকে আপনি চেনেন না স্যার। আসবেনা।
- তোমাকে ডাকতে বলেছি, ডাকো।
ঝুমু উঠে গেলো। ১ মিনিট পর ফিরে এসে বলল, বলেছিলাম না স্যার, আসবেনা!
শিপু বলল, আচ্ছা, আজ থাক। দু'জনের সামনেই বলব।
যাওয়ার সময় দরজায় স্কেচটা দেখে ইকটু দাঁড়ালো। ঝুমু বলল, আমার ছবিটা সুন্দর হয়েছে না স্যার?
শিপু আর পেছন ফিরে তাকালো না। চলে গেলো।

রাগে ঝুমুর গা জ্বলতে লাগলো। একটা ভুল বোধহয় সে করে ফেলেছে। রুমুর মোবাইল দিয়ে মেসেজ করেছিলো সেদিন। তারপর কী রুমুর সাথে শিপুর আরও কথা হয়েছে? সে ঘরে গিয়ে দেখলো রুমু ঘুমাচ্ছে। ফোনটা নিয়ে মেসেজ চেক করে দেখল শিপুর সাথে তার কোনো কনভারসেশন নেই। তাহলে কী ডিলিট করে ফেলেছে? রুমু সেদিন কী লুকিয়েছিলো? ডায়েরিতে কার কথা লিখছিলো গোপনে? তাকে জানতেই হবে।
ঝুমু ডায়েরিটা সন্তর্পণে বের করলো ড্রয়ার থেকে। তারপর সব পড়ে শরীর শীতল হয়ে গেলো। তাহলে তারা দু'জনই শিপুর প্রেমে পড়ে গেলো? কিন্তু শিপু তো রুমুকে ভালোবাসে। এখন তার কী হবে!
ঝুম বৃষ্টি নেমেছে আকাশ ভেঙে। ঝুমুর খুব কান্না পাচ্ছে। সে জামা পাল্টে খুব সুন্দর করে সাজলো। কাজল দিয়ে চোখগুলো টানাটানা করল। কানে একজোড়া ছোটো দুল পড়ে রুমুর মোবাইল দিয়ে শিপুকে একটা মেসেজ পাঠালো। চশমাটা নিতে গিয়েও রেখে দিলো টেবিলের ওপরে। তারপর ছাদে গিয়ে দু'হাত ছড়িয়ে বৃষ্টির অবিরাম ধারা গায়ে মাখতে লাগলো। তখন তার দু'চোখ বেয়েও অঝোরে বৃষ্টি নেমেছে।

শিপু ছাদে এসে দেখলো রুমু ভিজছে। রুমু তাকে ছাদে আসতে বলেছে। সে কাছে এগিয়ে এসে বলল, তুমি জ্বর নিয়ে ভিজছো?
- তুমি ছুঁয়ে দাও। জ্বর চলে যাবে।
শিপু ঝুমুর কপালে হাত রেখে বলল, তুমি কাঁদছো কেনো?
- তুমি এতোদিন আসোনি কেনো?
- তোমাকে কষ্ট দিতে চেয়েছি।
- আমি ভেবেছিলাম, তুমি আর কোনোদিন আসবেনা।
- আমি তোমাকে ভালোবাসি।
- আমিও তোমাকে ভালোবাসি।
ঝুমু আকাশের দিকে মুখ উঁচু করে চোখ বুজে আছে। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা তার মুখে বিন্দুবিন্দু জমে চিবুক বেয়ে গড়িয়ে নামছে অতলে। নেশাসক্ত অধরে ওষ্ঠ ছোঁয়ালো শিপু। প্রগাঢ় চুম্বনে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো আশীর্বাদ হয়ে নেমে এলো যেনো। চুম্বনটা ইকটু বেশিই দীর্ঘ হয়েছিলো, তাই কখন যে ছাদের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে রুমু ওদের দু'জনকে দেখে চলে গেছে, ওরা তা টেরই পায়নি।

ঝুমু ছাদ থেকে ফিরল সন্ধ্যার পর। ভেজা জামা পাল্টে এসে বলল, কী রে রুমু, আর কত ঘুমাবি?
- তুই একা ভিজলি। আমাকে ডাকলি না যে!
- তোর তো জ্বর। আর একা ভিজিনি তো!
ঝুমুর হাত দুটো ধরে পাশে বসিয়ে রুমু বলল, তুই কী শিপুকে ভালোবাসিস?
- হুম্মম বাসিতো! কেনো তুই বাসিস না?
- না।
- কিন্তু তোকে তো সে খুব ভালোবাসে। তুই ওকে সারাজীবন ভালোবাসবি।
- তুই এসব কী শুরু করেছিস? বৃষ্টিতে তোরা দু'জন ছাদে। আমি দেখেছি।
- আমি জানতাম তুই দেখবি। তোর কাজ তো সহজ করে দিলাম রে। তুই বুক ফাটে তো মুখ ফোঁটে না স্বভাবের। তাই, তোর হয়ে ভালোবাসার কথাটা আমিই বলে দিলাম। এখন তোরা নিশ্চিন্তে প্রেম কর। আমি বাঁধা হয়ে দাঁড়াবো না। শুধু একটা চুমু খেয়েছি। যাকে ভালোবাসি, জীবনের প্রথম চুমুটা তাকে খেতেই পারি! এখন তুই আমাকে অসভ্য, লুচ্চি যা খুশি মনে করিস! আমার কিচ্ছু যায় আসে না।
রুমু হেঁচকি দিয়ে কান্না করছে। ঝুমু তাকে জড়িয়ে ধরে বলল, সরিরে বোন আমার! আমি অন্নেক স্বার্থপরের মতো কাজ করেছি, তাই নারে?

