এই ছবিটির মূল্য অনেক। একজন নৃতত্ত্ববিদ কিংবা সামাজিক ভাষার ব্যবহার এবং ভাষার মিনিং সাজেশনের নানাবিধ মাল-মসল্লা এই পোস্টারটিতে আছে। কিন্তু কি আছে? এই প্রশ্ন একাডেমি করে না। করে না, কারণ এইভাষার পর্দা ছাড়ালে ইজ্জতের যে সৌধ গড়ে তোলা হয়েছে, সেটা বেইজ্জতি হবে। ফলে, ভাষার ব্যাপারে প্রশ্ন নেই। ভাষার কোনো সংশোধন নেই, ভাষা ব্যবহারে সতর্কতা নেই, ফলে রাষ্ট্রে আইনের মাস্তানি রয়েছে। খেয়াল করে দেখবেন, রাষ্ট্র ভাষা বিষয়ক কোনও প্রশ্ন এ্যালাউ করতে পারে না। কেন পারে না, কারণ, প্রশ্নের মিমাংসা আইনের মধ্যে নেই। আইন এটা স্থির ব্যাকারণ, এর পরিবর্তনের গতি কাছিমের থেকেও ধীর। ফলে অপরাধ বিষয়ক দণ্ড প্রদানের ক্ষমতা ছাড়া শব্দের অর্থ এবং ভাষা বিষয়ক অপরাধের মিমাংসা তার কাছে নেই। ফলে একজন দার্শনিকের বিচার কোনও ভাবেই আইনসেদ্ধ বিষয় নয়, আইন তার বিচার করতে পারে না। দার্শনিকের বিচার দর্শনসেদ্ধ হতে হবে। যেহেতু আইন ভাষা বিষয়ক মিমাংসা বোঝে না, ফলে ভাষাবিদ বা দার্শনিকদের কুরবানি হতে হয় কাঠামোবদ্ধ আইনের কাছে। একালের দর্শনশাস্ত্রের চর্চা কমেছে, কমেছে এর কারণ, নয়া প্রশ্নের থেকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণেই জ্ঞানজগত ব্যস্ত। অন্যদিকে জ্ঞান এবং ক্ষমতা নিজেদের ভেতর সন্ধি করে নিয়েছে। ফলে রাষ্ট্রীয় পদকগুলো দলীয় উপঢৌকনে রূপান্তরিত হয়েছে।
কেন এসব কথা বলতে হলো?
মহাকবি মাইকেল মধূসুদন দত্তের ১৮৮ তম জন্মদিবস উপলক্ষ্যে মেলার পোস্টারের যে স্টোরিওটাইপ, এটা নিয়ে আমাদের তেমন কথা নেই। এর ভাষার দিকে তাকানো যাক। লেখা আছে,ঢাকা ডিজিটাল জাদু প্রদর্শনী ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পীদের নিয়ে বিচিত্র অনুষ্ঠান'। এখন আপনারা বিচিত্র বলতে কি বোঝেন, আর এখানে বিচিত্রের কি মিনিং সেটে দিয়েছেন, বিশেষত চলচ্চিত্র শিল্পীদের নিয়ে বিচিত্র কি অনুষ্ঠান হয় সেটা তো একটা প্রশ্ন!
নৈতিকতার দিক থেকে বিচিত্র বিষয়ে চলচ্চিত্র শিল্পীদের এ বিষয়ে কোনও দ্বি-মত নেই, কোনও কথাবার্তা আমরা শুনিনি এ বিষয়ে।
ফলে, পোস্টারের ভাষা বিষয়ে প্রশ্ন তুললে সেখানেও কি কী বিচিত্র প্রশ্ন বলে উপেক্ষিত হবে?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৩:০৩