somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাফিউর রহমান ফারাবী
ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাংলাদেশের প্রান্ত হতে আপনাকে হাজার সালাম! ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার পিতা মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক

তালেবানদের ব্যাপারে আমার কিছু কথা

১৩ ই অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



তালেবানরা মূলত ২ ভাগে বিভক্ত। একটা হচ্ছে আফগানিস্তানী তালেবান আরেকটা হচ্ছে পাকিস্তানী তালেবান। পাকিস্তানের সোয়াত উপতক্যায় যারা তালেবান করে তারা কয়েকটি উপজাতি গোত্রে বিভক্ত যেমন উজবেক, তাজিক, হাজারারা,কাজান প্রভৃতি। এই উপজাতি গোত্র গুলির নিজস্ব কিছু প্রথা
আছে যার সাথে দ্বীন ইসলামের কোন মিল নাই। যেমন প্রথাগত ভাবে এই উপজাতিরা মেয়েদের পড়াশুনা মেয়েদের স্কুলে যাওয়া কে সমর্থন করে না। কিন্তু ইসলামী শরীয়তে মেয়েদের প্রাতষ্ঠানিক পড়াশুনায় কখনোই বাধা ছিল না।

উমাইয়া আব্বাসীয় ও উসমানীয় খিলাফত এই ৩ খিলাফত কালেই মেয়েদের প্রাতষ্ঠানিক পড়াশুনা ছিল। মালালা মেয়েটাকে পাকিস্তানী তালেবান রা আঘাত করেছে তাদের গোত্রীয় প্রথা ভাঙ্গার কারনে। কিন্তু ইসলামে যুদ্ধ চলাকালেও নারী শিশু ও বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের আঘাত করা যাবে না। যেহেতু তালেবানরা মালালাকে আঘাত করছে তাদের গোত্রীয় প্রথা ভাঙ্গার কারনে তাই এইখানে ইসলাম কে টেনে নিয়ে আসা ঠিক হবে না। কোন মসজিদের ইমাম সাহেব যদি কোন গর্হিত কাজ করে তাইলে এর জন্য যেমন সকল মুসলমানকে দোষ দেয়া যাবে না ঠিক তেমনি পাকিস্তানী তালেবানরা দ্বীন ইসলাম কে পাশ কাটিয়ে তাদের গোত্রীয় প্রথা মত মেয়েদের স্কুল কলেজ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিলে এর জন্য ইসলাম কে দায়ী করা ঠিক হবে না। আপনারা খারেজীদের নাম শুনেছেন ? এই খারেজীরা সারা দিন রাত নামায পড়তো কোরআন পড়তো। কিন্তু এই খারেজীরা বলতো যে, কোন মুসলমান ইচ্ছা করে কবিরা গুনাহ করলে সে নাকী কাফের হয়ে যাবে নাউযুবিল্লাহ। এই খারেজীদের হাতেই হযরত আলী রাযিআল্লাহু আনহু শহীদ হয়েছিলেন। এই খারেযীরা মুয়াবিয়া রাযিআল্লাহু আনহুকেও হত্যা করতে চেয়েছিল। এই তালেবানরাও আস্তে আস্তে ইসলাম কে বাদ দিয়ে তাদের নিজস্ব গোত্রীয় রীতি পালন করতে করতে এখন খারেজীতে রুপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে।


মুতাজিলা নামক একটা বিভ্রান্ত মতবাদ আব্বাসিয় খিলাফত কালে উত্পত্তি হয়েছিল। এই মুতাজিলারা ইসলামের মূল আক্বীদা থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিল। এই শয়তান মুতাজিলাদের কারনে মুসনাদে আহমদ নামক সহীহ হাদীস গ্রন্থের সংকলক ইমাম হাম্বলী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি কেও অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। তালেবানরাও বর্তমানে ইসলামের মূল আদর্শ থেকে অনেক দূরে সরে গিয়ে পশতু জাতীয়তাবাদ টাইপের ইসলাম কায়েম করতে চাচ্ছে যেই ইসলামের সাথে
সাহাবীদের ইসলামের কোন মিল নাই। মালালা ইউসুফজাই সে কি কোন ইসলামী আক্বীদা বিরোধী কথা বলেছে ? যদি না বলে থাকে তাইলে এই ১৪ বছর বয়সী একটি বালিকাকে গুলি করার অধিকার তালেবানদের কে কে দিয়েছে ? ইসলাম কি তালেবানদের বাপের সম্পত্তি যে তারা নিজেরা খেয়াল খুশীমত কাজ করবে আর ব্যাখ্যা দিবে নিজেদের মনগড়া ইসলাম দিয়ে।


