somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চির সাফল্যরে পথ

২৩ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১০:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুফতী আবু ওয়াফা মনসুর আহমাদ
وعن النعمان بن بشير رضـ قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الحلال بين والحرام بين، وبينهما مشتبهات لا يعلمهن كثير من الناس، فمن اتقى الشبهات استبرأ لدينه وعرضه ومن وقع فى الشبهات وقع فى الحرام، كالراعى يرعى حول الحمى يوشك ان يرتع فيه، الا وان لكل ملك حمى الا وان حمى الله محارمه، الا وان فى الجسد مضغة إذا صلحت صلح الجسد كله، وإذا فسدت فسد الجسد كله، الا وهى القلب، متفق عليه-
হযরত নোমান বিন বশীর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট। আর উভয়ের মাঝে রয়েছে বিস্তর সন্দেহযুক্ত বিষয়। যেগুলো সম্পর্কে অনেকেই অনবহিত (হালাল বা হারাম বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে অক্ষম)। এমতাবস্থায়, যে সন্দেহযুক্ত বিষয়গুলো থেকে বেঁচে থাকলো সে আপন দ্বীন ও ইজ্জতকে রক্ষা করলো। আর যে সন্দেহযুক্ত বিষয়গুলোতে লিপ্ত হবে সে অচিরেই হারামেও লিপ্ত হয়ে পড়বে। যেমন- যে রাখাল তার পশুপালকে নিষিদ্ধ চারণভূমির পাশ ঘেঁষে চরাবে, শীঘ্রই তার পশুগুলো নিষিদ্ধ চারণভূমিতেও ঢুকে পড়বে। স্মরণ রেখো, প্রত্যেক বাদশারই নিষিদ্ধ চারণভূমি থাকে। আর আল্লাহপাকের নিষিদ্ধ চারণভূমি হলো তার হারামকৃত বস্তুসমূহ। আরো স্মরণ রেখো, মানবদেহে একটি গোস্তের টুকরা রয়েছে যা ঠিক হয়ে গেলে পুরো দেহই ঠিক হয়ে যায়; আর বিকৃতি ঘটলে পুরো দেহেরই বিকৃতি ঘটে। ভাল করে জেনে নাও সেই গোস্তের টুকরা হলো ‘কলব’ তথা অন্তর। (বুখারী ও মুসলিম)
ব্যাখ্যাঃ রাসূলুল্লাহ স. এর অসংখ্য-অগনিত হাদীসসমূহের মধ্যে উপরোল্লেখিত হাদীসখানার গুরুত্ব অপরিসীম। মোহাদ্দেসীনে কেরাম র. ইহার অসাধারণ গুরুত্ব ও মহত্ত্বের কথা দৃঢ়তার সাথে ব্যক্ত করেছেন। তাঁদের ভাষ্য হলো, তিনখানা হাদীসকে কেন্দ্র করে পুরো ইসলাম আবর্তিত। এ হাদীসত্রয়ের উপর যেন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত। ১. উপরোক্ত হাদীস, ২. কর্মের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল ৩. কারো মাঝে ইসলামের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার উপায় হলো অনর্থক কথা ও কাজ পরিহার করা। হাদীস তিনটির মধ্যে বক্ষ্যমান নিবন্ধের আলোচ্য হাদীসখানাতেই সর্বাধিক মৌলিক বিষয়ের আলোচনা স্থান পেয়েছে। হালাল-হারাম ও সন্দেহযুক্ত বিষয়গুলো সনাক্তকরণ, সন্দেহযুক্ত বিষয় থেকে বেঁচে থাকার যৌক্তিক কারণ, সর্বোপরি একজন মানুষ কখন নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, কখন পারে নাইত্যাকার বিষয়গুলো এতে অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী ভঙ্গিমায় উপস্থাপিত হয়েছে।
