somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উই নিড অ্যা চেঞ্জ!!!

২১ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



We should talk about the system!
গত পরশু এইচ এসসির রেজাল্ট পাবলিশড হল। বলা যায়, রেজাল্টে এক প্রকার ধ্বস নেমেছে বললেই চলে। এর পেছনে অনেক কারণ আছে। স্টুডেন্টদের ব্যার্থতা যেমনিভাবে আছে, একইভাবে টিচারদের ব্যার্থতা, গার্ডিয়ানদের ব্যার্থতাও আছে। তবে সবচেয়ে বেশি ব্যার্থতা হচ্ছে শিক্ষা ব্যাবস্থার পেছনের কিছু মানুষের। দে জাস্ট রুইন দ্যা সিস্টেম।

প্রথমেই স্টুডেন্টদের ব্যার্থতার কথা বলি। এদের অনেকের ভেতরে একটা ট্রেণ্ড ক্রিয়েট হয়েছে। সেটা হল পড়াশুনা না করে কাঁপিয়ে দেওয়ার ট্রেন্ড। তবে এর পেছনে সবচেয়ে বড় দায় হল আমাদের শিক্ষামন্ত্রীর। কারণটা বলছি। গত ৫-৭ বছর ধরে আমরা দেখে আসছি যত যাই হোক না কেন পরীক্ষার আগের রাতে কিভাবে যেন প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাচ্ছিল। যত স্টেপই নেওয়া হোক না কেন, প্রশ্ন ফাঁস হয়েই যাচ্ছে। কেউ দায় নিচ্ছিল না। কেউ না। একজন অন্যজনের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে যাচ্ছে। আর মাঝখান থেকে স্টুডেন্টরা যেমনিভাবে বলী দানের মত হল তেমনিভাবে তারা শর্টকাট পেয়ে গেল। আরে ভাই, দুই-একটা সাবজেক্টের প্রশ্ন ফাঁস হতে পারে। তাই বলে বছরের পর বছর ধরে প্রত্যেকটা পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয় কিভাবে? কিভাবে মেডিকেলের প্রশ্ন ফাঁস হয়? সেই উত্তর তো কাউকে দিতে দেখলাম না। তো স্টুডেন্টরা যখন দেখল পরীক্ষার আগের রাতেই তো প্রশ্ন পাওয়া যায়, তো সারা বছর পড়ে কি হবে? সব ঠিকই ছিল। কিন্তু সমস্যা হল অন্য জায়গায়। এবার আর প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় নি। সেখানেই রহস্য আঁটকে গেল। এখানে আমার একটি প্রশ্ন আছে। বিগত বছর গুলোতে এত চেষ্টা করেও প্রশ্ন ফাঁস রোধ করা যায় নি। তবে এবার কিভাবে রোধ করা গেল? নির্বাচনের বছর নাকি আলাদীনের চেরাগ? আশা করছি, কেউ উত্তরটি দেবেন।

এবার আসি গার্ডিয়ানদের ব্যার্থতার জায়গায়। গার্ডিয়ানদের সবচেয়ে বড় ব্যার্থতা হল, তারা তাদের সন্তানের সঠিক খোঁজ খবর রাখেন না। এক শ্রেণির গার্ডিয়ান মনে করেন, টাকা পয়সা খরচ করে সন্তানকে ভালো স্কুল কলেজে ভর্তি করিয়ে ভালো শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ালেই সমস্যা চুকে গেল। সব যদি টাকা পয়সার কারণে হয়ে যায় তাহলে তো কথাই ছিল না। আপনি আপনার সন্তানের গার্ডিয়ান। এর মানে হচ্ছে, কেবল মাত্র তাকে অর্থের যোগান দেওয়াই আপনার দায়িত্ব নয়। বরং সে কোথায় যায়, কি করে, কাদের সাথে চলে, ক্লাসে সে কেমন পারফর্ম করে সেটা দেখাও আপনার দায়িত্ব। যদি সে খবর না নিতে পারেন তবে সেটাই আপনাদের ব্যার্থতা।

টিচারদের ব্যার্থতার পরিধিটা একটু অন্যরকম। সেটা কেমন? সেটা হল, কোন স্টুডেন্ট ভালো করলে যেমনিভাবে আপনি ক্রেডিট নেন, একইভাবে কোন স্টুডেন্ট খারাপ করলে সেই দায়ভারও আপনাকে নিতে হবে। দুজন’ই আপনার স্টুডেন্ট। আমি অনেক শিক্ষককে দেখেছি, যারা কেবল তাদেরকে প্রায়োরিটি দেন যারা ক্লাসে ভালো পারফর্ম করেন। তাহলে যারা ভালো পারফর্ম করছে না তাদের দোষ কি? এমনও তো হতে পারে, আপনি তাকে অবহেলা করছেন এটাও একটা কারণ। স্কুল কিংবা কলেজ কেবল মাত্র ফার্স্ট আর সেকেন্ড বানানোর জায়গা নয়। এটা মানুষ বানানোর জায়গা। এটা সাম্যের জায়গা। আপনারা শিক্ষক হয়েই যদি ছাত্রদের সমান ভাবে কেয়ার না করতে পারেন, তাহলে সকল স্টুডেন্ট ভালো রেজাল্ট করবে সেই প্রত্যাশা কিভাবে করেন?