উমাইয়া আব্বাসীয় উসমানীয় এই তিন খিলাফত কালেই রাষ্ট্রযন্ত্র কোরআন দ্বারা চলেছে ঠিক তেমনি সমান্তরাল ভাবে শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতিরও চর্চা হইছে মুসলিম বিশ্বে। আবু বকর উমর ওসমান আলী মুয়াবিয়া এই সম্মানিত ৫ খলিফাই রাষ্ট্র চালাইতে নিয়মিত আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহার কাছ থেকে নির্দেশনা নিতেন। নারী শিক্ষার সাথে ইসলামের কোন বিরোধ নাই। ইসলাম মানুষকে ধার্মিক হতে বলে কিন্তু ধর্মান্ধ হতে নিষেধ করে। ইসলাম খিলাফত রাষ্ট্রের কথা বলে কিন্তু কোন তালেবান টাইপের পশতু রাষ্ট্র কে সমর্থন করে না। এই তালেবান আল কায়েদার অনেক কিছুই ধুম্রজাল। নিয়মাতান্ত্রিক রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে তারা কখনই ছিল না। আফগানিস্তান ইরাকে যে সকল মার্কিন সৈন্য আছে এবং তারা যে সকল কর্তাব্যক্তিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে তাদের কে হত্যা করা জায়েজ কিন্তু এদের ছাড়া আর কোন বেসামরিক সামরিক মার্কিন নাগরিক কে হত্যা করা ইসলামী শরীয়তে পুরাপুরী হারাম। মক্কার ২য় বায়াতে আকাবার সময় সাহাবীরা উকাজের মেলায় গভীর রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে মক্কার নেতৃস্থানীয় কুরাইশ নেতাদের কে হত্যা করার অনুমতি চেয়েছিল কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্পষ্ট ভাবে সাহাবীদের কে এই কাজ করতে নিষেধ করেছেন। এর দ্বারা বুঝা যায় চোরাগুপ্তা হামলা, একজন কাফের কে মারতে যেয়ে ১০ জন নিরীহ ব্যক্তিকে মারা ইসলামে পুরাপুরী নিষেধ। ইসলামের জিহাদ কোন গোপনীয় বিষয় নয় বরং জিহাদ প্রকাশ্যে সংঘটিত হয়। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা প্রত্যেকটা মানুষ কে এই যোগ্যতা দিয়েছেন যাতে সে একজন সত্যিকার মুসলমান হতে পারে। যেখানে ইউরোপ আমেরিকায় দলে দলে মানুষ মুসলমান হচ্ছে সেইখানে তালেবানদের এইসব অদ্ভুদ অদ্ভুদ কাজ কারবার করা দেখে বুঝা যাচ্ছে যে তালেবানদের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব ইহুদীদের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। আর ইহুদীরাই তালেবানদের দ্বারা এইসব অনৈসলামী কাজ করাচ্ছে যেন সারা পৃথিবীর মানুষ ইসলাম কে ভুল বুঝে। সত্যিকথা বলতে কি ইসলামের ইতিহাসে তালেবানদের নামও এখন মুতাজিলা খারেজি এইসব বিভ্রান্ত আক্বীদার সাথে উচ্চারিত হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়ে একটি জিহাদে এক ব্যক্তি খুব বীরত্ব সহকারে কাফেরদের বিরুদ্ধে করেছিল। যুদ্ধ শেষে সাহাবীরা ঐ ব্যক্তির ইখলাসের প্রশংসা করলে তখন ঐ ব্যক্তি বলে আরে আমি তো যুদ্ধ করছি এই জন্য যে সবাই আমার গোত্রের প্রশংসা করবে আমার বীরত্বের প্রশংসা করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন এই ঘটনাটা শুনে বলেন যে- " যে আসাবিয়্যা বা গোত্রপ্রীতির জন্য যুদ্ধ করবে সে মুসলমান নয়।" তালেবানরাও বর্তমানে দ্বীন ইসলামের চেয়ে তাদের গোত্রীয় রীতিনীতি কে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে। আমাদের দেশেও দেখা যায় সিলেটি মেয়ে নোয়াখালী ছেলেকে বিয়ে করলে মেয়ের সিলেটী অভিভাবক রা যেমন এই বিয়ে মেনে নেয় না ঠিক তেমনি পাকিস্তানের অনেক উপজাতি গোত্রও তাদের নিজস্ব গোত্র ছাড়া আর কোন গোত্রে বিয়ে করে না।কোন ছেলে মেয়ে গোত্রের বাইরে বিয়ে করলে তালেবান রা তাদের কে হত্যা করে ফেলে যেটা অবশ্যই ইসলাম সমর্থন করে না। সত্যিকথা বলতে কি তালেবানরা আমেরিকার বিরুদ্ধে জিহাদ করছে আমি এটাকে Support করি কিন্তু নারী শিক্ষা বন্ধ করে দেয়ার কোন অধিকার ইসলাম তালেবানদের কে দেয় নাই।
১৮টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×