somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রথম কবিতারা

০২ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



যদ্দূর মনে পড়ে, চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় কোনো এক সন্ধ্যায় কুপির আলোতে বিছানায় উপুর হয়ে পেন্সিল দিয়ে ৩-৪ লাইনের ছড়া জাতীয় একটা কিছু লিখেছিলাম। কী লিখেছিলাম মনে থাকার কথা নয়; প্রায় ৩৪-৩৫ বছর আগের কথা।
এরপর ৮ম শ্রেণীতে উঠে। পাঠ্যবইয়ে একটা গল্প ছিল। সেটাকে কবিতা বানানোর চেষ্টা চলে প্রায় পুরো বছর ধরে, কিন্তু দু লাইনের বেশি এগোতে পারি নি।

৯ম শ্রেণীতে উঠে হঠাৎ কবি হয়ে যাই, প্রেমট্রেম ছাড়াই। কবিতায় নজরুলের প্রকট ছায়া, শিক্ষকরা বলেন, ‘তুই তো নজরুলের পর আরেকটা বিদ্রোহী কবি হতে চলেছিস।’ আমি গর্বে স্ফীত হই।
প্রতিদিন চারপাঁচটা কবিতা লিখি। বন্ধুরা আরো বেশি লিখতে বলে। কখনো লিখিও। রবীন্দ্র-নজরুলের রেকর্ড ভাঙার স্বপ্ন দেখি।
কবিতার খাতায় ট্রাংক ভরে গেলো। চারদিকে কবিখ্যাতি ছড়ায় খুব দ্রুত।
ইতোমধ্যে কবিতা কিছুটা বুঝতে শিখি। তাই, একদিন ট্রাংক থেকে গোটা বিশেক কবিতার খাতা বের করে ছোটো ভাইয়ের হাতে দিয়ে বলি, ‘এগুলো বেঁচে চানাচুর খেয়ে ফেলিস।’
মুদি দোকানদারের ছোটো ভাই পরদিন দুপুরে হন্তদন্ত হয়ে এসে বলে, ‘সর্বনাশ হইয়া গেছিল খলিল ভাই।’ সবগুলো কবিতার খাতা আমার সামনে রেখে সে বলে, ‘দেখেন, আপনার ছোটো ভাই এইগুলো বেঁইচা আসছিল আমাগো দোকানে।’
আমি ওকে বলি, ‘এগুলো নিয়া যাও, এগুলো কবিতা না।’
আমার প্রায় সাড়ে চারশো কবিতা থেকে মাত্র ২০টার মতো রেখে বাকিগুলো ওভাবেই ফেলে দিয়েছিলাম।
কবিতা লেখার আরো কতো মজার কথা আছে, যেমন আছে আপনাদেরও।

ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠে স্কুলের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমি প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করি। সেটি ১৯৭৯ সালের কোনো একটা জাতীয় দিবস ছিল। আর আমি হাইস্কুলের সর্ব কনিষ্ঠ শ্রেণীর অতি লাজুক স্বভাবের এক ছাত্র, অন্য এক সহপাঠীর হাত থেকে ‘অগ্নিবীণা’ তুলে নিয়ে নাম লিখালাম কবিতা আবৃত্তিতে- ‘ধুমকেতু’। কনিষ্ঠ থেকে শুরু, এবং যথারীতি আমার নাম সবার আগে ঘোষিত হলো। মাইক্রোফোনের সামনে ছয়-সাতশো ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষকগণের দিকে তাকিয়ে আমি তীব্র উত্তেজনা বোধ করি। আমার উত্তেজনা শীর্ষে উঠলো, যখন শুরু করলাম :

আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুনঃ মহাবিপ্লব হেতু
এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু...