এবার আসি সবচেয়ে বড় সমস্যা নিয়ে। আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্য হল আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা। যে পদ্ধতিতে আমরা শিক্ষা গ্রহন করছি, সেটা হয়তো আমাদের ভালো সার্টিফিকেট কিংবা হাতে গোনা কিছু মানুষকে ভালো কিছু চাকরি দেবে। কিন্তু দিনশেষে এই শিক্ষাব্যাবস্থা আপামর মানুষের জন্য একটা বড় বার্ডেন।

স্ট্রং জোন দিয়ে কম্পিটিশন করলে সেখানে কিছু করা যায়। কিন্তু উইক জোন দিয়ে কম্পিটিশন করলে সেটা বড় জোর একটা গোঁড়ামির জায়গা হয়। যা আমাদের দরকার নয়, তা দিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যাবস্থায় ভরপুর। আজব আজব জিনিস শিখিয়ে আমাদের মাথা মোটা করা হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। আমাদের আগের জেনারেশন এই সিস্টেম ফলো করে গেছে, আমরাও ফলো করছি হয়তো আমাদের পরের জেনারেশনকেও একই সিস্টেম ফলো করতে হবে। কিন্তু আর কতদিন?

আমরা জানি, চায়নাতে ৪০ বছর কোন প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষা ছিল না। একটা নির্দিষ্ট ক্লাস পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর সকলকে বাদ্ধতামূলকভাবে কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করতে হত। যার কারণে, বছরের পর বছর সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। সার্টিফিকেটের কোন ঝামেলা ছিল না। সার্টিফিকেটের কথা ভুলে গিয়ে ৪০ বছর তারা শুধু কারিগরি শিক্ষা নিয়েছে। কই তারা তো পিছিয়ে যায় নি? আজকের বিশ্ব চায়না ব্যতিত চলা অসম্ভব। এখন চায়না এমন এক অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে একপাশ দিয়ে আসল মানুষ প্রবেশ করালে অন্য পাশ দিয়ে তারা সে মানুষের কপি বের করে ফেলবে। আজ অ্যামেরিকা চায়নাকে নিয়ে কিছু বলতে গেলে ১০ বার ভেবে তারপর কথা বলে। বিশ্ব অর্থনীতি কতটা ভালো চলবে, এটা অনেকটাই নির্ভর করে চায়নার অর্থনীতির উপর। সবকিছু কি এমনিতেই হয়ে গেছে?
প্রতি বছর আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ সার্টিফিকেটধারি বেকারের খাতায় নাম লেখাচ্ছে। আই রিপিট, সার্টিফিকেটধারি বেকার! ক্যান ইউ বিলিভ ইট? সার্টিফিকেটধারি বেকার মানে হচ্ছে ১৭/১৮ বছর যাবত কোন স্পেসিফিক বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছি, তার পরেও আমরা চাকরির যোগ্য নই কিংবা ভেকেনসি নেই। তাহলে ১৭/১৮ বছর যাবত এত এত টাকা নষ্ট করে কি পড়লাম? ভেবেছেন কখনও? তাহলে এই দায় কার? আমাদের এডুকেশন সিস্টেমেরই তো! ইজন’ট ইট?

অনেকেই হয়তো বলবেন, ওভার পপুলেশনের কারণে হচ্ছে। কথাটা আংশিক সত্যি। কিন্তু এটাও সত্যি, ‘ওভার পপুলেশন ইজ নট অনলি বারডেন, বাট অলস অ্যান অ্যাসেট’। আমদের ওভার পলুলেশনকে অ্যাসেট না বানাতে পারলে, সেটা আমাদের প্রবলেম। আমদের এডুকেশন সিস্টেম যদি অন্য কোন দেশের কথায় চলে, সেটা আমাদের প্রবলেম!

উই নিড অ্যা প্রপার সিস্টেম। উই নিড অ্যা চেঞ্জ। কিন্তু চেঞ্জটা করবে কারা? যারা কাজ করতে চায়, তাদের পজিশন নেই। আবার যাদের পজিশন আছে তারা ইন্টারেস্ট নেই। আবার যাদের কাজ করার ইন্টারেস্ট আছে এবং পজিশন আছে, তাদেরকে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাহলে কিভাবে সম্ভব? অন্যদিকে আমাদের ত্রাণকর্তারাও এগিয়ে আসছে না। তাহলে কারা এগোবে?
যে সময়ে মানুষ চাঁদে গিয়ে ঘুরে আসে, সে সময়ে আমাদের কাছে চাঁদ মামার গল্পটা গল্প হয়েই থেকে যায়। এর মাঝে কোন চেঞ্জ না আসলে জেনারেশন বাই জেনারেশন এমনটাই চলতে থাকবে। কিন্তু আর কত? কি হবে এই সো কলড পাশ-ফেল কিংবা জিপিএ ৫ দিয়ে? আদৌ কি কিছু হবে? কে জানে!

---গোলাম রাব্বানী
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৪৬
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×