জেঃ জিয়া ইতিহাসের মহানায়ক না মহা খলনায়ক? বিএনপি বলবে মহানায়ক। আওয়ামী লীগ বলবে মহা খলনায়ক।নিরপেক্ষ দৃষ্টি জিয়াকে কি হিসেবে আখ্যায়িত করবে? জিয়া বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের হত্যা কান্ডের বিচার করেছিলেন কি? জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচার করেছিলেন কি? বাংলাদেশকে যেদল স্বাধীন করেছে সে দলকে ক্ষমতার শরীক করেছে কি? নাকি যারা বাংলাদেশ চায়নি তাদেরকে ক্ষমতার শরীক করেছে? কিসের ভিত্তিতে জিয়া মহানায়ক? যে গুণের ভিত্তিতে জিয়া মহানায়ক সে গুণের ভিত্তিতে অন্যেরা কেন মহানায়ক নয়? এক বাজারেতো দু’রকম বেচা-কেনা হতে পারেনা।
বঙ্গবন্ধু ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন জাতির মঙ্গল করেছেন। ভাঙ্গাচুরা দেশ নিয়ে তিনি বেশী দূর এগুতে পারেননি। ভাল কিছু করতে তাঁর সময়ের দরকার ছিল। তিনি সময় পাওয়ার জন্য একদলীয় ব্যবস্থা করে ছিলেন। কিন্তু তাঁকে সময় না দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তো এখন বহু দল ব্যবস্থায় আমরা কি পাচ্ছি? জিয়া নির্বাচন করেছেন তিনি জয়লাভ করেছেন। এরশাদ নির্বাচন করেছেন তিনি জয়লাভ করেছেন। খালেদা নির্বাচন করেছেন তিনি জয়লাভ করেছেন। হাসিনা নির্বাচন করেছেন তিনি জয়লাভ করেছেন।সমস্যা হলো খালেদা তাঁর প্রাপ্য জয় টিকাতে পারেননি। কারণ তাঁর দক্ষতার অভাব ছিল, অথবা ভাগ্য তাঁর অনুকূল ছিল না। তত্ত্বাবধায়ক নির্বাচন করেছে, তারা জয়লাভ করেনি, কারণ তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। তবে তত্ত্বাবধায়কের নির্বাচনে যে দল ক্ষমতা ছেড়েছে তারা জয়লাভ না করে অন্যদল জয়লাভ করেছে।কাজেই তত্ত্বাবধায়ক বিরধীদের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আদর্শ।
খালেদা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পেয়ে এর প্রয়োজন অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন পাগল ও শিশু ছাড়া কোন নিরপেক্ষ লোক নেই।ভাগ্য চক্রে তাঁর দলের ক্ষমতা লাভের জন্য নিরপেক্ষ সরকার এখন মহা দরকার হয়ে পড়েছে। কিন্তু যেহেতু খালেদা বলেছেন নিরপেক্ষ বলতে কেউ নেই সেহেতু তার দলের ডাকে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আণ্দোলনে জনগণের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।কারণ যা নেই তা’ মূলত ঘোড়ার ডিম। তো’ জনগণ ঘোড়ার ডিমের জন্য আন্দোলন করবে নাকি? খালেদা যদি তাঁর ক্ষমতা আমলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়ে রেখে যেতেন, ছিয়ানব্বইর বারই ফেব্রুয়ারীর নির্বাচন না করতেন। তাহলে হয়ত তাঁর দলের ডাকে আন্দোলন করার যোক্তিকতা জনগণ খুঁজে পেত। কিন্তু তাদের উল্টা-পাল্টা কাজের কারণে জনগণ তাদের ডাক শুনছেনা। এখন কেউ কেউ বলছে একদা জিয়া নামক কেউ একজন মহানায়ক ছিল। তো জিয়া মহা নায়ক হলে, এরশাদ ও হাসিনা কেন মহানায়ক নয়? জিয়াতো আত্মরক্ষা করতে পারেনি। ভাগ্য তাঁর সহায় ছিলনা। অথচ এরা আত্মরক্ষা করতে পারছে এবং ভাগ্যও এদের সহায় রয়েছে!
জিয়াকে আওয়ামী লীগ কোন দিন মহা নায়ক মানবে না। কাজেই জিয়া জাতীয় মহানায়ক নয় বরং দলীয় মহানায়ক। আর ওরকম দলীয় মহানায়ক সব দলেই রয়েছে।জিয়া তত্ত্বে জনগণ জিয়ার দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত হবে বলে মনে হয় না। জিয়ার দল এখন যে খাদে পড়েছে এর থেকে উঠতে হলে তাদের এখন বড় সড় একটা হাতি প্রয়োজন। কাজেই তাদের এখন কাজ সেই হাতির সন্ধান।ফখরুদ্দিন ও মইনদ্দিনের মত কেউ হলেও হয়। কিন্তু এমন কিছু পেতেও ভাগ্যলাগে। কাজেই জিয়ার দলের ভাগ্যের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া কোন গতি দেখছি না।
অতীতে ঝুঁকি নিয়েছে সেনারা আর লাভের গুড় খেয়েছে জিয়া ও তাঁর দল। এমন কি আর কালে কালে হয়? আওয়ামী লীগের শক্তি এর শক্তিশালী সংগঠন। জিয়ার দলেরও সেটা লাগবে। তো মনোনয়ন বানিজ্য করলে কি আর শক্তিশালী সংগঠন হবে? সংগঠন মজবুত করতে যারা কাজ করে তারা মনোনয়ন না পেলে কি সংগঠন মজবুত হয়? জিয়ার দলের নেতাদেরতো টাকা দেখলে হুঁস থাকে না। টাকা দিয়ে যে মনোনয়ন কিনে তার আবার লোক থাকেনা। এমন বিচ্ছিরি কান্ড যে দলে সে দলের এখন জিয়ার স্মৃতিই একমাত্র সম্বল।থাকুক তারা জিয়ার স্মৃতি নিয়ে। আমার এক চাচা শ্বশুর বলেছেন আওয়ামী লীগ একশ বছরের জন্য ক্ষমতায় এসেছে কাজেই অন্যদের সঠিক কাজ শান্তিতে নিদ্রামগ্ন হওয়া অথবা নিরবে অশ্রু বিসর্জন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:১৮