somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরাজিত ভালবাসা।।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুজন ক্লাস ১০ এ পড়ে। এলাকার
সবচেয়ে সুন্দর
ছেলে হিসাবে তাকে সাবাই
চিনে।
সুজনের ক্লাসের
মেয়েদের মাঝে প্রায়ই সুজন
কে নিয়ে ঝগড়া হয়। তার
ক্লাসে ৪০জন মেয়ে আছে। তার
মাঝে ৬টা মেয়ে সুজননের
প্রেমে হাবুডুবু খায়। আর ৫জন দিনের
বেলা ক্লাসে বসে রুমের ছাদে সুজন
কে দেখে।
তবে সুজন সে দিকে দৃষ্টিপাত ও
কর্ণপাত কোনটাই
করে না। কারন সুজনের হয়েছে অন্য
সমস্যা। এমন এক
সমস্যায় সুজন পড়েছে যা কাউ
কে বলতেও পারছে না সহ্য
ও করতে পারছে না। দিন দিন তার
সমস্যার
ভারে সে ক্লান্ত হয়ে পরছে। সুজন
ভেবেই পায়
না দুনিয়াতে এতো মেয়ে থাকতে সে কিভাবে পাশের
বাড়ির শান্তা আপুর
প্রেমে ডুবে ডুবে জল খায়।
যে কিনা তার চেয়ে কম করে হলেও
১বছরের বড়। সুজন
শান্তার প্রেমে শুধু ডুবে ডুবে জল
না রীতিমতো রাতের
বেলা সূর্য আর দিনের
বেলা তারা দেখে। সুজনের
দেখা মতে শান্তা এই দুনিয়ার
সবচেয়ে সুন্দর মেয়ে।
কি তার
হাসি। হাসি দিলে গালের বাম
দিকে যখন ছোট্ট
একটা ডিম্পল পরে তখন সুজন
তা হা করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে।
আর এমন লম্বা ও
সিল্কী চুল সুজন জীবনেও দেখে নি।
সুজন
শান্তা কে যতোই দেখে ততোই তার
প্রতি ফিদা হয়।
সুজন ছেলেটি শান্তার সামনেই বড়
হয়েছে। সুজন আর
শান্তা ছোটকালে একসাথেই
খেলতো।
সুজন ছোট হলেও
শান্তা আর সুজনের
মাঝে ভালো একটা সম্পর্ক আছে।
সুজন প্রায় ঈদে শান্তা দের বাসায়
আসে।
পড়া না পাড়লে শান্তার
কাছে এসে পড়া শিখে যায়।
কিন্তু
মাস ছয়েক হলো শান্তা সুজনের
মাঝে কেমন
একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করছে।
সামনে আসলে যেতে চায়
না। বাড়িয়ে বাড়িয়ে কথা বলে।
এতে শান্তার কোন
সমস্যা ছিলো না। সবচেয়ে বড়
সমস্যা হলো রাস্তায়
দেখলে মজনু দের
মতো হা করে তাকিয়ে থাকে।
সুজনের
লক্ষ্যন বেশি সুবিধার
মনে হচ্ছে না শান্তার। সুজন
কে ব্যাপার টা জিজ্ঞেস
করতে হবে তার
আসোলে কি সমস্যা?।
সুজন রাস্তার পাশে চায়ের টং টায়
দাড়িয়ে আছে।
সুজন ক্লাস
ফাকি দিয়ে পালিয়ে এসেছে।
কারন
এখন
শান্তার কলেজ থেকে বাসায়
জাওয়ার
সময়।
শান্তা রিক্সা দিয়ে আসছে সুজন
মজনু
স্টাইলে চায়ের
কাপ হাতে নিয়ে শান্তার
দিকে অপলক
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
শান্তা রিক্সাটা থামিয়ে সুজন
কে ডাক দিলো।
-এই সুজন ।
-জ্বী আপু।
-আয় রিক্সায় উঠ।
সুজন এর বুক কাঁপছে। শান্তা আপু হটাত
তাকে রিক্সায়
ডাকলো কেন। সব কিছু জেনে যায়
নি তো শান্তা আপু।
সুজন এগুলো ভাবতে ভাবতে রিক্সায়
গিয়ে উঠে সুজন ।
-আচ্ছা সুজন তোর কি হয়েছে বল
তো ভাই।
-না মানে আপু কিছু না।
-তোতলাচ্ছিস কেন।
কি হয়েছে খুলে বল
আপু কে।
কি সমস্যা তোর?