বস্তু তিন প্রকারঃ সুস্পষ্ট হালাল, সুস্পষ্ট হারাম ও সন্দেহযুক্ত। কুরআন, হাদীস ও ফিকহের কিতাবসমূহে যেসব বিষয়কে সুস্পষ্ট ভাষায় হালাল বলা হয়েছে সেগুলোই সুস্পষ্ট হালাল; আর যেগুলোকে সুস্পষ্ট ভাষায় হারাম বলা হয়েছে, সেগুলোই সুস্পষ্ট হারাম। আর যে বিষয় হালাল বা হারাম হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট কোন বর্ণনা উল্লেখিত কিতাবসমূহে নেই, সেগুলোই হলো সন্দেহযুক্ত। এগুলোর ব্যাপারে যথার্থ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো দূরূহ ব্যাপার। সাধারণ মুসলমানের পক্ষে যা মোটেও সম্ভবপর নয়। কুরআন, হাদীস ও ফিকহের উপর যথেষ্ট যোগ্যতা ও বুৎপত্তির অধিকারী আলেমগণ বহুলাংশে এগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্তে উপণীত হতে সক্ষম হন। তাদের কর্তৃক এ বিষয়গুলো হালাল বা হারাম বলে সাব্যস্ত হয়ে যাওয়ার পর এগুলো আর সন্দেহযুক্ত বিষয়াদির অর্ন্তভূক্ত থাকে না। এ কথার দিকেই হাদীসখানায় ইঙ্গিত করা হয়েছে, لايعلمهن كثير من الناس অর্থাৎ যা অধিকাংশ মানুষই জানে না।
যেসব বিষয়ের হালাল বা হারাম হওয়াটা অমীমাংশিত সেগুলোই সন্দেহযুক্ত। এরূপ সন্দেহযুক্ত বিষয়ের পরিমাণ অসংখ্য। যুগের আধুনিকতায় এসবের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসবের ব্যাপারে আমাদের করণীয় কি হবে, তাই আলোচ্য হাদীসটিতে বর্ণিত হয়েছে। হাদীসটিতে বলা হয়েছে দু’টি কারণে সন্দেহযুক্ত বিষয় থেকে বেঁচে থাকতে হবে। ১. দ্বীন রক্ষার্থে, ২, ইজ্জত বজায় রাখার স্বার্থে। সন্দেহযুক্ত বিষয়ে লিপ্ত ব্যক্তির দ্বীন রক্ষা পায় না। কারণ, সন্দেহযুক্ত বিষয়ে লিপ্ত থাকতে থাকতে এক পর্যায় এগুলো সম্পর্কে দ্বিধা, মন থেকে কেটে যায়। সম্পূর্ণ হালালের মতো মনে হতে থাকে; আর যেগুলো সুস্পষ্ট হারাম সেগুলো নেমে আসে সন্দেহজনক বিষয়গুলোর স্তরে। এভাবে লোকটি ক্রমশঃ হারামে লিপ্ত হয়ে পড়ে। একারণেই রাসূলে কারীম স. অপর এক হাদীসে ইরশাদ করেন, ‘কোন ব্যক্তি মুত্তাকীনদের শামিল হতে পারে না- যে পর্যন্ত না সে গোনাহে লিপ্ত হওয়ার ভয়ে, গুনাহ নয় এমন কাজও এড়িয়ে চলে।’
সন্দেহযুক্ত বিষয়ে লিপ্ত ব্যক্তির ইজ্জতও রক্ষা পায় না। কারণ, যে সন্দেহের পথে পা বাড়ায়, লোকেরাও তাকে সন্দেহের নজরে দেখতে থাকে। ফলে সে সমালোচিত হতে থাকে। শুধু মানুষের কাছে নয়, আল্লাহপাকের কাছেও এ ধরণের ব্যক্তি মর্যাদাহীন। কারণ, আল্লাহপাকের কাছে সম্মানী কেবল মুত্তাকীগণ। কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে- তোমাদের মধ্যে সেই সর্বাধিক সম্মানিত, যে সর্বাধিক মুত্তাকী। মুত্তাকী বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে যে আল্লাহর ভয়ে যে কোন অন্যায়-অনুচিত কর্ম থেকে বিরত থাকে।
একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত
উপযুক্ত দৃষ্টান্ত দ্বারা অতি কঠিন ও দুর্বোধ্য বিষয়কেও অতি সহজ ও সকলের বোধগম্য করে তোলা যায়। এ কারণেই কুরআন ও হাদীসে বিপুল পরিমাণ দৃষ্টান্তের উল্লেখ দেখা যায়। আলোচ্য হাদীসখানাতেও একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত বর্ণিত হয়েছে, সন্দেহযুক্ত বিষয়ও কীভাবে শেষ পর্যন্ত হারামে লিপ্ত করে ছাড়ে। বলা হয়েছে- যে রাখাল নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখে নিষিদ্ধ চারণভূমির পাশ ঘেঁষে নিজের পশুপালকে চরায়, সে শেষ পর্যন্ত নিজ পশুগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। পশুগুলো এক পর্যায়ে নিষিদ্ধ চারণভুমিতে ঢুকে পড়ে, আর না পারলে মুখ ঢুকিয়ে দেয়।
