গ্রামীণ ব্যাংক এর প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইউনুস ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পর দেশের মানুষের জন্য কি করা যায় সে চিন্তার অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেন। সেই বছরে তিনি তেভাগা খামার চালু করেন, লক্ষ্য ছিল গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে গবেষনা কার্যক্রম চালানো। ১৯৭৬ সালে তিনি তার গবেষনার ধারাবাহিকতায় গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। তা ছিল সারা বিশ্বে একরকম উদাহরন! তার ব্যাংক তৈরির উদ্দেশ্য ছিল গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া, যার মাধ্যমে তারা স্বাবলম্বি হতে পারে। স্যার ইউনুস এর এই মডেল আজকাল উন্নত বিশ্বের অনেক দেশ ই অনুসরন করছে।
১৯৭৮ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান, ১৯৮৭ সালে তাকে দেয়া হয় স্বাধীনতা পুরষ্কার। এর আগে তিনি ১৯৮৪ সালে রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার পান। তিনি তার মুকুটের শ্রেষ্ঠ সম্পদ নোবেল শান্তি পুরষ্কার পান ২০০৬ সালে। এর মাঝে তিনি উন্নত বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ থেকে নানারকম সম্মান ছিনিয়ে আনেন। ২০০৭ সালে ব্রাজিল উনাকে "মেডেল অফ ওনার" এ সম্মানিত করেন। এছাড়াও তিনি সোলারওয়ার্ল্ড আইন্সটাইন এ্যাওয়ার্ড (২০১০) কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডাল (২০১০) এর মত সম্মানে সম্মানিত হন।
এক কথায় তিনি আমাদের দেশের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুখ। বাংলাদেশ বলতে অনেক দেশ বুঝে শুধুমাত্র স্যার ইউনুস কে! অনেক ক্ষেত্রে স্যার ইউনুস এর নামের মাধ্যমেই আমার দেশের সম্মান পৌছায় সর্বোচ্চ চূড়ায়। কিন্তু তার সম্মানের প্রশ্নে আমরা কি এক হতে পারি? তাকে আমরা অনিয়মের অপবাদে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ থেকে অব্যাহতি দেই! তাকে আমাদের মন্ত্রী মহোদয় রা "রাবিশ" বলে আখ্যায়িত করেন! তার প্রশ্নে আমাদের মন্ত্রী মহোদয় রা বলেন, " ইউনুস সাহেব এই অবস্থায় এসেছেন সরকারের সাহায্য ছিল বলে!"
উনার প্রাপ্য এই ছিল না! মন্ত্রী এমপি মহোদয়দের কথা বাদই দিলাম, অনেকে দেখি উনাকে ইঙ্গিত করে বলেন "উনি কি এমন করছেন?" যারা সত্যিকার অর্থে জানেনই না স্যার ইউনুস কে! কারণ আমাদের কাছে উনার মত একজন মহৎ ব্যাক্তিত্ব কে সঠিক ভাবে তুলে ধরা হচ্ছে না।
আমি আশা করি, পৃথিবীর বুকে নিজের মাতৃভূমি কে উজ্জ্বল করছেন যারা, সেসমস্ত ব্যাক্তিত্ব রা সঠিকরুপে সম্মান পাবেন নিজ দেশের মাটিতে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৫