somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদম (আ.)/ বিবর্তীত মানব

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




পাঁচশত কোটির বেশী মানুষ বিশ্বাস করে দু’জন মনব-মানবী থেকে মানবজাতি বিস্তৃত। কিছু সংখ্যক বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ মনে করে এক দল বিবর্তীত প্রাণী থেকে মানবজাতি বিস্তৃত।

দু’জন মনব-মানবীর নাম কেউ বলে, মনু-শতরূপা, কেউ বলে এডাম-ইভ, কেউ বলে আদম-হাওয়া। এদের দাবীর স্বপক্ষে আছে ঐশি বাণী এবং বিপরীত পক্ষে আছে জীববিজ্ঞান। একপক্ষ বলছে, ঐশিবাণী বলতে কিছু নেই, এগুলো মানুষের মনগড়া কথা এবং অপর পক্ষ বলছে, বৈজ্ঞানিক তথ্যেও ভুল থাকে। কারণ এসব মানুষের আবিষ্কার। আর মানুষ মাত্রই ভুল থাকায় মানুষের আবিষ্কৃত তথ্যেও ভুল থাকে।

ঐশিবাণী কোরআন যিনি প্রচার করেছেন তিনি সত্যবাদী খেতাব প্রাপ্ত। সত্যবাদী হওয়া কিছু মানুষের খাচিয়ত। কথায় বলে খাচিয়ত যায় না মরলে। সেজন্য সত্যবাদী খেতাব প্রাপ্ত মোহাম্মদের (সা.) প্রচারিত কোরআনকে ঐশিবাণী হিসাবে বিশ্বাস করে প্রায় দুইশত কোটি মানুষ। কোরআন বলে, আদম (আ.) খলিফা বা স্থলাভিষিক্ত। স্থলাভিষিক্ত সাধারণত তাঁর মত কারো স্থলাভিষিক্ত হন। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এটা মৃত্যু জনিত কারণে হয়। কোরআনের ভাষ্য মতে মহাজগতের নিয়ন্ত্রক আল্লাহ বিশৃঙ্খলা জনিত কারণে আদম (আ.) যাদের স্থলাভিষিক্ত হন তাদেরকে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত করে ফেলেন। তারপর পৃথিবীর বাইরে থেকে আদমকে (আ.) পৃথিবীতে এনে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেন।বিদ্যমাণ মানব জাতি সেই আদমের বংশধর।

আদম (আ.) যাদের স্থলাভিষিক্ত হলেন তারা পৃথিবীতে কিভাবে বিদ্যমাণ ছিল সেই বিষয়ে কোরআনে কোন বক্তব্য নেই। তারা যদি মানুষের মত দেখতে কোন বিবর্তীত প্রাণী হয়ে থাকে তাতে কোরআনের সাথে এর কোন বিরোধ নেই। কারণ তাদের উদ্ভবের বিষয়ে কোরআনে কোন বিবরণ নেই। আর পৃথিবীর বাইরে থেকে কেউ পৃথিবীতে আসেনি এবং মানুষের মত দেখতে যারা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে তারা বিলুপ্ত হয়নি এমন কথা বিজ্ঞান বলেনি। সুতরাং আদম (আ.) তথ্যের সাথে বিবর্তীত মানব তথ্যের মূলত কোন সংঘাত নেই।

বিশৃঙ্খলার স্থলে শৃঙ্খলা ফিরাতে আল্লাহ পৃথিবীর বাইরে থেকে আদমকে (আ.) পৃথিবীতে আনলেন এবং বিশৃঙ্খলার স্থলে শৃঙ্খলা ফিরাতে আল্লাহ তাঁর বিধান দিলেন। আল্লাহ/ঈশ্বর/ভগবানের বিধান সম্বলিত বাণীকে ঐশিবাণী বলে। কোরআন এমন একটি ঐশিবাণীর সংকলন। কোরআনে মানুষের চিরস্থায়ী জীবন কাল হিসাবে মানুষের একটা পরকালের কথা বলা আছে। কোরআনের বিধান মানলে মানুষ পরকালে সুখে থাকবে এবং কোরআনের বিধান না মানলে মানুষ পরকালে দুঃখে থাকবে বলে কোরআনে বলা আছে। কোরআনের ঘোষণা মতে যারা পরকালে সুখে থাকতে চায় তারা কোরআনের কোন কথা বেঠিক বলে না। বিজ্ঞানের দোহাই দিয়েও তাদের এ বিশ্বাস বদলানো যায় না। সুতরাং আদম (আ.) ও হাওয়ার মাধ্যমে মানব জাতি বিস্তৃত এটাই কোরআন বিশ্বাসীরা বিশ্বাস করবে। বিবর্তীত মাবব সম্পর্কে তাদের মত হলো তারা এখন বিলুপ্ত।

বিবর্তীত মানবের ক্ষেত্রে লক্ষ-কোটি বছরের হিসাব রয়েছে, আর আদমের (আ.) হিসাব মাত্র দশ হাজার বছরের হিসাব। আদমকে (আ.) যারা অস্বীকার করে তারা প্রমাণ করুক দশ হাজার বছর পূর্বে বিবর্তীত মানুষ বিলুপ্ত হয়নি এবং তখন আদম (আ.) নামে কেউ আসেনি। বিশ্বাসযোগ্য ভাবে তারা এমন প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারলে আদম (আ.) বিশ্বাসীরা তাদের কথা বিশ্বাস করতে বাধ্য নয়।

