আস্তিকের এক কথা নাস্তিকের হাজার কথার সমান..!
নাস্তিকের হাজার কথার চেয়ে আস্তিকের এক কথার মূল্য অনেক বেশী.!
যদি ওজন করা হয় কার কথার বেশী ওজন. ;
তখন প্রমানিত হবে আস্তিকের কথার ওজন বেশী আর নাস্তিকের কথার ওজন কম...!
চলুন
পড়ে দেখি
:::::::::::::::::::::::::::::→
ইমাম আবু হানিফা'র সাথে তর্ক করতে চাই এক নাস্তেক, জানেনা ঘোড়ার মাথা, অথচ এতো বড় একজন পন্ডিতের সাথে তর্ক করার দুঃসাহস করেছে, তো ইমাম আবু হানিফা বললেন তুমি আমার সাথে তর্ক করতে চাও..? যে সৃষ্টিকর্তা আছে কিনা...? "এই বিষয়ে"
তাহলে এই তর্ক এখানে এখন করবোনা...
ইমাম আবু হানিফার পিছিয়ে যাওয়া দেখে নাস্তিকটি দাঁত বেড় করে হাসতে লাগলো.. এবং মনে মনে খুব খুশী হলো. ; সে ভেবেছিলো ইমাম আবু হানিফা এতো বড় পন্ডিত, সে তার সাথে এখন তর্ক না করে লেজ নিচু করে পালিয়ে যাচ্ছে,, "এই কথা ভাবতেই" ইমাম আবু হানিফা বললেন, তুমি ভেবো না যে তর্ক হবেনা, তর্ক অবশ্যই হবে তবে আজকে না, আগামী বৃহস্পতিবার জহুরের নামাজের আগে নদীর উপারে যে বিরাট মাঠ রয়েছে সেই মাঠে হাজার জনতার সামনে, "আবু হানিফার সাহস দেখে বেচারা নাস্তিক এক ঢুক ডর গিলে নিলো" আর ভাবলো "মনে করেছিলাম আবু হানিফা আজ তর্ক ছেড়ে দিয়ে পিছিয়ে গেলো, কিন্তূ এখন দেখছি, "ব্যাপক ভাবে এগিয়ে এলো"
তারপর আবু হানিফা বললেনঃ
শুনো নাস্তিক ; তুমি এলাকা জুড়ে ঘোষনা করে দাও, আর এই বিতর্কের কথা মানুষের কাছে প্রচার করতে থাকো
নাস্তিক বললো জ্বি আজ্ঞে হুজুর তাই হোক, আমিও প্রচার করি আপনিও প্রচার করুন,
সেদিন ছিলো শনিবার, বুধবার পর্যন্ত প্রচার করা হলো এবং বৃহস্পতিবার সূর্য উদয়ের পর শহর, গ্রাম, পাড়া,মহল্লা, এবং দেশের সত্যান্বেষী লোকজন আসা শুরু করলো,
নদীর উপার সেই বিরাট মাঠে.. আর বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজক বা তর্ক বাস্তবায়ন কমিটি
মাঠের সামনে একটি উচু স্টেজ সাজিয়ে রেখেছে,, দেশ গ্রাম গ্রামান্তর থেকে লোকজন এসে মাঠ ভরে গেলো, নাস্তিক মশাই স্টেজে উঠে মানুষ দেখে অবাক হয়ে গেলো,, ওরে বাবা..! এতো মানুষ...? মনে মনে বললো হবেইনা কেনো..? ঘোড়া নিয়ে বিভিন্ন শহরেও এই খবরটি পৌছে দিয়েছে কিছু লোক, আর সাড়া দেশের বেশ কিছু সত্যান্বেষী মানুষ তো আছেই, তো দেখি কি হয়,
জহুরের নামাজের আগে ইমাম আবু হানিফার আসার কথা কিন্তূ সে এখনো এলোনা, জহুরের আজান হয়ে নামাজ শেষ হয়ে গেলো এবং কিছুক্ষণ পরেই আছরের আজান হবে, কিন্তূ মুছলিম পন্ডিত ইমাম আবু হানিফার খবর নেই,
তাই নাস্তিক ভাবলো, মুছলিম পন্ডিতের লেজ খশে পড়েছে, সে মানুষ দেখে ভয়ে পালিয়েছে, কারন "স্রষ্টা আছে" এমন কোনো প্রমান বা যুক্তি তার কাছে নেই, তাই আজকে আবু হানিফা গর্তের সাপ গর্তের ভিতরেই রয়ে গেছে, বেড় হওয়ার সাহস নেই, তর্ক করার সাহস নেই,,সে ভয় পেয়ে গর্তেই রয়ে গেছে,, ইত্যাদী ভাবতে লাগলো আর বলতে লাগলো, হঠাৎ করে নাস্তিকটির দৃষ্টি পড়লো সেই দিকে.. হাজার জনতাকে পাশ কেটে একজন লোক আসতেছে.. দেখে মনে করলো এটাই ইমাম আবু হানিফা..! সত্যি সত্যিই দেখা গেলো ইনিই সেই মুছলিম পন্ডিত ইমাম আবু হানিফা.!
