হায়রে আওয়ামিলীগ !!! দলীয় মিডিয়া আর পেইড বাম সুশীলদের চাপার জোরে সব কিছুকে জায়েজ করে নিতে আওয়ামিলীগের জুড়ি নাই। শুরুতে শিশু গনতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কে নস্সাৎ করে দেওয়ার পরও এরা গত ৪০ বছর চেতনার নামে মুক্তিযুদ্ধ বেঁচে খেয়েছে। আওয়ামী অপশাষন বা মতের বিরুদ্ধে কেউ কথা বল্লে ৭১ রনাঙ্গনের সাহসী মুক্তিযোদ্ধাকেও বানানো হয়েছে রাজাকার। আবার আওয়ামী দলবাজী করার করাণে ৭১-এর ঘৃণিত রাজাকারকেও বানানো হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা। আর এই মুক্তিযুদ্ধ বেঁচাকেনায় আওয়ামিলীগের পাশে থেকেছে বুদ্ধীজীবি পরিচয়ধারী কিছু বাম সামাজিক এতিম। এরা প্রচার প্রপাগান্ডা চালিয়ে আওয়ামিলীগের মুক্তিযুদ্ধ বেঁচাকেনা কে জায়েজ করার চেষ্টা করেছে এবং করছে অনরবরত...
অতি সম্প্রতি দেশের রাজনীতিতে চলছে রক্তক্ষরনের কাল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে তালবাহানা তথা রাজনৈতিক খেলার অংশ হিসেবে সরকার যখন রাজাকার কাদের মোল্লার মামলায় আঁতাতের রায় দিল , তখন কিছু স্বাধীনচেতা ব্লগার তার প্রতিবাদ জানাতে মানববন্ধন করলো শাহবাগ মোড়ে। সহসা দল নিরপেক্ষ আন্দোলন ভেবে সাধারণ জনগন সেখানে যোগ দিল। অতপর আরব বসন্তের আদলে ঐতিহাসিক তাহরীর ষ্কয়ার কে সামনে রেখে শাহবাগে তৈরি হল অনানুষ্ঠানিক গনজাগরণ মঞ্চ। যে মঞ্চের দাবি ছিল সরকারের জামাত আঁতাত মানিনা মানবোনা। সব রাজাকারের ফাঁসি চাই। গনজাগরণ মঞ্চের দল নিরপেক্ষতা কিংবা সরকার-জামাত আঁতাতের বিরোধীতার প্রমাণ স্বরূপ প্রথম দিকে সরকারের মন্ত্রী এমপিরা সেখানে এসে গনরোষের স্বীকার হন। কিন্তু অচিরেই আওয়ামী চালবাজির কাছে হার মানে দল নিরপেক্ষ গনজাগরণ মঞ্চ। ৭২ সালে যেমন হত্যা করা হয়েছিল শিশু গনতন্ত্র কে তেমনি আঁতুড় করে হত্যা করা হল শিশু গনজাগরণ মঞ্চ কে। রাষ্ট্রীয় ম্যাকানিজম ও অর্থকড়ি এবং সেই সাথে দলীয় মিডিয়ার হলুদ সাংবাদিকতার বদান্যতায় গনজাগরণ মঞ্চের নামে যাত্রা শুরু করল আওয়ামী মঞ্চ যাকে মানুষ বলছে ২য় জনতার মঞ্চ। উল্লেখ্য ১৯৯৬ সালে জামাত-ই ইসলাম কে সাথে নিয়ে সরকার বিরোধী সহিংস আন্দোলন চালায় আওয়ামিলীগ। সে সময় প্রজাতন্ত্রের সকল শৃঙ্খলা ভেঙে দেওয়ার জন্য মখা আলমগীরের নেতৃত্বে সরকারী কর্মচারীদের নিয়ে তৈরি করা হয় জনতার মঞ্চ।
যাইহোক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যাবসার স্থায়ী বাজার হিসেবে শাহবাগ মোড়ে স্থায়ীরূপ লাভ করে তথাকথিত গনজাগরণ মঞ্চের নামে আওয়ামী মঞ্চ। যার মূল উদ্দেশ্য হল সামনের নির্বাচন কে কেন্দ্র করে জামাত শিবির নিষিদ্ধ আর রাজাকারের ফাঁসির নামে জনগন কে বিভ্রান্ত করে শেয়ার বাজারের ডাবল দূর্নীতি, পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারী করে পাওয়া বিশ্বচোর উপাধী, হলমার্ক ও সোনালী ব্যাঙ্ক কেলেংকারী, বস্তাভরা টাকা সহ রাতের আঁধারে সেন বাবুদের ধরা খাওয়ার লজ্জাজনক ইতিহাস, কুইক রেন্টালের মহাচুরি,সাগর-রুনি হত্যাকান্ড, বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ড ইত্যাদী ধামাচাপা দেওয়া।