-কই কোন সমস্যা নেই তো।
-তাহলে তুই এই সময় প্রতিদিন
এখানে কি করিস এই
সময় তো তোর ক্লাস চলে। তুই
এখানে দাড়িয়ে আমার
দিকে ভ্যাবলার
মতো তাকিয়ে থাকিস
কেন।
-না আপু এমনি। মানে তুমি অনেক
সুন্দর।
-কিসব বলছিস এগুলো। আর
এভাবে ঘামছিস কেন।
-আপু
কি হয়েছে তা বললে তুমি আমাকে মারবা।
-মারবো না। বল
-না বলবো না।
-অর্ধেক বললি কেন। এখন
পুরাটা বলতে হবে। না হয়
ধাক্কা দিয়ে রিক্সা থেকে ফেলে দিবো বলে দিলাম।
-আপু তোমাকে আমার অনেক পছন্দ হয়।
তুমি অনেক সুন্দর।
-
হ্যা জানি তো এগুলো না বলে আসল
কথা বল।
-এটাই আসল কথা আপু।
মানে তুমি বুঝতেছো না।এই পছন্দ
সেই পছন্দ না।অন্য রকম পছন্দ
-বুঝছি।বিয়ে করবি আমাকে?
হা হা হা
-যাও আপু। খালি দুষ্টুমি করো।
-হা হা হা।
শান্তা কি বুঝলো কে জানে। সুজন
কে কাছে টেনে সুজন এর মুখের ঘাম
গুলো তার
ওরনা দিয়ে মুছে দিলো। আর সুজন এই
প্রথম তার
দেহে অন্য রকম অনুভূতি অনুভব করলো।
এটাই মনে হয়
ভালোবাসার প্রথম অনুভূতি। সুজনের
বড্ড
জানতে ইচ্ছা করছে শান্তা ও
কি এমন
অনুভূতি অনুভব
করছে।!!!!
-আপু তুমি উত্তর দিলে না।
-কিসের উত্তর?
-ওই যে আমি যে বললাম
তোমাকে পছন্দ করি।
-হ্যা। তুই তো বলেছিস। কিছু তো আর
জিজ্ঞেস করিস
নি যে উত্তর দিবো।
-আপু আমি তোমাকে অনেক পছন্দ
করি।
তোমাকে আর আপু
বলে ডাকতে চাই না।
-তাহলে কি বলে ডাকতে চাস? বউ?
চল
কাজী অফিসে যাই।
-ধুর আপু খালি দুষ্টুমি করো কেন।
-ওমা আমি তো সত্যিই বললাম। তুই
আমাকে পছন্দ করিস
বললি। তার মানে প্রেম করতে চাস।
প্রেম করতে চাস আর
বিয়ে করতে চাস না তা কি হয়
নাকি।
তুই
তো ছেলে ভালো না রে সুজন ।
-যাও আমি কি তা বলেছি নাকি।
বিয়ে তো করবোই।
আগে বড় হয়ে নেই।
-কিন্তু আমি তো অনেক বড়
হয়ে গেছি।
বিয়ের বয়স পার
হয়ে যাচ্ছে।চল বিয়েটা করে আসি।
-আপু তুমি আমার জন্য
অপেক্ষা করতে পারবা না?
-না পারবো না।
আমি কি বুড়ী হয়ে বিয়ে করবো নাকি।
-ওহ।
-কিরে সুজন তোর চোখ টলটল
করছে কেন? তুই
কি সত্যিই সিরিয়াস নাকি?
