somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমেরিকার কিছু জিগামুনা, কিছু কওন লাগবোনা নীতি এবং ইসরায়েলের অবস্থান

০৭ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা বহুদিন যাবৎ চলতাছে। আমরিকা যেই বিষয়গুলা নিয়া দাপাদাপি করে, অন্যের ঘাড় মটকায়, অন্যরে আটকায় আর বিশ্বনীতি বইলা চাপায় এই সবকিছুই প্রায় ইসরায়েলের বেলায় কোনো বালাই নাই। সেখানে ফ্রিস্টাইল, যা ইচ্ছা করার ঘোষিত বা অঘোষিত অনুমোদন আছে। এই অনুমোদনের জোরে আজতক ইসরায়েল জাতী সংঘরে কলা দেখাইয়া যাইতেছে। কোনোদিন কোনো কিছুর তোয়াক্কা করা লাগেনা।

অনেক হাকডাক দিয়া ওবামা মিঞা আইসা তাবৎ দুনিয়ার মাইনষেরে বেবাক কথা হুনাইতেছে। মেলা হাঁকডাক দিয়া কায়রো ভাষণ দিয়া কিছু আবালের মধ্যে প্রত্যাশা নামক ঝজবাও তুইলা দিসিলো। তারা তো পারেনা বইলা ফালায় দুনিয়ার সব সমস্যার সমাধান হইলো বলে। আর কোনো ঝামেলা নাই। খালি শান্তি আর শান্তির নহর বইবো.... তয় মিঞা সাবরে খালি আফগান যুদ্ধটা করতে দিতে হবে। ওইখানে দুনিয়ার দুষমনগুলারে খতম করতে পারলেই তো কেল্লাফতে। দোস্তিতে ভাইসা যাইবো সব। দেখেন না কেমন বন্ধুর হাত লম্বা কইরা ধরছেন ইরানের লাইগা। ফিলিস্তিনীগো জন্যও তো উনার মায়াকান্না কম যায় নাই। কইছেন একটা রাষ্ট্র তো হেগোরে দেওন লাগে। নাইলে ল্যাঠা চুকে না। তয় গাজায় নির্বিচার হামলার সময় এক্কেরে চুপচাপ, আছিলে গলফ খেলায় ব্যাস্ত। তারপরে আজতক একটা টু শব্দও না...

আসলে, মার্কিন নীতি নিক্সন পিরিয়ড়েই আছে, অন্তত মধ্যপ্রাচ্য প্রশ্নে। এটার অন্যতম প্রধান কারিগর হইলেন, প্রখ্যাত হেনরি কিসিঞ্জার। তার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইসরায়েলের এই রকম ঘাটছড়া বাঁধা ছিলো না। আবার ঠিক সেই বন্ধনের পারস্পরিক লেনদেন, স্বার্থ কে কোথায় কিভাবে মিলিয়ে নিবে তারও কোনো স্পষ্ট দিকদর্শন ছিলো না।

মনে রাখতে হবে ইসরায়েল রাষ্ট্র বানানোর সকল কায়কারবারে প্রধান ভূমিকা পালন করছে বৃটেন। তারপর বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতে মার্কিনদের একক ক্ষমতাধর হয়ে ওঠার সময়কালে ইহুদিদের প্রতি তাদের বিশেষ পক্ষালম্বন জারি রাখার একটা দায় এসে পড়েছিল কিন্তু সেটা কোনোভাবেই নিজেদের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে নাই। সেটা তৈরি হয়েছে, আর্লি সেভেটিজে, মধ্যপ্রেচ্যের উপর যখন বিশেষ নজর দিতে হয়েছে তখন থেকে।

এইখানে দুইটা অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ মোড়বদল আছে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে। আর সেটার কেন্দ্রে আছে স্নায়ু যুদ্ধের ভিতরে তেল সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের জন্য গৃহীত মার্কিন কৌশল ও পরিকল্পনার ভিতরে। পুরো কাজটাই অসম্ভব মেধা খাটিয়ে বের করে এনেছেন হেনরি কিসিঞ্জার। তার স্মৃতিচারণমূলক বইয়ে এই দিকগুলা খুটিয়ে দেখলে পাওয়া যায়। সেখানে দুই শিবিরের মাঝে ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়নে ক্রুশিয়াল রোল প্লে করেছে মধ্যপ্রাচ্য। কারণ তার সাথে যুক্ত ছিল তেল। বিশাল তেলসম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েমই পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার গতিশীলতায় টিকে থাকার শক্তি যোগাবে তাদের, এটা তখনই বুঝে ছিল নিক্সন প্রশাসন।