পশু চরানোর বিস্তীর্ণ ঘাসের মাঠকে চারণভূমি বলে। আগের দিনের রাজা বাদশারা বিশাল চারণভূমির একটা অংশ নিজেদের পশুর জন্য নির্দিষ্ট করে নিত। প্রজারা এ অংশে নিজেদের পশু চরাতে পারতো না। একেই ‘নিষিদ্ধ চারণভূমি’ বলে বুঝানো হয়েছে। কেউ এ নিষিদ্ধ চারণভূমিকে নিষিদ্ধ বলেই মেনে নিল, তাতে নিজ পশু চরানোর স্পর্ধা দেখালো না। কিন্তু সে এর পাশ ঘেঁষেই নিজের পশুগুলোকে চরতে দিল; তাহলে এ কথা নিশ্চিত যে, ওর পশুগুলো এক পর্যায়ে চারণভূমির নিষিদ্ধ অংশ থেকেও কিছু উদরস্ত করবে। যেমন, ফসলের ক্ষেত ঘেষে কেউ গরু-ছাগল চরালে, ফসলের কিছু অংশ অবশ্যই ঐ গরু-ছাগলের পেটে প্রবেশ করে।
দুনিয়ার রাজা বাদশাদের নিষিদ্ধ চারণভূমি হলো ঘাসের মাঠ। আর সকল বাদশাহদের বাদশাহ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিষিদ্ধ চারণভূমি হলো তাঁর হারামকৃত বিষয়সমূহ। হারামের ময়দানে বিচরণ করার অধিকার কোন বান্দার নেই। এর আশপাশেও বিচরণ করা যাবে না। কেননা তা হারামে লিপ্ত হওয়াকে আবশ্যক করে। হারামের আশ-পাশ বলতে বুঝানো হয়েছে সন্দেহযুক্ত বিষয়গুলোকে।
সুতরাং ‘হারাম তো নয়’ এই অযুহাতে সন্দেহযুক্ত বিষয়ে জড়িয়ে পড়ার কোন অবকাশ নেই। ইদানিং ‘ইসলামী’ লেভেলধারী কিছু প্রতিষ্ঠানের জোর প্রচারণা শোনা যায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে এদের কার্যক্রম সুদমুক্ত নয়। কিন্তু তারা সুদমুক্ত লাভের লোভ দেখিয়ে লোকদেরকে তাদের প্রতিষ্ঠানের দিকে আহ্বান করে। সরলমনা মুসলমানদের অনেকেই সরল বিশ্বাসে তাদের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলে। কেউ তাদের কার্যক্রমে সুদের সম্ভাবনার প্রশ্ন তুললে তারা প্রতারণাপূর্ণ জবাবের আশ্রয় নিয়ে বলে, একেবারে সুদকে এড়িয়ে কে চলতে পারে? আমরা যেসব রাস্তা দিয়ে হাটি সেগুলোও তো সুদ মিশ্রিত পয়সায় তৈরি। এই চাতুর্যপূর্ণ যুক্তিতে সরল প্রকৃতির মুসলমান ধোঁকা খেয়ে ফেলে এবং তাদের নিরীহ শিকারে পরিণত হয়ে যায়। কিসের সঙ্গে কি মিলিয়ে দিল? সরকারী রাস্তা নির্মাণে আমাদের মত সাধারণ মানুষের দখল কোথায়? আর এসব রাস্তা দিয়ে না হেটেই বা কি উপায়? এ ধরণের এখতিয়ার বহির্ভূত কাজের আমরা গুনাহগার হব না। কিয়ামতের দিন আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে না। একে তাদের প্রতিষ্ঠানের সদস্য হওয়ার সাথে মিলানো যায় কিভাবে? এখানে সদস্য হওয়া না হওয়া সম্পূর্ণ আমার ইচ্ছাধীন ও ক্ষমতাধীন বিষয়।
অনেকেই বলে ফেলে বর্তমান যুগে হালালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে জীবিকা নির্বাহ করা অসম্ভব। হ্যাঁ, অসম্ভব বটে, আবার সম্ভবও। এমনটি যাদের ধারণা তাদের জন্য অসম্ভবই। হাদীসে কুদসীতে এসেছে আল্লাহ পাক বলেন। عند انا ظن عبدى بي অর্থাৎ বান্দা আমার প্রতি যেরূপ ধারণা পোষণ করে আমাকে সে তেমনি পায়।
