
আমাকে যারা দেখতে পারেনা তারা হয়তো শিরোনাম দেখে মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই নিয়েছেন, সুযোগ পেয়ে কটাক্ষ/গালি/ব্যক্তি আক্রমণ করা। তবে একটু থামুন।পোস্ট না পড়েই মন্তব্য করবেন না। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ুন তারপর মন চাইলে কটাক্ষ-মটাক্ষ যা খুশী করুন। আমার মনে হচ্ছে আমার উপলব্ধি আমার লিখতে হবে।
আমরা সবাই চাই আমাদের ছেলে মেয়েদের বিনয়ী করতে, স্মার্ট করতে, চাই পড়ালেখা করে শিক্ষিত হোক। মানুষের মতো মানুষ হোক। কিন্তু এই মুহুর্তে আমার মনে হচ্ছে মেয়েদের প্রয়োজনে ডেসপারেট ও মারমুখী হিসেবে গড়ে তুলা উচিত। ফেসবুকে একজন শিক্ষকের দেয়া পোস্ট পড়লাম। তিনি লিখেছেন
'আপনার মেয়েকে গালি শেখান'। তাঁর পোস্টটি পড়ে এই পোস্টটি লিখতে ইচ্ছা হলো।
তিনি লিখেছেন- #আপনার_কন্যাকে_গালি_শেখান
"পেশায় আমি একজন শিক্ষক, শুধু তাই নয় আমি এমন এক বিষয়ে শিক্ষকতা করি যেখানে "নীতিবিদ্যা" অবশ্য পাঠ্য।তাই বাস্তব জীবনে আমার শিক্ষার্থী আর সন্তান এবং সন্তানতুল্য সবাইকে নৈতিক আচরণ করার জন্য উদ্বুদ্ধও করি।মন্দ কথা, মিথ্যা কথা, গালাগাল করা এমনকি কেউ আহত হয় এমন কোন কথা যেন আমার সন্তানরা না বলে সে বিষয়ে খুব কঠোরভাবে সচেতন থাকি।
কিন্তু আজ অনুভব করছি আমি পুরোপুরি ঠিক নই।আমার খুব কাছের একটি পরিবারের ছোট্ট মেয়েটির আজকের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বললেই বোধ হয় ব্যাপারটি বোঝা যাবে।নয় বছর বয়সী মেয়েটির দেহে নারীসুলভ কোন লক্ষ্মণ এখনো প্রকাশ পায় নি।তবুও স্কুল আর বাসায় গুড টাচ/ব্যাড টাচের ধারণা তাকে দেওয়া হয়েছে। সেজন্য সে বয়সানুপাতিক সচেতনও থাকে।তারপরও আজ স্কুল থেকে বাসায় ফেরার সময় তার মা একটু বাজার করতে নামলে ভীড়ের সুযোগে এক নরপশু সেই বাচ্চা মেয়েটির গায়ে খুব আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করে। মেয়েটির পাশে থাকা মেয়েটির মায়ের অলক্ষ্যেই এ ঘটনা ঘটে।তারপরও মেয়েটি রিকশায় ওঠার আগ পর্যন্ত ঐ শয়তান মেয়েটিকে লক্ষ্য করে বিশ্রী অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। ঘটনার আকস্মিকতায় মেয়েটি ওর মাকেও কিছু বলতে পারেনি।শুধু রিকশায় উঠে অঝোরে কাঁদতে থাকে।মায়ের শত প্রশ্নেও মেয়েটি কোন জবাব দেয়নি।বাসায় এসে অনেক জেরার পর ও পুরো ঘটনা বললে ওর মা ওকে বলে,তুমি কেন তখনই চিৎকার করে "কুত্তার বাচ্চা " বলে গালি দাও নি? জন্মাবধি ভদ্রতার শিক্ষা পাওয়া মেয়েটির কাছে মায়ের এ কথা অদ্ভুত শোনালেও আমি অনুভব করেছি ওর মা একদম ঠিক বলেছে।কারণ যে ভীড়ের সুযোগ ঐ শয়তান নিয়েছে সেই ভীড়ের মানুষগুলো তখন ওকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে দিত।গণপিটুনির মতো তাৎক্ষণিক শাস্তি আর কি হতে পারে?