আবৃত্তি শেষ হলে তুমুল করতালি আর অভিবাদন পেতে থাকি। খুব কৃতার্থ বোধ করি। এটা স্বয়ং আমার কাছেই একটা বড় বিস্ময় ছিল কীভাবে এতো ভালো আবৃত্তি করলাম। কনিষ্ঠ হওয়ার কারণে একটু বেশি করতালি পেয়ে থাকতে পারি, তা অবশ্য স্বীকার্য।
এই ‘ধুমকেতু’র পর থেকে নিজের ভেতর নতুন একটা বোধের জন্ম হতে থাকে। সহপাঠীর ‘অগ্নিবীণা’ বইটি বাসায় নিয়ে যাই। সেখান থেকেই ‘বিদ্রোহী’র সাথে পরিচয়; কিন্তু ‘বিদ্রোহী’র খ্যাতি ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে তখনো আমার বিন্দুমাত্র জ্ঞান ছিল না। কিন্তু ‘অগ্নিবীণা’র কবিতাগুলো আগুনের ফুলকির মতো আমার সর্বান্তশরীরে জ্বলে উঠতে থাকলো। আমার নাগালে কখনো বইয়ের প্রাচূর্য ছিল না; তাই অনেক অনেক দিন ধরে ‘অগ্নিবীণা' আমার কাছে থেকে যায়। সব অনুষ্ঠানেই এ বই থেকে কবিতা আবৃত্তি করি।

পুরোদমে ‘ভূরি ভূরি’ কবিতা লিখতে শুরু করি নবম শ্রেণী থেকে। বিষয়বস্তু পুরোপুরি নজরুলীয়। শিক্ষকদের মতো বন্ধুবান্ধবরাও বলে- ‘তুই তো দেখি ‘বিদ্রোহী’ কবি হইয়া যাইতেছিস।’ ওদের কথাগুলো আমাকে দারুণ উজ্জীবিত করে। এমন সময়ে স্কুললাইব্রেরির খোঁজ পাই; আমাদের স্কুলের খুব ছোটো এককোনায় কিছু বইপত্র আছে, তা এর আগে জানা ছিল না। দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক লাইব্রেরির চাবি আমার হাতে দিয়ে তালা খুলে পছন্দমতো বই নিয়ে নিতে বললেন। এখানে আরেকটা কথা বলে নিই। সেই সময়ে এখনকার মতো দৈনিক পত্রপত্রিকা পাওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের ছিল না। তাই সমসাময়িক কবিলেখকদের নামধাম জানার তেমন কোনো সুযোগও ছিল না। আমরা মূলত স্কুলপাঠ্য বইয়ে যেসব কবির কবিতা পড়েছি, তাঁদের ব্যাপারেই আগ্রহবোধ করতাম। আমি লাইব্রেরিতে ঢুকে বিভিন্ন বই নাড়াচাড়া করতে করতে একটা কবিতার বই পাই- ‘সুকান্ত সমগ্র’। তখনো পর্যন্ত সুকান্তের কোনো কবিতা স্কুলপাঠ্য বইয়ে আমরা পাই নি। লাইব্রেরিতে দাঁড়িয়েই বেশ কিছু কবিতা পড়ে ফেলি। একেকটা কবিতা পড়ি, আর আমার ভেতর যেন বারুদ বিস্ফোরণোন্মুখ হতে থাকে। আমি আরেক নজরুলের সাক্ষাৎ পাই।

