somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্ধকারের বেদনা : ঘুমন্ত স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে

২২ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চোখে তোমার প্রচুর পানি জমবে
কত হীনমন্যতায়, কত সংগ্রামে দলিত জীবনের
পরতে পরতে দুঃখরা লেপ্টে আছে।
মাঝে মাঝে মাঝরাতে, গভীর ঘুমের ভেতর
উথলে উঠবে কান্না, চোখদুটো ব্যথায় টাটিয়ে উঠবে, যেন
এখনই পর্দা ফেটে ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে আসবে রক্ত, তখন
বাঁধ খুলে দিবে- সব পানি ঝরে যাক, নিভৃতে, অলক্ষে

তোমার বুক ভারী হবে। বহুকাল বেদনারা জমে জমে
হৃৎপিণ্ড জমাট পাথর।
তোমার নিশ্বাস আটকে আসবে। কথারা গলার
উপকণ্ঠে আটকে থাকবে। তোমার পাঁজর চরচর করে
ফাটবে। তুমি ককিয়ে উঠবে। তখন তুমি কাঁদবে। তখন
জোয়ারভাঙা বাঁধের মতো উদাত্ত স্বরে গলা ছেড়ে দিবে।
তখন তুমি প্রাণ ভরে কাঁদবে, নিঃশেষে বুক খালি করবে।
তোমাকে বাঁচতে হবে। দুঃখ, বেদনাগুলো ঝেড়ে ফেলে
ফুরফুরে সজীব চারার মতো প্রতিভোরে সূর্যের আলোয়
হাসতে হবে। হাসতে হাসতে অযুত আনন্দে তুমি বাঁচবে।

এই যে পার্শ্ববর্তিনী সুপ্তমগ্না নিগূঢ়া রমণী, সুদীর্ঘ জীবনে
একই আত্মায় করেছি বসবাস, হায়, একদিন সে আর
আমার পাশে শোবে না, কিংবা আমিও এক-পাশ শূন্য করে
শায়িত হব অনন্ত শয্যায়। কীভাবে একাকী বাঁচবো সেই জীবনে?
বিষম ভাবনারা জেঁকে ধরে যখন-তখন, সুগভীর মধ্যনিশীথে
বুকের কন্দর দুমড়ে মুচড়ে খান খান হয়, কণ্ঠ রুদ্ধ হয় উথাল
পাথাল কান্নায়। তখন বাঁচতে পারি না।

গতকাল মধ্যরাতে বিছানায় শুতেই বুক ভাঙতে শুরু হলো।
আগ্নেয় লাভার তীব্র উদ্‌গিরণে চোখ গলে ছিটকে ছুটতে থাকলো
অজস্র অগ্নিজোয়ার। আজ যেখানে শুয়ে আছি, হয়ত-বা কাল
আমি আর থাকব না এখানে। হয়ত-বা কাল রাতে অন্ধকারে খা-খা
জ্বলবে পাশের শয্যাটি। কীভাবে বেঁচে থাকে নিঃস্ব, জীর্ণ,
বিক্ষত একটা হৃদয়, যখন পাশ থেকে হারিয়ে যায় জ্বলন্ত
যৌবনের বিশ্বস্ত সঙ্গীটি! এভাবে কি বেঁচে থাকা যায়,
অনির্ণেয় অনাগত কাল?

আমি তবে কীভাবে হালকা করি বুক? কীভাবে চোখের পানি
আগভীর সেঁচে ফেলে শূন্য করি চোখ?

কোনো কোনো কান্না কখনো থামে না, প্রতিটা গভীর রাতে
পাঁজর ভাঙতে থাকে। প্রতিটা গভীর রাতে পুড়তে থাকে চোখ,
অবিরল জ্বলতে থাকে জীবন। দুর্বিষহ সেই জীবনের কথা ভাবলেই
ভেঙে যেতে থাকি। রাতভর কেবলই ভেঙে যেতে থাকি, যেমন এখনো
ঘুমন্ত সঙ্গিনীর ঝাঁপসা মুখের দিকে তাকিয়ে অবিরাম ভেঙে যাচ্ছি,
অবিরাম ভেঙে যাচ্ছি আমি।

২১ আগসট ২০২১

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৫২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×