somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্পঃ অমৃত !

২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



স্কুলের ড্রেস কোডে প্যান্টের রঙ উজ্জ্বল নীল বললেও রফিকের প্যান্টটা গত বছর থেকে আমি ধূসর নীলই দেখে আসছি। হয়তো তারও ছ মাস আগেই ওটার রঙ জ্বলে গেছে। খুব সস্তা দরের জিনিস, পলিস্টার কাপড়ের এবং বাজারের চিকন গলি থেকেই কেনা হবে। চিকন গলিটা সপ্তাহের দুটো হাটবারেই গরীবদের ভিড়ে ঠাসাঠাসি থাকে, খুব জমে উঠে কেনাকাটা। যেন তেলও কম, আবার ভাজাও মচমচে! পলিস্টার কাপড় হওয়ার কারণে কুঁকড়ে গিয়ে আঙ্গুল পাচ-ছয়েকের মত উপরে উঠে গেছে গিড়া থেকে। পায়ের স্যান্ডেল্টাও স্পঞ্জের। পায়ের গোড়ার দিকে ক্রমশ চিকন হয়ে গেছে ক্ষয়ে ক্ষয়ে। ও হাঁটছে, পাতলা হয়ে যাওয়া স্যান্ডেলের গোড়াগুলো পায়ের পাতায় লেগে পটপট শব্দ হচ্ছে। পায়ের গিড়া থেকে উপরের অনাবৃত অংশটুকু ধবধবে সাদা হয়ে গেছে ধূলা-বালির আস্তরণে। হয়তো প্যান্ট কুঁকড়ে যাওয়ার দুঃখ ঘুচিয়েছে খানিকটা কিন্তু সেও উড়ে এসে জুড়ে বসে। কিন্তু তাতে পা দুখানার মালিক যিনি, তিনি বেশ রুষ্ট, মুখখানি তার ঘোরতর অন্ধকার হয়ে আসে নিজের অসহায়ত্ব দেখে। রফিক হাঁটছে, সাথে আমিও। অন্তরপাড়ায় ওদের গ্রাম। নামটুকু গ্রামের ভারি সুন্দর, কিন্তু ঘড়টা তাদের রাক্ষুসে যমুনা নদীর মুখের উপরে একটা ঠুনকো বাঁধের উপরে। এই বাধটাই দু তিনটে গ্রাম পেরিয়ে সদরের রাস্তার লেজ ধরে ফেলেছে। দু পাশে ঘন বসতি নদী সিকস্তিদের। রফিককে বললাম, তোদের বাড়িটাই কত সুন্দর জায়গায় বল্‌ তো। নদীর ভরা পানিতে পূর্ণিমার রাতে জোছনা ঢলে পড়লে যেন নদীর বুকে এক স্বর্গ ভেসে উঠে। ও আমায় বলে, সে তো তোদের কাছে, যাদের সদরে বাড়ী আছে, টাকা আছে অনেক, এরকম বাঁধে থাকতে হয়না। আমাদের জন্য নদীর ঢেউ মাঝে মাঝে অভিশাপ হয়ে যায় আর বর্ষার সময় মহাদুর্যোগ নেমে আসে। তবে এমন গরীব বন্ধুর বাড়িতে তুই যে যাচ্ছিস, দেখিস্‌ মা আমার কত্ত খুশি হয়!
কেন, তোদের বাসায় কেউ যায় না ?
নারে, বাপটা আমার এক্কেবারে খাটি চাষা মানুষ, কামলা দিয়ে খায়। একটা ছোট ঘরে দুটো চৌকি। অনতিদূরে গোয়ালঘর। সেখান থেকে গরুর বিষ্ঠা বা প্রসাবের গন্ধ আসে মাঝে মধ্যে। বাড়িতে কেউ আসলে বসার জন্য পিড়া আছে, কিন্তু মোড়া বা চেয়ার- এর কিছুই নেই। বাড়ি জুড়ে সারাক্ষণ একটা অভাব অভাব মেটে গন্ধ। কে আসবে এমন বাড়িতে, বল্‌ ?
তুই কি ভাবিস্‌ নিজেকে বল্‌ তো?