এরপর অনেক দিন পর্যন্ত আমি ‘সুকান্ত সমগ্র’তে বুঁদ হয়ে পড়ে থাকি।
বলতে ভুলে গেছি, এর আগে আমাদের এক বাংলা শিক্ষক প্রায়ই সুকান্ত ভট্টাচার্যের নাম বলতেন। তিনি একদিন ‘ছাড়পত্র’ পাঠ করে শুনিয়েছেনও। তিনি সুকান্ত বন্দনায় খুব মুখর ছিলেন; এবং ‘ছাড়পত্র’ বাংলাসাহিত্যে একটা উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে, তিনি বলতেন। তবে তাঁর পঠিত ‘ছাড়পত্র’ শুনে আমি মোটেও মুগ্ধ হতে পারি নি। কিন্তু স্বহস্তে ‘ছাড়পত্র’ পেয়ে ওটা পড়ার পর আমি বিস্ময়ে ও মুগ্ধতায় আপ্লুত হয়ে উঠলাম। কীভাবে লিখলেন সুকান্ত এমন কবিতা! কবিপরিচিতিতে তাঁর ২১ বছর বয়সে মৃত্যুর কথা লেখা রয়েছে। আমি অবাক হই; আমার বয়স কতো- আমি নিজের বয়সের হিসেব করি আর ভাবি, ২১ বছর বয়সে কি আমি সুকান্তের মতো আগুনঝরা অন্তত একটা কবিতা লিখে ফেলতে পারবো?
যেটা পড়ি সেটাই ভালো লাগে। বন্ধুদের ডেকে আবৃত্তি করে শোনাই। অনেকেই কবিতা বোঝে না, তবে আবৃত্তির জন্য বাহবা জানায়।
খবর, চারাগাছ, একটি মোরগের কাহিনী, সিঁড়ি, কলম, প্রার্থী, আগ্নেয়গিরি, লেনিন, অনুভব, সিগারেট, দেশলাই কাঠি, বোধন, রানার, আঠার বছর বয়স, হে মহাজীবন, বিদ্রোহের গান, পূর্বাভাস- এ কবিতাগুলো আমার খুব প্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু একটি মোরগের কাহিনী, সিঁড়ি, কলম ও দেশলাই কাঠি- এ কবিতা কয়টা আমার ভেতরে একদম গেঁথে গেলো। আমি কবিতা যা লিখি, সবই এ চারটি কবিতার আদলে হয়ে যায়। আবার কোনো কোনো কবিতাকে অন্যটি থেকে আলাদা করতে পারি না, নিজের কবিতা হওয়া সত্ত্বেও। কখনো মনে হয়, সুকান্তের কবিতার একেকটা সংস্করণ লিখছি আমি; আমি সুকান্ত থেকে বেরুতে পারি না।
সেই সময়ে লেখা কিছু কবিতা আপনাদের জন্য এখানে দিলাম। কবিতা হয়েছে তা বলছি না, বলছি আমার ভেতর সুকান্ত কতোখানি গেঁথে আছেন, সেই কথা।
প্রথম দিকে কবিতার নিচে তারিখ লিখে রাখতাম। এক খাতা থেকে আরেক খাতায় যেতে যেতে দেখি এখন শুধু সনটাই লেখা রয়ে গেছে।
এগুলো নবম-দশম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় লেখা, তবে কোন্‌টি আগে, কোন্‌টি পরে লেখা তা আজ আর বলার উপায় নেই।

শেষাংক
তোমরা মাংস খেয়ে উচ্ছিষ্ট হাড় ছুঁড়ে ফেলো আমাদের গায়
সে হাড় চিবুই
আর চেয়ে চেয়ে তোমাদের নিষ্ঠুর ভোজোৎসব দেখি
আমরা অসহায় ক্ষুধার্ত কুকুর

তোমাদের ছুঁড়ে ফেলা শুষ্ক হাড় আমরা চিবুই বটে
কিন্তু দুঃসহ যন্ত্রণায় হাহাকার করে ওঠে
আমাদের ক্ষুধার্ত উদর সারাক্ষণ : আমাদের মেটে না ক্ষুধা
অনেক কাল কেটে গেছে দেখতে দেখতে
তোমাদের নিষ্ঠুরতা।
আর কতো দেখবো, বলো?

আমরা সইবো না আর,
চেয়ে দেখো :
আমাদের চোখে আজ আগুন জ্বলছে বিক্ষুব্ধতার
চেয়ে দেখো :
কী ভীষণ হিংস্রতায় কাঁপছে থরোথরো
সুতীক্ষ্ম আমাদের থাবা

অকস্মাৎ আমরা একদিন
তোমাদের ধরবো গলা চেপে।

*১৯৮৪


কতোদিন অনশনে
আমার জঠরে আজ দুঃসহ যন্ত্রণা :
নিষ্ঠুর ক্ষুধার রাক্ষসীরা
ঝাঁটিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে কবে আমার কবিতাকে
আমি আর লিখবো না কবিতা, লিখবো না।

দু মুঠো অন্ন জোটে নি সারাবেলা
বড়ই আনন্দহীন শুষ্ক এ কবিতা লয়ে খেলা,
এ শুধু ব্যর্থ প্রয়াস আনন্দকে আটকে রাখার
তোমাকে বিদায় দিলাম, কবিতা আমার।

