এটা বহুদিন যাবৎ চলতাছে। আমরিকা যেই বিষয়গুলা নিয়া দাপাদাপি করে, অন্যের ঘাড় মটকায়, অন্যরে আটকায় আর বিশ্বনীতি বইলা চাপায় এই সবকিছুই প্রায় ইসরায়েলের বেলায় কোনো বালাই নাই। সেখানে ফ্রিস্টাইল, যা ইচ্ছা করার ঘোষিত বা অঘোষিত অনুমোদন আছে। এই অনুমোদনের জোরে আজতক ইসরায়েল জাতী সংঘরে কলা দেখাইয়া যাইতেছে। কোনোদিন কোনো কিছুর তোয়াক্কা করা লাগেনা।
অনেক হাকডাক দিয়া ওবামা মিঞা আইসা তাবৎ দুনিয়ার মাইনষেরে বেবাক কথা হুনাইতেছে। মেলা হাঁকডাক দিয়া কায়রো ভাষণ দিয়া কিছু আবালের মধ্যে প্রত্যাশা নামক ঝজবাও তুইলা দিসিলো। তারা তো পারেনা বইলা ফালায় দুনিয়ার সব সমস্যার সমাধান হইলো বলে। আর কোনো ঝামেলা নাই। খালি শান্তি আর শান্তির নহর বইবো.... তয় মিঞা সাবরে খালি আফগান যুদ্ধটা করতে দিতে হবে। ওইখানে দুনিয়ার দুষমনগুলারে খতম করতে পারলেই তো কেল্লাফতে। দোস্তিতে ভাইসা যাইবো সব। দেখেন না কেমন বন্ধুর হাত লম্বা কইরা ধরছেন ইরানের লাইগা। ফিলিস্তিনীগো জন্যও তো উনার মায়াকান্না কম যায় নাই। কইছেন একটা রাষ্ট্র তো হেগোরে দেওন লাগে। নাইলে ল্যাঠা চুকে না। তয় গাজায় নির্বিচার হামলার সময় এক্কেরে চুপচাপ, আছিলে গলফ খেলায় ব্যাস্ত। তারপরে আজতক একটা টু শব্দও না...
আসলে, মার্কিন নীতি নিক্সন পিরিয়ড়েই আছে, অন্তত মধ্যপ্রাচ্য প্রশ্নে। এটার অন্যতম প্রধান কারিগর হইলেন, প্রখ্যাত হেনরি কিসিঞ্জার। তার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইসরায়েলের এই রকম ঘাটছড়া বাঁধা ছিলো না। আবার ঠিক সেই বন্ধনের পারস্পরিক লেনদেন, স্বার্থ কে কোথায় কিভাবে মিলিয়ে নিবে তারও কোনো স্পষ্ট দিকদর্শন ছিলো না।
মনে রাখতে হবে ইসরায়েল রাষ্ট্র বানানোর সকল কায়কারবারে প্রধান ভূমিকা পালন করছে বৃটেন। তারপর বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতে মার্কিনদের একক ক্ষমতাধর হয়ে ওঠার সময়কালে ইহুদিদের প্রতি তাদের বিশেষ পক্ষালম্বন জারি রাখার একটা দায় এসে পড়েছিল কিন্তু সেটা কোনোভাবেই নিজেদের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে নাই। সেটা তৈরি হয়েছে, আর্লি সেভেটিজে, মধ্যপ্রেচ্যের উপর যখন বিশেষ নজর দিতে হয়েছে তখন থেকে।
এইখানে দুইটা অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ মোড়বদল আছে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে। আর সেটার কেন্দ্রে আছে স্নায়ু যুদ্ধের ভিতরে তেল সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের জন্য গৃহীত মার্কিন কৌশল ও পরিকল্পনার ভিতরে। পুরো কাজটাই অসম্ভব মেধা খাটিয়ে বের করে এনেছেন হেনরি কিসিঞ্জার। তার স্মৃতিচারণমূলক বইয়ে এই দিকগুলা খুটিয়ে দেখলে পাওয়া যায়। সেখানে দুই শিবিরের মাঝে ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়নে ক্রুশিয়াল রোল প্লে করেছে মধ্যপ্রাচ্য। কারণ তার সাথে যুক্ত ছিল তেল। বিশাল তেলসম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েমই পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার গতিশীলতায় টিকে থাকার শক্তি যোগাবে তাদের, এটা তখনই বুঝে ছিল নিক্সন প্রশাসন।