তো স্টেজের কাছে এসে স্টেজে উঠলেন, তখনই নাস্তিক বললোঃ কি ব্যাপার..? পন্ডিতজী আপনার মুখের কথারই তো ঠিক নেই,মঞ্চে আসার কথা জহুরের নামাজের আগে, অথচ আসলেন কতো লেট করে,,
আবু হানিফা ঠিক তখন বলে উঠলেন জনতার দিকে মুখ করেঃ
সন্মানিত জনতা, নাস্তিকটি আমাকে জিজ্ঞেস করছে আমি মঞ্চে আসতে দেরী করলাম কেনো..? সে বলছে আমার জবান ঠিক নেই,
এখন আপনারাই শুনুন আমার মঞ্চে আসতে কেনো দেরী হলোঃ
আমার বাড়ি থেকে আসার আগেও একটি নদী পাড়ি দিতে হয়, আমি জহুরের নামাজের আগে এসে উপস্থিত হবো, কথা দিয়েছি কিন্তূ নদীর পাড়ে এসে দেখি নদীতে কোনো নৌকা নেই এবং কোনো মাঝিও নেই, কি যে একটা সমস্যাই পড়েছিলাম, তো তখন ভাবলাম কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি হয়তো নৌকার মাঝি নৌকা নিয়ে আসতেও পারে, অপেক্ষা করলাম কিন্তূ নৌকা নিয়ে নৌকা ওয়ালা আর আসলোনা, তো আমি নদীর ঘাটে পানীর কাছে গিয়ে দাড়িয়ে রইলাম, অমনিই লক্ষ করলাম এই নদীর ঘাটে যে বঁট গাছটি রয়েছে তা নিজে নিজেই নিচ থেকে সুন্দর ভাবে কেটে গেলো, তারপর সেই গাছটি একা একাই সুন্দর তক্তা হয়ে গেলো, তারপর সেই তক্তা একটার সাথে আরেকটা একা একাই জুড়া লাগতে লাগলো, এবং জুড়া লেগে একা একাই একটি নৌকা তৈরী হয়ে গেলো, তারপর সেই নৌকাটি কেউ পানিতে নামালো না, বরং নিজে নিজেই কারো সাহায্য ছাড়া পানিতে নেমে গেলো, তারপর আমি সেই নৌকায় উঠলাম, কোনো মাঝি নাই, কোনো বৈঠা নাই, কিন্তূ নৌকাটি একা একাই তথা নিজে নিজেই চলতে লাগলো, কোনো মাঝি ছাড়াই, এবং নদীর এই পাড় এসে আমাকে নামিয়ে দিলো, তারপর আমি আপনাদের কাছে এসে পৌছেছি,এবং এজন্যই দেড়ী হয়েছে।
আবু হানিফার কথা শুনে লোকজন হাঁসবে নাকি কাদবে দিশে পাচ্ছেনা, আর নাস্তিকটি এমন জুড়ে হাঁসি দিলো.. মনে হলো দাঁত সব খুলে বাইড়ে পড়লো...হেঁহ্ হাঁহ্ হাঁ...
এবার কোনো রকমে নাস্তিকটি নিজের হাঁসি থামিয়ে বললো, হে আবু হানিফা আমি তো আপনাকে বুদ্ধিমান মনে করতাম,
এবং যুক্তিবাদী মনে করতাম,এখন দেখছি আপনার মাথায় বুদ্ধি তো নেই আছে শুধু গোবর নিজের কথা বার্তায় কোনো যুক্তি তো নেই আছে পাগলের প্রলাপ, আজকে আপনি এসে এমন এক অযৌক্তিক গল্প শুনালেন, যা সুস্থ বিবেক ও বুদ্ধি সম্পন্ন কোনো মানুষ মেনে নিবেনা, আপনি এখানে আসার দেড়ী হওয়ার কারন বলতে গিয়ে বলেছেন, নদীতে এসে কোনো মাঝি ও নৌকা পাননি, এটা স্বাভাবিক, ও বিশ্বাস যোগ্য, তারপর আপনি বলেছেন, নদীর ঘাঁটের কাছে যখন আপনি দাড়ালেন তখন লক্ষ করলেন নদীর ঘাটে পাড়ে একটি বঁট গাছ আছে, এটাও আমরা জানি এবং এটা স্বাভাবিক ও বিশ্বাস যোগ্য, তারপর আপনি বলেছেন, বঁট গাছটি আপনাকে ঘাটে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সে নিজে নিজেই নিচ থেকে সমান ভাবে কেটে গেলো.. এই কথাটি অবিশ্বাস যোগ্য কারন, কোনো মানুষ বা কোনো অছিলা ছাড়া একটি বিরাট আকৃতির বঁট গাছ নিচ থেকে সমান ভাবে নিজে নিজেই কেটে পড়তে পারেনা, যদি কোনো কাঠুরিয়া এই গাছটি না কাটে, কোনো না কোনো লোক লাগবেই এই গাছটি কাটতে, তা না হলে এই গাছটি কাটা কশ্মিন কালেও সম্ভব নয়.. ;
তাহলে আপনি যে কথাটি বলেছেন এই গাছ কাটার ব্যাপারে,তা অযৌক্তিক, ;
তারপর আপনি বললেন, বট গাছটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে নিজে নিজেই কেটে যাওয়ার পর, স্বয়ংক্রিয় ভাবে তা তক্তা হয়ে গেলো, এবং তা থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে নৌকা হয়ে স্বয়ংক্রিয় ভাবে পানিতে নেমে গেলো, তাপর আপনি নৌকায় উঠলেন, এবং সেই নৌকাটি কোনো মাঝি ছাড়াই আপনাকে উপাড়ে নামিয়ে দিলো, হাঁ হাঁ..