কতোদিন তুমি বন্ধু লিখবে কবিতা অনশনে?
কবিতার ফুল মুকুলেই ঝরে যাবে হৃদয়-কাননে।
আমার কাননে কতো ফুল ফুটেছিল,
ঝরে গেছে সব
ক্ষুধার বায়সীরা কেবলই চেঁচায়, কেবলই রুক্ষ কলরব।

*১৯৮৪

একজন বাবার বিলাপ
জোটে নি কপালে আজ আটার লোঠানিও
আমার অবুঝ বাছাদের
হায়রে জোটে নি
জোটে নি
জোটে নি
কিছুই জোটে নি

মুখর শহরে অন্ন-গুদামে গুদামে
উদর সাধন করছো তোমরা
লক্ষ লক্ষ লোক
কতো কাকচিল
শেয়ালকুকুর
ক্ষুধিত ভিখারি
অবীরা জননী
অনাথ বালক
একসাথে বসে ক্ষুধায় মেতে
এখানে তারা ডাস্টবিনের খুঁটছে পঁচা

আমিও বন্ধু আজ ও-দলের নতুন সাথী
ক্ষুধিত শিশুর অক্ষম পিতা
দুঃখ বিধূর।

*১৯৮৪

আমি সেই দলে
একঝাঁক ক্ষুধার্ত মানুষ প্রতিদিন ডাস্টবিন খুঁট্‌তো :
তোমরা আমাকে সেই দলে দেখেছিলে।
একসারি অসহায় ভিক্ষুক রাজপথে ভিক্ষে মাঙতো,
তোমরা আমাকে সেই দলে দেখেছিলে।
একজন নিরন্ন মা ফুটপাতে সারারাত কেঁদেছিল,
একদল নিঃস্ব জনতা, কুলি,
কয়েকজন পরিশ্রান্ত মাঝি
বুকের রক্ত জল করেছিল রোদ্দুরে,
তোমরা আমাকে সেই দলে দেখেছিলে।

একদিন ডাস্টবিন খুঁটছিলাম,
তোমরা থুথু ফেলেছিলে আমাদের গায়, ঘৃণায়।
ভিক্ষে চাইতেই
আমাদের প্রতি কঠিন কটাক্ষে তাকিয়েছিলে।
আমাদের নিরন্ন মাকে তোমরা কখনো এক মুঠো দাও নি ভাত,
তোমাদের বুটের আঘাতে একদিন পিষ্ট হয়েছিলাম
আমরা দিনমজুরেরা।

অতিষ্ঠ জনতার দেখো চোখ, ধিক্ ধিক্ জ্বলছে আগুন।
উঠে আসছে ডাস্টবিনের ক্ষুধার্ত মানুষ,
ভিক্ষুকের প্রতিবাদী চিৎকারে কাঁপছে আকাশ
তোমাদের মুখ হতে লুটে নেবে গ্রাস অন্নহীনা মা,
জাগ্রত মানুষ, দেখো
আসছে...

তোমরা সবিস্ময়ে দেখবে- আজও আমি সেই দলে।

*১৯৮৪

মুক্তি
খাঁচার দুয়ার খুলে যে পাখি ছুটলো আকাশে
মুক্তির স্পর্শ পেতে
আমি তার কাছে পেয়েছি অপূর্ব অভিজ্ঞতা।
শোনো কি আকাশে ঐ মুক্ত পাখির ডাক?
তরুণ কণ্ঠে তার
স্বাধীনতার বাজে সুর।

তোমরা গণ্ডির দ্বার খুলে দাও
দুর্গত লাঞ্ছিত প্রাণ যেখানে নিষ্ঠুর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে
মৃত্যুর প্রতীক্ষা করে
তাদের মুক্তির দাও দিন।

নতুবা, মুক্তির মিছিলে কখনও যে হাত হয় নি উত্তোলিত
সে হাতে দেখবে বজ্রমুষ্ঠি,
দুরন্ত ত্রাসে যে কণ্ঠ কখনও করে নি প্রতিবাদ
অন্যায়ে,
হুংকারে আজ সে কণ্ঠ উঠবে গর্জে,
যে পথে পায়ের শব্দ শোনো নি কোনওদিন
প্রচণ্ড পদধ্বনি ধ্বনিবে সে পথে
ভেঙ্গে ফেলবে গণ্ডির দ্বারকা