সুতরাং যে ধারণা করে রিযিকদাতা আল্লাহ। রিযিকে প্রশস্ততা ও সংকীর্ণতা সৃষ্টিকারী তিনিই। ইরশাদ হচ্ছেঃ ان الله هو الرزاق ذوالقوة المتين অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালাই তো রিযিকদাতা, শক্তির আধার পরাক্রমশালী। আরো ইরশাদ হচ্ছেঃ اولم يعلموا ان الله يبسط الرزق لمن يشاء ويقدرঅর্থাৎ আল্লাহ পাকই যাকে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করে দেন এবং হ্রাস করে দেন। সুতরাং আল্লাহ পাক আমাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ হালাল রিযিক দিতে সক্ষম। তাঁর ভান্ডারে কোন কিছুর অভাব নাই। আমার কর্তব্য হল, হালাল রিযিক অন্বেষণ করতে থাকা। আর তাঁর কাছে দোয়া করতে থাকা। আল্লাহ পাকের উপর এরূপ পবিত্র ধারণা যে রাখে, হালালের উপর চলা তার জন্য মোটেও অসম্ভব নয়।
রাসূল সা. উম্মতকে একটি অতিব সুন্দর দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন- اللهم اكفنى بحلالك عن حرامك واغننى بفضلك عمن سواك অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাকে হারাম থেকে নিবৃত রেখে যথেষ্ট পরিমাণ হালাল রিযিক দান করুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে আপনি ছাড়া সকলের কাছ থেকে অমুখাপেক্ষি করুন। নিয়মিত দোয়াটি পড়তে থাকুন। নিশ্চিত ফল পাবেন। তাকওয়া অবলম্বন করুন। তাকওয়ার উপর আল্লাহ পাক রিযিকের ওয়াদা করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে- ومن يتق الله يجعل لهم مخرجا ويرزقه من حيث لايحتسب ومن يتوكل على الله فهو حسبه অর্থাৎ যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার জন্য নিস্কৃতির পথ করে দেন এবং এমন জায়গা থেকে জীবিকা প্রদান করেন, যা সে ধারণাও করত না। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তিনিই তার জন্য যথেষ্ট। আরো ইরশাদ হচ্ছে-ولو ان اهل القرى امنوا واتقوا لفتحنا عليهم بركات من السماء والارض অর্থাৎ আর যদি জনপদবাসীরা ঈমান আনতো ও তাকওয়া অবলম্বন করতো, তাহলে তাদের উপর আসমান ও জমিনের বরকতের দরজা খুলে দিতাম।
সুতরাং রিযিকের সংকীর্ণতা দূর করার জন্য সন্দেহের পথে পা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। আসুন, আল্লাহর প্রতি ঈমান ও বিশ্বাসকে সুন্দর করি, আমল দুরস্ত করি, তাকওয়া অবলম্বন করি আর সাধ্যমত হালালের ময়দানে চেষ্টা করতে থাকি। নিশ্চয়ই আল্লাহপাক আমাদের জন্য যথেষ্ট হবেন।
এখানে বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, হলাল-হারাম ও সন্দেহযুক্ত এ বিষয়গুলো কেবল রুজি-রোজগারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং কথন, শ্রবণ, দর্শন, চলন এক কথায় প্রতিটি অঙ্গকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এগুলোর ব্যবহারকে হালালের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সন্দেহযুক্ত কোন কথা বলা যাবে না। সন্দেহজনক কোন কিছুর প্রতি দৃষ্টি দেয়া যাবে না। মোদ্দাকথা, নিশ্চিতভাবে বৈধ না জেনে কোনো ক্ষেত্রে কোনো অঙ্গকে ব্যবহার করা যাবে না।