উল্লেখ্য জামাত নিষিদ্ধ করা বা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দেওয়া দুটোই সরকারী আইনী প্রক্রিয়ার অধীন। সরকার চাইলেই দুটো কাজ আইনের মাধ্যমে সম্পাদন করতে পারে। সংসদে সে মেজরিটি সরকারের আছে। কিন্তু সেটা না করে সরকার জামাত শিবির নিয়ে গুটি চালবে এবং সেইজন্য তৈরি করা হল আওয়ামী মঞ্চ।
যাইহোক জাগরণ মঞ্চ- আওয়ামী মঞ্চ- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার- মানুষের ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত, মসজিদে গুলি ও টেয়ারশেল নিক্ষেপ, আলেম ওলামার উপর গুলি, জামাত শিবিরের তান্ডব সবকিছু মিলিয়ে দেশের রাজনীতি ক্রান্তিকালে এসে দাঁড়ায়। টালমাটাল অবস্থায় ঝাঁকুনি লাগে হানিফ-কামরুল-ইনু-মেননদের দ্বারা বেষ্টিত আওয়ামী মসনদে।
এই অবস্থায় শুরু হয় দেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, গানজাগরণ মঞ্চ নামক আওয়ামী মঞ্চে হামলা, জাতীর শৌর্য বির্যের প্রতীক শহীদ মিনারে হামলা। মডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হল এসব খবর। মিডিয়া জানালো এসব জামাত শিবিরের কাজ। সাধারণ জনগনও বিশ্বাস করল যে ধর্ম ব্যাবসায়ী জামাত এটা করেছে। সরব হল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যাবসায়ীরা। আওয়ামী গলাবাজ মন্ত্রীরা শিবিরের সাথে বিএনপিকেও টেনে আনলো সংখ্যালঘু নির্যাতন ও শহীদমিনার ভাঙচুরের ঘটনায়।
যাই হোক হাঁটে হাঁড়ি ভেঙে দিল জনপ্রিয় ট্যাবলয়েড পত্রিকা মানবজমিন।তারা জানালো শেরপুরে শহীদ মিনার ভাঙচুরের সময় জনতার হাতে যুবলীগ নেতা আটক, পুলিশে সোপর্দ .
হায় ! একি শুনলাম ! তবে কি এটাই বড় রাজনৈতিক বাস্তবতা। প্রচলিত আছে সে , " আওয়ামিলীগ পারেনা এমন কাজ নেই" তাহলে এটাই কি সেই বাস্তবতা। তাহলে দেশের আর সবস্থানে শহীদ মিনার ভাঙা কি কোন ষড়যন্ত্রের অংশ ! জনগনের আবেগে আঘাত করে প্রতিপক্ষ কে ঘায়েল করতেই কি কৌশলে চালানো হচ্ছে শহীদ মিনার ভাঙার এই মহোৎসব। উল্লখ্য ফেণীতে গেলে সাধারণ মানুষের মুখে শোনা যায় শিবিরের সাথে শহীদ মিনারে হামলায় অংশ নিয়েছিল দ্বিধাভিবক্ত আওয়ামিলীগের একটি অংশ। উদ্দেশ্য নিজাম হাজারীর নেতৃত্বে থাকা আওয়ামিলীগ কে ফেনীতে শিবির দমনে ব্যার্থ সেটা প্রমাণ করা। পূর্বদিন রাতে মাইটিভিতে গদফাদার ও আওয়ামিলীগ নেতা জয়নাল হাজারীর সাক্ষাৎকারে যে আভাস পাওয়া যায়।
তাহলে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যাবসায়ীরা নিজেদের প্রয়োজনে শহীদ মিনার ভাঙার অধীকার রাখে। আমাদের হিন্দু ভাইয়েরা কি এই ষড়যন্ত্রের বলি হচ্ছে? হিন্দু ভাইয়েরা যাদের বন্ধু ভাবছেন তারাই ছদ্মবেশে বিশ্বজিতের মত আপনাদের নিঃস্ব করছে। হিন্দু ভাইয়েরা কি তাহলে আওয়ামী রাজনীতির গিনিপিগ হয়ে কাজ করছে।
তাহলে শিবির আর লীগের মধ্যে তফাত টা কি? একদল চেতনার নামে ধর্ম বেঁচে আরেক দল চেতনার নামে মুক্তিযু্দ্ধ বেঁচে।
বিচারের ভার জনতার হাতে....
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:২৬