আমি গরীব-ধনী বুঝিনারে জামিল। আমিও নিজেকে একজন খাটি কামলা বলেই পরিচয় দিতেই গর্ববোধ করি। পরে যদি অন্য কিছু হই সেটা অন্য কথা। যার পরিচয় যা, তা কি মুখে গোপন করলেই কখনো গোপন থাকে।
কীসের কামলা রে তুই ? সবেমাত্র পড়িস ক্লাস এইটে। সামনে এখনো কত দূরের সম্ভাবনা তোর সামনে। আর কামলা দেয়ার জন্য শরীরে কী দৈত্যের মত শক্তি লাগে রে বাবা! সকাল আটটা থেকে বিকেল সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই খাটুনি। তুই কেমন করে পারিস্‌ এতসব? নাকি তুই ছোট কামলা? ও ডান হাতের তালু আমার সামনে মেলে ধরে বলে, দ্যাখ্‌!
কী?
হাতের চামড়া।
কৌতূহল নিয়ে ওর হাত পরখ করতে লাগলাম। কড়মড়ে করে ভাজা রূটির মত শক্ত ওর হাতের তালুটা, খানিকটা আমার আন্দাজ হল গণ্ডারের চামড়ার মত। প্রত্যেকটির আঙ্গুলের গোড়ায় ততোধিক বার ফোস্কা পরে লালচে গোল চাকা হয়ে গেছে। কঠিন, খসখসে, আর নিদারুণ সহিষ্ণু হাত যেন ওগুলো। আমি যেন বুঝে ফেল্লাম-যাদেরকে আমরা কামলা, মজুর কিংবা মাঝে মাঝে ছোট জাতও বলি- তারা আসলে দিনের পর দিন এরকম পুড়ে পুড়ে সোনা হয়ে উঠে কিভাবে। আমার কিশোর মনের মধ্যে একটি সূত্র আবিষ্কার হয়ে গেল নিমেষেই-কারো হাত দেখলেই বুঝা যাবে মানুষটি কামলা কিনা, সোনার মানুষ কিনা।

ওর বাড়ি যখন পৌছলাম তখন যোহর ওয়াক্ত বিদায় নিয়েছে। ওর মা আর আমি সম্বোধন করলাম ‘খালাম্মা’ বলেই। আমাকে দেখেই তড়িঘড়ি করে শাড়ীর আঁচল টেনে দিল একটু হাসি হাসি মুখে আর হতাশ দৃষ্টি নিয়ে। হতবাকই হলাম তার এই যুগপৎ সব্যসাচীর মত অভিনয় দেখে। সালাম দিলাম। সংকোচ নিয়ে সালামের জবাব দিয়ে একটি পিড়া এগিয়ে দিতে দিতে বলল, বসো বাবা। রফিক বলল, তুই বস্‌ একটু জামিল এখানে। আমি মা’র সাথে কথা বলেই আসছি। শশব্যস্ত হয়ে দুটি মানুষই ঘরের মধ্যে চলে গেল। গরীবের অতিথি আগমন যেন দেবদূতের আগমনের মত, কোথায় বসতে দিবে, কোথায় শুতে দিবে, কী খেতে দিবে- রাজ্যের সরঞ্জাম নিয়ে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করেই খেই হারিয়ে ফেলার উপক্রম করে। ঘরের ভেতর গিয়ে ফিসফিস করে কথা বলেছে মা –ছেলে। কিন্তু অল্পবিস্তর আমার কানে অনিচ্ছা সত্ত্বেও চলে আসছে। খালাম্মা বোধহয় রফিককে বলল, বন্ধুক বাড়িত্‌ নিয়ে আসবু, আগে কবু না?
মা, উই হুট করে আসতে চ্যাল তো! হামি আর মানা করিনি।
বাড়িত্‌ তরি-তরকারী কিছুই নাই। চ্যাংড়াডাক খাবার দুমু কী দিয়ে? তুর আব্বা চরত্‌ থ্যাকে সেই সন্দে সময় আসলে তখন তরকারী নিয়ে আসপি। দুপ্‌রের সময় কী আন্দুমু?