আদম (আ.) যাদের স্থলাভিষিক্ত তাদের জন্য কোন বিধান না থাকায় তাদের পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের হিসাব নেই।মানুষের মত দেখতে হুর ও গেলমান রয়েছে জান্নাতে। যারা পৃথিবীতে আসেনি। আদম (আ.) যাদের স্খলাভিষিক্ত তারা এবং হুর ও গেলমান মানুষের মত দেখতে তবে তারা আদম (আ.) সন্তান নয়। আদম (আ.) যাদের স্খলাভিষিক্ত তাদের ইহকাল ছিল পরকাল নেই। হুর ও গেলমান ইহকালে আসেনি। আদম (আ.) ও তাঁর সন্তানদের ইহকাল ও পরকাল উভয় আছে। বিজ্ঞান তার কাজ করে করুক। তবে মানুষের মত দেখতে সব প্রাণীকে যেন তারা একত্রে গুলিয়ে না ফেলে। বিড়াল জাতীয় বহুপ্রাণী আছে, তাদের সবাইকে বিড়াল নামে অভিহিত করা হয় না। বিড়াল জাতীয় প্রাণীদে রমধ্যে শুধু মাত্র একটা প্রাণী বিড়াল নামে অভিহিত। বিড়াল জাতীয় প্রাণীদের প্রত্যেকের মাঝে আলাদা বৈশিষ্ঠ রয়েছে। অনুরূপ মানব জাতীয় প্রাণীদের মাঝেও রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট। এরমধ্যে আদম (আ.) সন্তান মানুষ বেশী উন্নতমানের। কারণ এদেরকে উন্নতমানের করেই পৃথিবীর বাইরে থেকে এখানে আনা হয়েছে।

কোরআন মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রকের বাণী। মহাবিশ্বের অবস্থা দৃষ্টে এর একজন নিয়ন্ত্রক থাকাই প্রতিয়েমেয়। কেমন গাঁজাখুরী কথা! সবকিছুই নাকি এমনি এমনি হয়েছে, শুধু এ নিয়ন্ত্রক নাকি এমনি এমননি হননি। সবকিছু এমনি এমনি হতে পারলে নিয়ন্ত্রক কেন এমনি এমনি হতে পারবেন না? নিয়ন্ত্রক বলেছেন, তিনি প্রথম। তারমানে একদা তিনি দেখেছেন তিনি ছাড়া আর কিছু নাই এবং তিনি ছাড়া আর কিছু এমনি এমনি হচ্ছে না। সুতরাং তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। লোকেরা বলছে তিনি নাকি সবকিছু সৃষ্টিকরেন নাই। তো তিনি সবকিছু সৃষ্টি করেন নাই, লোকেরা এটা দেখেছে কি? অহেতুক কারো কথা অস্বীকার করার কি দরকার? তাঁর কথা স্বীকার করব কেন? তাঁর কথা স্বীকার করব কারণ তাঁর কথা স্বীকার না করলে তিনি শাস্তি দিবেন বলেছেন। তাঁর যদি শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা থাকে তবে তাঁর কথা বিশ্বাস না করে বিপদে পড়তে যাব কোন কারণে? মহাজগত দেখে এর নিয়ন্ত্রকের বিশ্বাস সহজবোধ্য বিষয়। আমরা সহজ পথে থাকতে চাই। অহেতুক কঠিন শাস্তির ঝুঁকির মধ্যে পড়তে চাই না। এ বিষয়ে আমরা রাজীব নুরের কথা শুনতেও চাই না এবং মানতেও চাইনা। তার কথার জবাবে আমরা শুধু ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ বলতে চাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৫৫
৩৫টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

"জাতীয় ঐক্য" বলতে ড: ইউনুস সাধারণ মানুষের ঐক্যের কথা বলছেন না।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ভোর ৪:১৬



"জাতীয় ঐক্য" বলতে ড: ইউনুস সাধারণ মানুষের ঐক্যের কথা বলছেন না; ইহার দ্বারা তিনি মুলত: আওয়ামী লীগ বিরোধী দলগুলো থেকে "জাতীয় সরকার" গড়ে তোলার কথা বলছেন; তিনি সেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

একুশ বছর

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ভোর ৪:৩৬



একুশ বছর—
সাত হাজার ছয়শত পঁয়ষট্টি রাত
আমি নির্ঘুম— চোখের নিচে কালো দাগ সাক্ষী।
আজও ভেসে ওঠে তোমার প্রিয় হাসিমুখ
আর কাজল কালো এণাক্ষী।

প্রথম যেদিন আমি, তোমার পানে চেয়েছি
তোমার দুচোখে আমি, আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

"বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী".....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২২

"বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী".....

ভারতীয় উপমহাদেশ প্রায় ২০০ বছর বৃটিশদের অধীনে ছিলো। দীর্ঘ বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে ১৯৪৭ সালে বৃটিশ শাসনের অবসান হলে আমরা পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেলাম। আবার দুই যুগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশী হিন্দুরা কেন শক্তভাবে কথা বলতে পারছেনা?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:২১


বাংলাদেশের হিন্দুরা বলতে গেলে ৯৫ পার্সেন্ট আম্লিগকে ভোটি দেয় ইহা ধ্রুবসত্য। অনেকেই হয়তো দ্বিমত পোষণ করতে পারে সেটা তার নিতান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। তারা সবসময়ই ভাবে আম্লিগ তাদের রক্ষাকর্তা কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্বে ভুয়া তথ্য ছড়ানোয় শীর্ষে ভারত

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৪




বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভুয়া তথ্য ছড়ানো দেশের তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে ভারত। মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভুয়া খবর ছড়ায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×