পৃথিবীর সমস্ত কুকুরের প্রতি সম্মান রেখেই বলি এমন শয়তানদের জন্য " কুত্তার বাচ্চা" বলে আমি কুকুরের অপমান করি না, শুধু নিকৃষ্ট অর্থে এদের পশুত্বের প্রতি ঘৃণা জানাতে শব্দটির অপব্যবহার করায় আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
তাই বলব, শুধু লক্ষ্মীমন্ত ভদ্র মেয়ে হবার শিক্ষা না দিয়ে আপনার কন্যাকে গালি শেখান এবং এর যথাযথ প্রয়োগ করতেও শেখান।
(বিঃদ্রঃ১- যে সচেতন সমাজ মেয়েদের পোশাককে সকল অনর্থের কারণ মনে করেন তাদের জ্ঞাতার্থে জানাই মেয়েটির গায়ে দেশের সনামধন্য একটি স্কুলের ইউনিফর্ম ছিল)।
আমার এর আগের পোস্টটি একজন মেয়েকে নিয়ে যে তাকে ইভটিজিং করলেই থাপড়াইয়া দেয়। দেখুন এই সব নষ্ট ইভটিজাররা ভদ্রতা ও বিনয়কে দুর্বলতা মনে করে আহাম্মক এর ভুমিকায়ায় অবতীর্ণ হয়। সেদিন একটি জরুরী প্রয়োজনে কোর্ট বিল্ডিং গিয়েছিলাম। একটি মেয়েকে ছেছড়া একটা পোলা টিজ করছে ধরে থাপিড়াইয়া দিসে। প্রচুর ভিড় ছিল তাই ভিডিও ও ছবি তুলতে পারিনি। আর মেয়েটা চোখে এতো আগুন ছিল যে আমি ছবি বা ভিডিও করিনি। খুব ভালো লাগছিল দৃশ্যটি দেখে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর মনে হলো ভিডিও ও ছবি তুলে এফবিতে আপলোড দিলে দারুণ হতো। একটা বাংলা নাটক আছে। অবশ্যই দেখবেন। নাটকের নাম 'আমি রোকেয়া বলছি' মূলত কিংবদন্তী শ্রদ্ধেয় বেগম রোকেয়ার নারী বিদ্বেষীদের প্রতি প্রতিবাদের কিঞ্চিৎ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে নাটকটিতে। নাটকের মূল কাহিনী ছিল যারা অফিসে স্কুলে কলেজে বাসে রাস্তা ঘাটে মেয়েদের টিজ করে, ধর্ষণ করে ধর্ষক মগজের দোষ মেয়েদের স্কুলের পবিত্র ইউনিফর্ম এর উপর চাপিয়ে দেয় তাদের কয়েকটি সাহসী মেয়েদের গ্যাং কিডন্যাপ করে 'হেডফোন থেরাফি' দেয়। হেড ফোনে টানা ২/৩ দিন বাজতে থাকে 'সকল মেয়ে আমার মা বোন, আমি তাদের কোনদিন ইভটিজিং করবোনা। '
আমাদের দেশের হুজুর নামধারী হুজুরের নামে কলংকরা মাদ্রাসায় শিশু ধর্ষণ করে জোর করে, বেত দিয়ে পিটিয়ে, পায়ে শেকল পড়িয়ে নির্যাতন করা হয়। লম্পট মৌলবাদী মানসিকতার লোকেরা ৯ বছরের পবিত্র ইউনিফর্ম পড়া কিন্ডারগার্টেন ছাত্রীদের নোবগ্রা ইংগিত গুড টাচ, ব্যাড টাচ করে দোষ দেয় পোশাকের।তাই মেয়েদের ডেসপারেট ও গালি শেখানোর দরকার আছে। একদম উপরে দেয়া ছবিটি দেখুন। একটি মেয়ের চোখ ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না।হুবুহু ইসলামি দিকনির্দেশনা অনুযায়ী হিজাব পড়ে হেটে যাচ্ছে। তাও হিংস্র জানোয়ার লোভাতুর চোখে তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে। সুতরাং ধর্ষণের কারণ কখনো পোশাক হতে পারেনা। মগজ নোংরা বলেই ধর্ষণ করে ধর্ষকরা।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




