somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্যরকম আত্মবিশ্বাস ! ঃ আত্মউন্নয়ন্মূলক প্রবন্ধ!

০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সেটি ছিল একটা ভয়ানক রকমের সাহসী কথা! “কেউ যদি এবার সারা বাংলাদেশে স্ট্যান্ড করা ছাত্রদের মধ্যে প্রথম হতে চাও, তাহলে তার পরিশ্রমটাই শুধু বৃথা যাবে। এবার আমিই প্রথম হব সমগ্র দেশের মধ্যে। তোমাদের কারো যদি একান্ত ইচ্ছা থাকে তাহলে দ্বিতীয় হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে পারো!” আশ্চর্যের কথা হল ছেলেটি তাই হয়েছিল! এ কেমন আত্মবিশ্বাস! অবশ্যই সেটা অনেক শক্তিশালী! এ ঘটনা আশির দশকের একটি ঘটনা – যা আমার স্যারের মুখে শুনেছিলাম সেই ছোট্টবেলায়। আত্মবিশ্বাসের জোরেই কেউ দড়ির উপর সাইকেল চালাতে পারে, কেউ মহাকাশ ঘুরে আসে। একটা বইয়ে পড়েছিলাম, একবার এক ফুটবল খেলায় এক খেলোয়ার গোলবারে শর্ট করার পরে বলটি গোলবারের উপরের বারে লেগে ফিরে আসে। মুহূর্তেই সে রেফারিকে চ্যালেঞ্জ করে বসে যে গোলবারের উপরের বারটি সঠিক জায়গার চেয়ে এক ইঞ্চি নিচু আছে। ফলে রেফারি তার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সঙ্গে সঙ্গেই মাপতে নির্দেশ দেয়। মাপার পর দেখা যায় সেটি সত্যি সতি এক ইঞ্চি নিচু! বিশ্বাসের জোর দেখেছেন! রাজশাহী বিশ্ববিদায়লয়ের এক ফ্যাকাল্টি ফার্স্ট বড় ভাই বলেছিলেন- আমি আমার জীবনে সবসময় একটা কথা মনে রেখেছি। সেটা হল – আই অ্যাম অলঅয়েজ ফার্স্ট, বাই চান্স সেকেন্ড, বাট নেভার থার্ড!উনি এখন ওখানকারই শিক্ষক!

শুধু লেখার খাতিরেই বলছি এরকম দুটি ঘটনা, এ ধরণের অনেক ঘটনা আপনাদের জীবনেও থাকতে পারে। শহরের স্কুলগুলোর মত গ্রামের স্কুলগুলোতে আসলে অতটা হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতা হয়না। এই ধরূণ এক বা দুই, অথবা পয়েণ্ট দশমিক নম্বরের জন্য এক রোল বা দুই রোল হয়ে যাওয়া। আমি তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। আমাদের ক্লাসে তখন ফার্স্ট ছিল এক মেয়ে আর আমি সেকেন্ড। ম্যাথ টিচার বছরের শুরুতেই চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলল, এখন তুমি আর এক রোলে কখনোই যেতে পারবে না, কেননা ও যেভাবে পড়াশুনা করে তা তুমি কোনদিনই করতে পারবে না। আমি স্যারকে বললাম, স্যার দোয়া করবেন! বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট যেদিন দিবে সেদিন আমার বুক ঢিব ঢিব করছে! অন্য এক স্যার এসে বলল, ফেরদৌস, তোমাকে নিয়ে যেরকম রেজাল্ট আশা করেছিলাম সেরকম হয়নি। আমি তোমার রেজাল্টে হতাশ!আমি লজ্জায় মাথা অবনত করলাম। মনে মাটির ভেতরে ঢুকে যাই! অপমানের কান্না চোখে জোর করে নামতে চাইল! লাইনে দাঁড়িয়ে রেজাল্ট ঘোষণা যখন শুনছি, মনে মনে ভাবছি, শুনে আর কী হবে, ছেড়ে দিলেই তো বাঁচি। হঠাৎ দেখি তৃতীয় স্থানে আমার বন্ধুর নাম বলার পরে দ্বিতীয় স্থানে আমার সেই বান্ধবীর নাম ঘোষণা হচ্ছে। তার মানে আমিই প্রথম! বিশ্বাসই হচ্ছিল না! মনে হয় কেঁদেই ফেলেছিলাম আমার নামটি প্রথম স্থানে শোনার পর। কিন্তু পার্থক্য ছিল মাত্র এক নম্বরের!

আপনি কীভাবে আপনাকে দেখাবেন পুরো দুনিয়ার সামনে, সেটা আপনারই বিষয়। আপনি যদি চিতাবাঘ হিসেবে নিজেকে দেখান তাহলে আপনাকে সেরকম শক্তি আর ক্ষিপ্রতার গুণ অর্জন করতে হবে। আর বিড়াল হিসেবে দেখাতে চাইলে লেজ নাড়িয়ে মিউ মিউ করলেই চলবে! সামান্য কিছু দুঃখ দুর্দশায় যদি আপনি কাদিয়ে বিছানা ভাসাবেন, মনে করবেন আপনার মত বিরহী কেউ নেই, কাছের মানুষগুলো কেউ আপনাকে বোঝে না এবং আত্মহত্যায় আপনার জীবনের শেষ চিকিৎসা – তাহলে আপনাকে বলার কিছুই নেই। আফ্রিকা আর মধ্যপ্রাচ্যে মানুষ চোখের সামনে নিজের কাছের সকল মানুষকে বোমার আগুনে ঝলসে যেতে দেখেও, বাসস্থান গুড়িয়ে যেতে দেখেও, বেঁচে থাকার জন্য পরের বেলা কী খাবে তা না জেনেও নিজে বাচার স্বপ্ন দেখে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে! সাহস অন্য জিনিস, সবার সব কাজের সাহস থাকে না, আবার সবসময় সব কাজে সাহস দেখানোও ঠিক না। কিন্তু সময়মতো পুরোটাই দেখাতেও আবার হবে। মাহাথির মোহাম্মদ যে রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যেতেন সে রাস্তায় একটা কুকুর তাকে প্রতিদিনই তাড়া করতো। একদিন উনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন উনি আর কুকুরকে ভয় পাবেন না বরং উল্টো কুকুরকেই চোখ রাঙ্গানি দিবেন। ব্যস, যেই কথা সেই কাজ। এরপর কুকুরই উনাকে ভয় পেয়ে লেজ গুটিয়ে চলে গেল। উনি বলেছেন, “এরপরে জীবনে কোন বড় সমস্যা সামনে আসলেই এরকম চোখ পাকিয়ে তাকাই তার দিকে। তখন সে আপনিই আমার কাছে হার স্বীকার করে! সাহস আত্মবিশ্বাসের জোর এমনই! আমাদেরকে আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে হিমালয়ের মত উঁচু আর দৃঢ়, আর চিতাবাঘের মতই ক্ষিপ্র! এ পি জে আব্দুল কালাম আজাদ বলেছিলেন – জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা ক্লাসের পেছনের বেঞ্চিতেই বসে থাকে!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৩৬
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×