জিকো আর ইথিনা লেগবুকে চ্যাটিং করছে। তারা দুইজন ট্রাইটান গ্রহের দুইটি ভিন্ন উপগ্রহের বাসিন্দা হলেও তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হয়। জিকো থাকে এন্ড্রোমিডা উপগ্রহে আর ইথিনা ওরেন উপগ্রহে। তবে আসল কথা হচ্ছে তারা একে অপরের উপরে দূর্বল ..
- এই তোমাকে আজ একটু অন্যরকম লাগছে কেন?
- ত্রাস করতে ছাত্রদল এসেছিল। রুমেলের বাবা আহত হয়েছে আর আমার কপালে ঢিল লেগেছে। আমি স্পেসশিপে করে পালিয়েছি।
- ঢিলের আঘাত লেগেছে? ওহ নো। আর স্পেসশিপ? আমাকে তো বাবা মা ওতে চরতেই
দ্যান না।
- তোমার সাথে যখন দেখা হবে তখন তোমায় নিয়ে স্পেসশিপে ঘুরব।
- আচ্ছা আমাদের কি কখনো দেখা করার কোন উপায়ই নেই?
- গ্রহ থেকে বের হওয়ার জন্য যে গ্রীন কার্ড লাগে তা তো শুধু একচেটিয়া দল আওয়ামিলীগই দিতে পারে।
- হ্যা আমরাও তো ঠিক একইভাবে এখানে বিএনপির হাতে জিম্মি।
ইথিনা আর জিকোদের পূর্বপুরুষরা আগে পৃথিবী নামক একটি অপরূপ সুন্দর গ্রহের বাংলাদেশ নামক দেশে থাকত। তাদের পূর্বপুরুষরা সেই সুন্দর গ্রহটিকে এতটাই কলুষিত করে ফেলে যে সেটা বসবাসের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ে। রামপাল দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আর সেখানে একটা গাছ পর্যন্ত অবশিষ্ট ছিল না। তখন সারা পৃথিবীতেই একই অবস্থা। তাই তখনকার বড় বড় দেশগুলো একসাথে মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নেয় যে যে দেশ যার যার মত বসবাসের জন্য গ্রহ খুঁজে নিক।
প্রযুক্তি যথেষ্ট উন্নত থাকায় দেশগুলো তত্ক্ষনাত্ গ্রহ খুঁজতে শুরু করেছিল এবং সবচেয়ে ভাল গ্রহের মালিকানা নিতে দুঃখজনক ভাবে ১৭ তম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।
বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা ট্রাইটান-2 নামক অপেক্ষাকৃত একটা নিম্নমানের গ্রহ খুঁজে পায় এবং নিম্নমানের হওয়ায় এর জন্য কেউ যুদ্ধ করতে এলো না। সবাই ভেবেছিল ভালই হল। তখনও যথাক্রমে বাংলাদেশ শোষন করে আসছে বিশেষ দুই দল। কিন্তু সেই নতুন গ্রহে কোন দল সরকার গঠন করবে আওয়ামিলীগ না বিএনপি? এই নিয়ে নিজেদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। সাধারন জনগন না চাইতেই এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। রক্তক্ষয়ী সেই যুদ্ধের অবসান না হওয়ায় দুই দলের ভিতর সমঝোতা হয় এবং সমঝোতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হল দুই দলের কেউই মূল গ্রহে থাকবে না বরং দুই দল অনুসারী সহ ট্রাইটান গ্রহের দুই উপগ্রহে বসবাস করবে। সাধারন মানুষ জিম্মির মত এই সিদ্ধান্ত মেনে নিল। মাঝে মাঝে ওরেন গ্রহ থেকে ছাত্রদলের ক্যাডাররা আসে এন্ড্রোমিডা গ্রহে ত্রাস সৃষ্টি করতে। আবার মাঝে মাঝে এন্ড্রোমিডা থেকে ছাত্রলীগ যায় ওরেন গ্রহে। এইসব ত্রাসে বহু নিরীহ সাধারন মানুষ মারা গেছে। মানুষের মনে প্রতিহিংসা দানা বাধতে থাকে। কিন্তু আর কত?
- এই জিকো কি ভাবছো?
- মা বলেছিল প্রায় দুই হাজার বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষের দেশ বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল। যাতে সমগ্র বাঙালী এক হয়েছিল এবং দুঃখের ব্যাপার হল সেটাই প্রথম এবং সেটাই শেষ।
- তো?
- তো এখন হয়তো সেই সময় এসেছে। দুই দলের কারনে আমরা কেন ভুক্তভোগী হব? এই দুই দলের কারনে এখনো আমরা ফকির রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত। তা না হলেও আজ আমরা উন্নত রাষ্ট্র হতাম আর এক সাথে থাকতাম।
- তুমি কি করবে?
- আমি শুরু করব। একজনকে তো শুরু করতেই হবে। দেখি কে আমার সাথে আসে। এই উন্নত সময়ে এসেও ভয়ভীতি নিয়ে বাঁচতে চাই না। আমি যাচ্ছি, যাচ্ছি আরেকটা একাত্তর রচনা করতে।