-হ্যা আপু। আমি সত্যিই
তোমাকে অনেক
পছন্দ করি।
-কি বলিস এই সব । পাগল হলি নাকি।
-হ্যা তোমাকে দেখলে সত্যিই
পাগল
হয়ে যাই।
-কিরে সুজন তুই
এত্তো কথা শিখলি কবে। তুই
তো সত্যিই বড় হয়ে গেছিস। চল
বিয়ে টা করে আসি।
-শান্তা আপু দেখ তুমি একটু বুঝো।
আমি সিরিয়াস
এতো মজা করো ক্যান।
-আচ্ছা আমিও সিরিয়াস হলাম। শোন
পাগল এটা সম্ভব
না।
-কেন! কেন সম্ভব না।
-আমি তোর থেকে ১/২ বছরের বড়।
কেউ
এটা মেনে নিবে না বুঝলি।
তাছাড়া আমি তোকে নিয়ে এগুলো কোন
দিন ভাবি নাই।
-বড় তো এখন কোন ফ্যাক্ট না।
ঐশ্বরিয়া ও তো অভিষেক
এর চেয়ে ৪বছরের বড়।
তারা তো বিয়ে করেছে।
-দেখ আমি তো ঐশ্বরিয়া না। আর তুই

অভিষেক না।
আর এটা বলিউড না।এটা জীবন।
এটা বাংলাদেশ।
এটা সমাজ কেউ মানবে না বুঝলি।
-কিন্তু আমি তোমাকে পছন্দ করি।আর
তুমি তো ঐশ্বরিয়ার চেয়ে কম সুন্দর
না।
-কিন্তু আমি ঐশ্বরিয়া না রে ভাই
যে এতো দিন আমার
অভিষেক এর জন্য খালি থাকবো।
-মানে কি?
-মানে আমি প্রেম করি।
কাউকে বলিস
না। তোকে বাধ্য
হয়ে বললাম। দেখ তোর দুলাভাই এর
ছবি।
-হুম সুন্দর।
-চেঞ্জ কর আরো ছবি আছে।
-থাক আর দেখবো না। তবে মিস
শান্তা আপনাকে বাংলা ছবির
স্টাইলে একটা কথা বলতে চাই
"আমার
মনের
টেলিভিশনে তুমি ই থাকবা।
তোমারে নিয়া ঘর করমু।
সংসার করমু। বাচ্চা কাচ্চা হইইবো।
সারা দিন তোমারেই
দেখমু। দেখি কেমনে আটকাও।
দেখি তোমার সমাজ তোমার
জামাই কি করতে পারে আমার।
গেলাম
।আসসালামু
ওয়ালাইকুম।
সুজন হেটে চলে যাচ্ছে।
কথা গুলো বলে নিজেকে খুব
হালকা লাগছে। তাও খুব কষ্ট হচ্ছে।
সুজন
ভাবছে না জানি কতো ছেলের
জীবন
নষ্ট হইছে এই
সুন্দরী বড় বোন এর পাল্লায় পরে। বড়
বোন গুলো এতো সুন্দর
হয় কেরে।
এগুলো ভাবতে ভাবতে সুজন
আবেগে কাইন্দা দিছে। আর অন্য
দিকে ঘটনার
আকস্মিকতায় শান্তা পুরাই
থমকে গেছে।
এখনো হা করে আছে। কিছুই বলার
ভাষা খুজে পাচ্ছে না শান্তা।
এতোটুকুন
একটা পুচকে ছেলে কি শুনিয়ে গেলো এগুলো।
কথা গুলো এখনো শান্তার
কানে বাজতেছে। আজকাল
পোলাপান খুব এডভান্স হয়ে গেছে।
শান্তা তাকিয়ে তাকিয়ে সুজন
নায়কের
স্টাইলে হেটে যাওয়া দেখছে। আর
ভাবছে কি বলে গেলো এগুলো।
সুজনের মনটা ৩দিনেও ভলো হয় নি।
নিজের
কাছে নিজেকে খুব লজ্জিত
মনে হচ্ছে।
শান্তা আপুর
সাথে এভাবে কথা বলা ঠিক হয় নি।
পরক্ষনে আবার মনে হয়
যা হইছে ভালোই হইছে।
এতো চিন্তা করে লাভ নাই। সুজন
এগুলো ভাবতে স্কুল
থেকে বাড়িতে যাচ্ছে। হটাত