এসব হাস্যকর ও সম্পূর্ণ অযৌক্তিক কথা, এটা কোনো ভাবেই যৌক্তিক হতে পারেনা।
আবু হানিফা বললেনঃ
হে নাস্তিক তুমি নিজেই বলছো যৌক্তিক ছাড়া কেনো কথা বিশ্বাস করিনা আর আমি নদীর তীরে যে বঁটগাছের স্বয়ংক্রিয় ভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনা পেশ করলাম,
তা তুমার কাছে অযৌক্তিক মনে হলো, কারন হিসেবে তুমি বললেঃ
কোনো 'জড়' বস্তূ স্বয়ংক্রিয় ভাবে অর্থাৎ কারো সাহায্য বা অছিলা ছাড়া স্বয়ংক্রিয় ভাবে কাজ করতে পারেনা, কোনো না কোনো কর্তা লাগে, তুমি উদাহারন দিয়ে বললে বঁটগাঁছ নিজে নিজেই কেটে যেতে পারেনা, কোনো কাঠুরিয়া ছাড়া, কোনো গাছ কেটে গিয়ে নিজে নিজেই তক্তা হতে পারেনা কোনো মিস্ত্রী ছাড়া, তক্তা হয়ে নৌকা হতেও পারেনা কোনো মিস্ত্রী ছাড়া , অতপর নৌকাটি নিজে নিজেই পানিতে নামতে পারেনা, কোনো মানুষ ছাড়া, এবং নৌকাটি কোনো মানুষ নিয়ে চলতে পারেনা, কোনো মাঝি ছাড়া, যদি কেউ এসব ছাড়া (জড়) বস্তূ স্বয়ংক্রিয় ভাবে হয়েছে বা হচ্ছে বলে দ্বাবী করে তবে তা হবে অযৌক্তিক ;
যদি তাই হয় তবে আমি বলবো যদি কেউ বলে, মানুষকে কোনো সৃষ্টিকর্তা অপূর্ব কাঠামোতে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেনি, এবং আরো বলে নিপুন কারুকার্যময় এই পৃথিবী ও বিশাল মহাকাশ, কোনো স্রষ্টা বা কর্তার হস্তক্ষেপ ছাড়াই এই বিশ্ব জগত সৃষ্টি হয়েছে তবে তা হবে এই বটঁগাঁছের ঘটনার মতো অযৌক্তিক ;
হাস্যকর, ও পাগলের প্রলাপ ...!!
সুতরাং আমি আবু হানিফা বলতে চাই
আজকে "স্রষ্টা আছে কি?" বিষয়ে যে আলোচনা হওয়ার কথা ছিলো তা বলা হলো, এবার নাস্তিকের মতামত জানতে চাই..!!!
তখন নাস্তিক বেচারার গলা শুকিয়ে গেলো,মনে হলো নিজের মাথায় ও চেহারায় গরম বাতাস প্রবাহিত হয়ে তা চলে গেলো এবং সমস্ত শরীল শিহরে উঠলো, গায়ের লোম দাড়িয়ে গেলো, এবং "স্রষ্টা নেই" বলে যে অন্ধবিশ্বাস ছিলো তা দূর হয়ে গেলো, এবং আবু হানিফার যুক্তিটা হৃদয় ছুয়ে গেলো বন্ধ চোখ খুলে দিলো, এবং চোখ থেকে সুখের অশ্রু বেয়ে এলো, ভাংলো সাড়া জিবনের সমস্ত ভুল, এমনকি সাথে সাথে আবু হানিফার পায়ে লুটিয়ে পড়লো, এবং সব নাস্তিক সেদিন মুছলিম হয়েছিলো.......
♣লিখেছেনঃ "ব্লগার চুড়ান্ত বার্তা"
ইংশাআল্লহ পরে যে পোস্ট সমূহ আসছে
"অন্ধবিশ্বাস কতটা যৌক্তিক তার তত্ত্ব বিশ্লেশন"
ও
"স্রষ্টার অস্তিত্ব / নাস্তিকদের প্রশ্ন ও উত্তর"
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৫