somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসরায়েলকে নিয়ে নির্মিত কয়েকটি মুভি রিভিও এবং সাথে গরম গরম ডাউনলোড লিঙ্ক।(পর্ব-১)

১২ ই মার্চ, ২০১১ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চলচ্চিত্রকে বলা হয় বাস্তবতার প্রতিবিম্ব। কিন্তু এমন অনেক বাস্তবতাই আছে যা নিয়ে আজকের তথাকথিত সভ্য সমাজ কথা বলতে দ্বিধান্বিত।কিন্তু কতিপয় সাহসী ফিল্মমেকার সেসব সত্য মাঝে মধ্যে তাদের চিত্রনাট্যে তুলে ধরে কখনো কখনো কাঁপিয়ে তোলেন আমাদের বিবেক।

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলী আগ্রাসন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন হল এমনি একটি রূঢ় সত্য কিন্তু যার ব্যাপারে আজকের পশ্চিমা সভ্য সমাজগুলো একেবারেই নিশ্চুপ।ইসরায়েলের এই নগ্ন আগ্রাসনের প্রমাণ স্বরূপ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে থাকবে সেইসব সাহসী ফিল্মমেকারদের বানানো ছবিগুলো। এবং মজার ব্যাপার হল এই ধরণের চলচিত্ত নির্মাণে বরঞ্চ ইসরায়েলী চিত্রকররাই রয়েছেন প্রধান কন্ট্রিবিউটরদের তালিকায় এবং এই কারণে স্বদেশে তাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নানা বৈরিতার।

ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন কনফ্লিক্ট এবং ইসরায়েল-লেবানন কনফ্লিক্ট নিয়ে এই পর্যন্ত বানানো হয়েছে অনেক মুভি এবং তার মধ্য অনেকগুলোই দারুণ দর্শক প্রিয়তার সাথে সাথে জিতে নিয়েছে অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কারও।আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শক্তিশালী অবস্থানের জন্য মুভিমেকারদের জন্য ইসরায়েল খুবই একটি স্পর্শকাতর বিষয় হলেও ছবি ইসরায়েল নিয়ে ছবি বানানোতে পিছিয়ে নেয় পরিচালকরা।তান্মধ্যে অতি সম্প্রতি জার্মান সরকার নিষিদ্ধ করে এন্টি-ইসরায়েলী মুভি "ভ্যালি অফ দা উলফস : প্যালেস্টাইন" ।এন্টি ইসরায়েলী অপ্রেশনকে খুব সহজেই এন্টি সেমেটিক লেবেলের সাথে মিশিয়ে প্রশিকিউশনের মুখোমুখি করাও খুব বিচিত্র কিছু নয়। আসুন দেখে নিয়ে ইসরায়েলী অপ্রেশন বিরোধী কয়েকটি খ্যাতনামা চলচ্চিত্রের রিভিউ :

১.লেমন ট্রি :

ইসরায়েলী ফিল্মমেকার ঈরান রিক্লিস এর এটি তৃতীয় মুভি। এর আগের মুভির মধ্য উল্লেখযোগ্য ছিল দা সিরিয়ান ব্রাইড যেটিও কিনা ইস্রায়লের তার প্রতিবেশীদের সাথে বৈরী আচরণ নিয়ে নির্মিত।

লেমন ট্রী ছবিটির কাহিনী প্যালস্টাইনী একজন প্রৌড়াকে(সালমা) নিয়ে যার প্রতিবেশী স্বয়ং ইস্রায়লের ডিফেন্স মিনিস্টার।কিন্তু মিনিস্টারের নিরাপত্তার স্বার্থে ছেড়ে দিতে হয় তার কয়েক জেনারেশন ধরে গড়ে তোলা লেমন গ্রোভ।কিন্তু ল্যইয়ার জিয়াদ(আলী সুলাইমান,প্যারাডাইস নাও এর অন্যতম প্রধান চরিত্রের অভিনেতা) এর সহযোগিতায় সালমা তার কেস নিয়ে যায় সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত।কিন্তু কোর্ট কেস ডিসমিস করলেও সালমার এই আইনি লড়াই নজর কাড়ে ওয়ার্ল্ড মিডিয়ার।জিয়াদের সাথে গড়ে ওঠে সালমার প্রণয় এবং মাঝে দেওয়াল সত্বেও ইসরায়েলী মিনিস্টারের স্ত্রীর সাথে সালমার গড়ে ওঠে অদৃশ্য এক বন্ধন।ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি করা এই মুভিটি দেখার আমন্ত্রণ রইলো সবাইকে।



টরেন্ট ডাউনলোড লিঙ্ক।


একই মুভি নিয়ে ব্লগার বিপ্লবী স্বপ্নের রিভিউ।

২.ওয়াল্টয উয়িথ বাসির : ১৯৮২ সালে লেবাননে ইসরাইলী আগ্রাসন এবং সেখানকার প্যালস্টাইনী রিফুজি ক্যাম্পের ম্যাসাকার এর কাহিনীর উপর ভিত্তি করে নির্মিত এনিমেটেড এই মুভিটি।এই ছবির পরিচালকও একজন ইসরায়েলী।নাম আরি ফরলান।