তারপর আনবে মুক্তি।

*১৯৮৪


সুখ
তোমরা যদি
লুটে নিয়ে যাও আমার হাজার কবিতার কলি
আমি দুঃখ করবো না।
তোমরা যদি
লুটে নিয়ে যাও আমার গানের সমস্ত সুর
আমি একটুও হবো না বিষণ্ণ।
তোমরা যদি
লুটে নিয়ে যাও সকল রিক্‌থ আমার
আমি কাঁদবো না কখনও।
আমার শিশুর রুপালি হাসিটুকু তোমরা
নিও না কেড়ে
সকল রিক্‌থ ঐ শিশুটি
ওর মিষ্টি হাসিতে লুকিয়ে আছে
আমার কবিতার কলি, গানের সকল সুর।

*১৯৮৪

অর্থী
আমি পাষাণের চেয়েও নিষ্ঠুরতা দেখেছি
তোমাদের হৃদয়ে। পথের ধুলোয় লুটিয়ে নিত্য কেঁদেছি
আজন্ম এক অনাথ বালক; আমাকে
আদরে কোলে তুলে স্নেহশীলা জননীর মতো
বোলাও নি মাথায় হাত
হৃদয়হীনা তোমরা রমণীরা।
তোমাদের হৃদয়ের নিবিড় সান্নিধ্য চেয়েছিলাম, তোমাদের
নিস্প্রেম প্রাণের মৃণালতা
আমার হৃদয়কে বিক্ষত করেছে প্রতি পলে।

তোমাদের একটি শুষ্ক প্রাণ আছে, প্রেমপূর্ণ
মানুষের মন তোমাদের নেই।
আমাকে কে দেবে এতোটুকু স্নেহ-ভালোবাসা?

আমার এ বুক বেদনায় জর্জরিত, অযুত বছরের তৃষ্ণার্ত আমি
হৃদয়ের পেয়ালা হতে কেউ
আমায় দিলে না ঢেলে এক বিন্দু স্নেহের শরাব।

*১৯৮৪

আমি তোমার ছাত্র
আমিও তোমার ছাত্র ছিলাম
আমারও গায়ে শক্তি ছিল
স্বাধীনতার জন্যে আমার রক্তে প্রতিশ্রুতি ছিল
বইখাতা আর কলম
আমার সর্বদাই সঙ্গী ছিল
শিক্ষালয়ের শিক্ষানবিশ- এটাই মহান ব্রত ছিল

তোমরা হবে দেশের শাসক
তোমরা শোষণ করবে এদেশ
আমার হাতে অস্ত্র দিয়ে আমায় কেন সঙ্গে নিলে?
তোমরা বলো :
সন্ত্রাসীরা জ্বালিয়ে দিল সোনার স্বদেশ
আমার সকল কলকাঠি তো তোমরা নাড়াও অন্তরালে

মাগো আমি ছাত্র তোমার
শান্ত-সুজন সোনার ছেলে
শিক্ষাগুরুর শিক্ষা নিয়েই তোমার কোলে আসবো ফিরে
আমার ভাইয়ের রক্তে আমি
বইয়েছিলাম খুনের সাগর
খোদার কসম : হাত হতে আজ অস্ত্র আমার দিলাম ফেলে।

*১৯৯৩





রবীন্দ্রনাথ তাঁর ৭ বছর বয়সে লেখা ছড়া ৮০/৮১ বছর বয়সে পড়ে হেসেছিলেন, নাকি আফসোস করেছিলেন, সে বিষয় আমার জানা নেই। তবে আমি নবম-দশম শ্রেণীতে লেখা কবিতাগুলো আমার প্রথম বইয়ে (৩৫ বছর বয়সে) অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম সগর্বেই। যেগুলো এখনো বাদ আছে তা আমার মৃত্যুর পর ‘খলিল মাহ্‌মুদের অপ্রকাশিত কবিতাসমগ্র’ নামে প্রকাশিত হবার সম্ভাবনা ক্ষীণতম; তাই জীবদ্দশায়ই এগুলো বইয়ে জায়গা করে নিল। উপরের গুলো অবশ্য ‘অন্বেষা’র অন্তর্ভুক্ত। আর নিচের কবিতাটি খুব সম্ভবত ১৯৮৩’র শেষের দিকে বা ১৯৮৪’র প্রথম দিকে লেখা।