পিছন
থেকে শান্তা ডাক দেয় সুজন কে।
-এই সুজন দাড়া।
-কি হয়েছে বলো।
-ওমা দেখ কথা বলার কি স্টাইল ।ভাব
নিচ্ছিস কেন
নিজেকে খুব বড় ভাবিস নাকি
-না ভাব নিবো কেন।
-কি ওই দিন এগুলো কি বললি সাহস খুব
বড়
হয়ে গেছে তাই না।
-না সাহস বড় হবে কেন যা সত্যি তাই
বলেছি।
-তাই তারপর আমাকে এমন ডায়লগ
শুনালি কেন। একটু ভয়
লাগলো না আমি যদি তোর আম্মুর
কাছে গিয়ে বিচার দেই
এখন।
-তাই যাও দাও। তোমার কথা কেউ
বিশ্বাস করবে না।সবাই
তোমাকে পাগল বলবে। ১/২ বছরের
বড় মেয়ে কে আমি অফার
করেছি তা বললে সবাই হেসেই
মরে যাবে।
তাছাড়া তোমার
কাছে তার কোন প্রমান ও নেই।কিন্তু
আমি যদি বলি তুমি অন্য ছেলের
সাথে প্রেম করো।
তোমার মোবাইলে তার ছবিও
আছে।
তাহলে তোমার
কি হবে চিন্তা করেছ?
-হা হা হা। তুই আমাকে ভয় দেখাস?
যা বল
গিয়ে পুঁচকে ছেলে। তোর
কথা শুনলেও
সবাই
হাসতে হাসতে শেষ হবে।
-মানে কি?
-মানে হলো আমি প্রেম ট্রেম কিছুই
করি না।ওইদিন
তোকে আমার খালাতো ভাই
রাকিবের
ছবি দেখাইছি।
-ওই দিন মিথ্যে বললে কেনো
-বুঝিস না কেনো?
-না।তুমি বলো।
-কারন তুই যেটা বলছিস তা কোন দিন
সম্ভব না।
-কেন সম্ভব না।তুমি ওয়ারফেজ এর
অসামাজিক
গানটা শোন নাই।আমি তোমার জন্য
অমন অসামাজিক হবো।
-ওয়ারফেজ কে?
-ও মোর খোদা।তুমি ওয়ারফেজ
চিনো না।বাদ দেও
না চিনলে নাই।
-হুম।সেটাই।শোন তুই যা বলছিস
তা হবে না।তাই ওইসব
চিন্তা বাদ দে।
-আচ্ছা।
শান্তা কি হয়েছে কে জানে।
আগেও
এমন অনেক
ছেলে শান্তা কে অফার করেছে।
কিন্তু
তা নিয়ে কোন
সমস্যা হয় নি। কিন্তু সুজন টা অনেক
জ্বালাচ্ছে।ঘুরে
ফিরে খালি সুজনের কথাই
মনে পড়ছে শান্তার। শান্তার
কি হলো নিজেই বুঝতে পাড়ছে না।
তবে কি? না না এ
হতে পারে না। এ অসম্ভব। কাল কলেজ
থেকে ফেরার
পথে সুজন
ইচ্ছে মতো বকা যেতে পারে আবার
স্কুল
চুরি করে রিহার জন্য
দাড়িয়ে থাকার
অপরাধে।
তাহলে হয়তো সুজনকে ভুলা যেতে পারে।
শান্তা তাই ঠিক
করলো।
শান্তা কলেজ থেকে ফেরার
পথে একনাগারে চায়ের
টং টার দিকে তাকিয়ে আছে।
কিন্তু
সুজনের কোন
নামগন্ধ ই নেই। ৫টা দিন
ধরে শান্তা সুজন
কে খুজছে কিন্তু সুজন এখন
তাকে দেখতে আসে না কেন।
শান্তা একটা নজর সুজনকে দেখার
জন্য
পাগলপ্রায়
হয়ে গেছে।একি শুধুই সুজনকে বকার
জন্য নাকি অন্য
কিছু তা শান্তার জানা নেই।
শান্তা আর না পেরে সুজনের
স্কুলে যায়। সুজন
কে নিয়ে এসেছে শান্তা।
-কি ব্যাপার আপু
তুমি আমাকে নিয়ে আসলা কেন?