মা, ঘরের পাছে জাংলাত কয়ডা পুঁইশাকের গাছ উঠছিল না? আছে না?
থ্যাকপের পারে। যা অগ্‌লেই তুলে আনেক আপাতত। আর দেকিস্‌ তো, পেঁপের গাছত্‌ পেঁপে আছে নাকি? থাকলে নিয়ে আসিস। আপাতত অগ্‌লেই আন্দি, তাও কি চ্যাংড়াডার কাছে মান সম্মান থাকপি হামাগেরে?
আচ্ছা মা, বিছনের তলে না দশটা ট্যাকা থুছিলাম, কুন্‌টি? দেকিচ্চি নাতো?
ক্যা? কী করবু?
দোকানত থ্যাকে এক প্যাকেট বিস্কুট নিয়ে অ্যাসে ওক্‌ খাবার দিতাম।
উ কতা আর কস্‌নে বাবা। তুর বাপ ব্যানা চরত্‌ যাওয়ার সময় ক’লো ‘ হামার কাছে নৌকার ভাড়া নাই আজ, তুমার কাছে কুনো ট্যাকা আছে নাকি, রফিকের মাও? তখনই তো ব্যার করে দিছি ঐ দশ ট্যাকা। ঘরত মুড়ি আছে রে বাবা। দিবু নাকি?
না, মা। খালি মুড়ি ম্যান্‌ষের সামনে দেওয়া যায় চিনি-গুড় ছাড়া। একটু হতাশ হয়েই বলল, আচ্চা, তুমি বিছনেডা একটু গুছাও। হামি পুঁইশাক নিয়ে আসিচ্চি। রংচটা একটা পাতলা লুঙ্গি পড়ে রফিক বাইরে আসল। এখন কিন্তু ওকে দেখে কামলা কামলাই মনে হচ্ছিল । আবার একটু বড় মানুষি ভাবও ফুটে উঠেছে মুখটার মধ্যে। জামিল, তুই একটু বস্‌, হামি কয়েক মিনিটের মধ্যে আসিচ্চি। বলেই ভোঁ দৌড় দিল ও। ও যাওয়ার দু-তিন মিনিটের মধ্যেই খালাম্মা বাইরে এসে বললেন, যাও বাবা, ঘরত যায়ে বসো। গরীব ম্যান্‌ষের ঘর তো, সারাদিন গুছগাছ থাকেনা। ময়লা হয়ে আছে সবকিছু। যাও, যাও, বাবা, ঘরত যাও।
না খালাম্মা, সমস্যা নাই, আমি এখানেই বসে থাকি।
না বাবা, এটি অনেক ওদ লাগবি। ওদের তাপে এক্কেবারে পুড়ে যাবা। যাও ঘরত যায়ে বসো।
আচ্ছা যাচ্ছি খালাম্মা।
ঠিক যেন এল আকৃতির ঘর। এক ঘরের মধ্যেই দুটো ঘর। বড় দিকটাতে একটা চৌকি আর ছোট দিকটাতেও একটা। চাদর আর বালিশের কাভারগুলো পুরাতন হলেও বেশ পরিচ্ছন্ন এবং হাতে নকশা করা, ফুলতোলা। ভারি চমৎকার! ছোটঘরের চৌকির সাথে লাগানো আছে একটা পড়ার টেবিল; তাই বুঝলাম এটাই রফিকের দূর্গ। ওর বিছানায় গিয়ে বসলাম। উপরের চালটা টিনের হলেও চারিদিকের বেড়াগুলো সবই পাঠখড়ির। পুরো বেড়ার গায়েই সাঁটানো রয়েছে পুরাতন পত্রিকা, নির্বাচনী পোস্টার ও সরকারী বিভিন্ন কর্মসূচীর পোস্টার। তাতেও যেন ঘরটা অদ্ভুত সুন্দর নকশা হয়ে ফুটে উঠেছে। শুনেছি, গরীবের সুন্দর মন থাকে, কিন্তু তাদের জীবনের সবখানেই এমন অমূল্য সৌন্দর্য্যবোধও যে থাকে - তা আজকেই মনে হয় জানলাম। চাটাইয়ের জানালা খুলে দিলে নদীর দিকটা থেকে হু হু করে বাতাসের দল হুমড়ি খেয়ে ঢুকে পড়ে ঘরে। সে বাতাস শুধু বাতাসই নয়, প্রাণ জুড়ানো বাতাস!