এ কবিতাটা নিয়ে একটা মিষ্টি স্মৃতি আছে। সে সময়ে খুলনা বেতারে প্রতি শুক্রবারে দুপুর সোয়া একটায় ‘অঙ্কুর’ নামে ১৫-২০ মিনিটের একটা সাহিত্যের অনুষ্ঠান হতো, যাতে নবীন লিখিয়েরা লেখা পাঠাতো, আর তা সংক্ষিপ্ত সমালোচনাসহ পাঠ করে শোনানো হতো।
সেখানে আমিও কবিতা পাঠাই। কবিতা পাঠিয়ে অস্থির হয়ে সবান্ধব শুক্রবারের ‘অঙ্কুর’ শোনার জন্য বসে থাকি; যথারীতি শুক্রবারে মন খারাপ হয়, সবার কাছে লজ্জা পাই আমার কবিতা প্রচারিত না হবার জন্য।
এভাবে বছর দুই তো হবেই, চলে গেছে। কতো কতো পত্রিকায় লেখা পাঠাই, কোনোদিনই তা ছাপা হয় না।
তিন্নিরা আমাদের প্রতিবেশী, তিন ঘর পরই ওদের ঘর। ওদের একটা রেডিও ছিল; আমাদের সাত বাড়ির মধ্যে ঐ একটাই। তিন্নির কাছেই আমি সবচেয়ে বেশি লজ্জা পেতাম, কারণ, আমার কবিতা ‘অঙ্কুর’-এ শোনার জন্য তিন্নির উৎসাহ ছিল সর্বাধিক, আর তিন্নিই খুব ডামাডোল করে আমাদের সবাইকে ‘অঙ্কুর’ শুনতে ডাকতো।

সেদিন দুপুরে তিন্নি চিৎকার করে বলে উঠেছিল- ‘খলিল ভাইয়া, এই তোমার কবিতা হচ্ছে রেডিওতে....।’ তিন্নির বড় ভাই, তিন্নির মা, আমি ওদের উঠোনে ছিলাম... দিগ্বিদিক সব ফেলে তিন্নির কাছে আমি ও আমরা ছুটে যাই... আমি হাঁপাচ্ছি, আর শুনছি একটি মিষ্টি মেয়েকণ্ঠ আমার কবিতাটা পড়ছেন। আমি নিশ্বাস ফেলতে পারি না, এতো উত্তেজনা। কবিতা পাঠ শেষে মেয়েটার অনেকগুলো ভালো কথার মধ্যে যেটা আমাকে উদ্বেলিত করলো তা হলো... না থাক, ওটি খুব লজ্জার কথা।
এরপর প্রায় নিয়মিত আমার কাঁচা কবিতা ‘অঙ্কুর’-এ প্রচারিত হতো। আর বিশ্বাস করুন, তিন্নিও আমার প্রতি দুর্বল হতে থাকে....

মুক্তি
আমাকে তোমরা যদি
নির্বাসন দাও আলেকজান্ডারের নির্জন দ্বীপে
আমি বরণ করে নেবো।
আমাকে তোমরা যদি
অনেক অন্ধকারে বন্দি করে রাখো একাকী, যেখানে জোনাকিরাও
জ্বালে না আলোর একটি প্রদীপ
আমি নীরবে সইবো অন্ধকারের অতিষ্ঠতা।

তবু তোমরা আমাকে পৃথিবীর এই কোলাহল হতে
ছুটি দাও, যেখানে একটি ক্ষুধিত শিশুর আর্তনাদ শুনে
দুঃসহ বেদনায় কেঁদে ওঠে আমার হৃদয়
এবং
একটি নৃশংস নরপশুর প্রচণ্ড গর্জনে
আমার বুক
নিমেষে তৃষ্ণার্ত হয়ে ওঠে তার তাঁজা রক্তের নেশায়।