ছবিটির শুরুতে দেখা যায় লেবাননের সেই আগ্রাসনে অংশ নেওয়া পরিচালকের এক সৈনিক বন্ধু একদিন তাকে অদ্ভুত এক দুঃস্বপ্নের ব্যাপারে শোনায়।স্বপ্নে সে দেখতে পায় তার পেছনে ধেয়ে আসছে ২৬টি হিংস্র কুকুর। প্রতিরাতেই একি ঘটনা। তারা দুজন মিলে বুঝতে পারে এই ঘটনার সাথে সম্পর্ক রয়েছে লেবানন ম্যাসাকারের ।আরো অদ্ভুত ব্যাপার হলো সে ব্যর্থ হয় সেই সময়ের ঘটনাগুলো মনে করতে। ।তাই আরি ফরলান নিজেই নামেন এই রহস্য সমাধানে।এবং একে এক সাক্ষাৎকার নিতে থাকেন এই ঘটনা কাছ থেকে দেখেছেন এমন অনেকের।এবং সেই সাথে মোড়ক খুলে বেরিয়ে আসতে থেকে অতীতের অনেক অমীমাংসিত দূর্ঘন্ধময় সত্য।পুরোটাই সংলাপ নির্ভর এই ছবিটি অনেকের কাছে বোরিং মনে হলেও ছবিটির সাবলীলতা মুগ্ধ করবে সবাইকে।

এই ছবিটি রিলিজের পর বহু আলোচিত এবং সমালোচিত হয়।একাডেমী এওয়ার্ডে বেস্ট ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ মুভি ক্যাটাগরিতে নমিনেশন পায় এবং কানাসে পাল্মে ডি ওর এর জন্য মনোনীত হয়।সেই সাথে গোল্ডেন গ্লোব এওয়ার্ডের বেস্ট ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ মুভি ক্যাটাগরির পুরস্কার জিতে নেয়। মুভিপ্রমীকদের তালিকায় অবশ্যই পাঠ্য হিসেবে এই ছবিটি যুক্ত হতে পারে।



টরেন্ট ডাউনলোড লিঙ্ক

৩. আজামীঃ ইসরায়েলের মধ্যে জাফফা শহরে রয়েছে আজামী নামে ছোট একটি এলাকা ।এই এলাকাতে সংমিশ্রণ ঘটেছে মুসলমান,ক্রিশ্চিয়ান এবং ঈহুদীদের ।তাই পারস্পরিক দ্বন্ধ,সংঘাত এবং রেষারেষি এই এলাকায় নৈমিত্তিক ঘটনা। নানা ধরনের সন্ত্রাসী গ্যাংরাই মূলত এই শহরের আসল নিয়ন্ত্রণকারী।এমনই এক গ্যাং এর প্রতিহিংসার স্বীকার হয় ওমার।যারা তার চাচার ভুলের কারণে ওমারকে খুন করতে এসে খুন করে ফেলে তার ছোটভাইকে এবং হুমকি দিয়ে যায় পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন করার।তাই ঘটনাটি মীমাংসার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলতে ওমার যায় স্থানীয় বেদুইন বিচারকের কাছে। যারা উলটো ওমারকে চাপ দেয় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ১০০০০ পরিমাণ ডলার পরিশোধের। ওমার এবং তার ছোটভাই সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নেমে পড়ে এই টাকা পরিশোধে।

আরেক দিকে আমরা দেখত পাই অবৈধ ইমিগ্রান্ট মালেককে যে তার মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা যোগাড়ের চেষ্টায় লিপ্ত। এবং সেই সাথে দেখা যায় ইসরায়েলী পুলিশ অফিসার ডান্ডোকে যে খুঁজছে তার হারানো ভাইকে।তার ধারণা প্যালস্টেনীরাই তার ভাই এর হত্যাকারী।এই ধরণের পাচঁটি ঘটনা এসেছে একপ্রান্তে এবং এই সবকিছুর উত্তর খুঁজে পেতে আপনাকে দেখতে হবে অসাধারণ এই হাইপার লিঙ্ক ছবিটি।

ছবিটির পরিচালকও দুজন ইসরায়লী।স্ক্যান্দার কোপতি এবং ইয়ারন শ্যানী ।কাহিনী লিখেছেন স্ক্যান্দার কোপতি।এবং মজার ব্যাপার হল তিনিও বেড়ে উঠেছেন এই আজামী শহরে।ছবিটি রিলিজের পর বহুল প্রশংসিত হয় এবং অনেক আন্তর্জাতিক খ্যাতিও অর্জন করে।এই ছবির পরিচালনার জন্য পরিচালকদয় ক্যামারে ডি ওর জেতেন।অসম্ভব সুন্দর এই ছবিটি দেখতে ভুলবেন না যেন।



টরেন্ট ডাউনলোড লিঙ্ক

পর্ব দুই

আগামী পর্বে থাকছে প্যারাডাইস নাউ এবং ডিভাইন ইন্টারভেনশন।

***ডাউনলোড লিঙ্ক কাজ না করলে দয়া করে জানাবেন।আপডেট করা হবে।***
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১১ রাত ৯:৪৮
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×