খানিকক্ষণ পরেই কোত্থেকে দৌড়ে আসল রফিক। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, কী রে, গরীব মানুষের বাড়িতে থাকতে পারছিস্‌?
আরে ও পারব, পারব! তুই কী মনে করিস্‌ আমাকে? ও ব্যাপারই নয়! আচ্ছা, চল্‌না, নদীর পাড়টা একটু ঘুরে আসি।
যাবি? চল্‌ !
নদীর পাড়ে পৌছতে ওদের বাড়ী থেকে পাঁচ – সাতটা ধানী জমি পেরোতে হল। যমুনা নদী। বিশাল এক হা করে আছে। যেন পুরোটা গিলে খাবে। ওপারের চর দেখা যায় বেশ আবছা আবছা, মাঝখানে বিশাল জলরাশি। খরস্রোতে প্রতিদিন ভাঙ্গছে জমি, বাড়ী। রফিক বলল ওদের বাড়ীটাও ছ মাস পরেই ভাঙ্গতে হতে পারে। বললাম, তখন কোথায় যাবি?
আবার নতুন কোন বাঁধে।
কয়বার ঘর ভেঙ্গেছিস্‌ এরকম?
আমার চোখেই দেখা এ পর্যন্ত পাঁচবার। বাবার জীবনে দশ-বারোবার। দূরের ঘাটে শিশু-কিশোর আর বৃদ্ধদের নদীর পানিতে গোসল করা দেখে পরম এক আনন্দে মন ভরে গেল। নদী থেকে যখন ওদের বাড়িতে ফিরলাম তখন আছর ওয়াক্ত ছুঁইছুঁই করছে। পায়ে হেঁটে মাইল তিনেকের মত রাস্তা না খেয়ে এসে পেট এতক্ষণে এমন মোচড় দিচ্ছিল যে, চক্ষুলজ্জাও ভাঙ্গতে উদ্যত হওয়ার মত অবস্থা। টিউবওয়েল থেকে হাত-মুখ ধুয়ে আসলাম। ঘরের মেঝেতে বিছানো পাটিতে আমি আর রফিক বসলাম। কিন্তু ভাতের গামলার দিকে তাকিয়ে আমার চক্ষু ছানাবড়া! এ কী! এটম বোমার মত মোটা মোটা ভাত। এ তো আমি জীবনেও খাইনি। তবে আজ যে খেতে হবেই – সেও নিশ্চিত। তাকিয়ে দেখলাম, খালাম্মা আর রফিক দুজনেরই মুখদুটো কালো হয়ে গেছে। হয়তো লজ্জায়! হোক না তাদের আজকের এই অতিথিটা তার ছেলের বয়সেরই একজন সামান্য কিশোর-বালক। তবুও এই চরম অভাবক্লিষ্ট আতিথেয়তার লজ্জা যেন তারা কোথায় রাখে? খানিকটা সংকুচিত, খানিকটাও অপমানিতও! এই অবস্থা দেখে তাদেরকে ভারমুক্ত করার জন্য আমি মুখের হাসি প্রশস্ত করে ধরে রাখলাম বেশি করেই।

প্লেটটা স্টীলের, চামচগুলোও স্টীলের। আমার প্লেটে চার চামচ ভাত উঠিয়ে দিল খালাম্মা। মুরগির ছানার মত ছোট্ট একটা পেট আমার। মায়ের হাতের সুস্বাদু খাবারেও চার চামচ ভাত খুব কমই খেয়েছি বলেই আমার মনে হল। তরকারী দিল সেই পেঁপে আর পুঁইশাকের সেদ্ধ নিরামিষ। খাওয়ার যেটুকু ইচ্ছা ছিল তা যেন দপ করেই আবার নিভে গেল। এমন তরকারী আমি জীবনেও দেখিনি। হলুদ-মরিচ খুব যেন কম পড়েছে এই নিরামিষে, তেল হয়তো পড়েছে নয়তো পড়েই নাই। কেমন শুকনো শুকনো, শাদা শাদা হয়ে আছে। ঠিক ঠিক নিরামিষ হলেও তো