এই ক্ষেত্রে তাদের অন্যতম প্রধান অবলম্বন বা ইন্সট্রুমেন্ট বিবেচিত হয় ইসরায়েল। সেই থেকে শুরু যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানী নিরাপত্তার কৌশলের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে গেছে ইসরায়েলের ভূমিকা। অনেকটা নির্ধারক হয়ে আছে। এখানে পাল্টা চিঁড় ধরাতে যে দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার প্রয়োজন তা প্রায় কোনো মধ্যপ্রাচ্য সরকারেরই নাই, ছিলো না। এমন কি মিশরের জামাল আবদুল নাসের বা আনোয়ার সাদাতেরও। সেটা ভিন্নতর প্রসঙ্গ।

তো, তখন থেকেই আমেরিকার কাছে ইসরায়েল স্ট্রাটেজিক পার্টনার ইন মিডল ইস্ট। তখন তারাই ঠিক করলো, নীতিটা হবে চোখবুইজা মুখ গুইজা থাকা। কিছু জিগামু না তোগোরে কিছু কওনও লাগবো না। যা পারো চালায়া যাও...। গণহত্যা, পারমাণবিক বোমা, রাসায়নিক অস্ত্র কিছুতেই কোনো পরওয়া নাই।

গত চল্লিশ বছর তাই তারা এই নীতিতে অটল। সেখানে ফাটল ধরার মতো শর্ত সৃষ্টি হয় নাই। কিন্তু এই নীতি প্রয়োগের ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো সংহত বিরোধিতার মুখোমুখি হতে না হলেও বা সেটা ম্যানেজ করা গেলেও স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের পরে আর তাকে আগের জায়গায় রাখা যায়নি। যাচ্ছেনা। সেটা ক্রমাগত আরো বেশি করে বেরিয়ে পড়ছে। ধাক্কাটা আসে ক্লিন্টনের শেষ দিকে। আর বুশ এসে ওটাকে মোকাবেলার রাস্তা ঠিক করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলে। কিন্তু তার ফল বেশি একটা পাওয়া গেল না। উল্টা আরো ক্ষতির মধ্যে পড়তে হলো। বুঝা গেল এই লাইনে কাম হবে না। কিছু চেইঞ্জ আনা দরকার। আইসা পড়লো চেইঞ্জ। কালো চামড়া আর বুলি-বাগিশতা দিয়া পুরানা কাম সারনের রাস্তা।

কিন্তু ঝামেলা একটা তো আছেই, মানে যে মাইর শুরু হইছে সেইটার কি হইবো? আমেরিকা এইরম মাইর আগে তো খুব একটা খায় নাই, তার উপরে আবার অন্দাগুন্দা মাইর। কোনখান দিয়া কেমনে আইসা পড়ে বুঝন দায়। খালি মাথা ঘামায়া একটা জিনিষ বাইর করছে হেগো বিশ্লেষক মহল যে ইসরায়েলরে এইভাবে ঢালাও সমর্থন দেওন বিপদের কারণ হইতেছে। কিন্তু উপায় নাই গোলাম হোসেন, জল অনেকদূর বইয়া গেছে।

তাই রেটরিক্স দিয়া একবার ভাসাইয়া দেয়, কয় আমরা কোনোভাবেই এইরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপন সমর্থন করি না। আবার কয় শান্তি আলোচনার জন্য কোনো শর্ত দেওন ঠিক না। মানে ইসরায়ের যা করছে, করতাছে মাইনা লন। আমারে বাচান, মুখরক্ষা করনের সুযোগ দেন। যেন কইতে পারি আমরা তো তোমগো ফিলিস্তিনী ভাইগো জন্যও রাষ্ট্র বানাইতেছি, কম করতেছিনা। আমগোরে এইবার ছাইড়া দেওন যায়না? দেওনা ছাইড়া...

কিন্তু আলকায়েদার বেয়াদপগুলা দেখ এমনভাবে পাছা কামড়ায়া রইছে কিছুতেই বুঝান যাইতেছেনা। যখন তখন এইখান থেইকা ওইখান থেইকা ফুটেজ দিয়া নানা কিছু ফুটা কইরা দিতেছে। আবার ওবামারে ক্রিমিনালও কইয়া সারছে। কামটা কি ঠিক করলো??
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ২:৩২
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×