-তোর সাথে কিছু কথা আছে।
-কিসের কথা আবার। তুমি সব বাদ
দিতে বলেছো।
আমি বাদ দিয়েছি। আবার
কি বলবে নতুন করে।
-তুই আমাকে দেখার জন্য চায়ের
টং টায় যাস না কেন আর।
-
তুমি বলেছো এগুলো ভুলে যেতে তাই
ভুলে যাচ্ছি।আর
কোনদিন ঈ যাবো না ওখানে।
তোমাকে আর জ্বলাবো না।
তাকিয়ে থাকবো না তোমার
দিকে।
-না।
-না মানে কি?
-মানে কিছু বাদ দিবি না।
প্রতিদিন
আমার জন্য চায়ের
টং টায় দাড়িয়ে থাকবি।
-মানে কি। কেনো।
-জানিনা। কিছু জানিনা।
যা বলেছি তাই
করবি বুঝলি পুচকে ছেলে।না হয় তোর
কপালে মাইর আছে।
গেলাম।
শান্তা হেটে হেটে চলে যাচ্ছে।
সুজন
হা করে বসে আছে।
কি বলে গেলো এগুলো। আর শান্তাই
জানে শান্তা কেন
সুজনের
সামনে থেকে উঠে এসেছে।
উঠে না আসলে যে শান্তা সুজনের
সামনেই কেঁদে দিতো।
শান্তা নিজের কান্না সুজনের
সামনে লুকিয়ে এখন
বাচ্চাদের মতো কেঁদে চলেছে।
চোখ
থেকে টপটপ
করে পানি ঝড়ে পড়ছে। এই কান্নার
নাম
কি শান্তা জানেনা? কেনো এই
কান্না তাও
সে জানেনা। শুধু
জানে তার বুক
ফেটে কান্না আসছে।
আর শান্তা এটাও
জানে সে অনেক বড় ভুল
করে ফেলেছে।
যার জন্য একদিন
তাকে খুব পস্তাতে হবে।
শান্তা সুজনের
সাথে কথা বলে সোজা বাসায়
চলে এসেছে।
শান্তা আজ নিজের আবেগের
কাছে পরাজিত এক অসহায়
যোদ্ধা। সুজনের
মতো পুচকে ছেলে তার
পুরোটা জীবন
উল্টাপাল্টা করে দিলো।
নিজেকে খুব
অসহায় লাগছে।
কি করবে কিছুই
বুঝে উঠতে পারছে না শান্তা। এই
সমাজ
যে বড়ই নিষ্ঠুর। শান্তা ঠিক
করে ফেলেছে তার সমাজ
চাইনা। সুজন কে চাই।
কিভাবে কি হবে তা জানেনা শান্তা শুধু
জানে পুচকে সুজন তাকে খুব
ভালো ভাবে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।
সে সুজন কে ছাড়া আর
কিছুই ভাবতে পারছে না।শুধুই
ওকে নিয়ে অবান্তর স্বপ্ন
দেখতে থাকে তা কি কোন দিন পূরণ
হবে।কে জানে।
শান্তা চায়ের টংটায়
এসে দাড়িয়ে আছে।
যেখানে প্রতিদিন
সুজন তার জন্য দাড়িয়ে থাকতো।
পাক্কা ১ঘন্টা হলো সুজনের নাম গন্ধ
ও নেই।শান্তার
মেজাজ চরম খারাপ হচ্ছে।
ছেলেটা অনেক বেয়াদব।
কথা শুনেনা।আজ ওর বাসায়
গিয়ে সাইজ করতে হবে।
- সুজন এই সুজন উঠ।আর কতো ঘুমাবি।এই
বিকালে কেউ এমনে ঘুমায়।
-আরে আপু। কখন আসলে তুমি।
-এইতো আসলাম।
তোকে না বলেছিলাম
আজ চায়ের টং এ
দাঁড়াতে। তুই থাকলি না কেন।
-আজ পরীক্ষা ছিলো তাই ক্লাস
থেকে বের হতে পারিনি
-ও আচ্ছা।কাল পরীক্ষা আছে?