দু এক গ্রাস খাওয়া যেত! এ আমি খাব কিভাবে? কিন্তুর পেটের অবস্থাও কাহিল। আল্লাহর নাম নিয়ে প্রথম গ্রাসটা মুখে দিলাম। দু জোড়া চোখ এক মহাআশংকা নিয়ে তাকিয়ে আছে যে, শহুরে এই কিশোরটি অখাদ্য খাওয়ার যুদ্ধ জয় করতে পারে কিনা-তা দেখার জন্যে। প্রথম গ্রাসের ভাতটুকু মুখে যাবার পর মনে হল, এ আমি চিবোবো কতক্ষণ ধরে। এত মোটা ভাতও হয়? কিন্তু চিবানো শেষে মনে হল, কীসের যেন এক অপূর্ব স্বাদ জিহব্বায় ঠেকল আমার। আরো দু চার গ্রাস খেলাম, স্বাদটা আরো বেড়ে গেল। যেন বহুদিন আমি এমন সুস্বাদু আর তৃপ্তিদায়ক খাবার খাইনি। নিজেকেই অবাক করে দিয়ে তিন-চার মিনিটের মাথায় সেই চার চামচ ভাত শেষ। খালাম্মা টের পেয়েই বলল, হায় আল্লাহ! ও বাবা, তুমার ভাত যে শ্যাষ! খেয়ালই করিনি। নেও, নেও, ভাত নেও। বলেই জোর করেই আবার তিন চামচ ভাত আর নিরামিষ তুলে দিল প্লেটে। আবার খেলাম, যেন সর্বগ্রাসী পেট আমার সব শেষ করে দিবে আজ। পরের বার নিজেই ভাত আর নিরামিষ তুলে নিলাম দেখে খালাম্মার চোখ চকচক করছিল খুশিতে। দুটো মানুষ খানিকটা স্বস্তি পেয়েছে সেটা ঠিক কিন্তু এ আমি কী দেখলাম? যা দেখলাম আর যা খেলাম তা তো সম্পূর্ণ বিপরীত! দেখলাম শ্রীহীন স্বাদহীন, ফ্যাকাসে খাবার, কিন্তু যা খেলাম তার স্বাদ তো একদম আজীবন জিভে লেগে থাকার মত!

সেদিন মনে হল, জীবনে বহু দামী আর সুস্বাদু খাবার হয়তো খেয়েছি কিন্তু অপর্যাপ্ত তেল, মসলায় রান্না করা, এক গরীব গ্রাম্য মায়ের স্নেহভরা হাতে এমন তৃপ্তিদায়ক খাবার কোনদিনও খাইনি। এই মমতাময়ী গ্রাম্য মায়েদের হাতের নিষ্পাপ পরশেই, কপালের ঘাম বেয়ে বেয়ে, বেহেশতী মসলা আপনা আপনি তরকারীতে এসে চুপি চুপি মিশে যায়। আর খাবারটুকুও যেন হয়ে যায় বেহেশতী খাবার!

দুদিন বাদে মাকে জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা মা, তেল-মসলা ছাড়াও তুমি কি তরকারী রাঁধতে পার?
সে আবার কেমন তরকারী রে। তোর নানী-দাদী এত বড় রাঁধুনি ছিল। তাদের মুখেও তো শুনিনি। ওরকম করে রাঁধলে তো সেটা কোন খাদ্যই হবেনা। অমন বিস্বাদ জিনিস কেউ খাবে?
না মা, সেরকমও তরকারী হয়।
তুই খেয়েছিস্‌?
হু।
কোথায়?
রফিকদের বাড়িতে।
ইয়া আল্লাহ! কেমন লেগেছে তোর কাছে?
অমৃত! হ্যা মা, ওটা ছিল ঠিক অমৃত। আবার কবে যে যেতে পারব?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:২৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×