একাদশ শ্রেণীর শেষের দিকে আমি প্রেমে পড়ি; আমার প্রথম নারী, যে আমার জীবনের মোড় সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দিয়ে গেলো।
হারিকেনের ঘুমু আলোর কাছে মাথা নুইয়ে আমি রাত জেগে চিঠি লিখি। পাতার পর পাতা দীর্ঘ হয় সেই চিঠি। অংকের খাতা পুরোটাই কখনো শেষ হয়ে যায়। খুব ভোরে বাহক সেটা প্রেমিকার কাছে পৌঁছে দিয়ে আসে, বিনিময়ে তার কাছে থেকে পাওয়া আরেকটা সুদীর্ঘ চিঠি।
আমার ক্লাস পারফরমেন্স ছিল দুর্দান্ত। হোস্টেল জুড়ে আমার নাম ছিল। হোস্টেল সুপারের সুদৃঢ় ধারণা, মেধাতালিকায় প্রথম দু-একজনের বাইরে আমি কিছুতেই বেরোবো না।
আমার প্রেম আমাকে বই-বিমুখ করলো। আমার মুখ ভরে গেলো দাঁড়িতে। যুবকেরা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে দাঁড়ি রাখে, আমি প্রেমগ্রহণের প্রথম দিন থেকেই শ্মশ্রূসজ্জিত হতে থাকি।
প্রেমে খুব কষ্ট। ভয়ানক বেদনা। মনের উথালপাথাল উত্থান আর পতন; অস্থিরতা। এমন অস্থির সময়ে আমি যা লিখি, তাই কবিতার মতো হয়ে যায়।
তাকে একদিন ছোট্ট একটা চিঠি দিলাম। আমি কী এক যন্ত্রণায় মুমূর্ষূপ্রায়। সেই চিঠি ফেরত এলো তার পরদিন। চিঠির অপর পাতায় ওর খুব কাঁচা হাতের লেখা : ‘আমাকে এখন তোমার কাছে বিয়ে দিতে রাজি হয়েছে।’

সেটা ১৯৮৬ সনের কথা। ট্রাংকের পুরোনো জিনিস ঘাঁটতে গিয়ে হঠাৎ হঠাৎ ওটা চোখে পড়ে, এক বান্ডিল চিঠির সবগুলোর নিচে সেই চিঠি। চিঠিটা আদতে চিঠি নয়। একটানে এমন চিঠি লেখা যায় না। কিন্তু ওটা পরে ‘দেয়ালিকা’ নাম নিয়ে আমার একটা কবিতা হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়, যা ‘অন্বেষা’ কাব্যে স্থান পেয়েছে।

