
- ছবিতে কপি রাইট আছে।
ছবিতে যাকে দেখতে পাচ্ছেন সে বাংলাদেশের একজন ফাস্ট ক্লাস ফ্যাশন মডেল। হাজার হাজার স্মার্ট বডি বিল্ডার ধনী লোক তার জন্য পাগল ছিল কিন্তু সে তার ভালোবাসার মানুষকেই বিয়ে করেছেন যিনি অনেক পয়সা ওয়ালা, আমেরিকা থাকে কিন্তু কথিত কম সুন্দর বা কম স্মার্ট। ছেলেটির সহযোগিতায় একটি কনজারভেটিভ শহরের মেয়েটি ফ্যাশনের মঞ্চ কাঁপিয়ে এখন ইউ এস এর কোন একটা বিখ্যাত ইউনিতে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করছে। ও কি গোল্ড ডিগার ? ও কি ভুল কিছু করেছে? আমরা কি তার মনে ঢুকছি? কিভাবে না জেনে তার সম্পর্কে আন্দাজে কটূক্তি করি?নাকি আমরা তাঁদের রান্নার কাজে ঘরের চাকরানী করে রাখতে চাই?
গোল্ড ডিগার একটি ইংরেজি শব্দ যার অর্থ- স্বর্ণ-সন্ধানী ।
যে নারী শুধুমাত্র টাকা বা উপহারের জন্য পুরুষের সাথে সম্পর্ক করে; ধনী ব্যক্তিদের সাথে অর্থের জন্য সম্পর্ককারী নারী; সম্পদ ও টাকা পয়সা লোভে যে নারী পুরুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে । লক্ষ্য করুন যে সব পুরুষ শুধুমাত্র নারীর সৌন্দর্য, সেক্সি ফিগার, টাকা, সামাজিক স্ট্যাটাস দেখে বিয়ে করে তাদের গোল্ড ডিগার বলা হচ্ছেনা। শুধু একটি মেয়ে নিষ্ঠুর পৃথিবীর অমানবিক বাস্তবতার কথা চিন্তা করে কোন অসুন্দর বা বয়স্ক পুরুষকে বিয়ে করলে তাকে বলা গোল্ড ডিগার। অথচ নারী এবং পুরুষ উভয়ই আলাদা আলাদা দুইটি ক্ষেত্রে গোল্ড ডিগার।
সিনট্যাক্টিক উদাহরণ দিতে গিয়ে আমরা আমাদের বাংলাদেশের তাহসানের প্রাক্তন বউ মিথিলা ও ভারতীয় বিখ্যাত নায়িকা সুস্মিতা সেন এর কথা বলতে পারি। তাহসানের সাথে মনের মিল হচ্ছেনা তাই জন্য সে সৃজিত কে বিয়ে করেছে শুধু মাত্র এই অপরাধে মিথিলাকে কম গালি ও ট্রোল সহ্য করতে হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিলেই ছাগু মোল্লারা গালি আর নোংরা ব্যক্তি আক্রমণে জর্জরিত করেছে। এই কারণে সেলেব্রিটিরা এখন ফেসবুক ব্যবহারই করেনা। সবাই ইনস্টাগ্রামে একটিভ। এখানেও কাঠ মোল্লারা যাওয়া শুরু করসে। এরা যেখানেই গেসে পচন ধরিয়েই ছাড়ছে।
ব্যাড বাজ নাটকের রিভিউ লিখেছিলাম। এই ঈদে গুড বাজ নাটকটি এসেছে। নাটকে দেখা যায় মূল নায়িকার জামাই মাল্টি বিলিয়নার। ব্যাড বাজে নায়িকা রাগ করে এনগেজমেন্ট রিং ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল কাঁপটায় লেকে তাই জামাই নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছে এবং বুঝিয়ে সে তাকে হারাতে চায়না সত্য ভালোবাসে তাই ইনসিকিউর ফীল করে। এবং ১২ লাখ টাকা দিয়ে আরেকটি নতুন রিং কিনে দেয়।একটা মেয়ে সম্পর্কে নিজে না জেনেই শুধু বয়স্ক বা পয়সাওয়ালা বিয়ে করেছে বলে বা প্রেম করছে তার গায়ে গোল্ড ডিগারের তকমা লাগিয়ে দিলাম। সত্যি সেলুকাস বড়ই ক্ষেত এই ছাগু ও মোল্লা সমাজ।
সুস্মিতা সেন ইন্টাগ্রামের পোস্টে বলছেন আমি নিজেই হিরে কিনতে পারি আমি গোল্ড ডিগার কেন হব? আমি সোনা খুঁজি না। আমার বরবরই হীরা পছন্দ। এবং আমি নিজেই হীরা কিনতে সক্ষম। আমরা কেন ললিত মোদীর সঙ্গে সুস্মিতার মতো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন ওয়ার্ল্ড ক্লাস নায়িকার ১০ বছরের প্রেমের সমর্ক মেনে নিতে পারবোনা? সুস্মিতা চাইলেই তো আমাদের সুবর্ণা আপার মতো ইয়াং কাউকে বিয়ে করতে পারতেন। তার যদি টাকা পয়সার অভাব থাকতো তাহলে নাহয় বুঝতাম টাকার জন্য। একজন বিশ্বসুন্দরী তার চেয়ে ১০ বছরের কারো সাথে প্রেম করে তোমাগো জ্বলবে কেন?অর্থের লোভ যে সুস্মিতার নেই তা স্পষ্ট করে জানালেন প্রাক্তন বিক্রম ভাট। সুস্মিতার পক্ষ নিয়ে তিনি বলেন, সুস্মিতা কখনওই এমন মানুষ নন যে ব্যাংক ব্যালেন্স দেখে প্রেম করবে। এমনকি তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, যখন গুলাম ছবির শুটিং চলছিল সেই সময়ে একেবারে তাঁর পকেট খালি, ঠিক সেই সময়েই সুস্মিতা তাঁকে প্রথমবারের জন্য মার্কিন মুলুকে নিয়ে যান, সেই সমস্ত সফরের খরচ সুমসিতা সেন নিজেই দেন। শুধু তাই নয়, লস অ্যাঞ্জেলস এ গিয়ে তিনি দেখেন একটি লিমোসিন গাড়ি তাঁদের অপেক্ষা করছে, সেটিও সুস্মিতার খরচে হয়েছিল। মার্কিন মুলুকে বিক্রমের প্রথম সফরকে স্মৃতিমধুর করার জন্যই তিনি এত বিশেষ ব্যবস্থা করেন বলেও জানিয়েছিলেন সুস্মিতা। অতএব প্রাক্তন বিক্রম ভাট যে সুস্মিতাকে চেনেন তিনি কখনওই অর্থলোভী নন। প্রেম তো দূরের কথা অন্য কোনও প্রেক্ষাপটেও তিনি লোভী নন।
যখন শিল্পা শেঠি রাজ কুন্দ্রাকে বিয়ে করেছিলেন, তখন গোল্ড ডিগার শব্দটি ব্যবহার করেছিল সমালোচকরা ।আদিত্য চোপড়াকে বিয়ে করা নিয়ে রানী মুখার্জিকেও গোল্ড ডিগারের তকমা পেতে হয়েছে। বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তানের অধিকাংশই কোন কিছু সুন্দর ভাবে নিতে পারে না। কেউ সত্যি সত্যি ভালোবাসলেও বলে গোল্ড ডিগার।
আর যেখানে গরীবদের রীতিমত অপমান করা হয় সেখানে একটি মেয়ে যদি ধনী কাউকে বিয়ে করে তাহলে মেয়েটি কতখানি দোষী?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:০১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




