অতিথি আপ্যায়নের জন্য রান্না করার একটি দৃশ্য।
চট্টগ্রাম শহর থেকে ৬০ কি,মি দূরে ফঠিকছড়ি। গাড়িতে ঘণ্টা খানিক লাগে। ফঠিক ছড়ি মাইজভান্ডারি মাজারের জন্য পুরা দেশে বেশ পরিচিত। ওরশের সময় লাখ লাখ ভক্ত দেশ বিদেশ থেকে মাইজভান্ডারি মাজারে সমাবেশ করে। ২০১১ সালের কথা। সে ওরশের সময়। সেখানে আমার দুই বন্ধুর গ্রামের বাড়ি।একটি ছেলে যে ফকিন্নি থেকে পয়সা ওয়ালা হয়েছিল। আরেকজনের কথা ব্লগে একবার লিখেছিলাম। ওর নাম রীয়া। আমার মেয়ে বন্ধুদের নিয়ে কোন স্মৃতি শেয়ার করলে একটা অত্যন্ত নীচু মানের জঘন্য ক্যাচালবাজ মাল্টির হিংসায় জ্বলে। ফলে পরোক্ষ ভাবে গালি দিয়ে ব্যক্তি আক্রমণ করে। তাই যাদের আমার পোস্টের কারণে জ্বলে তারা এখানেই থেমে যান।
যাই হোক ওরশ উপলক্ষে ২০১১ সালে সে পয়সাওয়ালা বন্ধুর বাড়িতে পৌছাই ওরশের আগের দিন দুপুর ১২ টাই।অনেক দিন দেশের বাইরে থেকে ভালোই রোজগার করেছে। বাড়ি গাড়ি নারী সব হয়েছে। কিন্তু ছোট লোক পয়সাওয়ালা হলেও মনতো ছোটলোকের মতোই থাকবে। বিকাল ৩ টা গড়িয়ে ৪ টা আপ্যায়ন তো দূরের কথা এমন ব্যস্ততা দেখাচ্ছে যেনো আমরা চলে যাই।
আমাদের প্ল্যান ছিল পরের দিন রীয়া দের বাড়ি যাবো।রীয়ারাও খুব বড়লোক ছিল। একেবারে খানদানি বড়লোক যাকে বলে। বিশাল জমিদার বাড়ি ওদের। অবস্থা দেখে ওরে ফোন দিলাম। ছোটলোকের বাড়ি থেকে ৩০ মিনিটের পথ রীয়াদের বাড়ি।দুপুরে যে খাবার দিছিলো সেগুলো খাওয়া তো দূরের কথা ওর সাথে কথাই বলেনি কেউ। তো ৫ টার মধ্যে চলে আসছে আমাদের নিয়ে যেতে। আমরা সংখ্যায় ৮ জন। ২ জন মেয়ে ৬ জন ছেলে। রীয়া সহ ৯ জন। সবাই ক্ষুধার্ত নানান রকমের নাস্তা করেছিল ওর আম্মু আমাদের জন্য। ডিনারে এতো বেশি পরিমাণ ডিস করেছিল যে, চট্টগ্রামের দাওয়াত যারা খান নি তাদের পক্ষে বুঝা সম্ভব নয়।
চট্টগ্রামের মানুষের হসপিটালিটি লেভেল অহংকার মতো ঐতিহ্যবাহী। সারারাত আড্ডা, ভান্ডারিগান, হালকা সিদ্ধি, ওরশের দিন মেলার উৎসব মুখর পরিবেশ, রীয়া ও ওর কাজিনিদের ভালোমানুষি মিশ্রিত সম্মান করার সুন্দর মানসিকতার সাথে ১০০% প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমন্বয়ে পুরা নস্টালজিয়া অনুভূতি। এজন্যই হইতো লোকে বলে -
রানী গরীব হলেও মনটা রানীর মতোই থাকে, ফকিন্নি পয়সা ওয়ালা হলেও মনটা ফকিন্নির মতোই থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩৪