স্বাধীন হওয়ার পূর্বে বাংলাদেশকে নিয়ে তো মালানা গো'আযম কম ষড়যন্ত্র করেনি; স্বাধীন হওয়ার পরেও তার এসব শয়তানী থামেনি।
সে চরম নিকৃষ্ট পর্যায়ের ষড়যন্ত্রকারী যা ইহুদীদের ষড়যন্ত্রগুলোকে হার মানিয়েছে।
নিচে স্বাধীন বাংলাদেশকে নিয়ে গো'আযমের ষড়যন্ত্রের কিয়দাংশ তুলে ধরা হলো
:
[১] ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্ত হলে গো’আযম পাকিস্তানে বসে মাহমুদ আলী ও খাজা খয়েরউদ্দীনের মতো দেশদ্রোহীর সঙ্গে মিলিত হয়ে পূর্ব-পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি নামে একটি সংগঠনের সূচনা করে এবং বিভিন্ন দেশে পূর্ব-পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন গড়ে তোলার আয়োজন করে। সে এই উদ্দেশ্যে দীর্ঘকাল পূর্ব-পাকিস্তান জামাতের আমীর বলে নিজের পরিচয় দিতো।
[২] ১৯৭২ সালে গো’আযম লন্ডনে ‘পূর্ব-পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি’ গঠন করে এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র উচ্ছেদ করে আবার এ ভূখণ্ডকে পাকিস্তানের অংশে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করে। ১৯৭৩-এ ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন অফ স্টুডেন্টস ইসলামিক সোসাইটিজের বার্ষিক সম্মেলনে এবং লেসটারে অনুষ্ঠিত ইউকে ইসলামিক কমিশনের বার্ষিক সভায় সে বাংলাদেশবিরোধী বক্তৃতা দেয়। ১৯৭৪-এ মাহমুদ আলীসহ কয়েকজন পাকিস্তানিকে নিয়ে সে পূর্ব লন্ডনে পূর্ব-পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটির এক বৈঠক করে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে দেখে এ সভায় সি'র হয় যে, তারা এখন থেকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিয়ে একটি কনফেডারেশন গঠনের আন্দোলন করবে। এ সভায় গো’আযম ঝুঁকি নিয়ে হলেও বাংলাদেশে ফিরে অভ্যন্তর থেকে ‘কাজ চালানোর’ প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করে। ১৯৭৭-এ লন্ডনের হোলি ট্রিনিটি চার্চ কলেজে অনুষ্ঠিত এক সভায় সে এ কথারই পুনরাবৃত্তি করে এবং সে উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য পাকিস্তানি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশী ভিসা নিয়ে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে আগমন করে।
[৩] ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসে গো’আযম রিয়াদে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক ইসলামী যুব সম্মেলনে’ যোগদান করে এবং পূর্ব-পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব মুসলিম রাষ্ট্রের সাহায্য প্রার্থনা করে। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত সে ৭বার সউদী বাদশাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেয়ার আহ্বান জানায় এবং কখনো সে বাদশাহকে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে ও কখনো বাংলাদেশকে আর্থিক বা বৈষয়িক সাহায্য না দিতে অনুরোধ করে। ১৯৭৪ সালে রাবেতায়ে আলমে ইসলামীর উদ্যোগে মক্কায় অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এবং ১৯৭৭ সালে কিং আবদুল আজিজ ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত একটি সভায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করে।
[৪] অনুরূপভাবে গো’আযম ১৯৭৩ সালে বেনগাজিতে অনুষ্ঠিত ইসলামী পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিদের কাছে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেয়ার জন্য লবিং করে। একই বছরে ত্রিপলিতে অনুষ্ঠিত ইসলামী যুব সম্মেলনে সে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে হানিকর বক্তব্য উপস্থাপন করে।
[৫] ১৯৭৩ সালে গো’আযম মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ আমেরিকা অ্যান্ড কানাডার বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানভুক্ত করার জন্য সবাইকে কাজ করতে আহ্বান জানায়।
[৬] ১৯৭৭ সালে গো’আযম ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ইসলামিক ফেডারেশন অফ স্টুডেন্টস অরগানাইজেশনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশবিরোধী বক্তৃতা করে।
এত সব শয়তানীর পরও তার কেন ইতিহাসের নিকৃষ্টতম শাস্তি হবে না?