১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। মাত্র নয়মাসে একটা দেশ স্বাধীনতা পেল। এত অল্প সময়ে স্বাধীনতার স্বাদ মনে হয়না আর কোন দেশ পেয়েছে।
পাক হানাদার হায়েনাদের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্যে মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা আক্রমণ করেছে। কিন্তু তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, তৈরি করেছে কে? ইণ্ডিয়া।
হাজার হাজার স্মরণার্থীকে বর্ডার এলাকায় মাসের পর মাস বসায় রেখে তিন বেলা খাওয়ালো কে? ইণ্ডিয়া।
বাংলাদেশে সরাসরি সেনা পাঠিয়ে পাকহানাদারদেরকে পরাস্থ করলো কে? ইন্ডিয়া।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সাপোর্ট দিয়েছে কে? ইন্ডিয়া।
তিন ডিসেম্বর ১৯৭১ এ ইন্ডিয়ান আর্মি বাংলাদেশে ঢুকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলো। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সীমিত স্কিল আর রসদ নিয়ে হানাদার পাকিস্তানীদের সাথে বছরের পর বছর ফাইট করলেও ইন্ডিয়ার সরাসরি সাহায্য ছাড়া এই দেশ আদৌ স্বাধীন হতো কিনা সন্দেহ। তাই সারেন্ডার করার সময় পাকিস্তানের আর্মি নিয়াজী সাহেব ভারতের জাগজিত সিং অরোরা কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল, বাংলাদেশের ওসমানী সাহেবের কাছে নয়।
১৯৭১ সালের এই যুদ্ধকে আমরা বাংলাদেশের 'মুক্তিযুদ্ধ' বলি। কিন্তু ইণ্ডিয়ানরা বলে ১৯৭১ সালের ইন্ডিয়া-পাকিস্তান যুদ্ধ। যে যুদ্ধে ইন্ডিয়া জয়ী হয়। তাই ১৬ ডিসেম্বর ইন্ডিয়াতে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে বিজয় দিবস পালন করা হয়। এটাই স্বাভাবিক। পাক-ভারত যুদ্ধে বাংলাদেশের লাভ হলো বাংলাদেশ মাঝখান থেকে স্বাধীন হয়ে গেল।
আর বাংলাদেশীরা কথা বার্তায় এমন একটা ভাব নেয় যে, বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধারা একাই ফাইট করে দেশ স্বাধীন করেছে। ইন্ডিয়াকে সেখানে বড় করা হয়না। ইন্ডিয়াকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয়না। এমনকি ইন্ডিয়া বিরোধী চক্র, পাকিস্তানপন্থী জামাত- বিএনপি মিএনপি এরাসব সময় এন্টি ইন্ডিয়ান ডায়লগ দেয়। ইন্ডিয়ান চ্যানেল দেখা যাবেনা, পণ্য ইউজ করা যাবেনা এইসব কথা চাউর করে। এটা একধরণের নিমকহারামী। শুকরিয়া করো যে, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশ নামের দেশটা বাংলাদেশীদেরকে উপহার দিয়েছিলেন।
কাজেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন ১৬ ডিসেম্বর টুইটারে ভারতের বিজয়কে অভিনন্দন জানালেন, news সেখানে বাংলাদেশের কমশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত সাংবাদিক আর সুশীল সমাজ হায় হায় করে উঠলো যে, কেন বাংলাদেশের কথা মোদী বলেননাই। আরে মোদী বাংলাদেশের কথা বলবেন কেন? এটাতো স্পষ্টভাবেই ইন্ডিয়ার বিজয়। একজন ভারতীয় হয়ে তিনিতো ইন্ডিয়ার কথাই বলবেন, নাকি?
ভারতীয় নামী ক্রিকেটার বীরেন্দ্র শেহওয়াগ টুইট করলেন news তাদের ভারতের বিজয়কে স্মরণ করে। বাংলাদেশের নাম তিনি বলেননাই। সস্তা বাংলাদেশীদের কাছে তিনি বিশাল অপরাধ করেছেন। news
অকৃতজ্ঞ বাংলাদেশীরা, ইন্ডিয়া সাহায্য না করলে, পাশে না দাঁড়ালে তোমরা এখনও পাকিস্থানীদের গোলামী করতে। মনে রেখ, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু বিজয়টা ছিল ভারতের। কাজেই মোদীসহ সকল ভারতীয় রাজনীতিকদের টুইটকে সম্মান করো। মুক্তিযুদ্ধের সবজায়গায় ইন্ডিয়ার অবদানকে সবার সামনে রাখো। আর ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলা, ইন্ডিয়ান চ্যানেল না দেখা এইসব আধ্যাত্মিক কথা বলা বন্ধ করে দাও।
যে পাতে খাও, সেই পাত ফুটা করোনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:০৮