somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাফিউর রহমান ফারাবী
ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাংলাদেশের প্রান্ত হতে আপনাকে হাজার সালাম! ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার পিতা মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক

জ্বীন জাতির সাথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কিছু চমৎকার ঘটনা

১০ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই পৃথিবীতে মানুষ আসার আগে থেকেই জ্বীন জাতির বসবাস। আল-কোরআনের সূরা আনআমের ১৩০ নং আয়াতে বলা আছে যে জ্বীন ও মানুষ উভয়ের কাছে নবী এসেছে। তবে আদম আলাইহিস সাল্লাম আসার পর জ্বীনদের নবী মানুষদের থেকেই হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে জ্বিনদের উঠাবসার অনেক বিবরণ সহীহ হাদীসে পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জীবনে মোট ৬ রাত জ্বীনদের সাথে কাটিয়েছেন। মুসনাদে আহমদে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ হতে বর্নিত আছে যে একবার আহলে সুফফার লোকদের মধ্যে সকলকে কেউ না কেউ খাওয়ানোর জন্য নিয়ে গেছে। শুধু আমি একা থেকে গেছি। আমাকে কেউ নিয়ে যায়নি। আমি মসজিদে বসে ছিলাম। এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
মসজিদে এলেন। তার হাতে ছিল খেজুরের ছড়ি। তা দিয়ে তিনি আমার বুকে মৃদু আঘাত করলেন এবং বললেন আমার সাথে চলো। এরপর আমরা রওয়ানা হলাম। যেতে যেতে আমরা মদীনার বাকীয়ে গরক্বদ পর্যন্ত পৌছে গেলাম। ওখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের ছড়ি দিয়ে একটা রেখা টানলেন এবং আমাকে বললেন এর মধ্যে বসে যাও, আমি না আসা পর্যন্ত এখানেই থাকবে। এরপর তিনি চলতে শুরু করলেন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে খেজুড় গাছের ঝাড়ের ভিতর দিয়ে দেখতে থাকলাম। শেষ পর্যন্ত একটা কালো কুয়াশা ছেয়ে যেয়ে উনার ও আমার মাঝে যোগাযোগ কেটে গেল। আমি নিজের জায়গায় বসে শুনতে পাচ্ছিলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছড়ি ঠুকছিলেন এবং বলছিলেন “বসে যাও, বসে যাও” অবশেষে সকাল হতে শুরু করল। কুয়াশা উঠে গেল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছে এলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন তুমি যদি এই বৃত্ত থেকে বের হতে তাইলে জ্বীনরা তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে যেত। আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
জিজ্ঞাস করলেন তুমি কি দেখেছিল ? আমি বললাম কিছু বিচিত্র আকৃতির প্রাণি কে আমি আসতে দেখেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন ওরা ছিল নসীবাইনের জ্বিনদের প্রতিনিধি দল। অরা আমার কাছে এসেছিল কোরআন শিখতে।

তিবরানী থেকে হযরত বিলাল বিন হারিস রাঃ থেকে বর্নিত আছে যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এস্তেঞ্জা করতে গেলেন। আমি তার অনতিদূরে পানির পাত্র নিয়ে পাশেই ছিলাম। সেখানে আমি কিছু লোকের ঝগড়া বিবাদ ও চেচাঁমিচি শুনলাম। এই ধরনের চেচামিচি আমি আগে কখনই শুনি নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিরে আসলে আমি এই চেচামিচির কারন জানতে চাইলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন আমার কাছে মুসলমান জ্বীন ও মুশরিক জ্বীনেরা ঝগড়া করছিল। তারা আমার কাছে আবেদন করল আমি যেন তাদের বাসস্থান ঠিক করে দিই। তো আমি মুমিন জ্বীনদের পাহাড়-পর্বত ও মুশরিক জ্বীনদের জন্য খাদ, গুহা ও সামুদ্রিক দ্বীপ ঠিক করে দেই।

তিরমিযী শরীফে হযরত জাবের রাঃ থেকে বর্নিত আছে যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার সাহাবীদের সামনে সূরা আর রহমানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেন। সাহাবীরা চুপচাপ থেকে পুরা সূরাটা শুনলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বলেন তোমরা চুপ করে আছ কেন ? আমি এই সূরাটি লাইলাতুল জ্বীনে/জ্বীন রজনীতে জ্বীনদের সামনে পড়েছিলাম। যখন আমি আল্লাহর এই বাণী তোমরা তোমাদের মহান প্রতিপালকের কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে তেলাওয়াত করছিলাম তখন জ্বীন রা বলত- “ হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার কোন নেয়ামতকেই অস্বীকার করি না। ”
মেশকাত শরীফে মেরাজ রজনীর বর্ণনায় হযরত আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিত আছে যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন প্রথম আসমানে অবতরনের পর আমি নিচের দিকে তাকিয়ে দেখতে পাই জ্বীনরা আগুন, ধোয়া ও বিভিন্ন জাদু মন্ত্র ও বিভিন্ন আকৃতি ধারন করে অনেক রকম কাজ করছে। তো আমি জিবরাইল কে বলি এসব কি ? তখন জিবরাইল আমাকে বলে জ্বিনরা সারাদিনই এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
এরা শুধু মানুষের চার পাশেই ঘুরে, অথচ আকাশ মন্ডলী ও গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে তারা খুব কমই চিন্তা করে। যদি তারা এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করতো তাইলে তারা সবাই ইসলামে প্রবেশ করতো। খুব কম জ্বীন ই আল্লাহ কে মানে।

তথ্য সূত্রঃ তাফসিরে জালালাইনের এর সম্মানিত লেখক আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রনীত লাক্বতুল মারজ্বানি ফী আহকামিল জান্ন গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ জ্বীন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস, মদীনা পাবলিকেশন্স, ৩৮/২, বাংলাবাজার, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:৪৬
৮টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×