-নাহ নেই।
-তাহলে কাল ওখানে থাকবি
-কিন্তু কাল তো স্কুল বন্ধ।
-কাল আবার কিসের বন্ধ।
-কাল তো হরতাল।
-এতো কিছু জানিনা। কাল আমার
প্রাইভেট শেষ
হবে ১১টায়। আমি তখন
তোকে ওখানে চাই।
-আচ্ছা।
-আচ্ছা বললে হবে না।না গেলে খবর
আছে।
-ওকে।
শান্তার প্রাইভেট পরে দোকানের
সামনে চলে এসেছে।
কিন্তু
সুজন আজও আসে নাই।মাথায় রক্ত
উঠে যাচ্ছে শান্তার।
পিচ্চি টা শুরু করলো কি।একটু ও
কথা শুনে না। আজ বাসায়
গিয়ে ইচ্ছা মতোতো মাইর
দিতে হবে বেয়াদব টাকে।
শান্তা বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে চুল
ঠিক করছে। শান্তার
মা এসে শান্তাকে বললো
-কিরে খবর শুনেছিস নাকি?
-কিসের খবর মা
-পাশের বাড়ির সুজনের
তো অবস্থা খারাপ।
ঢাকা মেডিকেল এর বার্ন
ইউনিটে আছে।
-(শান্তার
চোখে পানি চলে এসেছে)
কেন কি হয়েছে।
-ও গাড়ি একছিঠেন্ট করছে,বাচার
সম্ভাবনা নাকি খুবই কম।
শান্তা আর কিছু বলতে পারে না।
কান্না করতে করতে ঘর
থেকে দৌড়ে বের
হয়ে চলে আসে ঢাকা মেডিকেল এ।
কিন্তু
ততোক্ষনে যে অনেক
দেরি হয়ে গেছে।
রাজপুত্রের
মতো নিষ্পাপ সুজন
যে ঝলসে গেছে ভয়ানক
দুরঘটনার থাবায়। যুদ্ধ
করতে করতে যে মৃত্যুর কাছে হার
মেনে গেছে ছোট্ট সুজন ।এতোটুকুন
ছেলের আর কতোইবা যুদ্ধ
করার শক্তি আছে। এই বয়সে তো কেউ
মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ
করেনা। সুজনের
মা শান্তাকে দেখে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে।
আর
বলে বল তো মা কি দোষ
ছিলো আমার
বাবাটার।
শান্তা কি বলবে খুঁজে পায় না। এই
মাকে যে শান্তনা দেবার
মতো কিছুই নেই শান্তার কাছে।
শান্তার মানেনা মনে সুজনকে খুব
বকছে। ছেলে টা আসোলেই
খুব বেয়াদব।
নিজে আমাকে পরাজিত
করে এখন নিজেই
মৃত্যুর কাছে পরাজিত
হয়ে আমাকে একা রেখে চলে গেলো সামনে পেলে ঈচ্ছা মতো মার
দেয়া যেতো।কিন্তু সুজন যে আর
কোন
দিনই শান্তার
সামনে আসবে না।এটা ভেবেই
শান্তার
বুক
ফেটে কান্না আসে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×