কারো আছে কয়েকটা বাড়ি,
আছে বিত্ত-বৈভব বুনিয়াদী জমিদারি
ওসব কিছুই তোমার নেই,
শুধু আছে ওসব না পাওয়ার প্রাত্যহিক আহাজারি
আকাশে তাকিয়ে যদি নিজেকে ক্ষুদ্র মনে হয়
মাটিতে তাকাও প্রিয় বন্ধুবর
তোমার ক’জন বন্ধু মন্ত্রী, সচিব বা শিল্পপতি হয়েছেন
ওদিকে, অগণিত বন্ধুর কঠিন ক্রান্তিকাল, দুঃখে জর্জর।
সবাই তো সবকিছু পাবে না, বা পারে না
সবকিছু পাওয়ার বা করার যোগ্যতাও থাকে না সবার
পৃথিবীতে জন্মায় না কেউ একাই সবকিছু হবার
কেউ-বা উড়াবে দুর্ধ্বর্ষ যুদ্ধবিমান, কেউ হবে ট্রাকের হেল্পার
কখনো তোমার বুক জ্বলে যাবে,
অন্যের সুন্দুরী প্রেমিকা কিংবা স্ত্রীকে দেখে
কখনো-বা হিংসায় পুড়ে যাবে, কিংবা হতাশায় পড়বে মুষড়ে-
আমি কেন পারি না, আর ‘সোনাবীজ’ কত ভালো কবিতা লেখে।
কোনো শিল্পীই তোমার বন্ধু হবে না কখনো
তাল-লয়-সুরের ১২টা বাজানো ঈর্ষাতুর কুদ্দুসও
তোমার সুরেলা গানের সাথে দেবে পাল্লা
আর চার হাত-পা আকাশে ছুঁড়ে বিলাপ করবে-
হালার পুতেরা কেন আমার গান শোনে না? আমার মতো
আর কে গায় এত ভালা?
কোনো শিল্পীই কখনো অন্য শিল্পীর বন্ধু হয় না
যেমন, তোমার গান, গল্প বা কবিতায় জ্বলে যাচ্ছে কতজন
আগে যারা প্রতিদিন আসতো, এখন আসে না
আশেপাশে ঘুরে বেড়ায় পাড়ায় পাড়ায়, রমণীরঞ্জনে
কেউ-বা যেচে এসে উপদেশ দেয় – হবে হবে, চেষ্টা অব্যাহত রাখুন
অথচ ঐ হালার পুতেরা গান বা কবিতায় কত নস্যি,
অ-আ ধরে ধরে শেখাতে পারো লিরিক আর সারেগা,
তা ওরা জানে না – একটা কবিতা লিখে হয়ে যায় আল্ট্রা-মডার্ন কবি
একটা দুর্বল লিরিকে গান গেয়ে হয়ে যায় সঙ্গীতজ্ঞ
এরপর তোমাকে শেখাতে আসবে তারা ব্যাকরণের ধারা
নিম্নদেশে কেশ পেকে হয়েছে তক্তা- এতটা ইঁচড়েপাকা
আর, শিল্পে তোমার জন্ম, শিল্পেই জীবন এবং মরণ
যে তোমার বন্ধু হলো না,
হয়ত হবে না ভবিষ্যতেও
তার জন্য দুঃখ করো না ভুল করেও।
একগুচ্ছ স্মারক-পুষ্প জানালায় ঝুলিয়ে দিও
বিগত বন্ধুটির জন্য।
নিতান্ত অর্থহীন নয়,
এটুকু ত্যাগেরও আছে অজস্র সৌজন্য-মূল্য।
যা কিছু পেয়েছ, যা কিছু হয়েছ
এগুলোই তোমার নিখাদ অর্জন
এতেই তুষ্ট থাকো, শ্রম দাও যোগ্যতা মতো আরো কিছু পেতে
আর যদি হও প্রকৃতই ‘পরস্ত্রীকাতর’
অন্তর্জ্বালায় ফানা ফানা হবে বুক-
দুঃখ-দহনই হবে তোমার সার্বক্ষণিক দোসর।
০৬ জুলাই ২০২২
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