এই ক্ষেত্রে তাদের অন্যতম প্রধান অবলম্বন বা ইন্সট্রুমেন্ট বিবেচিত হয় ইসরায়েল। সেই থেকে শুরু যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানী নিরাপত্তার কৌশলের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে গেছে ইসরায়েলের ভূমিকা। অনেকটা নির্ধারক হয়ে আছে। এখানে পাল্টা চিঁড় ধরাতে যে দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার প্রয়োজন তা প্রায় কোনো মধ্যপ্রাচ্য সরকারেরই নাই, ছিলো না। এমন কি মিশরের জামাল আবদুল নাসের বা আনোয়ার সাদাতেরও। সেটা ভিন্নতর প্রসঙ্গ।
তো, তখন থেকেই আমেরিকার কাছে ইসরায়েল স্ট্রাটেজিক পার্টনার ইন মিডল ইস্ট। তখন তারাই ঠিক করলো, নীতিটা হবে চোখবুইজা মুখ গুইজা থাকা। কিছু জিগামু না তোগোরে কিছু কওনও লাগবো না। যা পারো চালায়া যাও...। গণহত্যা, পারমাণবিক বোমা, রাসায়নিক অস্ত্র কিছুতেই কোনো পরওয়া নাই।
গত চল্লিশ বছর তাই তারা এই নীতিতে অটল। সেখানে ফাটল ধরার মতো শর্ত সৃষ্টি হয় নাই। কিন্তু এই নীতি প্রয়োগের ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো সংহত বিরোধিতার মুখোমুখি হতে না হলেও বা সেটা ম্যানেজ করা গেলেও স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের পরে আর তাকে আগের জায়গায় রাখা যায়নি। যাচ্ছেনা। সেটা ক্রমাগত আরো বেশি করে বেরিয়ে পড়ছে। ধাক্কাটা আসে ক্লিন্টনের শেষ দিকে। আর বুশ এসে ওটাকে মোকাবেলার রাস্তা ঠিক করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলে। কিন্তু তার ফল বেশি একটা পাওয়া গেল না। উল্টা আরো ক্ষতির মধ্যে পড়তে হলো। বুঝা গেল এই লাইনে কাম হবে না। কিছু চেইঞ্জ আনা দরকার। আইসা পড়লো চেইঞ্জ। কালো চামড়া আর বুলি-বাগিশতা দিয়া পুরানা কাম সারনের রাস্তা।
কিন্তু ঝামেলা একটা তো আছেই, মানে যে মাইর শুরু হইছে সেইটার কি হইবো? আমেরিকা এইরম মাইর আগে তো খুব একটা খায় নাই, তার উপরে আবার অন্দাগুন্দা মাইর। কোনখান দিয়া কেমনে আইসা পড়ে বুঝন দায়। খালি মাথা ঘামায়া একটা জিনিষ বাইর করছে হেগো বিশ্লেষক মহল যে ইসরায়েলরে এইভাবে ঢালাও সমর্থন দেওন বিপদের কারণ হইতেছে। কিন্তু উপায় নাই গোলাম হোসেন, জল অনেকদূর বইয়া গেছে।
তাই রেটরিক্স দিয়া একবার ভাসাইয়া দেয়, কয় আমরা কোনোভাবেই এইরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপন সমর্থন করি না। আবার কয় শান্তি আলোচনার জন্য কোনো শর্ত দেওন ঠিক না। মানে ইসরায়ের যা করছে, করতাছে মাইনা লন। আমারে বাচান, মুখরক্ষা করনের সুযোগ দেন। যেন কইতে পারি আমরা তো তোমগো ফিলিস্তিনী ভাইগো জন্যও রাষ্ট্র বানাইতেছি, কম করতেছিনা। আমগোরে এইবার ছাইড়া দেওন যায়না? দেওনা ছাইড়া...
কিন্তু আলকায়েদার বেয়াদপগুলা দেখ এমনভাবে পাছা কামড়ায়া রইছে কিছুতেই বুঝান যাইতেছেনা। যখন তখন এইখান থেইকা ওইখান থেইকা ফুটেজ দিয়া নানা কিছু ফুটা কইরা দিতেছে। আবার ওবামারে ক্রিমিনালও কইয়া সারছে। কামটা কি ঠিক করলো??