somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মৃতির পাতায় ঈঁদ

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যখন অনেক ছোট ছিলাম, তখন ঈঁদটা ছিল অনেক কিছু। মনে হত সারাবছর ঈদের অপেক্ষায়ই ছিলাম। ঈঁদের কয়েকদিন আগ থেকে ঘুম কম হত, ভাবখানা এমন যেন ঘুমালেই মনে হয় ঈঁদ চলে যাবে।
(ছবিগুলো সংগ্রহ করা)
ঈদের কোলাকুলিঃ



মেহেদী মাখার খুব শঁখ ছিল। খুব বেশি মেহেদী লাগাতাম। একবার ঈঁদের আগের দিন মেহেদী পাওয়া গেলনা, আগে আমরা শুধু মেহেদীর পাতা বেটে হাতে লাগাতাম, পেষ্ট মেহেদী পাওয়া যেতনা। তো আমরা তিন বন্ধু মেহেদীর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লাম। খুজতে খুজতে গ্রামের পাশের মুঁচি বাড়ি থেকে পুরো মেহেদীর গাছ উপড়ে নিয়ে আসলাম। সেই সময় গুনাহ সম্পর্কে তেমন ধারনা ছিলনা। শুধু বুঝেছিলাম কাজটা ভালো করিনি। কিন্তু তার চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল মেহেদী মাখা। এখন অবশ্য অনেক অনুশোচনা হয়।
মেহদী রাঙ্গা হাতঃ



ঈঁদের খুঁশীর আরেকটি কারন ছিল নতুন জামা। মনে করতাম ঈঁদ মানেই নতুন জামা। নতুন জামা নেই মানে ঈঁদ নেই। বাবা ছিলেন প্রাইমারী স্কুলের হেড মাষ্টার, সকল ঈঁদে হয়তো নতুন কাপড় কিনে দিতে পারতেন না। তখন মন খারাপ করে বসে থাকতাম। এক ঈঁদে নতুন কাপড় ছিলনা, সেই ঈঁদে এতই মন খারাপ ছিল যে বারবার ডুকরে কান্না আসছিল। সেই দিন নিয়মিত রুটিনে যা হয় তার কিছুই করলাম না। সকাল বেলা লুঙ্গি পরে, উদোম শরীরে বারান্দায় মুখ হাড়ি করে বসে থাকলাম। আমার মন খারাপ দেখে ঘরের সবার মন খারাপ হয়ে গেল। পরে আব্বু চাচাত ভাইকে দিয়ে বাজারে পাঠিয়ে নগদে ঈদের শার্ট বানিয়ে আনালেন। নতুন শার্ট পেয়ে খুশীতে আবারও কেদেছিলাম।
ঈদের নতুন জামাঃ



ঈঁদের দিনের রুটিনের প্রথমেই ছিল , ফজরের আযানের সময় উঠে পড়তাম। সেদিন আর আব্বুর সাথে মসজিদে যেতামনা, আম্মুর পাশে দাড়িয়ে নামায আদায় করে নিতাম। এর পর ঘর থেকে বের হয়ে সব বন্ধুদের ডেকে ডেকে বের করতাম। মিছিল দিয়ে একসাথে যেতাম গাঙ্গে (সুরমা নদীতে) গোসল করার জন্য। সাথে থাকত ম্যাচ। নদীর পাশে হিন্দুদের নৌকা বানানোর ঘর ছিল। সাথে খড়ের গাদা। গোসল শেষে হিন্দুদের খড়ের গাদা থেকে খড় চুরি করে নিয়ে আসতাম আগুন পোহাবার জন্য।
আগুন পোহানোঃ



পরে আবার মিছিল সহকারে সবাই বাড়িতে চলে আসতাম।
ঈদের গোসলঃ



ঈঁদের দিন অনেক দুষ্টুমি করলেও কেউ কিছু বলতনা। তাই যা ইচ্ছা তা-ই করতাম। তখন কি আর ভাবছিলাম যে একদিন বড় হয়ে যাব। এই সব রঙ-তামাশা আর করতে পারবনা। তখন কস্মিনকালেও মনে হয়নি ঈঁদের আনন্দগুলো জীবন থেকে ধীরে ধীরে নেই হয়ে যাচ্ছে। তখন মনে হত, প্রতিদিন যদি ঈঁদ হত, কতইনা ভাল হত। তখন কি ভেবেছিলাম মধ্য বয়সে এসে এই ঈঁদ হৃদয়ের একটি কণাও স্পর্শ করতে পারবেনা। তখনকার ভাবনা গুলো ছিল এলোমেলো, সব কিছুতেই কেমন যেন আনন্দ খুজে পেতাম। অনুভব করতে পারতাম পরিবারের সবার হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসা। বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমি করাও হয়ে উঠেছিল নেশার মত। কেউ ধমক দিলেও বুঝতাম এইটা এক ধরনের মায়া। ছোটবেলার এই আদর-সোহাগ, মায়া-মহব্বত, ভালোবাসা ছিন্ন করে কবে যে বড় হয়ে গেছি নিজেও টের পাইনি। মনকে শুধু সান্তনা দেই, ‘‘হেই দিন কি আছে, দিন বদলাইয়া গেছেনা’’। এখন কি আর ১ টাকায় ৪ টা চকোলেট পাওয়া যাবে?
ঈদের চাঁদঃ


৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×