somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উত্তর কোরিয়া । যুদ্ধের আগে কিছু কথা।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বেশ কিছুদিন ধরে আন্তর্জাতিক সংবাদ মানেই নর্থ কোরিয়ার কথা শুনা যাচ্ছে। কমলাবাবু কি সিদ্ধান্ত নেয় এটা নেয়ার আগে ভাবলাম কিছু একটা লিখি।

আমার মাঝে মাঝে অবাক লাগে কিভাবে এতগুলো বাণিজ্যিক আরোধ থাকার পরও কিভাবে এইসব দেশগুলো টিকে আছে। কিউবা, নর্থ কোরিয়ার মত দেশ যুগের পর যুগ ধরে জোরপূর্বক বিচ্ছিন্নতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে (কিউবার বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা সম্প্রতি শিথিল হয়েছে )। তারপরও প্রত্যেকের জন্য আছে সমান শিক্ষার অধিকার আর চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে তাদের। যেটার বৈষম্য অনেক উন্নত দেশগুলোতেও নজীর দেখা যায়। হ্যা, অবশ্যই সেবা বা শিক্ষার মানগত দিক থেকে অনেক সমস্যা। আর সেটা কোনদিনই হতো না যদি না পশ্চিমা শক্তি উন্নয়নের সকল দুয়ার বন্ধ করে না দিত।

হ্যা, উত্তর কোরিয়াতে অনেক সমস্যা আছে। তাদের গনমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই, জনগনের বাক, অভিব্যাক্তি ও গতিবিধির স্বাধীনতা অনেক কম। খাদ্যের অভাব প্রচুর। আর একটা বড় কারন সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান কিম সাং এর "জুচে" কট্ট্র আত্মনির্ভরশীল রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রয়োগ।


কিন্তু কিম জং উন ক্ষমতায় আসার পর ক্রমশ উত্তর কোরিয়া তাদের আগের অবস্থা থেকে সরে আসছে। এখন বিদেশিরা (এমন কি যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটকরাও) সেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমন করতে পারে। অন্য রাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যের ব্যাপারেও এখন তিনি শিথিল। হ্যা, এটা খুবই সামান্য পরিবর্তন; তবে যে যে চরম ভুলগুলো আগের শাসক করেছে সেটা থেকে অনেক উদারমুখি অবস্থা এখন। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি দেশগুলোর একটা ভুটানের নীতিও বিচ্ছিন্নতাবাদী, আছে একনায়কতন্ত্র, আছে Cult of Personality, আছে যথেষ্ট স্বাধীনতার অভাব কিন্তু কুটনৈতিক কারনে তাদেরকে সুখের দেশ বলা হয়, আর উত্তর কোরিয়াকে "অপ্রেসিভ"।


তবে ন্যাটো, দক্ষিন কোরিয়া ও জাপান কখনোই উত্তর কোরিয়ার আভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য চিন্তিত না। বন্ধুরাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর সাহায্যহীন উত্তর কোরিয়ার দুর্ভিক্ষে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাওয়ার সময়ও তাদের চিন্তা আসে নাই। তাদের চিন্তা তাদের নিজেদের দেশের নিরাপত্তা নিয়ে। যদি উত্তর কোরিয়ার কাছে পারমানবিক ক্ষমতা থাকে তাহলে কোন ঝামেলা হলেই তারা আক্রমন করতে পারে বলে তাদের ধারনা। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের সামরিক সন্ধি। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া এতটাও বোকা না যে তারা প্রথম হামলা করে শুধু শুধু ঝামেলা করবে। যারা জানে যে যুদ্ধ করলে তারা হারবে। কিন্তু তাদের নিজেদের পারমানিক ক্ষমতা থাকলে পরাশক্তি ভয় পাবে নিজস্ব ক্ষয়ক্ষতির। উত্তর কোরিয়াকে যারা বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা ও কুটনৈতিক চাপ দিয়ে উত্তর কোরিয়ার উন্নয়নের পথ বন্ধ করছে, তাদের জন্য পারমানবিক ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া আর দক্ষিন কোরিয়ার সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে দেয়া এখন একই কথা।



যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে যে বড় রকমের সমস্যা আছে এটা সবাই কমবেশি মনে করি। আরবের অবস্থা কোনদিনই এমন হত না যদি না যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাবানরা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার, সাংবিধানিক নীতি পরিপন্থী ও অবৈধভাবে দেশগুলোতে হস্তক্ষেপ না করতো। শীতল যুদ্ধের সময় তারা ধর্মীয় মৌলবাদী সেন্টিমেন্টকে উদ্বুদ্ধ করে কমিউনিস্ট ও সোভিয়েত বিস্তারকে তৃণমূল পর্যায়ে দমানোর জন্য। সেটা সফল হয়েছে বটে। কিন্তু যে মশালে আগুন দিয়েছে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে কিন্তুমাত্র চিন্তা তাদের ছিল কিনা জানি না। সেই মশালের আগুন আজ বিশ্বজুড়ে নাশকতা ও জঙ্গিবাদের পটভুমি। যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার সার্বভৌমত্ব নষ্ট করে সাধারন মানুষের নিপীড়ন বাড়াবে তাদের সামঞ্জস্যপূর্ণ ইতিহাস থেকে এটাই ধারনা করা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×