আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আপনাদের দেশের প্রধান সমস্যা কি? আমার উত্তর কি হবে কারও অজানা নয়। তাও আরেকবার বলছি - অবশ্যই মৌলবাদ। কারণ এরা ইসলামকে হাস্যকর ও সমালোচিত শুধু করছেনা, জ্ঞান-বিজ্ঞান-শিক্ষা আধুনিকতায় জাতীকে পেছনের দিকে টানছে। অত্যন্ত দু:খের বিষয় হলো ব্লগার পরিচয় দেওয়া অনেকেই এসব মৌলবাদী দের পরোক্ষ ভাবে সমর্থন করছেন।আর তাদের কেউ তাদের মৌলবাদীদের চামচা বললে, লো ক্লাস জঙ্গি বললে কান্নাকাটি করছেন।
আচ্চা বলুনতো বাংলাদেশের একজন প্রকৃত মুসলিম এর প্রধান দায়িত্ব কি? দেশকে দারিদ্র মুক্ত করা নাকি মসজিদে বসে হাদীস/ জাল হাদীস শোনানো? কদিন আগে সবাই দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের কিছু ছাত্র বটতলায় বসে হাউকাউ করলে ধোলাই খায়। এদের তাবলীগ গিরীর জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বটতলা রেস্ট্রিকটেড। জঙ্গি, রাজাকার, মৌলবাদীদের ক্যাম্পাসে সন্রাস বোমাবাজি ঠেকাতে এই রেস্ট্রিকশন দিয়েছে। তাবলীগ গীরি করার জন্য সেন্ট্রাল মসজিদ উন্মুক্ত হওয়ার পরও কেউ যখন বটতলার মত ঐতিহাসিক একটা স্থানে কোরান পাঠকে উছিলা করে গ্যাদারিং করে তখন বুঝে নিতে হবে এদের উদ্দেশ্য কোরান পাঠ নয় বরং ঢাবিকে বুয়েটের মত মাদ্রাসা বানানোর ঘৃণ্য চক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
যাই হোক, এরা তো কোরান মানে। কোরানের একটি আয়াতে আল্লাহ বলেন- "তোমাদের কি হয়েছে? তোমরা কেন সংগ্রাম করছোনা? অথচ নির্যাতিত নারী পুরুষ আবাল বৃদ্ধ বনিতা আর্তনাদ করছে - হে রব আমাদেরকে এই জালিমদের হাত থেকে রক্ষা কর।" অথচ এরা কি করছে? এরা নিজেরাই কোরানের নির্দেশনা মানেনা। বর্তমানে রমজান মাসে দেশের ৯০ ভাগ গরীব মানুষ বাজার সিন্ডিকেট এর নোংরামির স্বীকার ও তাদের হাতে জিম্মি । একটা ইসলামি দল প্রতিবাদ বা আন্দোলন করছেনা। অথচ ফেসবুকে ঢুকে দেখুন জঙ্গি মৌলবাদী জামাত হেফাজত বয়কট ইন্ডিয়া বলতে বলতে গলা ফাটাইয়া ফেলতেছে। কিছুদিন আগে নরেন্দ্র মোদি দেশে আসেন। সেসময় জঙ্গি জামাত হেফাজত জিহাদ ঘোষণা করে। হরতাল ডাকে। অথচ শয়তানের দোসর বাজার সিন্ডিকেট বাজারে আগুন লাগাইয়া দিলে দেশের মানুষ নীরবে কাঁদছে- জিহাদ তো দূরের কথা উলটো হুদাই বটতলায় বসে নাটক করছে।
সুতরাং এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান যে, বটতলার কোরান পাঠের নামে নাটক কারীরা কয়েকটি বিশেষ উদ্দেশ্যে শুধু আন্ডোলন করে। তার মধ্যে একটি হইল, ইন্ডিয়া হটাও, ২য় টি হলো আওয়ামী লীগ ঠেকাও, ৩য় হলো যারা মৌলবাদী না বরং মুক্তমনা তাদের ঠেকাও। এরা কোন গরীব চা ওয়ালা, খাবারের ব্যবসায়ী রমজান মাসে দোকান খোলা রাখলে, কোন হিন্দু ভাই বোন কে খেতে দেখলে পিঠাইয়া মেরে ফেলে অথচ বাজার সিন্ডিকেট এর একটা লোমও বাঁকা করতে পারেনা।
আমাদের প্রতিটি মোড়ল আসলে বড় নির্লজ্জ।এরা নিজেরা ভন্ড হয়ে অন্যজনকে নৈতিকাতা শেখায়, নিজে স্বৈরাচারী হয়ে স্বৈরাচারী সরকারের ১৪ গোষ্ঠী উদ্ধার করে। আজকে জোহরের নামাজ পড়তে মসজিদে গেলাম। দেখি প্রথম কাতারে ৬ টি জায়নামাজ বিছানো। ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে যিনি একামত দেন তার পাশে বিছানো জায়নামাজে দাঁড়াতেই মুয়াজ্জিন এসে বললেন এই ৬ টি বাদ দিয়ে বসুন। এই ৬ টিতে নাকি ৩ জন হাফেজ, ১ মোয়াজ্জিন, ও ২ মোড়ল বসবে। আমি জন্মগত ঘাড় ত্যাড়া। সরলাম না। শাউট করলাম হালকা। ইমাম পরিস্থিতি বুঝে বলে উঠলেন থাক থাক যিনি আগে আসছেন তিনিক দাঁড়াক। এই মোয়াজ্জিন গুলো আসলে এলাকার বড়লোক মোড়লদের চামচা।তাদের খুশি করতে৷ পবিত্র মসজিদের মতো স্থানে সেজদা দেয়ার জায়গা দখল করছে ঈদে বকশিশ এর লোভে! মুয়াজ্জিন এর পাশে বিছানো জায়নামাজে নামাজ শেষ করলাম। যখন বের হচ্ছি তখন আমার দিকে সবগুলো তাকায় আছে। অন্যায় দেখলে আমি একা দাঁড়িয়ে যাই। মৃত্যু হলে হোক। এরা কিছু বললোনা। শুধু আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। মনে হল সাধারণ মুসল্লীরা ব্যাপারটা পছন্দ করেছেন। প্রিয় পাঠক যেখানে অন্যায় দেখবেন সেখানে একা দাঁড়িয়ে যান। স্বয়ং আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবে।
মৌলবাদী গোষ্ঠীরা ভণ্ড। এরা ভারত বিদ্বেষ সরকার বিদ্বেষ ওয়াজের নামে্ হাউকাউ এগুলো ছাড়া অন্য কিছুই নিয়ে কনসার্ন না। তাই প্রতিবাদ আপনাকেই করতে হবে।
প্রতিবাদ শুরু হোক আপনার এলাকার মসজিদে ইমামের পেছনে মহান রবের কাছে সেজদা দেয়ার জায়গা দখল করা মোড়লদের জায়নামাজ ছুড়ে ফেলে দিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৪৪