দেহের অঙ্গগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার একটাই পথ। তা হল দেহের রাজ অঙ্গ অন্তরকে পরিশুদ্ধ করা। কেননা সব অঙ্গই অন্তরের অধীনস্ত ও তার আনুগত্যকারী। হাদীসের শেষাংশে এ কথাই বলা হয়েছে।
‘শুনে রেখো! মানব দেহে একটি গোস্তের টুকরা রয়েছে তা যদি ঠিক হয়ে যায়, তাহলে সারা দেহই ঠিক হয়ে যায়। আর তা যদি বিনষ্ট হয়ে যায়, তাহলে পুরো দেহই বিনষ্ট হয়ে যায়। শুনে রেখো! সেই গোস্তের টুকরাটি হলো অন্তর’।
সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ যেভাবে অন্তরের আনুগত্য করে
দেহের প্রধান অঙ্গ অন্তর হল আদেশকারী।
দেহের অন্যসব অঙ্গ তার আদেশ পালনকারী। কারণ প্রথমে অন্তরেই কোন কাজের আগ্রহ জাগ্রত হয়, এবং অন্তরই তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অতঃপর অন্যসব অঙ্গকে সেটি বাস্তবায়ন করার নির্দেশ প্রদান করে। এবার শুরু হয় অন্যসব অঙ্গের কাজ। মস্তিস্ক ফর্মূলা তৈরি করে, কথা বলার প্রয়োজনে মুখ কথা বলে, হাটার প্রয়োজনে পা হাটে। এমনিভাবে দরকারী প্রতিটি অঙ্গই কর্ম তৎপর হয়ে অন্তরের নির্দেশটি পালন করে। তার সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়িত করে। অন্তর ভাল কাজের সিদ্ধান্তও গ্রহণ করে, খারাপ কাজের সিদ্ধান্তও গ্রহণ করে। ভাল হোক আর মন্দ হোক, উভয় ক্ষেত্রেই অবশিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তার আনুগত্য করে।
অন্তরের স্বভাব-প্রকৃতি
আমাদের অন্তর পাপাসক্ত। পাপের প্রতি আকর্ষণবোধ অন্তরের স্বভাবগত বিষয়। আল্লাহর হক সম্পর্কিত পাপ হোক কিংবা বান্দার হক সম্পর্কিত পাপ হোক উভয় ক্ষেত্রে একই কথা। পৃথিবীর প্রথম পাপটি এ পাপাসক্ত অন্তরের প্ররোচণাতেই হয়েছিল। কাবিল তার অন্তরে সৃষ্ট ঘৃণ্য ক্ষোভ ও বিদ্বেষের কারণেই আপন ভাইকে হত্যা করেছিল। কুরআন বলছে- فطوعت له نفسه قتل أخيه فقتله “অতপর তার অন্তর তাকে ভ্রাতৃ হত্যায় উদ্বুদ্ধ করল। ফলে সে তাকে হত্যা করল।” পাপাসক্ত অন্তরের চরিত্র কুরআন এভাবে বর্ণনা করেছে- ان النفس لامارة بالسوء “নিশ্চয় অন্তর মন্দ কাজের প্রতি আদেশকারী”
এখানে লক্ষণীয় যে, অন্তরকে আদেশকারী বলা হয়েছে সুতরাং অন্যান্য অঙ্গগুলো হবে আদিষ্ট ও আদেশ পালনকারী। যে অন্তর পাপের প্রতি আকর্ষণবোধ করে এবং স্বীয় অধীনস্ত অঙ্গসমূহের দ্বারা পাপ সংঘটিত করায়, ঐ অন্তরকে বলা হয় অপবিত্র অন্তর। উভয় জাহানে শান্তি সফলতার লক্ষ্যে এই অপবিত্র অন্তরকে পবিত্র না করে উপায় নেই।
আল্লাহপাক বলেন- قد افلح من زكها وقد خاب من دساها “অর্থাৎ যে নিজের অন্তরকে পবিত্র করে সে সফলকাম। আর যে ইহাকে কলুষিত করে সে ব্যর্থ হয়।” আল্লাহপাক আরো বলেন-
وأمامن خاف مقام ربه ونهى النفس عن الهوى فان الجنة هى المأوى অর্থাৎ ‘আর যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং স্বীয় অন্তরকে তার খেয়াল- খুশি থেকে নিবৃত্ত রেখেছে তার ঠিকানা জান্নাত’।
অন্তর গুনাহের প্রতি আসক্ত ও ইবাদতের প্রতি নিরাসক্ত কেন?
গুনাহের কাজগুলো সাধারণত আকর্ষণীয়, এগুলোতে লিপ্ত হওয়ায় এক প্রকার মজা ও তৃপ্তি অনুভূত হয়। এ কারণেই অন্তর এগুলোর প্রতি আসক্ত হয়, ধাবিত হয়। পক্ষান্তরে ইবাদতে ঐ ধরণের কোন স্বাদ তো নেই বরং রয়েছে এক প্রকার কষ্ট। এ কারণেই অন্তর ইবাদত থেকে মুক্ত থাকতে চায়।
এ মর্মে হাদীসে এসেছে- حفت الجنة بالمكاره وحفت النار بالشهوات জান্নাতকে পরিবেষ্টিত করা হয়েছে (অন্তরের) অপছন্দনীয় বস্তুসমূহ দ্বারা আর জাহন্নামকে পরিবেষ্টিত করা হয়েছে (অন্তরের) আকর্ষণীয় বস্তু দ্বারা।
গোনাহের স্বাদ ও ইবাদতের কষ্টের স্বরূপ
আসলে গোনাহের স্বাদ ও ইবাদতের কষ্ট দুটিই অতি সাময়ীক ও ক্ষণকালীন। গোনাহের স্বাদ হল কৃত্রিম ও ধোঁকা। এ স্বাদ পরিণামে বিষাদকেই বৃদ্ধি করে। চুলকানি রোগের মত। যতক্ষণ চুলকানো হয়, ততক্ষণ মজা লাগে। কিন্তু এই মজা কৃত্রিম। চুলকানো শেষ হলেই তা বুঝা যায়। কারণ এই ক্ষণিকের মজা জ্বালাতনকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে। অনুরূপ গোনাহগার যতক্ষণ গুনাহে লিপ্ত থাকে, ততক্ষণ একরকম মজায় মত্ত থাকে, কিন্তু গোনাহের শেষে তার জীবন-যন্ত্রণা পূর্বের চেয়ে বেড়ে যায়। আল্লাহ পাক বলেন, ومن اعرض عن عن ذكرى فان له معيشة ضنكا ‘যে ব্যক্তি আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, নিশ্চয়ই তার জীবন হবে সংকীর্ণ’। মোফাসসিরীনে কিরাম উক্ত আয়াতে স্মরণের অর্থ লিখেছেন কুরআনের বিধি-বিধান পালন ও রাসুলের আনুগত্যকরণ। সুতরাং যে কুরআনের বিধি-বিধান মেনে চলে না, রাসুল সা. এর আনুগত্য করে না; তার জন্যই সে সংকীর্ণ জীবন। ইবাদতে যে কষ্ট হয় সে কষ্টও সাময়ীক। এ কষ্টের পরিণামে রয়েছে সুখ। আল্লাহপাক বলেন-
من عمل صالحا من ذكر او انثى وهو مؤمن فلنحيينه حيوة طيبة ولنجزينهم اجرهم باحسن ما كانوا يعملون-
অর্থাৎ যে নেক আমল করে চাই সে ঈমানদার পুরুষ হোক কিংবা নারী, আমি তাকে হায়াতে তাইয়্যেবা (পবিত্র জীবন) দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কৃতকর্মের জন্য প্রাপ্য পুরস্কার দেব। সংখ্যাগরিষ্ট তাফসীরবিদগণের মতে এখানে হায়াতে তায়্যিবা বলে দুনিয়ার পবিত্র ও আন্দময় জীবন বোঝানো হয়েছে।
ইবাদত বন্দেগীর পরিণামেই সুখ, শুধু তাই নয় বরং খোদ ইবাদতেও রয়েছে সুখ ও প্রশান্তি। অন্তর যখন পরিশুদ্ধ ও পবিত্র হয়ে যায়, অন্তরের অরুচি-কুরুচি দূর হয়ে যখন তাতে সুরুচি এসে যায়, তখন এ অন্তর ইবাদতে তৃপ্তিবোধ করতে থাকে। আল্লাহপাক বলেন الا بذكر الله تطمئن القلوب শুনে রাখ! আল্লাহর স্বরণ দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্তি লাভ করে। রাসূল সা. বলেছেন جعلت قرة عينى الصلوة “নামাযকে আমার চক্ষু শীতলকারী বানানো হয়েছে।” অর্থাৎ নামাযে দাড়ালে আমার নয়ন জুড়ায়, কলিজা ঠান্ডা হয়। জনৈক বুজুর্গ বলেন-
خلش حاصل جو تيرى غم كى ميرى بندگى ميى هى
تيرى هر طاعتون سى لطف جنت زندگى مين هى
‘মাওলার প্রেমে ব্যাকুল অন্তর নিয়ে আমি যখন ইবাদতে লিপ্ত হই, দুনিয়ায় থেকেই প্রতিটি ইবাদতে জান্নাতের মজা উপভোগ করি।’
একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, যারা দুনিয়াতে সুখের আশায় লাগামহীন চলা ফেরা করে, হালাল-হারামের তোয়াক্কা করে না। বৈধ-অবৈধের ধার ধারে না, তারা সুখে নেই। কৃত্রিম সুখের অন্বেষণে তারা অস্থির ও ব্যাকুল হয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। কবি বলেন ঃ
آف كتنا هى تاريك گناهگار كا عالم ، انوار سى معمور هى ابرار كا عالم
‘আহ্ গোনাহগারদের জীবন কতইনা অন্ধকারাচ্ছন্ন। আর নেককারদের জীবন আলোয় উদ্ভাসিত। আল্লাহপাকের আনুগত্যশীল বান্দারা বৈষয়িক দিক দিয়ে দরিদ্র হতে পারেন, প্রভাব-প্রতিপত্তিহীন হতে পারেন। কিন্তু অন্তরের শান্তি-প্রশান্তি তাদেরই ললাট লিখন, তারা যেন দুনিয়াতেই এক প্রকারের জান্নাতের সুখ ভোগ করেন। ولمن خاف مقام ربه جنتان (আর যারা আপন প্রতিপালকের সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করে, তাদের জন্য রয়েছে দু’টি জান্নাত।) তাফসীরে রুহুল মা’আনীতে উক্ত আয়াতের একটি তাফসীর উদ্ধৃত হয়েছে যে, এখানে দু’ জান্নাতের একটি দুনিয়াতে, অপরটি আখেরাতে।
জনৈক বুজুর্গ বলেন ঃ
مين دن رات رهتا هون جنت مين گويا ٭ ميرى باغ دل مين وه گلكريان هين
‘মাওলার সাথে গভীর সম্পর্কের বদৌলতে আমার শৈল্পিক অন্তর যেন দিবানিশি জান্নাতে বিরাজমান।’ সুতরাং বেপরোয়া জীবন যাপন নয়, বরং আল্লাহ ও তার রাসুলের পূর্ণ আনুগত্যেই শান্তি। এ সত্য আমরা যত তাড়াতাড়ি উপলব্ধি করতে পারব ততই আমাদের মঙ্গল। এই মঙ্গলময় জীবন লাভের বিকল্পহীন পথ হল অন্তরকে পবিত্রকরণ, পরিশুদ্ধকরণ।

অন্তর পবিত্রকরণের উপায়
এ কথা সকলেরই জানা যে, কোন কর্ম সম্পাদনের জন্য সেই কর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট বিদ্যাও অত্যাবশ্যক। সে বিদ্যা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার বিদ্যা থেকে ভিন্ন। অনুরূপভাবে সাতটি বিষয়ের বিদ্যাই অন্যসব বিষয়ের বিদ্যা থেকে আলাদা। অন্তর পবিত্র করার জন্য আল্লাহপাক যে বিদ্যা দান করলেন তা হলো ‘ইলমুল অহী’ তথা অহীর ইলম। এ ইলম দ্বারাই যুগে যুগে মানুষের অপবিত্র অন্তরগুলি পবিত্র ও পরিশোধিত হয়েছে। এ কুরআন ও হাদীসের জ্ঞান দ্বারাই জাহিলিয়্যাতের বর্বর মানুষগুলো সোনার মানুষে পরিণত হয়েছে। অদ্যাবধি এ পবিত্র জ্ঞান চর্চাকারীদের অন্তর বহুলাংশে পবিত্র। আলেম-উলামা-মাদরাসা পড়–য়ারা আল্লাহর হক সম্পর্কে যেমন সজাগ হয়, তেমনি বান্দাদের হক সম্পর্কেও সতর্ক থাকে। তারা খুনী হয় না, সন্ত্রাসী হয় না, ধর্ষণকারী হয় না, কারো সম্পদ আত্মসাৎকারী হয় না, অবৈধ মাল উপার্জনকারী হয় না। তাদের পবিত্র অন্তর এসব গর্হিত কর্মে বাধা দেয়। কিন্তু জাগতিক বিদ্যাপীঠগুলোকে আমরা এর বিপরীত অবস্থানে দেখতে পাই। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া সোনার ছেলেরা খুন, ধর্ষণসহ যে কোন অপরাধ তারা অবলিলায় করে ও করতে পারে। দেশের শীর্ষ স্থানীয় দুর্নীতিবাজদের প্রায় সকলেই বিরাট-বিরাট ডিগ্রিধারী। তাদের শিক্ষা ও ডিগ্রি অন্যায় অপরাধ থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারে না। কারণ তাদের শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষা ছিল না বললেই চলে। নামকা ওয়াস্তে যতটুকু ছিল তাও জাগতিক বিদ্যার চাপে পড়ে অস্তিত্ব বিপন্ন ছিল। জাগতিক বিদ্যার সম্পর্ক অন্তরের সাথে নয়, শুধু মস্তিস্কের সাথে। এর দ্বারা মস্তিস্ক সতেজ হয়। মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা-সৃজনীশক্তি বাড়ে। ফলে এসব মস্তিস্কের অধিকারীরা জাগতিক উন্নতি সাধনে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারে। আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতা তারই অবদান। এ শিক্ষার ত্র“টি একটিই, এটি একটি ধর্মবিবর্জিত শিক্ষা।
উপরোক্ত আলোচনার উদ্দেশ্য এই নয় যে, অন্তর পবিত্র করতে চাইলে সকলকে মাদরাসায় ভর্তি হয়ে বড় আলেম হতে হবে। আলেম হওয়া সবার পক্ষে সম্ভব নয়, ফরজও নয়। কিন্তু কুরআন ও হাদীসের বিশাল জ্ঞান ভান্ডার থেকে কিছু অর্জন করা সবার উপরই ফরজ। যাদ্বারা নিজেকে শরীয়ত মোতাবেক পরিচালিত করবে। অনেকেই আত্মশুদ্ধির বিষয়টিকে খাটো করে দেখে, এটি একটি মারাত্মক ভুল। একে গুরুত্বহীন মনে করার কোন সুযোগ নেই। আত্মশুদ্ধি ফরজ, এর সাথে সংশ্লিষ্ট জ্ঞানার্জনও ফরজ।
এ পর্যায়ে একটি বিষয় বিশেষভাবে স্বর্তব্য, তা হলো আত্মশুদ্ধির জন্য কিতাবী ইলম যথেষ্ট না। ডাক্তার এর সান্নিধ্য ছাড়া কেবল ডাক্তারী বই পড়ে কেউ ডাক্তার হতে পারে না। ব্যবসায়ীর সাহচর্য ছাড়া শুধু ব্যবসা সংক্রান্ত গাইড পড়ে কেউ ব্যবসায়ী হতে পারে না। ঠিক তেমনিভাবে পরিশুদ্ধ অন্তরের অধিকারী কোন বুযুর্গের সোহবত ছাড়া কেউ শুধু কিতাবী ইলম দ্বারা আত্মশুদ্ধি লাভ করতে পারে না। এটি যুগ যুগান্তরের প্রতিষ্ঠিত সত্য। আল্লাহপাক বলেনঃ يا ايها الذين آمنوا اتقوا الله وكنوا مع الصادقين ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর ও সত্যবাদীদের সঙ্গ অবলম্বন কর’। আয়াতে সত্যবাদী বলে ঐ ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে যিনি ভেতরে ও বাহিরে সমান আল্লাহর আনুগত্যকারী। যার প্রকাশ্য আমলে ও নির্জনের আমলে কোন গড়মিল নেই। এ ধরনের ব্যক্তিই হক্কানী পীর ও বুযুর্গ। তাদের সোহবত দ্বারা অন্তর পবিত্র হয়।
যিনি শরীয়ত পরিপন্থী কোন কাজ করেন, কোন ফরজ হুকুম লঙ্ঘন করেন, মহিলাদেরকে হাতে ধরে মুরীদ করেন, মহিলা মুরীদদের সাথে বেপর্দা মিলিত হন, এ ধরনের পীর ভন্ড। এদের নিজের অন্তরই অপবিত্র, মুরীদদের অন্তর পবিত্র করবে কীভাবে? সুতরাং এদের থেকে সাবধান।
পরিশেষে বলা যায়, উপরোক্ত হাদীস খানায় আমাদের সামগ্রিক সফলতার পথ ও পন্থা বলে দেয়া হয়েছে। বাতলানো হয়েছে ব্যক্তি সংশোধনের ফর্মূলা। ব্যক্তি সংশোধন হলে সমাজ সংশোধিত হবে। যেহেতু ব্যক্তি নিয়েই সমাজ। সুতরাং হাদীসখানা আমাদের ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক জীবনকে সার্থক ও সুন্দর করার সফল ব্যবস্থা পত্র।
আল্লাহপাক আমাদের সকলকে হাদীসখানা যথাযথ বুঝার এবং সে মোতাবেক আমল করার তাওফিক দিন। আমীন।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×