রাতে ঝুমু আবার আগের মতো মোবাইলে কক খেলছ। রুমু জেগে জেগে এলোমেলো ভাবনার জাল বুনছে। গভীর রাতে একসময় রুমু ঘুমিয়ে গেলে ঝুমু তার মোবাইলটা নিলো। শিপুকে একটা মেসেজ পাঠালো, আমি তোমাকে ভালোবাসি। চিরকাল ভালোবাসবো। ♥ গুড বাই।
তারপর অনেক আগের কোনো এক অভিমানে জমানো দুইপাতা ঘুমের টেবলেট মুখে পুরে দিয়ে পানি খেলো ঢকঢক করে। তিন-চারটা পড়ে গিয়েছিলো নিচে। সেগুলো উঠিয়ে গিলে ফেললো। মোবাইলে একটা ফিরতি মেসেজ এসেছে। আমিও তোমাকে ভালোবাসি। অনন্তকাল ভালোবাসবো। ♥
ঝুমুর মুখে তৃপ্তির হাসি। সে যা করেছে, তার জন্য কোনো পরিতাপ নেই।
টেবিলে রাখতে গিয়ে চশমাটা নিচে পড়ে গেলো। যাক পড়ে যাক, ওটা এখন নিষ্প্রয়োজন। ঝুমু খাটে শুয়ে রুমুকে জড়িয়ে ধরলো। গভীর ঘুমের দেশে তলিয়ে যাচ্ছে সে। সে এক অনন্ত ঘুমের দেশ।

ভোররাতে বোনকে অমন জড়িয়ে থাকতে দেখে খুব ভালো লাগলো রুমুর। সে নিজেও জড়িয়ে ধরলো। টের পেলো, হাতে পিচ্ছিল কী যেনো লাগছে। ধড়মড় করে উঠে দেখলো, মুখ দিয়ে লালা গড়িয়ে পড়ছে। সে চিৎকার দিয়ে ডাকল, আম্মা!
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো ঝুমুকে। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ঝুমু না ফেরার দেশে বিলীন হয়ে গেছে।

আজ ভ্যালেন্টাইন'স ডে।
রুমু তার ডায়েরিতে লিখছে, ঝুমুর যে জীবনটা যাপনের কথা ছিলো। আমি এখন তা যাপন করছি। ঝুমু চেয়েছিলো, আমি ঝুমু হয়ে তার ভালোবাসার মানুষটিকে চিরকাল ভালোবাসবো। তাই ভালোবাসছি। শিপু, একদিন যখন আমিও পৃথিবীতে থাকবোনা, তখন হয়তো তুমি এই ডায়েরিটা পড়বে, আর জানতে পারবে, আমি ঝুমুকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসতাম। ঝুমুও আমাকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসতো। তাই জেদ অথবা অভিমানে নিজের প্রাণটাই দিয়ে চলে গেলো! এখন আর ঝুমু আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমায় না। যেদিন ও চিরতরে চলে গেলো, সেদিনও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ছিলো। আমরা শুধু জমজ বোনই ছিলাম না, আমাদের ভালবাসাটাও জমজ।
আমি তোমাকে ইকটুও ভালোবাসতে পারিনি। সবটুকু আমার ভেতর দিয়ে ঝুমু তোমাকে ভালোবেসেছে। তুমি কোনোদিন জানোনি, হয়তো জানতেও পারবেনা, সেই প্রথম দিন থেকে আমি তোমাকে একবারও চুমু খাইনি, সব চুমু ছিলো ঝুমুর।

রুমু খুব যত্ন করে সাজলো। টুকটুকে লাল রঙের শাড়ি। ঠোঁটে গাঢ়ো লাল লিপিস্টিক, কপালে লাল টিপ, হাতে লাল চুড়ি, কানে লাল ঝুমকা। এসব পড়ে ভ্যালেন্টাইন'স ডে তে প্রেমিকের হাত ধরে লোকালয় থেকে দূরে কোথাও হাঁটবে, ঝুমু তাকে একদিন বলেছিলো। অবুঝ, অথচ, কী নিষ্পাপ সরলতায় পূর্ণ তার সাধ-আহ্লাদগুলো!

একটা নদীর ধারে রুমু শিপুর হাত ধরে হাঁটছে। রুমু বলল, আমি তোমাকে এতো ভালোবাসি কেনো জানো?
- না। জানিনা। তুমি বলো।
- বলবো না। তুমি নিজেই একদিন জানতে পারবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৫১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মায়ের নতুন বাড়ি

লিখেছেন সাদা মনের মানুষ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২২

নতুন বাড়িতে উঠেছি অল্প ক'দিন হলো। কিছু ইন্টরিয়রের কাজ করায় বাড়ির কাজ আর শেষই হচ্ছিল না। টাকার ঘাটতি থাকলে যা হয় আরকি। বউয়ের পিড়াপিড়িতে কিছু কাজ অসমাপ্ত থাকার পরও পুরান... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৮










চিত্রকলার কোন প্রথাগত শিক্ষা ছিলনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ছোট বেলায় যেটুকু শিখেছিলেন গৃ্হশিক্ষকের কাছে আর পাঁচজন শিশু যেমন শেখে। সে ভাবে আঁকতেও চাননি কোন দিন। চাননি নিজে আর্টিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতা বনাম ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত বিবিধ দোষ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৪



জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতার বিবেচনায় মুমিন ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত দোষারোপ আমলে নেয় না। আমার ইসলাম সংক্রান্ত পোষ্ট সমূহে অমুসলিমগণ ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে বিবিধ দোষের কথা উপস্থাপন করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×