‘দেয়ালিকা’ নিয়েও সুখস্মৃতি আছে।
আমার প্রেম ততোদিনে প্রায় হাওয়া হয়ে গেছে। খুব কষ্টে ভান করি যে আমার কোনো কষ্টের কাহিনি নেই। আর কবিতা লিখি যথারীতি। পত্রিকায় পাঠিয়ে উন্মুখ হয়ে থাকি ছাপার হরফে নিজের নাম দেখবো বলে, কিন্তু আশা পূর্ণ হয় না কোনোদিনই।
খুলনা বেতারের ‘অঙ্কুরে’র মতো ঢাকা বেতারে বিকেল চারটায় ‘অন্বেষা’ নামক একটা শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান হতো। ‘অন্বেষা’র একটা অংশ ছিল ‘সৃজনী’ যার দৈর্ঘ্য ১২-১৫ মিনিট; এতে নবীন লিখিয়েদের লেখা পাঠ ও সমালোচনা করা হতো। আমি ‘সৃজনীতে’ও কবিতা পাঠাই। মাঝে মাঝেই সেখানে আমার কবিতা নির্বাচিত ও প্রচারিত হয়।
অষ্টম ও দশম শ্রেণীর দু ভাইবোনকে পড়াই এইচএসসির পর মাস তিনেক। ওদের কাছে আমার কবি-কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল, কোনোদিনও পত্রিকায় লেখা বের হয় নি বলে। তবে, আমার কবিতা ‘অঙ্কুর’ ও ‘সৃজনী’তে নিয়মিত প্রচারিত হয়, এই কথা জোরের সাথে বলে ওদের কাছে নিজের ট্যালেন্ট জাহির করি, আর ওরা আমার কথায় মুখ টিপে হাসে; কারণ, ওরা ভেবে নেয় ওদের বাহবা পাবার জন্য এসব কথা আমি বানিয়ে বলছি।
একদিন বৃহস্পতিবারে ওদের পড়াচ্ছিলাম। পাশের ঘরে ছোটো রেডিওটা মৃদু স্বরে বাজছিল, শুনছিলাম। ‘অন্বেষা’র সময়। আমার কান খুব সচেতনে খেয়াল করছিল কখন ‘সৃজনী’ শুরু হয়, আর তাতে আমার নাম ভেসে ওঠে কিনা।
ওদের আব্বু খুব সাহিত্যরসিক মানুষ ও অমায়িক ভদ্রলোক; তিনি আমার কবিতা পড়েন আর আমার মধ্যে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখেন। লিটন ভাই- ওদের বড় ভাই (ঢাকা কলেজে আমার রুমমেট ও এক ক্লাস সিনিয়র), ওদের মেঝ ভাই (ঢাকা কলেজে কমার্সে পড়তো, আমার সমক্লাসী; আমার সায়েন্স গ্রুপ ছিল), ওদের বড় দুই বোন (আমার এক ও দুই ক্লাস জুনিয়র)- ওরা টিটকিরি দেয় আর মুচকি হাসে আমার কবিতার কথা উঠলেই- কাগজে কবিতা না উঠলে তাকে কবি বলা আর কাক বলা একই কথা। কবে ছাপার অক্ষরে আমার নাম ওদের সামনে তুলে ধরে মিষ্টি প্রতিশোধ নেব, মনের মধ্যে এই বাসনা খুব যন্ত্রণা দেয়।

আমি ওদের পড়াচ্ছি। ‘সৃজনী’র কথা ভুলে গেছি। এমন সময় লিটন ভাই রেডিও হাতে ছুটতে ছুটতে ঘরে ঢুকলেন : ‘খলিল, এই যে তোমার কবিতা বলতেছে।’ আমি চেয়ার থেকে লাফিয়ে উঠি। এর চেয়ে মোক্ষম মুহূর্ত আর হয় না। ‘সৃজনী’তে ‘দেয়ালিকা’ পাঠ হচ্ছে, আমি উত্তেজনায় কাঁপছি; দেখি ওদের বাবা, মা, অশিক্ষিতা দাদি, ওদের মেঝ ভাই, ওদের বড় দুই বোন, সবাই এসে জড়ো হয়েছেন; তাঁদের চোখেমুখে বিস্ময়, ঘোর- আমার কবিতা তাহলে রেডিওতে প্রচারিত হয়! সবাই অধীরভাবে বসে শুনছেন আমার কবিতা : মাত্র আড়াই মিনিটের উচ্ছ্বাস।

দেয়ালিকা
আমার বক্ষে যন্ত্রণার বৃক্ষেরা নিত্য শেকড় মেলে। দুঃখেরা
জয়ের মিছিল করে প্রচণ্ড জ্বালাতনে
হৃদয়ে রঙিন ফাল্গুন নামে না এখন
প্রেমের ফোটাতে ফুল। বুকের পিঞ্জরে সতত ঝাপটায় ডানা
ভালোবাসার বন্দি পাখিরা সব

দিনান্তে এখন নামে না কবিতাসন্ধ্যা আমার ভুবনে।
হাসনাহেনার বনে দুজনে কাটাবো প্রহর- মেলে না মধুর অবকাশ এমন
মুক্তির নেশায় দুঃখগণ্ডির মাঝে আমি মত্ত উন্মাদনায়
তবু ব্যর্থ বার বার, তাই প্রাচীরে লিখে যাই
আমার ব্যর্থতার বিরাট ইতিহাস

এখন একান্ত দুঃসময়ে আমার এক দুঃখিনীর কথা মনে পড়ে
কতোকাল হয় নি খোঁজ নেয়া তার
জানি না, কতো রাত সে কাটিয়েছে আমার পথে চেয়ে
তেমন সুখ কি আর পেরেছি তাকে দিতে
হায় অসহায় প্রেমিক আমি!

*১৯৮৬
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১:১৫
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×